বুরুন্ডি

বুরুন্ডি (/bəˈrʊndi/ (ⓘ) bə-RUUN-dee or /bəˈrʌndi/ bə-RUN-dee), আনুষ্ঠানিকভাবে বুরুন্ডি প্রজাতন্ত্র (Rundi: Repuburika y’Uburundi ; সোয়াহিলি: Jamuhuri ya Burundi; ফরাসি: République du Burundi ) হচ্ছে পূর্ব আফ্রিকার একটি স্থলবেষ্টিত রাষ্ট্র। এর উত্তরে রুয়ান্ডা, পূর্বে ও দক্ষিণে তানজানিয়া, পশ্চিমে তাংগানিকা হ্রদ ও গণতান্ত্রিক কঙ্গো প্রজাতন্ত্র (প্রাক্তন জায়ার)। এলাকাটি অতীতে গোত্র রাজারা শাসন করত। ১৯শ শতকের শেষে এসে জার্মানি অঞ্চলটি দখল করে উপনিবেশ স্থাপন করে। ১৯৬২ সালে স্বাধীনতা লাভের আগ পর্যন্ত এটি প্রথমে জার্মান ও পরবর্তীতে বেলজীয় উপনিবেশ ছিল। দেশটির মধ্যভাগে অবস্থিত গিতেগা (Gitega) এর রাজনৈতিক রাজধানী এবং বুজুম্বুরা অর্থনৈতিক রাজধানী ও বৃহত্তম শহর। বুরুন্ডি বিশ্বের অন্যতম দরিদ্র একটি দেশ।

প্রজাতন্ত্রী বুরুন্ডি

বুরুন্ডির জাতীয় পতাকা
পতাকা
বুরুন্ডির জাতীয় মর্যাদাবাহী নকশা
জাতীয় মর্যাদাবাহী নকশা
নীতিবাক্য: "Ubumwe, Ibikorwa, Iterambere"  (কিরুন্দি)
"Unité, Travail, Progrès"  (ফরাসি)
"Unity, Work, Progress"  
(ইংরেজি)
"একতা, কাজ, অগ্রগতি"
জাতীয় সঙ্গীত: Burundi bwacu
বুরুন্ডি বওয়াকু
বুরুন্ডির অবস্থান
রাজধানীগিতেগা (রাজনৈতিক)বুজুম্বুরা (অর্থনৈতিক)
বৃহত্তম নগরীবুজুম্বুরা
সরকারি ভাষারুন্ডি, ফরাসি
জাতীয়তাসূচক বিশেষণবুরুন্ডিয়ান
সরকারপ্রজাতন্ত্র
• রাষ্ট্রপতি
পিয়ের কুরুনজিজা
স্বাধীনতা 
• তারিখ
১লা জুলাই ১৯৬২
আয়তন
• মোট
২৭,৮৩৪ কিমি (১০,৭৪৭ মা) (১৪২তম)
• পানি (%)
১০
জনসংখ্যা
• ২০২০ আনুমানিক
১১,৮৬৫,৮২১ (৭৭তম)
• ২০০৮ আদমশুমারি
৮,০৫৩,৫৭৪
• ঘনত্ব
৪০১.৬/কিমি (১,০৪০.১/বর্গমাইল) (২০তম)
জিডিপি (পিপিপি)২০২২ আনুমানিক
• মোট
$১০.৮ বিলিয়ন (১৬৪তম)
• মাথাপিছু
$৮৬৫ (১৯৩তম)
জিডিপি (মনোনীত)২০২২ আনুমানিক
• মোট
$৩.৬ বিলিয়ন (১৭৩তম)
• মাথাপিছু
$২৯২ (১৯২তম)
জিনি (২০১৩)৩৯.২
মাধ্যম
মানব উন্নয়ন সূচক (2015)হ্রাস ০.৪২৬
নিম্ন · ১৮৭তম
মুদ্রাবুরুন্ডিয়ান ফ্রাঙ্ক (FBu) (BIF)
সময় অঞ্চলইউটিসি+২ (মধ্য আফ্রিকার সময়|CAT)
• গ্রীষ্মকালীন (ডিএসটি)
ইউটিসি+২ (পর্যবেক্ষণ করা হয়নি)
কলিং কোড১৫৭
ইন্টারনেট টিএলডি.বিআই
  1. Before 1966, "Ganza Sabwa".
  2. Estimate is based on regression; other PPP figures are extrapolated from the latest International Comparison Programme benchmark estimates.
বুরুন্ডি
২০০৬ সালে রাজধানী বুজুম্বুরার দৃশ্য

নামকরণ

আধুনিক বুরুন্ডির নামকরণ করা হয়েছে বুরুন্ডির রাজার নামে, যিনি ষোড়শ শতকে এই অঞ্চল শাসন শুরু করেছিলেন। শেষ পর্যন্ত এই অঞ্চলের হা জনগোষ্ঠী থেকে এর নামটি প্রাপ্ত হয়েছে বলে ধারণা করা হয়, যাদের উৎপত্তিস্থল বুহা নামে পরিচিত ছিল।

ইতিহাস

বুরুন্ডি ১৬ শতকে আফ্রিকান গ্রেট লেক অঞ্চলে একটি ছোট রাজ্য হিসাবে উদ্ভূত হয়েছিল। ইউরোপীয় যোগাযোগের পরে এটি রুয়ান্ডা রাজ্যের সাথে একত্রিত ছিল এবং রুয়ান্ডা-উরুন্ডির উপনিবেশে পরিণত হয়েছিল। এরপর প্রথমে জার্মানি এবং পরে বেলজিয়াম দ্বারা উপনিবেশ করা হয়েছিল। উপনিবেশটি ১৯৬২ সালে স্বাধীনতা লাভ করে এবং আবার রুয়ান্ডা এবং বুরুন্ডিতে বিভক্ত হয়। এটি আফ্রিকার কয়েকটি দেশের মধ্যে (যেমন রুয়ান্ডা, বতসোয়ানা, লেসোথো এবং এসওয়াতিনি) একটি প্রাক-ঔপনিবেশিক যুগের আফ্রিকান রাষ্ট্রের সরাসরি আঞ্চলিক ধারাবাহিকতা।

বুরুন্ডিয়ান রাজ্যের প্রথম প্রমাণ মেলে ষোড়শ শতকের শেষের দিকে যেখানে এটি পূর্ব পাদদেশে আবির্ভূত হয়েছিল। পরবর্তী শতাব্দীতে এটি ছোট প্রতিবেশীকে সংযুক্ত করে আরও বিস্তৃত হয়। গ্রেট লেক অঞ্চলের বুরুন্ডি কিংডম বা উরুন্ডি একটি প্রথাগত রাজা কর্তৃক শাসিত একটি রাষ্ট্র ছিল এবং তার অধীনে বেশ কয়েকজন রাজকুমার ছিল; এবং উত্তরাধিকার সংগ্রাম ছিল সাধারণ। মওয়ামি (শাসক) নামে পরিচিত এই রাজা একটি রাজকীয় অভিজাততন্ত্রের (গানওয়া) নেতৃত্ব দিতেন যারা বেশিরভাগ জমির মালিক ছিল। মওয়ামি রাজা তৎকালীন স্থানীয় কৃষক (প্রধানত হুতু) এবং পশুপালকদের (প্রধানত তুতসি) কাছ থেকে চাঁদা বা ট্যাক্স আদায় করত।

বুরুন্ডি কিংডম

১৮ শতকের মাঝামাঝি সময়ে তুতসি রাজপরিবার উবুগাবাইরের বিকাশের সাথে ভূমি, উৎপাদন এবং বন্টনের উপর কর্তৃত্ব একীভূত করে—এটি একটি পৃষ্ঠপোষক-ক্লায়েন্ট সম্পর্ক, যেখানে জনগণ শ্রদ্ধাভক্তি এবং জমির মেয়াদের বিনিময়ে রাজকীয় সুরক্ষা পায়। এই সময়ের মধ্যে রাজদরবার তুতসি-বান্যারুগুরুর সমন্বয়ে গঠিত হয়েছিল। তুতসি-হিমারদের মতো অন্যান্য যাজকদের তুলনায় তাদের সামাজিক মর্যাদা বেশি ছিল। এই সমাজের নিম্ন স্তরে সাধারণত হুতু জাতিরা ছিল এবং স্তরের একেবারে নীচে ছিল ত্বোয়া (Twa) জনগোষ্ঠী। কিছু হুতু জনগণ আভিজাত্যের অন্তর্গত ছিল এবং এইভাবে রাষ্ট্রের কাজকর্মেও তাঁদের গুরুত্ব বাড়তেছিল।

