রাশিয়া: বিশ্বের বৃহত্তম দেশ

রাশিয়া (রুশ: Россия রশিয়া), সরকারিভাবে রুশ ফেডারেশন নামে পরিচিত (রুশ: Российская Федерация রশিস্কায়া ফিদিরাৎসিয়া) যেটা পূর্ব ইউরোপে এবং উত্তর এশিয়ায় অবস্থিত বিশ্বের বৃহত্তম দেশ। এই দেশটি অর্ধ প্রেসিডেনসিয়াল ফেডারেল প্রজাতন্ত্র যার সংবিধান ৮৩ টি ফেডারেল বিষয় দ্বারা গঠিত। ১৯৯১ সালে সোভিয়েত ইউনিয়ন ভেঙে যাওয়ার পর পৃথক রাষ্ট্র হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে দেশটি। রাশিয়ার উত্তর-পশ্চিম থেকে দক্ষিণ-পূর্ব পর্যন্ত নরওয়ে, ফিনল্যান্ড, এস্তোনিয়া, লাটভিয়া, লিথুয়ানিয়া ও পোল্যান্ড (উভয় দেশই কালিনিনগ্রাদ অব্লাস্ত সীমান্ত দিয়ে যুক্ত), বেলারুশ, ইউক্রেন, জর্জিয়া, আজারবাইজান, কাজাখস্তান, চীন, মঙ্গোলিয়া ও উত্তর কোরিয়ার সাথে সীমান্ত আছে। দেশটির অখতস্ক সাগরের মাধ্যমে জাপানের সাথে ও বেরিং প্রণালীতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের আলাস্কার সাথে সামুদ্রিক সীমানা রয়েছে। রাশিয়া বিশ্বের বৃহত্তম দেশ যার রয়েছে পৃথিবীর মোট আবাসযোগ্য জমির এক অষ্টমাংশ। দেশটির মোট আয়তন ১৭,০৭৫,৪০০ বর্গকিলোমিটার (৬,৫৯২,৮০০ বর্গমাইল)। রাশিয়া বিশ্বের নবম জনবহুল দেশ যেখানে ২০১২ হিসাব অনুযায়ী ১৪৩ মিলিয়ন লোক বসবাস করে। পূর্ব ইউরোপে জায়গা সম্প্রসারণের ফলে রাশিয়া ১১টি সময় অঞ্চলের অন্তর্ভুক্ত এবং এখানে অনেক রকম ও বিস্তৃত পরিবেশের সমন্বয় ঘটেছে। একই সাথে ইউরেশিয়ার একটি দেশ রাশিয়া।এটি জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের স্থায়ী সদস্য। বিশ্বের পারমাণবিক শক্তিধর শীর্ষ পাঁচটি দেশের অন্যতম এটি।

