বালিয়াটি জমিদার বাড়ি উনিশ শতকের স্থাপত্যকৌশলের একটি অন্যতম নিদর্শন। প্রায় দুশ’ বছরের পুরাতন জমিদার বাড়িটি ইতিহাস-ঐতিহ্যের সাক্ষী হয়ে দাঁড়িয়ে আছে। এ বাড়িটি থেকে তৎকালীন সময়ের মানুষের জীবন-জীবিকা, চাল-চলন, আনন্দ-বিনোদন আর শৌখিনতার পরিচয় পাওয়া যায়।

জানুন সম্পাদনা

বালিয়াটি জমিদারবাড়ি প্রায় পাঁচ একর জমির ওপর স্থাপিত। জমিদারবাড়ির পুরো চত্বরটি উঁচু প্রাচীর দিয়ে ঘেরা। এতে রয়েছে সাতটি প্রাসাদসম ইমারত, কক্ষ রয়েছে মোট ২০০টি। ১৯৮৭ সালে প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তর বালিয়াটি প্রাসাদকে সংরক্ষিত পুরাকীর্তি হিসেবে ঘোষণা করে এবং বাংলাদেশ প্রত্নতাত্ত্বিক বিভাগ কর্তৃক সংরক্ষিত ও পরিচালিত।

ইতিহাস সম্পাদনা

স্থানীয় ইতিহাস থেকে পাওয়া যায় গোবিন্দ রাম সাহা বালিয়াটি জমিদার পরিবারের গোড়াপত্তন করেন, তিনি লবণের ব্যবসায়ী ছিলেন। আঠারো শতকের প্রথম ভাগ থেকে ২০০ বছরেরও বেশি সময় ধরে বালিয়াটির জমিদাররা ওই এলাকা শাসন করেন। এ সময়ে তাঁরা নানা রকম গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা তৈরি করেন। বালিয়াটি জমিদারবাড়ি সেগুলোর অন্যতম। আঠারো শতকের মধ্যভাগে জমিদার গোবিন্দরাম শাহ বালিয়াটি জমিদারবাড়ি নির্মাণ করেন। আর ক্রমান্বয়ে তাঁর উত্তরাধিকারীরা এখানে নির্মাণ করেন আরও বেশ কিছু স্থাপনা।

সময়সূচি সম্পাদনা

গ্রীষ্মকালীন খোলার সময়: সকাল ১০টা থেকে সন্ধ্যা ০৬টা পর্যন্ত। শীতকালীন খোলার সময়: সকাল ০৯টা থেকে বিকেল ০৫টা পর্যন্ত।

বিরতি সম্পাদনা

প্রতিদিন দুপুর ০১টা থেকে ০১টা ৩০ মিনিট পর্যন্ত। শুক্রবার দুপুর ১২টা ৩০ মিনিট থেকে ২টা ৩০ মিনিট পর্যন্ত।

সাপ্তাহিক বন্ধ সম্পাদনা

বালিয়াটি জমিদার বাড়ি রবিবার পূর্ণদিবস আর সোমবার অর্ধদিবস বন্ধ থাকে। অন্যান্য সরকারি ছুটির দিনগুলোতেও বন্ধ থাকে।

প্রবেশমূল্য সম্পাদনা

জমিদার বাড়িতে প্রবেশের জন্য টিকেটের মূল্য জনপ্রতি দেশি দর্শনার্থী ২০ টাকা, সার্কভুক্ত দর্শনার্থী ১০০ টাকা এবং বিদেশি দর্শনার্থী ২০০ টাকা।

কীভাবে যাবেন সম্পাদনা

বালিয়াটি জমিদার বাড়ি ঢাকা বিভাগের মানিকগঞ্জ জেলা সদর থেকে আনুমানিক ৮ কিলোমিটার পশ্চিমে এবং ঢাকা জেলা সদর থেকে ৩৫ কিলোমিটার দূরে সাটুরিয়া উপজেলার বালিয়াটি গ্রামে অবস্থিত। ঢাকার গাবতলী থেকে পাটুরিয়া, আরিচা বা মানিকগঞ্জের উদ্দেশ্যে ছেড়ে যাওয়া বাসে চড়ে মানিকগঞ্জের ৮ কিমি আগেই সাটুরিয়া বাসস্টপে নেমে যেতে হবে। ভাড়া লাগবে ৩৫-৪০ টাকা। আর মানিকগঞ্জ থেকে যেতে চাইলে শুভযাত্রা, পল্লীসেবা, শুকতারা ইত্যাদি বাসে চড়ে চলে যেতে পারবেন। এক্ষেত্রে ভাড়া লাগবে ২০ টাকার মত। সাটুরিয়া বাসস্টপে থেকে ১২ কিমি দূরে এই বালিয়াটি জমিদার বাড়ির অবস্থান। সাটুরিয়া থেকে পাকুটিয়াগামী রাস্তায় সাটুরিয়ার জিরোপয়েন্টে নামতে হবে। এখান থেকে মাত্র ১ কি.মি এর কম দূরত্ব বালিয়াটি জমিদার বাড়ির। এছাড়া নিজস্ব গাড়ি নিয়েও ঘুরে আসতে পারেন এই ঐতিহাসিক স্থান।