হুতু বা তুতসির শ্রেণিবিভাগ শুধুমাত্র জাতিগত মানদণ্ডের ভিত্তিতে ছিল না। হুতু চাষীরা মূলত সম্পদ এবং গবাদি পশু পালন করত তাই তাদেরকে তুতসির উচ্চ সামাজিক মর্যাদা দেওয়া হয়েছিল। অন্যদিকে, তুতসিদের এমনও খবর রয়েছে যারা তাদের সমস্ত গবাদি পশু হারিয়েছে এবং পরবর্তীকালে তাদের উচ্চ মর্যাদাও হারিয়েছে, তাই তাদেরকে হুতু বলা হত। এইভাবে হুতু এবং তুতসির মধ্যে পার্থক্যটিও একটি বিশুদ্ধ জাতিগত ধারণার পরিবর্তে একটি সামাজিক-সাংস্কৃতিক ধারণায় রূপ নেয়। হুতু এবং তুতসি সম্প্রদায়ের মধ্যে বিবাহের প্রচলনটি অনেক পুরনো।

ইউরোপীয় শাসন

১৮৮৪ সাল থেকে জার্মান ইস্ট আফ্রিকা কোম্পানি আফ্রিকান গ্রেট লেক অঞ্চলে সক্রিয় ছিল। জার্মান ইস্ট আফ্রিকা কোম্পানি, ব্রিটিশ সাম্রাজ্য এবং জাঞ্জিবার সালতানাতের মধ্যে তীব্র উত্তেজনা এবং সীমান্ত বিরোধের ফলে জার্মান সাম্রাজ্যকে আবুশিরি বিদ্রোহ দমন এবং এই অঞ্চলে সাম্রাজ্যের স্বার্থ রক্ষা করার আহ্বান জানানো হয়েছিল। জার্মান ইস্ট আফ্রিকা কোম্পানি ১৮৯১ সালে জার্মান সাম্রাজ্যের কাছে তাদের অধিকার হস্তান্তর করে, এইভাবে জার্মানরা পূর্ব আফ্রিকায় জার্মান উপনিবেশ প্রতিষ্ঠা করে, যার মধ্যে বুরুন্ডি (উরুন্ডি), রুয়ান্ডা (রুয়ান্ডা) এবং তানজানিয়ার মূল ভূখণ্ডের অংশ (পূর্বে টাঙ্গানিকা নামে পরিচিত ছিল)। জার্মান সাম্রাজ্য ১৮৮০ -এর শেষের দিকে রুয়ান্ডা এবং বুরুন্ডিতে সশস্ত্র বাহিনী স্থাপন করেছিল। বর্তমান সময়ের গিতেগা শহরের অবস্থান রুয়ান্ডা-উরুন্ডি অঞ্চলের প্রশাসনিক কেন্দ্র হিসেবে কাজ করে।

প্রথম বিশ্বযুদ্ধের সময় পূর্ব আফ্রিকা অভিযানকালে আফ্রিকান গ্রেট লেক অঞ্চলকে ব্যাপকভাবে প্রভাবিত করেছিল। মিত্রশক্তির বেলজিয়াম ও ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক বাহিনী জার্মান উপনিবেশের উপর সমন্বিত আক্রমণ শুরু করে। বুরুন্ডিতে অবস্থানরত জার্মান সেনাবাহিনী বেলজিয়ান সেনাবাহিনীর সংখ্যাগত শ্রেষ্ঠত্বের কারণে পিছু হটতে বাধ্য হয় এবং ১৭ জুন ১৯১৬ সাল নাগাদ বুরুন্ডি ও রুয়ান্ডা দখল করে নেয়। যুদ্ধের পর, ভার্সাই চুক্তির রূপরেখা অনুসারে জার্মানি পূর্ব আফ্রিকার পশ্চিম অংশের নিয়ন্ত্রণ বেলজিয়ামের কাছে হস্তান্তর করতে বাধ্য হয়।

২০ অক্টোবর, ১৯২৪ সালে রুয়ান্ডা-উরুন্ডি একটি বেলজিয়ান লীগ অফ নেশনস ম্যান্ডেট টেরিটরিতে পরিণত হয়, যার রাজধানী ছিল উসুম্বুরা। ব্যবহারিক দিক থেকে এটি বেলজিয়ান ঔপনিবেশিক সাম্রাজ্যের অংশ হিসেবে বিবেচিত হত। বুরুন্ডি, রুয়ান্ডা-উরুন্ডির অংশ হিসেবে ইউরোপীয় কর্তৃপক্ষের উপস্থিতি সত্ত্বেও তারা রাজবংশ অব্যাহত রাখে।

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর, রুয়ান্ডা-উরুন্ডি অঞ্চল বেলজিয়ামের প্রশাসনিক কর্তৃত্বের অধীনে জাতিসংঘের ট্রাস্ট টেরিটরি হিসেবে শ্রেণীবদ্ধ হয়। ১৯৪০-এর দশকে একাধিক নীতির কারণে সারা দেশে বিভাজন ঘটে। ১৯৪৩ সালের ৪ অক্টোবর বুরুন্ডি সরকারের আইনী বিভাগে প্রধান এবং নিম্ন প্রধানদের মধ্যে ক্ষমতা বিভক্ত হয়। ১৯৪৮ সালে বেলজিয়াম অঞ্চলটিকে রাজনৈতিক দল গঠনের অনুমতি দেয়। এই দলগুলোই পরবর্তীতে (১ জুলাই ১৯৬২ সালে) বেলজিয়াম থেকে বুরুন্ডির স্বাধীনতা অর্জনে অবদান রাখে।

স্বাধীনতা

বুরুন্ডি 
বুজুম্বুরার স্বাধীনতা স্কোয়ার এবং স্মৃতিস্তম্ভ।

২০ জানুয়ারী, ১৯৫৯ সালে বুরুন্ডির শাসক মোয়ামি মোয়াবুস্তা ৪ (Mwami Mwambutsa IV) বেলজিয়াম থেকে বুরুন্ডির স্বাধীনতা এবং রুয়ান্ডা-উরুন্ডি ইউনিয়ন বিলুপ্ত করার অনুরোধ জানান। পরের কয়েকমাসে বুরুন্ডির রাজনৈতিক দলগুলো বেলজিয়ামের ঔপনিবেশিক শাসনের অবসান এবং রুয়ান্ডা ও বুরুন্ডিকে আলাদা করার পক্ষে সমর্থন দিতে শুরু করে। এই রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে প্রথম এবং বৃহত্তম দল ছিল ইউনিয়ন ফর ন্যাশনাল প্রোগ্রেস বা (UPRONA)।

বুরুন্ডির স্বাধীনতায় প্রথম ধাক্কা লাগে রুয়ান্ডার বিপ্লব এবং এর সাথে সংঘটিত অস্থিতিশীলতা ও জাতিগত সংঘাত। রুয়ান্ডার এ বিপ্লবের ফলে ১৯৫৯ থেকে ১৯৬১ সময়কালে অনেক রুয়ান্ডার তুতসি শরণার্থী বুরুন্ডিতে এসেছিলেন। বুরুন্ডির প্রথম নির্বাচন ১৯৬১ সালের ৮ সেপ্টেম্বর অনুষ্ঠিত হয়। এতে যুবরাজ লুই রোগাসোরের নেতৃত্বে ইউনিয়ন ফর ন্যাশনাল প্রোগ্রেস দলটি ৮০% এর বেশি ভোটে জয়লাভ করে। নির্বাচনের পরিপ্রেক্ষিতে ১৩ অক্টোবর, ২৯ বছর বয়সী যুবরাজ লুই রোগাসোরকে হত্যা করা হয়।

দেশটি ১ জুলাই, ১৯৬২ সালে স্বাধীনতা দাবি করে এবং আইনত তার নাম রুয়ান্ডা-উরুন্ডি থেকে বুরুন্ডিতে পরিবর্তন করে। এরপর বুরুন্ডি একটি সাংবিধানিক রাজতন্ত্রে পরিণত হলে যুবরাজ রোগাসোরের পিতা মোয়ামি মোয়াবুস্তা -৪ দেশের রাজা হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ১৮ সেপ্টেম্বর, ১৯৬২ সালে বুরুন্ডি জাতিসংঘে যোগদান করে।

বুরুন্ডি 
পিয়েরে নকুরুনজিজা, ২০০৫ থেকে ২০২০ সাল পর্যন্ত বুরুন্ডির রাষ্ট্রপতি ছিলেন।