রাশিয়া ফেডারেশন

Российская Федерация
রশিস্কায়া ফিদিরাৎসিয়া
রাশিয়ার জাতীয় পতাকা
পতাকা
রাশিয়ার জাতীয় মর্যাদাবাহী নকশা
জাতীয় মর্যাদাবাহী নকশা
জাতীয় সঙ্গীত: 
"Государственный гимн Российской Федерации"
"গসুদার্স্ত্বেন্নি গিম্ন রশ্যিস্কয় ফেদেরাৎসি"
রাশিয়া (গাঢ় সবুজ) ক্রিমিয়া (বিতর্কিত) (হালকা সবুজ)a
রাশিয়া (গাঢ় সবুজ)
ক্রিমিয়া (বিতর্কিত) (হালকা সবুজ)a
রাজধানী
ও বৃহত্তম নগরী বা বসতি
মস্কো
সরকারি ভাষারুশ
স্বীকৃত ভাষা৩৫টি ভাষা বিভিন্ন অঞ্চলে সহ-সরকারী
নৃগোষ্ঠী
(২০২১, ক্রিমিয়াসহ)
ধর্ম
(২০১২)
জাতীয়তাসূচক বিশেষণরুশি, রুশ, রুশীয়, রাশিয়ান
সরকারযুক্তরাষ্ট্রীয় প্রজাতন্ত্র
• রাষ্ট্রপতি
ভ্লাদিমির পুতিন
• প্রধানমন্ত্রী
মিখাইল মিশুস্তিন
• ফেডারেশন কাউন্সিলের চেয়ারম্যান
ভালেন্টিনা মাটভিয়েনকো
সার্গেই নারিস্কিন
আইন-সভাফেডারেল সভা
• উচ্চকক্ষ
ফেডারেল পরিষদ
• নিম্নকক্ষ
স্টেট দুমা
গঠন
• রুরিক-র আগমন
৮৬২
• কিয়েভ রুশ
৮৮২
• মস্কোর মহান ডাচি
১২৮৩
• ৎসার রুশ
১৬ জানুয়ারি ১৫৪৭
২২ অক্টোবর ১৭২১
৬ নভেম্বর ১৯১৭
১০ ডিসেম্বর ১৯২২
• রাশিয়া ফেডারেশন
২৫ ডিসেম্বর ১৯৯১
• বর্তমান সংবিধানের গ্রহণ
১২ ডিসেম্বর ১৯৯৩
আয়তন
• মোট
১,৭০,৯৮,২৪২ কিমি (৬৬,০১,৬৬৮ মা) ()
• পানি (%)
১৩ (জলাভূমি সহ)
জনসংখ্যা
• ২০১৫ আনুমানিক
১৪,৩৯,৭৫,৯২৩ ()
• ঘনত্ব
৮.৪/কিমি (২১.৮/বর্গমাইল) (২১৭)
জিডিপি (পিপিপি)২০১৫ আনুমানিক
• মোট
$৩.৪৫৮ ট্রিলিয়ন ()
• মাথাপিছু
$২৪,০৬৭ (৫৩)
জিডিপি (মনোনীত)২০১৫ আনুমানিক
• মোট
$১.১৭৬ ট্রিলিয়ন (১৫)
• মাথাপিছু
$৮,১৮৪ (৭৪)
জিনি (2013)40.1
মাধ্যম · [[আয়ের সমতা অনুযায়ী দেশসমূহের তালিকা|৮৩ তম]]
মানব উন্নয়ন সূচক (2019)বৃদ্ধি 0.824
অতি উচ্চ · [[মানব উন্নয়ন সূচক অনুযায়ী দেশের তালিকা|৫০ তম]]
মুদ্রারুশ রুবল (руб) (RUB)
সময় অঞ্চলইউটিসি+২ হইতে +১২
তারিখ বিন্যাসdd.mm.yyyy
গাড়ী চালনার দিকডান
কলিং কোড+৭
ইন্টারনেট টিএলডি
  • .ru
  • .su
  • .рф
  1. ক্রিমিয়া উপদ্বীপটি অধিকাংশ আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের দ্বারা ইউক্রেন রাজ্যক্ষেত্র হিসেবে স্বীকৃত, কিন্তু কার্যত রাশিয়া দ্বারা প্রশাসিত

নামগত উৎপত্তি

রাশিয়া নামটি রুশ নামক মধ্যযুগীয় একটি রাষ্ট্র থেকে এসেছে যেখানকার অধিকাংশ জনগণই ছিল ইস্ট স্লাভ গোত্রের অন্তর্গত। পরবর্তী ইতিহাসে এই নামটি আরও বিশিষ্ট হয়ে ওঠে দেশটিকে এর জনগণ "Русская Земля" (রুশকায়া যেমল্যা) বলে ডাকতো যার অর্থ দাড়ায় রুশ ভূমি বা রুশ এর ভূমি। রাশিয়া ও এই রাষ্ট্র হতে উদ্ভূত রাষ্ট্রের নামের পার্থক্য করারা জন্য আধুনিক ইতিহাসে একে কিয়েভান রুশ বলে ডাকা হয়। রুশ নামটি রুশ নামের একটি গোত্র থেকে এসেছে যারা ছিল মূলত ভারাঞ্জিয়ানদের একটি দল (সম্ভবত সুইডিশ ভাইকিং) এবং এরাই প্রথম রুশ (Русь) নামে একটি রাজ্য প্রতিষ্ঠা করে।