কী দেখবেন সম্পাদনা

বালিয়াটি জমিদার বাড়ি প্রায় ১৬,৫৫৪ বর্গমিটার জমির উপর ছড়িয়ে থাকা ৭টি দক্ষিণমুখী দালানের সমাবেশ। এখানে রয়েছে পূর্ব বাড়ি, পশ্চিম বাড়ি, উত্তর বাড়ি, মধ্য বাড়ি এবং গোলা বাড়ি নামের বড় আকারের পাঁচটি ভবন। জমিদারবাড়ির এই বিভিন্ন অংশ বালিয়াটি জমিদার পরিবারের উত্তরাধিকারীরাই তৈরি করেন। সামনের ৪টি প্রাসাদ ব্যবহার হত ব্যবসায়িক কাজে। এই প্রাসাদের পেছনের প্রাসাদকে বলা হয় "অন্দর মহল" যেখানে তারা বসবাস করতেন।

প্রাসাদটি ২০ একরের চেয়ে বেশি স্থান জুড়ে অবস্থিত হলেও মূল প্রাসাদসংলগ্ন পাঁচটি অংশ আলাদাভাবে নির্মাণ করা হয়েছিল। পূর্ব দিকের একটি অংশ পুরোপুরি ধ্বংস হয়ে গেলেও বাকি চারটি টিকে আছে এখনো যার মধ্যে মাঝের ২টি ব্লকের একটি দ্বিতল বিশিষ্ট এবং আরেকটি টানা বারান্দা বিশিষ্ট তিনতলা ভবন। মূল ভবনগুলোর সামনের দেয়ালজুড়ে নানা রকম কারুকাজ আর মূর্তি চোখে পড়ে। উত্তরদিকে কিছুদূরে অবস্থিত পরিত্যক্ত ভবনটি হল বহির্মহল যা কাঠের কারুকার্য সম্পন্ন। ভবনগুলোর পেছনের দিকে আছে বড় একটি পুকুর। শানবাঁধানো ছয়টি ঘাট আছে পুকুরের চারপাশে। এই ভবনে প্রাসাদের চাকর-বাকর, গাড়ি রাখার গ্যারেজ, ঘোড়াশাল ছিল বলে ধারণা করা হয়। প্রাসাদটির চারপাশ সুউচ্চ দেয়াল দ্বারা পরিবেষ্টিত। এর ৩টি প্রবেশপথ আছে। যার প্রত্যেকটিতে অর্ধবৃত্তাকার খিলান আকৃতির সিংহ খোদাই করা তোরণ রয়েছে। বালিয়াটি জমিদারবাড়ির ঘিরে তৈরি করা প্রাচীন আমলের সেই প্রাচীর এখনো টিকে আছে। এ চার দেয়ালের মাঝে এখন রয়েছে চারটি সুদৃশ্য ভবন।

🔥 Popular: প্রধান পাতাসুন্দরবনকিরগিজস্তানচাঁদতাজমহলফিলিস্তিনবঙ্গরাশিয়ারাজশাহী বিভাগপাহাড়পুর বৌদ্ধবিহারবিশেষ:সংস্করণ/লালবাগ কেল্লাব্যবহারকারী আলাপ:Sbb1413সেন্ট মার্টিন দ্বীপউজবেকিস্তানইউরোপচট্টগ্রামমায়াপুরপানাম নগরউইকিভ্রমণ:ভ্রমণপিপাসুর আড্ডাআফ্রিকাআফগানিস্তানজাপানইংল্যান্ডসাজেক উপত্যকানীলগিরিরাঢ়বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সাফারি পার্করাঙ্গামাটিসিলেট বিভাগহাকালুকি হাওরকুড়িগ্রাম জেলাধর্মসাগর দীঘিহযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরপশ্চিমবঙ্গদক্ষিণ কোরিয়াবগুড়া জেলাবরিশাল বিভাগযুক্তরাজ্যরংপুর বিভাগচীননাফাখুম জলপ্রপাতচন্দ্রনাথ পাহাড়গাঙ্গেয় সমভূমিইরাকশালবন বৌদ্ধ বিহারইনানী সমুদ্র সৈকতনীলাচলপূর্ব প্রদেশ (সৌদি আরব)বেঙ্গালুরুমিশরওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরনেপালশরীয়তপুর জেলাকাজাখস্তানজাতিসংঘচাঁদপুর জেলাশিলংজাতীয় সংসদ ভবননিঝুম দ্বীপব্যবহারকারী আলাপ:Moheenতাজিংডংপারকি সমুদ্র সৈকতচিম্বুক পাহাড়কুমিল্লা জেলাকুষ্টিয়া জেলাতেলেঙ্গানাশিশু পার্ক, ঢাকাতাইওয়ানদীঘাদক্ষিণ এশিয়াবাংলাদেশের দর্শনীয় স্থানসমূহনুহাশ পল্লীবেলারুশরিজুক ঝর্নাকান্তজীর মন্দিরকলকাতা/দক্ষিণহিমছড়িউত্তর কোরিয়া