সরকার ও রাজনীতি

বুরুন্ডির রাজনৈতিক ব্যবস্থা হলো একটি বহুদলীয় রাষ্ট্রের উপর ভিত্তি করে একটি রাষ্ট্রপতি প্রতিনিধি গণতান্ত্রিক প্রজাতন্ত্র। বুরুন্ডির রাষ্ট্রপতি রাষ্ট্রের প্রধান এবং সরকার প্রধান। বুরুন্ডিতে বর্তমানে ২১টি নিবন্ধিত দল রয়েছে। ১৩ মার্চ ১৯৯২, তুতসি অভ্যুত্থান নেতা পিয়েরে বুয়োয়া একটি সংবিধান প্রতিষ্ঠা করেন, যা একটি বহু-দলীয় রাজনৈতিক প্রক্রিয়া প্রদান এবং বহু-দলীয় প্রতিযোগিতা প্রতিফলিত করে। ছয় বছর পর, ৬ জুন ১৯৯৮-এ সংবিধান পরিবর্তন করা হয়, জাতীয় পরিষদের আসন প্রসারিত করা হয় এবং দুই ভাইস-প্রেসিডেন্টের জন্য বিধান করা হয়। আরুশা অ্যাকর্ডের কারণে, বুরুন্ডি ২০০০ সালে একটি অন্তর্বর্তীকালীন সরকার প্রণয়ন করে।

বুরুন্ডির আইনসভা শাখা হলো একটি দ্বিকক্ষ বিশিষ্ট, যা ট্রানজিশনাল ন্যাশনাল অ্যাসেম্বলি এবং ট্রানজিশনাল সেনেট নিয়ে গঠিত। ২০০৪ সালের হিসাবে ট্রানজিশনাল ন্যাশনাল অ্যাসেম্বলি ১৭০ সদস্য নিয়ে গঠিত। বুরুন্ডিতে ফ্রন্ট ফর ডেমোক্রেসির ৩৮ শতাংশ আসন রয়েছে এবং ইউপিআরওএনএ দ্বারা নিয়ন্ত্রিত সমাবেশের ১০ শতাংশ রয়েছে। বাকি ৫২টি আসন অন্য দলগুলোর দখলে। বুরুন্ডির সংবিধান ৬০% হুতু, ৪০% তুতসি, এবং ৩০ শতাংশ মহিলা সদস্য, পাশাপাশি তিনজন বাটোয়া সদস্যের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ হতে ট্রানজিশনাল ন্যাশনাল অ্যাসেম্বলিতে প্রতিনিধিত্বকে বাধ্যতামূলক করে। জাতীয় পরিষদের সদস্যরা জনপ্রিয়তার ভোটে নির্বাচিত হন এবং পাঁচ বছরের মেয়াদে থাকেন।

ট্রানজিশনাল সেনেটে ৫১জন সদস্য রয়েছে এবং তিনটি আসন প্রাক্তন রাষ্ট্রপতিদের জন্য সংরক্ষিত। বুরুন্ডির সংবিধানের শর্তাবলীর কারণে সিনেট সদস্যদের ৩০% মহিলা হতে হবে। সিনেটের সদস্যরা ইলেক্টোরাল কলেজ দ্বারা নির্বাচিত হয়, যা বুরুন্ডির প্রতিটি প্রদেশ এবং কমিউনের সদস্যদের নিয়ে গঠিত। বুরুন্ডির ১৮টি প্রদেশের প্রতিটির জন্য একজন হুতু এবং একজন তুতসি সিনেটর বেছে নেওয়া হয়ে থাকে। ট্রানজিশনাল সেনেটের মেয়াদ পাঁচ বছর।

একত্রে, বুরুন্ডির আইনসভা শাখা পাঁচ বছরের মেয়াদে রাষ্ট্রপতি নির্বাচন করে। বুরুন্ডির রাষ্ট্রপতি তার মন্ত্রী পরিষদে কর্মকর্তাদের নিয়োগ করেন, যা নির্বাহী শাখারও অংশ। রাষ্ট্রপতি মন্ত্রী পরিষদে পরিবেশন করার জন্য ট্রানজিশনাল সেনেটের চৌদ্দ (১৪) সদস্যকেও বেছে নিতে পারেন। মন্ত্রী পরিষদের সদস্যদের অবশ্যই বুরুন্ডির আইনসভার দুই-তৃতীয়াংশ দ্বারা অনুমোদিত হতে হবে। রাষ্ট্রপতি দুই ভাইস-প্রেসিডেন্টও বেছে নেন। ২০১৫ সালের নির্বাচনের পর, বুরুন্ডির প্রেসিডেন্ট ছিলেন পিয়েরে নকুরুনজিজা। প্রথম ভাইস-প্রেসিডেন্ট ছিলেন থেরেন্স সিনুনগুরুজা, এবং দ্বিতীয় ভাইস-প্রেসিডেন্ট ছিলেন গেরভাইস রুফিকিরি।

কোর সুপ্রেম (সুপ্রিম কোর্ট) হলো বুরুন্ডির সর্বোচ্চ আদালত। সুপ্রিম কোর্টের সরাসরি নীচে তিনটি আপিল আদালত রয়েছে। প্রথম দৃষ্টান্তের ট্রাইব্যুনালগুলো বুরুন্ডির প্রতিটি প্রদেশে বিচার বিভাগীয় আদালতের পাশাপাশি ১২৩টি স্থানীয় ট্রাইব্যুনাল হিসাবে ব্যবহৃত হয়।

মানবাধিকার

সাংবাদিক জিন-ক্লদ কাভুমবাগুকে একাধিকবার গ্রেফতার ও বিচারের জন্য হিউম্যান রাইটস ওয়াচ সহ মানবাধিকার সংস্থাগুলো দ্বারা বুরুন্ডির সরকার বারবার সমালোচিত হয়েছে। সেজন্য অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল (এআই) তাকে 'বিবেকের বন্দী' হিসেবে নাম দিয়েছে।

এপ্রিল, ২০০৯ সালে, বুরুন্ডি সরকার সমকামিতাকে অপরাধী করার আইন পরিবর্তন করে। সম্মতিমূলক সমকামী সম্পর্কের জন্য দোষী সাব্যস্ত ব্যক্তিরা দুই থেকে তিন বছরের জেল এবং ৫০,০০০ থেকে ১০০,০০০ বুরুন্ডিয়ান ফ্রাঙ্কের জরিমানা গুনতে হবে। অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল এই কর্মের নিন্দা করেছে, এটিকে তারা আন্তর্জাতিক এবং আঞ্চলিক মানবাধিকার আইনের অধীনে বুরুন্ডির বাধ্যবাধকতা লঙ্ঘন বলে অভিহিত করেছে। এটি সংবিধানের বিরুদ্ধে, যা গোপনীয়তা অধিকারের নিশ্চয়তা দেয়।

বুরুন্ডি আনুষ্ঠানিকভাবে ২৭ অক্টোবর, ২০১৭ তারিখে বিশ্বের প্রথম দেশ হিসেবে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত (ICC) ত্যাগ করে। জাতিসংঘ কর্তৃক সেপ্টেম্বর, ২০১৭ -এর রিপোর্টে বিভিন্ন অপরাধ এবং মানবাধিকার লঙ্ঘন, যেমন বিচারবহির্ভূত হত্যা, নির্যাতন এবং যৌন সহিংসতার জন্য দেশটিকে অভিযুক্ত করার পরে এই পদক্ষেপ গৃহীত হয়। আইসিসি ৯ নভেম্বর, ২০১৭-এ ঘোষণা করেছিল যে বুরুন্ডি সদস্য হওয়ার সময় থেকে এখনও মানবাধিকার লঙ্ঘন করে আসছে এবং এখন পর্যন্ত তারা বিচারের আওতায় রয়েছে।

প্রশাসনিক অঞ্চলসমূহ

বুরুন্ডি 
বুরুন্ডির রাজ্য সমূহের মানচিত্র

বুরুন্ডি ১৮টি প্রদেশে বিভক্ত, এরমধ্যে ১১৯টি কমিউন এবং ২,৬৩৮টি কোলাইন (পাহাড়)। প্রতিটি প্রাদেশিক সরকার এই সীমানাগুলোর উপর গঠিত।

বুরুন্ডির প্রদেশ এবং কমিউনগুলো ১৯৫৯ সালে ক্রিসমাসের দিনে একটি বেলজিয়ান ঔপনিবেশিক ডিক্রি দ্বারা তৈরি করা হয়েছিল। তারা সর্দারদের পূর্ব-বিদ্যমান ব্যবস্থা প্রতিস্থাপন করেছে।

২০০০ সালে বুজুম্বুরাকে ঘিরে প্রদেশ ব্যবস্থা বুজুম্বুরা গ্রামীণ এবং বুজুম্বুরা মাইরি নামে দুটি প্রদেশে বিভক্ত হয়।