রুশ শব্দটির পুরনো ল্যাটিন ভাষার একটি সংস্করণ ছিল রুথেনিয়া যেটি দক্ষিণ ও পশ্চিম রুশে বেশি ব্যবহার করা হত এবং এই অঞ্চলটা ক্যাথলিক ইউরোপ সংলগ্ন ছিল। দেশটির বর্তমান নাম Россия (রাশিয়া) কিয়েভান রাশ এর বাইজান্টাইন গ্রিক শব্দ Ρωσσία Rossía (বানান- Ρωσία) (Rosía উচ্চারিত হবে [roˈsia]) থেকে এসেছে। রাশিয়ার অধিবাসীদের রুশ বলা হয়।

ইতিহাস

দেশটির ইতিহাস শুরু হয় ৩য় ও ৮ম খ্রিষ্টাব্দের মধ্যবর্তী সময়ে পূর্ব স্লাভদের মাধ্যমে যারা ইউরোপের একটি স্বীকৃত জাতি হিসেবে পরিচিত ছিল। পরবর্তীতে ভারাঞ্জিয়ান যোদ্ধা ও তাদের বংশধরদের দ্বারা প্রতিষ্ঠিত ও শাসিত হয় এবং নবম শতকে দেশটির উত্থান শুরু হয়। ৯৮৮ খ্রিষ্টাব্দে বাইজান্টাইন সাম্রাজ্য থেকে গোঁড়া খ্রিস্টান রীতি গৃহীত হয়। এর ফলে বাইজান্টাইন ও স্লাভ সংস্কৃতির সংমিশ্রণ ঘটে যা পরবর্তী সহস্রাব্দ পর্যন্ত বহাল থাকে। রাশিয়া অনেকগুলো ছোট ছোট অঞ্চলে ভাগ হয়ে যায় এবং বেশিরভাগ জমি মোঙ্গলদের আক্রমণের পদদলিত হয় ও যাযাবরদের জন্য স্বর্গ হয়ে ওঠে। মস্কোর গ্র্যান্ড ডিউক শেষ পর্যন্ত পার্শ্ববর্তী রুশ অঞ্চলে আধিপত্য বিস্তার করেন ও যাযাবরদের কাছে থেকে স্বাধীনতা অর্জন করেন। তারা মূলত কিয়েভান রাশিয়ার রাজনীতি ও সংস্কৃতিকে শাসন করেন। অষ্টাদশ শতক পর্যন্ত এই জাতিটি বিজয়, আত্মসাৎ এবং অন্বেষণের মাধ্যমে ব্যাপকভাবে সাম্রাজ্য সম্প্রসারণ করে ইউরোপের পোল্যান্ড থেকে উত্তর আমেরিকার আলাস্কা পর্যন্ত যা ছিল ইতিহাসে তৃতীয় বৃহত্তম সাম্রাজ্য।