২০২২ সালের জুলাই মাসে বুরুন্ডি সরকার দেশের আঞ্চলিক মহকুমাগুলোর একটি পুঙ্খানুপুঙ্খরূপে ঘোষণা করেছে। প্রস্তাবিত পরিবর্তনটি প্রদেশের পরিমাণ ১৮ থেকে কমিয়ে ৫-এ নামিয়ে আনবে এবং কমিউনের পরিমাণ ১১৯ থেকে কমিয়ে ৪২-এ নামিয়ে আনবে বলে জানা যায়। পরিবর্তনটি কার্যকর করার জন্য এখন শুধু বুরুন্ডির সংসদের অনুমোদন প্রয়োজন।

ভূগোল

বুরুন্ডি 
মানচিত্রে বুরুন্ডির ভৌগোলিক অবস্থান

আফ্রিকার ক্ষুদ্রতম দেশগুলোর মধ্যে একটি বুরুন্ডি। দেশটি স্থলবেষ্টিত এবং একটি নিরক্ষীয় জলবায়ু রয়েছে। বুরুন্ডি আলবার্টিন রিফটের একটি অংশ, পূর্ব আফ্রিকান রিফটের পশ্চিম সম্প্রসারণ। এটি আফ্রিকার কেন্দ্রে একটি ঘূর্ণায়মান মালভূমিতে অবস্থিত। বুরুন্ডির উত্তরে রুয়ান্ডা, পূর্ব ও দক্ষিণ-পূর্বে তানজানিয়া এবং পশ্চিমে গণতান্ত্রিক প্রজাতন্ত্র কঙ্গো। এটি আলবার্টিন রিফ্ট মন্টেন বন, সেন্ট্রাল জাম্বেজিয়ান মিওম্বো বনভূমি এবং ভিক্টোরিয়া বেসিন বন-সাভানা মোজাইক ইকোরিজিয়নের মধ্যে অবস্থিত।

কেন্দ্রীয় মালভূমির গড় উচ্চতা হলো ১,৭০৭ মিটার (৫,৬০০ ফুট), সীমানায় নিম্ন উচ্চতা রয়েছে। সর্বোচ্চ শিখর মাউন্ট হেহা ২,৬৮৫ মিটার (৮,৮১০ ফুট), যেটির বৃহত্তম শহর এবং অর্থনৈতিক রাজধানী বুজুম্বুরার দক্ষিণ-পূর্বে অবস্থিত। নীল নদের উৎস বুরুরি প্রদেশে, এবং ভিক্টোরিয়া হ্রদ থেকে রুভিরোঞ্জা নদীর মাধ্যমে এর প্রধান জলের সাথে যুক্ত। আরেকটি প্রধান হ্রদ হলো লেক টাঙ্গানিকা, বুরুন্ডির দক্ষিণ-পশ্চিম কোণে অনেকাংশে এটির অবস্থান।

বুরুন্ডিতে দুটি জাতীয় উদ্যান রয়েছে: উত্তর-পশ্চিমে কিবিরা ন্যাশনাল পার্ক (রুয়ান্ডার নিয়ংওয়ে ফরেস্ট ন্যাশনাল পার্কের সংলগ্ন রেইনফরেস্টের একটি ছোট অঞ্চল), এবং উত্তর-পূর্বে রুবুবু ন্যাশনাল পার্ক (রুরুবু নদীর ধারে, রুভুবু বা রুভুউ নামেও পরিচিত)। উভয়ই ১৯৮২ সালে বন্যপ্রাণী সংখ্যা সংরক্ষণের জন্য প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল।

শারীরিক ভূতত্ত্ব

বুরুন্ডি 
স্যাটেলাইট থেকে বুরুন্ডির ভূমি

বুরুন্ডি ২৭,৮৩০ বর্গ কিলোমিটার (১০,৭৫০ বর্গ মাইল) আয়তনের সমান একটি এলাকা জুড়ে আছে, যার মধ্যে ২৫,৬৮০ বর্গ কিলোমিটার (৯,৯২০ বর্গ মাইল) ভূমি। দেশটির ১,১৪০ কিলোমিটার (৭১০ মাইল) স্থল সীমান্ত রয়েছে: এরমধ্যে ২৩৬ কিলোমিটার (১৪৭ মাইল) কঙ্গোর সাথে, ৩১৫ কিলোমিটার (১৯৬ মাইল) রুয়ান্ডার সাথে এবং ৫৮৯ কিলোমিটার (৩৬৬ মাইল) তানজানিয়ার সাথে সীমানা ভাগ করা হয়েছে। একটি স্থলবেষ্টিত দেশ হিসাবে বুরুন্ডির কোন উপকূলরেখা নেই। এটি কঙ্গো-নীল ডিভাইডের চূড়ায় বিস্তৃত, যা কঙ্গো এবং নীল নদের অববাহিকাকে পৃথক করেছে। নীল নদের সবচেয়ে দূরবর্তী হেডওয়াটার রুভিরোঞ্জা নদীর উৎস বুরুন্ডিতে।

ভূখণ্ড:

বুরুন্ডি 
বুরুন্ডির ভূসংস্থান

বুরুন্ডির ভূখণ্ডটি পাহাড়ি এবং পূর্বে একটি মালভূমিতে নেমে গেছে। সেন্ট্রাল জাম্বেজিয়ান মিওম্বো বনভূমি ইকোরিজিয়নের অংশ হিসেবে ওয়ার্ল্ড ওয়াইড ফান্ড ফর নেচার দ্বারা দক্ষিণ ও পূর্ব সমভূমিকে শ্রেণীবদ্ধ করা হয়েছে।

দেশের সর্বনিম্ন বিন্দু টাঙ্গানিকা হ্রদে অবস্থিত, যেটির উচ্চতা ৭৭২ মিটার (২,৫৩৩ ফুট)। দেশটির সর্বোচ্চ বিন্দুটি হেহা পর্বতে, এর উচ্চতা ২,৬৮৪ মিটার (৮,৮০৬ ফুট)। বুরুন্ডিতে বন্যা ও ভূমিধসের কারণে প্রায়ই প্রাকৃতিক বিপত্তি দেখা দেয়।

প্রাকৃতিক সম্পদ:

বুরুন্ডির মজুদ রয়েছে: নিকেল, ইউরেনিয়াম, বিরল আর্থ অক্সাইড, পিট, কোবাল্ট, তামা, প্ল্যাটিনাম (এখনও শোষিত হয়নি), ভ্যানাডিয়াম, নাইওবিয়াম, ট্যানটালাম, সোনা, টিন, টংস্টেন, কাওলিন এবং চুনাপাথর। দেশটিতে বিপুল পরিমাণ আবাদি জমি এবং জলবিদ্যুতের সম্ভাবনাও রয়েছে। বুরুন্ডিতে ২১৪.৩ বর্গ কিলোমিটার (৮২.৭ বর্গ মাইল) সেচযোগ্য জমি রয়েছে।

পরিবেশ

বুরুন্ডি 
বুরুন্ডির মালভূমি

মাটির ক্ষয় বুরুন্ডির জন্য একটি সমস্যা। অতিমাত্রায় চারণ এবং প্রান্তিক জমিতে কৃষি সম্প্রসারণের ফলে মাটির ক্ষয় হয়ে থাকে। অন্যান্য সমস্যাগুলোর মধ্যে রয়েছে: জ্বালানীর জন্য অনিয়ন্ত্রিতভাবে গাছ কাটার কারণে বন উজাড়; এবং অতিমাত্রায় আবাসস্থল তৈরির কারণে বন্যপ্রাণী হুমকির মুখে।

বন্যপ্রাণী

বুরুন্ডির বন্যপ্রাণী তার উদ্ভিদ ও প্রাণীর সমন্বয়ে গঠিত। ছোট, স্থলবেষ্টিত দেশটিতে ২,৯৫০ প্রজাতির উদ্ভিদ, ৫৯৬টি প্রজাতির পাখি, ১৬৩ প্রজাতির স্তন্যপায়ী, ৫২ প্রজাতির সরীসৃপ, ৫৬ প্রজাতির উভচর প্রাণী এবং ২১৫টি মাছের প্রজাতি রয়েছে। বন্যপ্রাণী সাম্প্রতিক বছরগুলোতে ব্যাপকভাবে হ্রাস পেয়েছে। প্রধানত তীব্র জনসংখ্যার চাপ, বনের বৃহৎ এলাকাকে কৃষি জমিতে রূপান্তর এবং ব্যাপকভাবে পশুপালনের কারণে বন্যপ্রাণী হ্রাস পাচ্ছে। দেশটির বন্যপ্রাণী সংরক্ষিত এলাকা দেশের মোট আয়তনের ৫% এর কিছু বেশি জুড়ে বিস্তৃত।

বুরুন্ডি 
উত্তর-পশ্চিম বুরুন্ডির কিবিরা ন্যাশনাল পার্কে হিপ্পোস

আইনি অবস্থা:

বেলজিয়ামের ঔপনিবেশিক শাসনের সময় বন্যপ্রাণী সংরক্ষণের জন্য কোনো জাতীয় আইন ছিল না বা কোনো জাতীয় উদ্যান প্রতিষ্ঠিত হয়নি। শুধু ব্যতিক্রম ছিল একটি বন সংরক্ষিত, যা ১৯৩৩ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। ১৯৮০ সালের আগে বন্যপ্রাণী রক্ষার জন্য সামান্য পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছিল। জারি করা প্রথম আইনটি ছিল ডিক্রি নং ১/৬, তারিখ ৩ মার্চ ১৯৮০, যার অধীনে বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ ও সংরক্ষণের জন্য জাতীয় উদ্যান (Parc Nationalaux) সংরক্ষণের প্রস্তাব করা হয়েছিল। এই ডিক্রির অধীনে বনের সীমানা নির্ধারণ করা হয়। ২৫ মার্চ ১৯৮৫ এর ফরেস্ট কোড ছিল একটি কার্যকরী আইন যার অধীনে সংরক্ষিত বনাঞ্চল নির্ধারণ করা হয়েছিল এবং সংরক্ষিত এলাকাগুলো নির্দিষ্ট করা হয়। সংরক্ষণের জন্য একটি জাতীয় ইনস্টিটিউট প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল, ১৯৮০ সালের মার্চের ডিক্রির অধীনে প্রকৃতি সংরক্ষণের জন্য জাতীয় ইনস্টিটিউট; যা এখন ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট ফর এনভায়রনমেন্ট অ্যান্ড কনজারভেশন অফ নেচার নামে নামকরণ করা হয়েছে। এটি জাতীয় উদ্যান এবং সংরক্ষণাগার স্থাপনের দায়িত্ব রয়েছে। এটি উদ্ভিদ ও প্রাণীজগতে বৈজ্ঞানিক গবেষণার পাশাপাশি ইকোট্যুরিজম প্রচার করে থাকে।

বাসস্থান, তাপমাত্রা ও অন্যান্য:

বুরুন্ডির বন্যপ্রাণী আবাসস্থল, তার ১৫টি প্রদেশ জুড়ে বিস্তৃত। যা মধ্যম গ্রীষ্মমণ্ডলীয় জলবায়ু দ্বারা প্রভাবিত এবং উচ্চতাগত পার্থক্য দ্বারা প্রভাবিত হয়। মালভূমি অঞ্চলে গড় বার্ষিক তাপমাত্রা 20 °C (68 °F) রেকর্ড করা হয় যখন রিফট ভ্যালিতে 23 °C (73 °F) তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়। এই তাপমাত্রা শুষ্ক মৌসুম জুন থেকে আগস্ট এবং আবার ডিসেম্বর থেকে জানুয়ারি পর্যন্ত স্থায়ী হয়। বর্ষাকাল অক্টোবর থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত, যার বার্ষিক বৃষ্টিপাত ৫০০-২,০০০ মিলিমিটার (২০-৭৯ ইঞ্চি)। পশ্চিম পর্বত অঞ্চলে গড় বৃষ্টিপাত হয় ১,৩৭৫ মিলিমিটার (৫৪.১ ইঞ্চি); যদিও পূর্ব মালভূমিতে বার্ষিক বৃষ্টিপাত হয় ১,১০০-১,২৫০ মিলিমিটার (৪৩-৪৯ ইঞ্চি)।

দেশটি পাহাড়ি মালভূমি দ্বারা অধ্যুষিত। মালভূমিতে উচ্চতা ১,৪০০-১,৮০০ মিটার (৪,৬০০-৫,৯০০ ফুট) থেকে পরিবর্তিত হয় এবং দেশের পূর্ব এবং দক্ষিণ-পূর্ব দিকে হ্রাসের প্রবণতা রেকর্ড করা হয়। এর জীববৈচিত্র্য বিস্তৃতভাবে স্থলজ বাস্তুতন্ত্র এবং জলজ ও আধা-জলজ বাস্তুতন্ত্রের অধীনে শ্রেণীবদ্ধ করা হয়েছে।দেশের পশ্চিম অঞ্চলটি সংকীর্ণ এবং তাঙ্গানিকা হ্রদের সীমানা, রিফ্ট উপত্যকা এবং রুসিজি নদী (কঙ্গোর সীমান্ত) দ্বারা গঠিত। দেশের পশ্চিমাঞ্চল কঙ্গো-নীল ডিভাইডের পাহাড়ি ভূখণ্ড দ্বারা গঠিত, যেখানে অনেক পাহাড় ২,৫০০ মিটার (৮,২০০ ফুট) উচ্চতায় অবস্থিত; এখানকার সর্বোচ্চ পর্বতমালা হলো মাউন্ট তেজা ২,৬৬৫ মিটার (৮,৭৪৩ ফুট) এবং হেহা পর্বত ২,৬৭০ মিটার (৮,৭৬০ ফুট)।

বুরুন্ডিতে অবস্থিত টাঙ্গানিকা হ্রদ, বিশ্বের দ্বিতীয় গভীরতম হ্রদ। দেশটিতে মাত্র 8% জলের বিস্তার রয়েছে। নীল নদ এখানকার প্রধান নদ এবং অন্যান্য নদীগুলো হলো মালাগারিসি এবং রুভুউ। নীল নদের প্রধান প্রবাহ হলো রুভিয়ারোঞ্জা, যা কাগেরা নদীর একটি উপরের শাখা। দেশের নদী ব্যবস্থা নীল নদ এবং কঙ্গো অববাহিকার দুটি প্রধান হাইড্রোগ্রাফিক্যাল অববাহিকার অধীনে পড়ে।

বুরুন্ডি 
রুসিজি নদী

সুরক্ষিত এলাকাসমূহ:

বুরুন্ডিতে তিনটি জাতীয় উদ্যান রয়েছে:

  • কিবিরা জাতীয় উদ্যানের আয়তন ৪০,০০০ হেক্টর (৯৯,০০০ একর) এবং এটি দেশের বৃহত্তম রেইনফরেস্ট।
  • রুভুবু ন্যাশনাল পার্ক (৫০,৮০০ হেক্টর (১২৬,০০ একর), এটি দেশের বৃহত্তম পার্ক এবং হাইকিং ট্রেইলের জন্য এটি বেশ পরিচিত।
  • রুসিজি ন্যাশনাল পার্ক (৯,০০০ হেক্টর (২২,০০০ একর), বুজুম্বুরা থেকে ১৫ কিলোমিটার (৯.৩ মাইল) দূরের জলাভূমি, যেখানে জলহস্তী, সিতাতুঙ্গা (জলজল হরিণ) এবং অনেক প্রজাতির পাখি রয়েছে। ১৯৯০ সালে এটিকে জাতীয় উদ্যান ঘোষণা করা হয়, এটি বুজুম্বুরার বাইরের সীমানায় রুসিজি নদীর বন্যার সমভূমিতে অবস্থিত।

জাতীয় উদ্যান ছাড়াও চারটি রিজার্ভ এলাকা রয়েছে:

  • লাখ রুহিন্দা প্রকৃতি সংরক্ষণ (৮,০০০ হেক্টর),
  • বুরুরি ফরেস্ট নেচার রিজার্ভ (৩,৩০০ হেক্টর),
  • রুমঙ্গে নেচার রিজার্ভ (৫,০০০ হেক্টর),
  • কিগওয়েনা ফরেস্ট নেচার রিজার্ভ (৮০০ হেক্টর)।

এছাড়াও, এখানে দুটি প্রাকৃতিক স্মৃতিস্তম্ভ রয়েছে: চুটস দে লা কাগেরা এবং নায়াকাজু গর্জ