রুশ বিপ্লবের পর রুশীয় সোভিয়েত যুক্তরাষ্ট্রীয় সমাজতান্ত্রিক প্রজাতন্ত্র ছিল সোভিয়েত ইউনিয়নের বৃহত্তম, নেতৃস্থানীয় ও প্রয়োজনীয় সদস্য হয়ে ওঠে যা সংবিধান অনুযায়ী একটি সমাজতান্ত্রিক দেশ। সোভিয়েত ইউনিয়ন ছিল বিশ্বের প্রথম সমাজতান্ত্রিক রাষ্ট্র, যা তাদের মতে সমস্ত ধরনের শোষণ থেকে মানুষকে মুক্ত করেছিল, মানুষকে বিকশিত করে উন্নত সুন্দর মানুষ বানিয়েছিল। সেখানে ধনী দরিদ্রের ভেদরেখা ভেঙ্গা ফেলা হয়, শ্রমিকেই দেওয়া সর্বোচ্চ মূল। বিজ্ঞানের সমস্ত ক্ষেত্রে, সাহিত্যের বিশাল অবদান রাখে। রবি ঠাকুর সোভিয়েত দেখে বলেছিলেন, স্বর্গ দেখে এলুম। এসময় এটি অত্যন্ত শক্তিশালী দেশ হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে যেটি দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় সোভিয়েত ইউনিয়নেই প্রথম জার্মানির পরাজয় ঘটে, তারপর নাৎসি জার্মানির পতন অবশ্যম্ভাবী হয়ে উঠে এবং শেষমেষ হেরে যায়। । সোভিয়েত যুগ বিংশ শতকের কিছু উল্লেখযোগ্য প্রযুক্তিগত সাফল্য পেয়েছিল যার মধ্যে ছিল বিশ্বের প্রথম মহাকাশযান ও প্রথম নভোচারী। ১৯৯১ সালে সোভিয়েত ইউনিয়ন ভেঙে যাওয়ার পর সোভিয়েতের রুশীয় প্রজাতন্ত্র রুশ ফেডারেশন হিসেবে গঠিত হয় এবং একক রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃত হয়।

রাজনীতি

রাশিয়া একটি আধা-রাষ্ট্রপতি শাসিত দেশ যেখানে প্রেসিডেন্ট সর্ব ক্ষমতার মালিক। তিনি প্রধানমন্ত্রী নিয়োগ দিয়ে থাকেন।

প্রশাসনিক অঞ্চলসমূহ

রাশিয়া ৮টি ফেডারেল ডিস্ট্রিক্ট এ বিভক্ত। নিচে উল্লেখযোগ্য ফেডারেল ডিস্ট্রিক্ট ও তাদের মূল শহরের তালিকা দেয়া হল :

যুক্তরাষ্ট্রীয় জেলা শহর
কেন্দ্রীয় মস্কো
উত্তর-পশ্চিম সেন্ট পিটার্সবার্গ, কালিনিনগ্রাদ
ভলগা নিঝনি নোভগরদ, কাজান, সামারা
দক্ষিণ রোস্তভ-ন্য-দানু, ভলগোগ্রাদ, সোচি
উরাল ইয়েকাতেরিনবুর্গ

ভূগোল

রাশিয়া ইউরেশিয়া ভূখণ্ডের উত্তর অংশের বেশির ভাগ এলাকা জুড়ে বিস্তৃত। পূর্ব ইউরোপ এর বেশির ভাগ অংশ রাশিয়াতে পড়েছে। এটি আয়তনের বিচারে বিশ্বের বৃহত্তম দেশ। বিশাল রাশিয়ার প্রকৃতি একই সাথে বৈচিত্র্যময় ও বৈচিত্র্যহীন। উত্তর থেকে দক্ষিণে তুন্দ্রা, তৈগা, স্তেপ ও অর্ধ-ঊষর মরুভূমি বিস্তৃত। দেশটিতে ৪০টি ইউনেস্কো জীবমণ্ডল সংরক্ষণ এলাকা (Biosphere Reserve) রয়েছে। রাশিয়া বিশ্বের সর্বপ্রথম বৃহত্তম দেশ এবং প্রথম শীতলতম দেশ বলে এ দেশে সারাবছর হিমশীতল এবং শৈত্যপূর্ণ থাকে। অতিরিক্ত আর্কটিক বরফাচ্ছন্নের, অতি উচ্চভূমি এবং রুশ প্রকৃতির হেতু দ্বারা শৈত্যপ্রবাহ সৃষ্টি হয় এবং সারাদিন শৈত্যপ্রবাহ চলতে থাকে। এই দেশে বছরে ১০ মাস শৈত্যপ্রবাহ (সেপ্টেম্বর-মে) এবং ৮ মাস বরফাচ্ছন্ন (অক্টোবর-এপ্রিল) হয়ে থাকে। রাশিয়ার সাইবেরিয়া এলাকায় সারাদিন ঠাণ্ডা ও শৈত্যপ্রবাহ থাকে এবং পশ্চিম-দক্ষিণাংশে গরম থাকে। বিধায়, রাশিয়া দেশটি হাড়কাঁপানি ঠাণ্ডা বলে এখানে থাকাটা বরং খুবই কষ্টকর এবং প্রতিকূল।

অর্থনীতি

রাশিয়া: নামগত উৎপত্তি, ইতিহাস, রাজনীতি 
মস্কো বিশ্বের বৃহত্তম নগর অর্থনীতির একটি এবং এটি ইউরোপের একটি প্রধান আর্থিক কেন্দ্র

রাশিয়ার ব্যাপক খনিজ ও জ্বালানি সম্পদ একে বিশ্বের বৃহত্তম মজুদদার হিসেবে তৈরি করেছে। এটি বিশ্বের সর্বোচ্চ তেল ও গ্যাস উৎপাদনকারী দেশ। দেশটি পারমাণবিক শক্তি সম্পন্ন পাঁচটি স্বীকৃত দেশের মধ্যে অন্যতম এবং দেশটির বিশ্বের বৃহত্তম ধ্বংসাত্মক অস্ত্রভাণ্ডার রয়েছে। রাশিয়া একটি পরাক্রমশালী রাষ্ট্র যেটি জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের স্থায়ী সদস্য এবং জি ৮, জি ২০, দি কাউন্সিল অফ ইউরোপ, দি এশিয়া প্যাসিফিক ইকোনোমিক কোঅপারেশন, সাংহাই সহযোগিতা সংস্থা, ইউরেশীয় অর্থনৈতিক কমিউনিটি, ইউরোপ নিরাপত্তা সংগঠন কাউন্সিল (ও এস সি ই) ও বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার সদস্য। স্বাধীন রাষ্ট্রের কমনওয়েলথের অন্যতম সদস্য।

সোভিয়েত ইউনিয়নের পতনের পর রাশিয়াতে পরিকল্পিত অর্থনৈতিক ব্যবস্থার অবসান ঘটে এবং ১৯৯০-এর দশকে দেশটিতে লাগামহীনভাবে পুঁজিবাদী অর্থনীতি বিস্তার লাভ করে। এর ফলে স্বল্পসংখ্যক ক্ষমতাবান ব্যক্তির হাতে বেশির ভাগ সম্পদ কুক্ষিগত হয়।

২০০৩ সালে রুশ সরকার ইউকোস নামের তেল কোম্পানিটি ভেঙে দিলে রাশিয়ার অর্থনীতি আবার একনায়কতান্ত্রিকতার দিকে মোড় নেয়। যদিও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় ইউনিয়ন রাশিয়াকে ২০০২ সালে মুক্ত বাজার অর্থনীতি হিসেবে চিহ্নিত করে, সরকারী নিয়ন্ত্রণ এখনও সেখানে বড় ভূমিকা রাখছে।

১৯৯৮ সালে রাশিয়ার অর্থনীতিতে ধ্বস নামে, কিন্তু বিশ্ববাজারে তেলের উচ্চমূল্যের কারণে রাশিয়া এই বিপর্যয় কাটিয়ে ওঠে। রাশিয়ার অর্থনৈতিক সংস্কারের প্রয়োজন থাকলেও প্রায় এক দশক যাবত দেশটির অর্থনীতিতে ভাল প্রবৃদ্ধি অর্জিত হয়েছে। ২০০৬ সালে এর প্রবৃদ্ধির হার ছিল ৭%।