বুরুন্ডি 
2007 সালে রুসিজি জাতীয় উদ্যানের দৃশ্য

উদ্ভিদ জগত

বুরুন্ডি 
প্রজাপতি গুল্ম

বুরুন্ডির উদ্ভিদজগতকে পূর্ব আফ্রিকার চিরহরিৎ গুল্মভূমি এবং গৌণ তৃণভূমি, সেইসাথে পশ্চিম পর্বত অঞ্চলের অন্তর্বর্তীকালীন রেইনফরেস্ট সহ আফ্রোমন্টেন গাছপালা দ্বারা চিহ্নিত করা হয়। হাইফেন-বাবলা এবং ব্র্যাকিস্টেজিয়া গাছ হ্রদের তীরে উল্লেখ করা হয়েছে। Brachystegia-Julbernardia (miombo) গাছ দক্ষিণ-পূর্ব সীমান্ত এলাকায় দেখা যায়। উত্তরে বুগেসেরা অঞ্চল এবং পূর্ব দিকে কুমোসো নিম্নচাপে বাবলা-কমব্রেটাম গাছ এবং ব্র্যাকিস্টেজিয়া গাছ প্রচুর পরিমাণে জন্মায়। এখানকার বন্য উদ্ভিদের অনেক প্রজাতি স্থানীয় বলে জানা যায়; এই শ্রেণীতে ৭০ প্রজাতির উদ্ভিদ রয়েছে।

বুরুন্ডি 
বুজুম্বুর ফুল

পাখি

বুরুন্ডিতে রিপোর্ট করা পাখির (avifauna) মধ্যে অন্তর্ভুক্ত ৫৯৬ প্রজাতি (৪৩৯ আবাসিক এবং ১০৯ মৌসুমী অভিবাসী)। কোন স্থানীয় পাখির প্রজাতি নেই। দেশে বার্ড লাইফ ইন্টারন্যাশনাল কর্তৃক ঘোষিত পাঁচটি গুরুত্বপূর্ণ পাখি সংরক্ষণ এলাকা রয়েছে, যা ১,০১৮ বর্গ কিলোমিটার (৩৯৩ বর্গ মাইল) এলাকা জুড়ে এবং এটি আয়তনে দেশের মোট ৩.৭%।

বার্ড লাইফ ইন্টারন্যাশনালের মতে, বিশ্বব্যাপী সংরক্ষণ উদ্বেগের ১৩টি প্রজাতি রয়েছে (ছয়টি অ-প্রজননকারী অভিবাসী, অ্যালবার্টিন রিফ্ট এবং প্যাপিরাস জলাভূমি থেকে প্রজননের ভারসাম্য)। এর মধ্যে রয়েছে ফিনিকপ্টেরাস মাইনর (এনটি), সার্কাস ম্যাক্রোরাস (এনটি), ফ্যালকো নাউমান্নি (ভিইউ), গ্যালিনাগো মিডিয়া (এনটি), গ্ল্যারিওলা নর্ডমানি (এনটি), আরদেওলা আইডিয়া (এনটি), লিবিয়াস রুব্রিফেসিস (এনটি), কুপিওর্নিস রুফোসিনকটাস (এনটি), ল্যানিয়ারিয়াস মুফুম্বিরি (এনটি), বালেনিসেপস রেক্স (এনটি), অ্যাপালিস আর্জেনটিয়া (ভিইউ), ব্র্যাডিপ্টেরাস গ্রাউরি (ভিইউ), ক্রিপ্টোস্পিজা শেলেই (ভিইউ), ক্যালামোনাস্টাইডস গ্র্যাসিলিরোস্ট্রিস (ভিইউ), এবং বুগেরানাস কারুনকুলাটাস (ভিইউ)।

অর্থনীতি

বুরুন্ডি 
বুরুন্ডির মাথাপিছু জিডিপির ঐতিহাসিক উন্নয়ন

বুরুন্ডি একটি স্থলবেষ্টিত দরিদ্র রাষ্ট্র দেশ এবং এর উৎপাদন খাত অনুন্নত। দেশটির অর্থনীতি প্রধানত কৃষিনির্ভর। ২০১৭ সালে জিডিপির ৫০% কৃষিনির্ভর এবং জনসংখ্যার ৯০% এরও বেশি কৃষি কাজ করে জীবিকানির্বাহ করে থাকে। এর মধ্যে প্রাথমিক রপ্তানি হলো কফি এবং চা, যা বৈদেশিক মুদ্রা আয়ের মোট ৯০ শতাংশ, যদিও এটি রপ্তানি জিডিপির অংশে তুলনামূলকভাবে কম। অন্যান্য কৃষি পণ্যের মধ্যে রয়েছে তুলা, চা, ভুট্টা, ঝাল, মিষ্টি আলু, কলা, ম্যানিওক (টেপিওকা); গরুর মাংস, দুধ এবং চামড়া।

বুরুন্ডি 
টাঙ্গানিকা হ্রদে জেলেরা

বিশ্বের অন্যতম দরিদ্রতম দেশটির ভৌগোলিক অবস্থা প্রায় পুরোটাই স্থলবেষ্টিত। শিক্ষার সুযোগের অভাব এবং এইচআইভি/এইডসের বিস্তারের কারণে দেশে দরিদ্রতা বিস্তার করে আছে। বুরুন্ডি এর জনসংখ্যার প্রায় ৮০% দারিদ্র্য সীমার নিচে বাস করে। বিংশ শতাব্দিতে দেশজুড়ে বিরাট দুর্ভিক্ষ এবং খাদ্য ঘাটতি দেখা দিয়েছিল। বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি অনুসারে, পাঁচ বছরের কম বয়সী শিশুদের ৫৬.৮% দীর্ঘস্থায়ী অপুষ্টিতে ভোগে।

মজুরি বৃদ্ধি মুদ্রাস্ফীতির সাথে তাল মিলিয়ে না থাকায় বেশিরভাগ বুরুন্ডিয়ানদের ক্রয় ক্ষমতা কমে গেছে। দারিদ্র্যের গভীরতার ফলে তারা দ্বিপাক্ষিক এবং বহুপাক্ষিক দাতাদের কাছ থেকে সাহায্যের উপর ব্যাপকভাবে নির্ভরশীল। বিদেশী সাহায্য বুরুন্ডি জাতীয় আয়ের ৪২% প্রতিনিধিত্ব করে, সাব-সাহারান আফ্রিকায় যা দ্বিতীয় সর্বোচ্চ হার। বুরুন্ডি ২০০৯ সালে পূর্ব আফ্রিকান সম্প্রদায়ে যোগদান করে, যার ফলে তার আঞ্চলিক বাণিজ্য সম্পর্ক বৃদ্ধির পাশাপাশি $৭০০ মিলিয়ন ঋণ ত্রাণ লাভ করে।২০১৮ সালে ওয়ার্ল্ড হ্যাপিনেস রিপোর্ট অনুযায়ী বুরুন্ডিয়রা বিশ্বের সবচেয়ে কম সুখী জনগণ হিসেবে চিহ্নিত।

বুরুন্ডির কিছু প্রাকৃতিক সম্পদের মধ্যে রয়েছে ইউরেনিয়াম, নিকেল, কোবাল্ট, তামা এবং প্ল্যাটিনাম। কৃষি ছাড়াও অন্যান্য শিল্পের মধ্যে রয়েছে: আমদানিকৃত উপাদানের সমাবেশ; গণপূর্ত নির্মাণ; খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ এবং হালকা ভোগ্যপণ্য যেমন কম্বল, জুতা এবং সাবান।

আর্থিক পরিষেবাগুলোতে অ্যাক্সেসের অভাব সংখ্যাগরিষ্ঠ জনসংখ্যার জন্য একটি গুরুতর সমস্যা, বিশেষ করে ঘনবসতিপূর্ণ গ্রামীণ এলাকায়। দেশটির মোট জনসংখ্যার মাত্র ২% মানুষের ব্যাংক অ্যাকাউন্ট আছে এবং ০.৫% এরও কম ব্যাংক ঋণ পরিষেবা ব্যবহার করে। তবে, সেখানে ক্ষুদ্রঋণ একটি বৃহত্তর ভূমিকা পালন করে আসছে। বর্তমানে বুরুন্ডিয়ীদের ৪ শতাংশ ক্ষুদ্রঋণ সংস্থার সদস্য। ২৬টি লাইসেন্সপ্রাপ্ত ক্ষুদ্রঋণ সংস্থা বা প্রতিষ্ঠান (MFIs) ঋণ গ্রহণে ইচ্ছুক জনগণের মধ্যে সঞ্চয়, আমানত এবং স্বল্প থেকে মধ্যমেয়াদী ঋণ প্রদান করে থাকে।

বুরুন্ডি পূর্ব আফ্রিকান সম্প্রদায়ের অংশ এবং পরিকল্পিত পূর্ব আফ্রিকান ফেডারেশনের সম্ভাব্য সদস্য। দেশটিতে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি তুলনামূলকভাবে স্থির, ফলে তারা এখনও প্রতিবেশী দেশগুলোর পিছনে রয়েছে।

মুদ্রা

বুরুন্ডির মুদ্রা হলো বুরুন্ডিয়ান ফ্রাঙ্ক (ISO 4217 কোড BIF)। এটি নামমাত্র ১০০ সেন্টিমে বিভক্ত, যদিও স্বাধীন বুরুন্ডিতে কয়েন কখনও সেন্টিমে জারি করা হয়নি; যখন বুরুন্ডি বেলজিয়ান কঙ্গো ফ্রাঙ্ক ব্যবহার করতো তখন থেকে সেন্টিটাইম মুদ্রা প্রচলন করা হয়।

বুরুন্ডির মুদ্রানীতি দেশটির কেন্দ্রীয় ব্যাংক ব্যাংক অফ দ্য রিপাবলিক অফ বুরুন্ডি দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হয়।

পরিবহন

বুরুন্ডি 
বাইসাইকেল বুরুন্ডিতে পরিবহনের একটি জনপ্রিয় মাধ্যম
বুরুন্ডি 
বুজুম্বুরা আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর টার্মিনাল, বুজুম্বুরা

বুরুন্ডির পরিবহন নেটওয়ার্ক সীমিত এবং অনুন্নত। একটি ২০১২ সালের DHL গ্লোবাল কানেক্টেডনেস ইনডেক্স অনুযায়ী, বুরুন্ডি ১৪০টি জরিপকৃত দেশের মধ্যে সর্বনিম্ন অবস্থানে। বুজুম্বুরা আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর হলো একমাত্র বিমানবন্দর যেখানে একটি পাকা রানওয়ে রয়েছে এবং মে ২০১৭ সাল পর্যন্ত এটি চারটি এয়ারলাইন্স (ব্রাসেলস এয়ারলাইনস, ইথিওপিয়ান এয়ারলাইনস, কেনিয়া এয়ারওয়েজ এবং রুয়ান্ডএয়ার) দ্বারা পরিসেবা করা হয়েছে। কিগালি হলো বুজুম্বুরার সাথে সবচেয়ে দৈনিক আন্তর্জাতিক ফ্লাইট সংযোগের শহর। দেশে একটি সড়ক নেটওয়ার্ক রয়েছে এবং ২০০৫ সাল পর্যন্ত দেশের রাস্তার মাত্র ১০ শতাংশের কম পাকা ছিল। ২০১২ সাল পর্যন্ত বেসরকারী বাস কোম্পানিগুলো রুয়ান্ডার কিগালি যাওয়ার আন্তর্জাতিক রুটে বাসের প্রধান অপারেটর ছিল; তবে অন্যান্য প্রতিবেশী দেশগুলোর সাথে কোন বাস সংযোগ ছিল না (তানজানিয়া এবং কঙ্গো গণতান্ত্রিক প্রজাতন্ত্র)। বুজুম্বুরা তানজানিয়ার কিগোমার সাথে একটি যাত্রী ও পণ্যবাহী ফেরি (এমভি এমওয়ানগোজো) দ্বারা সংযুক্ত। ভবিষ্যতে কিগালি ও উগান্ডার রাজধানী কাম্পালা এবং কেনিয়ার সাথে রেলের মাধ্যমে দেশটিকে সংযুক্ত করার একটি দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা রয়েছে।

জনপরিসংখ্যান

বুরুন্ডি 
বুজুম্বুরার শিশুরা, বুরুন্ডি

২০২১ সালের অক্টোবর পর্যন্ত বুরুন্ডির জনসংখ্যা ১২,৩৪৬,৮৯৩ জন, যা ১৯৫০ সালে মাত্র ২,৪৫৬,০০০ জন ছিল। জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার প্রতি বছর ২.৫ শতাংশ, এটি গড় বৈশ্বিক গতির দ্বিগুণেরও বেশি। একজন বুরুন্ডিয়ান মহিলার গড়ে ৫.১০ সন্তান রয়েছে, যেটি আন্তর্জাতিক প্রজনন হারের দ্বিগুণেরও বেশি। ২০২১ সালে বুরুন্ডি বিশ্বের দশম সর্বোচ্চ মোট উর্বরতার হার ছিল, এর অবস্থান সোমালিয়ার ঠিক পরে।

গৃহযুদ্ধের ফলে অনেক বুরুন্ডিয়ান অন্য দেশে চলে গেছে। ২০০৬ সালে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র আনুমানিক ১০,০০০ বুরুন্ডিয়ান শরণার্থীকে গ্রহণ করেছিল।

বুরুন্ডিতে একটি অপ্রতিরোধ্য গ্রামীণ সমাজ রয়ে গেছে, যেখানে ২০১৩ সালে জনসংখ্যার মাত্র ১৩% শহরাঞ্চলে বসবাস করে। জনসংখ্যার ঘনত্ব প্রতি বর্গকিলোমিটারে প্রায় ৩১৫ জন (প্রতি বর্গ মাইল ৭৫৩), সাব-সাহারান আফ্রিকায় এটি দ্বিতীয় সর্বোচ্চ। জনসংখ্যার প্রায় ৮৫% হুতু জাতিগত, ১৫% তুতসি এবং ১% এরও কম আদিবাসী ত্বোয়া।

ভাষা

বুরুন্ডিতে ঐতিহ্যগতভাবে দুটি সরকারী ভাষা ছিল: কিরুন্ডি এবং ফরাসি। ২০১৪ সালে ইংরেজি দেশটির তৃতীয় সরকারী ভাষা হয়ে ওঠে। এর মধ্যে শুধুমাত্র কিরুন্ডি ভাষাই অধিকাংশ জনসংখ্যা ব্যবহার করে থাকে। এটি ২০০৫ সালের বুরুন্ডিয়ান সংবিধান দ্বারা জাতীয় ভাষা হিসাবে স্বীকৃতি পায়।

বুরুন্ডি আফ্রিকান রাজ্যগুলোর মধ্যে অস্বাভাবিক একটি একক আদিবাসী ভাষা যার সমগ্র জনসংখ্যা ভাগ করে নিয়েছে। ধারণানুযায়ী, বুরুন্ডিয়ানদের ৯৮ শতাংশ কিরুন্ডি ভাষায় কথা বলে এবং মাত্র ১০% এর কম ফরাসি ভাষায় কথা বলে। অতীতে বেলজিয়ান ঔপনিবেশিক শাসনের অধীনে (১৯১৯-৬২) কিরুন্ডি শেখানো হয়েছিল, যেখানে আবার জার্মান শাসনের অধীনে (১৮৯৪-১৯১৬) সোয়াহিলিকে উৎসাহিত করা হয়েছিল। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে বুরুন্ডিয়ান সরকার দেশের বিভিন্ন জাতিগোষ্ঠীকে একত্রিত করার উপায় হিসাবে কিরুন্ডি ভাষার ব্যবহারকে উন্নীত করেছে।

দেশটিকে ফ্রাঙ্কোফোনির অংশ হিসেবে বিবেচনা করা হয়। বেলজিয়ামের ঔপনিবেশিক শাসনের উত্তরাধিকার হিসেবে সরকার, ব্যবসায় এবং শিক্ষিত শ্রেণিতে ফরাসিদের একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে কিন্তু জনসংখ্যার মাত্র ৩ থেকে ১০ শতাংশই সাবলীল ভাষায় কথা বলে। বুরুন্ডিয়ান আঞ্চলিক ফরাসিও প্রায়শই কিরুন্ডি, লিঙ্গালা এবং অন্যান্য ভাষার শব্দগুলোকে অন্তর্ভুক্ত করে ব্যবহৃত হয়ে থাকে। ফরাসি একটি উল্লেখযোগ্য সংখ্যালঘু দ্বারা কথ্য এবং প্রধানত একটি দ্বিতীয় ভাষা হিসাবে দেশের অভিবাসী বাসিন্দারা কথা বলে থাকে। ২০০৭ সালের পরে পূর্ব আফ্রিকান সম্প্রদায়ের সাথে আঞ্চলিক একীকরণের দিকে পদক্ষেপের অংশ হিসাবে ইংরেজি গৃহীত হয়েছিল কিন্তু দেশে এর কার্যকর উপস্থিতি এখন খুবই কম।

বুরুন্ডিতে কথ্য ভাষার মধ্যে সোয়াহিলি যা গ্রেট লেক অঞ্চলে ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত হয়ে আসছে। এটি বিশেষ করে বাণিজ্যে এবং দেশের মুসলিম সংখ্যালঘুদের সাথে বা পূর্ব আফ্রিকার অন্য কোথাও থেকে অভিবাসন করা জনগনের ক্ষেত্রে অধিক ব্যবহৃত হয়ে থাকে।