রাশিয়াতে বর্তমানে মুক্ত বাজার ব্যবস্থা প্রচলিত। প্রাকৃতিক গ্যাস, তেল, কয়লা ইত্যাদির বিশাল ভান্ডার রাশিয়ার অর্থনীতিতে বড় ভূমিকা রাখে। রাশিয়ার অর্থনীতি বিশ্বে দশম বৃহত্তম। একুশ শতকের শুরু থেকে সুষ্ঠ রাজনৈতিক ভারসাম্য এবং অভ্যন্তরীন ব্যবস্থাপনা রাশিয়ার অর্থনীতির ব্যাপকায়নে ভূমিকা রেখেছে। ২০০০ সালে রাশিয়ার জনগণের মাসিক গড়পড়তা আয় ছিল ৮০ মার্কিন ডলার, যেটা ২০১০ সালে বেড়ে দাড়ায় ২১,১৯২ রুবল (৭৫০ মার্কিন ডলারে)। সোভিয়েত ইউনিয়ন ভেঙ্গে যাবার পর ১৯৯৮ সালে রাশিয়ার জাতীয় দারিদ্রসীমার নিচে ছিল ৪০% যা ২০১০ নাগাদ ১৩% এ নেমে আসে। ২০০৬ সালের মাঝেই রাশিয়া তার বৈদেশিক ঋণের অধিকাংশ মিটিয়ে ফেলতে সক্ষম হয়, বর্তমানে দেশটি বিশ্বের বৃহৎ অর্থনীতির দেশের মাঝে খুব কম দেনাগ্রস্ত। রাশিয়ার অর্থনীতির বিশাল অংশই প্রাকৃতিক সম্পদের উপর নির্ভরশীল। বড় শিল্পায়ন প্রাধান্য দেবার মাধ্যমে প্রাকৃতিক সম্পদের উপর নির্ভরতা কমিয়ে আনার চেষ্টা চালিয়ে যাওয়া হচ্ছে। কেবল মস্কো এলাকাতেই রাশিয়ার অর্থনীতির বিশাল অংশ নিয়ন্ত্রিত হয়, এটা একটি সমস্যা। এছাড়া ১৯৯০ এর পর থেকে অবকাঠামোগত উন্নয়নও হয়নি তেমন উল্লেখযোগ্য হারে। তবে সরকার ২০২০ সাল এর মধ্যে ১ ট্রিলিয়ন মার্কিন ডলার অবকাঠামোর উন্নয়ন বাবদ খরচ করার ঘোষণা দিয়েছে।

ভাষা

রুশ ভাষা রাশিয়া বা রুশ প্রজাতন্ত্রের সরকারি ভাষা। এটিতে রাশিয়ার প্রায় ৮০% লোক কথা বলে। এছাড়াও রাশিয়াতে আরও প্রায় ৮০টিরও বেশি ভাষা প্রচলিত। এদের মধ্যে কতগুলি ভাষার আঞ্চলিক সহ-সরকারি মর্যাদা আছে, যেমন চেচেন, চুভাশ, কালমিক, কাবার্দিয়ান, কোমি, মারি, মর্দভিন, ওসেটীয়, তাতার, তুভিন, উদমুর্ত, ইয়াকুত, অ্যাভার, বুরিয়াত, বাশকির ইত্যাদি। এছাড়া বেশ কিছু মধ্য ইউরোপীয় ভাষা যেমন জার্মান, পোলীয় এবং য়িডিশ ভাষা প্রচলিত। জিপসি বা রোমানি ভাষাতেও অনেকে কথা বলে।

সংস্কৃতি

খেলাধুলা

সর্বকালীন অলিম্পিক গেমসের পদক তালিকায় রাশিয়া দ্বিতীয় স্থানে অবস্থান করছে। ১৯৮০ গ্রীষ্মকালীন অলিম্পিক ও ২০১৪ শীতকালীন অলিম্পিক রাশিয়ায় অনুষ্ঠিত হয়। ২০১৮ সালে দেশটি প্রথমবারের মতো ফিফা বিশ্বকাপ আয়োজন করে।

আরও দেখুন

রাশিয়ার রাষ্ট্রীয় ইতিহাস জাদুঘর

পাদটীকা

তথ্যসূত্র

    সরকার
    সাধারণ তথ্য
    অন্যান্য


Tags:

রাশিয়া নামগত উৎপত্তিরাশিয়া ইতিহাসরাশিয়া রাজনীতিরাশিয়া প্রশাসনিক অঞ্চলসমূহরাশিয়া ভূগোলরাশিয়া অর্থনীতিরাশিয়া ভাষারাশিয়া সংস্কৃতিরাশিয়া খেলাধুলারাশিয়া আরও দেখুনরাশিয়া পাদটীকারাশিয়া তথ্যসূত্ররাশিয়া বহিঃসংযোগরাশিয়াআজারবাইজানআলাস্কাইউক্রেনউত্তর কোরিয়াএস্তোনিয়াকাজাখস্তানকালিনিনগ্রাদচীনজর্জিয়াজাপাননরওয়েপূর্ব ইউরোপপোল্যান্ডফিনল্যান্ডবেরিং প্রণালীবেলারুশমঙ্গোলিয়ামার্কিন যুক্তরাষ্ট্ররুশ ভাষালাটভিয়ালিথুয়ানিয়া

🔥 Trending searches on Wiki বাংলা:

বৈশাখপৃথিবী২০২২–২৩ উয়েফা চ্যাম্পিয়নস লিগনীল বিদ্রোহইতিহাসফুটবলকাজী নজরুল ইসলামের রচনাবলিসিটি অফ ম্যানচেস্টার স্টেডিয়ামবগুড়া জেলাওয়েবসাইটরক্তভারতহিমেল আশরাফকৃত্তিবাসী রামায়ণবাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম এক্সপ্লোরেশন এন্ড প্রোডাকশন কোম্পানী লিমিটেডক্রিয়েটিনিনবিরাট কোহলিভীমরাও রামজি আম্বেদকরনিরাপদ যৌনতারাদারফোর্ড পরমাণু মডেলকালেমাদোয়া কুনুতশ্রীকৃষ্ণকীর্তনকুষাণ সাম্রাজ্যমঙ্গল শোভাযাত্রাবৈশাখী মেলাবাংলাদেশ ও জিম্বাবুয়ের মধ্যকার একদিনের আন্তর্জাতিক ক্রিকেট ম্যাচের তালিকাআবু হানিফাবাংলাদেশের জনমিতিসাদিয়া জাহান প্রভাব্যাংকসলিমুল্লাহ খানকানাডাঅশ্বত্থবিতর নামাজমুসাহেমচন্দ্র বন্দ্যোপাধ্যায়বাংলাদেশের সংস্কৃতিবাংলাদেশের কওমি মাদ্রাসার তালিকাবাংলাদেশ পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ডকৃত্তিবাস ওঝাপূবালী ব্যাংক পিএলসিকাতারইউনিলিভারচৈতন্যচরিতামৃতবাংলাদেশের স্বাধীনতার ঘোষণাপত্রমহাসাগরকুরআনের সূরাসমূহের তালিকাস্বাধীনতা দিবস (ভারত)অমর সিং চমকিলাইহুদি ধর্মনরেন্দ্র মোদী স্টেডিয়ামচিকিৎসকক্রোমোজোমসমকামিতাইসরায়েল–হামাস যুদ্ধলিওনেল মেসিদ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনএকাদশীপূর্ণিমা (অভিনেত্রী)বাংলাদেশের সর্বাধিক ব্যবসাসফল চলচ্চিত্রসমূহের তালিকাপুরুষে পুরুষে যৌনতাক্রিয়াপদব্যঞ্জনবর্ণপশ্চিমবঙ্গের জেলাবিন্দুলক্ষ্মীদারাজঈদুল আযহাগাঁজাবাংলাদেশের ইউনিয়নের তালিকাসিঙ্গাপুরঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়মুজিবনগর সরকারলিঙ্গ উত্থান ত্রুটিঢাকা জেলাপ্রার্থনা ফারদিন দীঘি🡆 More