ধর্ম

বুরুন্ডিতে ধর্ম বৈচিত্র্যময়। খ্রিস্টান ধর্ম তাদের প্রধান বিশ্বাস। সিআইএ ফ্যাক্টবুকের ২০০৮ সালের হিসাব অনুসারে, বুরুন্ডির জনসংখ্যার প্রায় ৮৬ শতাংশ খ্রিস্টান (৬২.১% রোমান ক্যাথলিক, ২৩.৯% প্রোটেস্ট্যান্ট), ৭.৯% ঐতিহ্যগত ধর্ম অনুসরণ করে এবং ২.৫ শতাংশ মুসলিম (প্রধানত সুন্নি)। বিপরীতে, ২০১০ সালে এনসাইক্লোপিডিয়া অফ আফ্রিকার আরেকটি অনুমান বলে যে, বুরুন্ডির ৬৭ শতাংশ মানুষ খ্রিস্টান, ২৩% সনাতন ধর্ম অনুসরণ করে এবং ১০% ইসলাম বা অন্যান্য ধর্মের অনুসারী। এরমধ্যে মুসলমানের সংখ্যা ২-৫%, যাদের অধিকাংশই সুন্নি এবং শহরাঞ্চলে বসবাস করে।

স্বাস্থ্য়

বুরুন্ডি 
বুরুন্ডিতে স্বাস্থ্যের উন্নতি।

বিশ্বব্যাপী ক্ষুধা সূচকে র‍্যাঙ্ক করা ১২০টি দেশের মধ্যে বুরুন্ডির অবস্থান সবচেয়ে ক্ষুধা ও অপুষ্টির তালিকায় রয়েছে। ১৯৬২ সালে গৃহযুদ্ধের ফলে দেশে চিকিৎসার অগ্রগতি বন্ধ হয়ে যায়। অনেক সাব-সাহারান আফ্রিকার দেশগুলোর মতো বুরুন্ডিরা বায়োমেডিসিন ছাড়াও কিছু দেশীয় ওষুধ ব্যবহার করে থাকে। ১৯৮০-এর দশকে বুরুন্ডির স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষ মান নিয়ন্ত্রণের বিকাশ এবং ঔষধি গাছ থেকে ফার্মাসিউটিক্যালস নিয়ে নতুন গবেষণা শুরু করতে সহায়তার জন্য জাতিসংঘের উন্নয়ন কর্মসূচির কাছে অনুরোধ করেছিল। একই সময়ে বুরুন্ডিতে অ্যাসোসিয়েশন অফ ট্র্যাডিশনাল প্র্যাকটিশনারস (ATRADIBU) প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল, যা বুরুন্ডিতে ট্র্যাডিশনাল মেডিসিনের গবেষণা ও প্রচার কেন্দ্র (CRPMT) স্থাপনের জন্য সরকারী সংস্থার সাথে যুক্ত হয়েছে। আন্তর্জাতিক সাহায্যের সাম্প্রতিক প্রবাহ বুরুন্ডিতে বায়োমেডিকেল স্বাস্থ্য ব্যবস্থার কাজকে সমর্থন করেছে। আন্তর্জাতিক সাহায্য কর্মীরা বুরুন্ডিতে ঐতিহ্যগত দেশীয় ওষুধ ব্যবহার পরিহারের চেষ্টা চালাচ্ছে। ২০১৫ সালের হিসাবে, বুরুন্ডিতে প্রতি ১০ জনের মধ্যে ১ জন শিশু ৫ বছর বয়সের আগেই নিউমোনিয়া, ডায়রিয়া এবং ম্যালেরিয়া প্রতিরোধযোগ্য এবং চিকিৎসাযোগ্য অসুস্থতা থেকে মারা যায়। ২০১৫ সালের হিসাবে বুরুন্ডির গড় আয়ু ৬০.১ বছর। ২০১৩ সালে বুরুন্ডি স্বাস্থ্যসেবাতে তাদের জিডিপির ৮% ব্যয় করেছে। দেশটিতে মৃত্যুর হার প্রতি ১,০০০ জীবিত জন্মের জন্য ৬১.৯ মৃত্যু এবং জন্মহার প্রতি মহিলার ৬.১ জন শিশু। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (WHO) অনুযায়ী, দেশে গড় আয়ু ৫৮/৬২ বছর। বুরুন্ডির সাধারণ রোগের মধ্যে রয়েছে ম্যালেরিয়া এবং টাইফয়েড জ্বর।

সংস্কৃতি

বুরুন্ডি 
ফুটবলে বুরুন্ডি

বুরুন্ডির সংস্কৃতি স্থানীয় ঐতিহ্য এবং প্রতিবেশী দেশগুলোর প্রভাবের উপর ভিত্তি করে, যদিও নাগরিক অস্থিরতার কারণে সাংস্কৃতিক প্রাধান্য বাধাগ্রস্ত হয়েছে। দেশটির প্রধান শিল্প কৃষি এবং সাধারণ বুরুন্ডিয়ান খাবারের মধ্যে রয়েছে মিষ্টি আলু, ভুট্টা, চাল এবং মটর। অতিরিক্ত খরচের কারণে মাসে মাত্র কয়েকবার মাংস খাওয়া হয়।

কারুশিল্প বুরুন্ডিতে একটি গুরুত্বপূর্ণ শিল্প ফর্ম এবং অনেক পর্যটকদের কাছে আকর্ষণীয় উপহার। ঝুড়ি বয়ন বা বাস্কেট ওয়েভিং স্থানীয় কারিগরদের জন্য একটি জনপ্রিয় নৈপুণ্য। অন্যান্য কারুশিল্প যেমন মুখোশ, ঢাল, মূর্তি এবং মৃৎপাত্র বুরুন্ডিতে তৈরি হয়।

ঢোল বাজানো সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। বুরুন্ডির বিশ্ব-বিখ্যাত রয়্যাল ড্রামার্স, যারা ৪০ বছরেরও বেশি সময় ধরে পারফর্ম করেছে। তারা কারিন্ডা, আমাশাকো, ইবিশিকিসো এবং ইকিরন্য ড্রাম ব্যবহার করে ঐতিহ্যবাহী ড্রামিং এর জন্য বিখ্যাত। নাচ প্রায়ই ড্রামিং পারফরম্যান্সের সাথে থাকে, যা প্রায়শই উদযাপন এবং পারিবারিক সমাবেশে দেখা যায়।

দেশের মৌখিক ঐতিহ্য গুলোর মধ্যে গল্প, কবিতা ও গানের মাধ্যমে ইতিহাস ও জীবনের শিক্ষা তুলে ধরে। ইমিগানি, ইন্দিরিম্বো, আমাজিনা এবং আইভিভুগো হলো বুরুন্ডির সাহিত্যের প্রধান ধারা।

বাস্কেটবল, ট্র্যাক এবং ফিল্ড উল্লেখযোগ্য খেলা। মার্শাল আর্টও বুরুন্ডিতে বেশ জনপ্রিয়। অ্যাসোসিয়েশন ফুটবল সারা দেশে একটি জনপ্রিয় বিনোদন, যেমন মানকাল গেম।

অধিকাংশ খ্রিস্টান ধর্মীয় ছুটির দিন পালিত হয় বড়দিনের সাথে। বুরুন্ডিয়ান স্বাধীনতা দিবস প্রতি বছর ১ জুলাই পালিত হয়। ২০০৫ সালে, বুরুন্ডিয়ান সরকার ঈদ-উল-ফিতরকে মুসলমানদের জন্য সরকারী ছুটি ঘোষণা করেছে।

মিডিয়া

বুরুন্ডির বেশিরভাগ গণমাধ্যম সরকার দ্বারা নিয়ন্ত্রিত। দেশটিতে রেডিও, টেলিভিশন, ইন্টারনেট এবং বিভিন্ন সংবাদমাধ্যম সক্রিয় রয়েছে।

রেডিও:

বুরুন্ডির জাতীয় মালিকানাধীন রেডিও স্টেশনগুলো হলঃ

রেডিও বুন্টু ইজউই রি'ইম্পফুভি নাবাপফাকাজি, রেডিও বেনা এফএম, রেডিও সিসিআইবি এফএম+, রেডিও আগাকিজা, রেডিও কলম্ব এফএম, রেডিও সংস্কৃতি, রেডিও ডেসটিনি এফএম, রেডিও ঈগল স্পোর্ট এফএম, রেডিও ফ্রিকোয়েন্স মেনিয়া, রেডিও ইজউই রাই’ উমুকেনয়েজি, রেডিও মারিয়া বিডিআই, রেডিও রেমা এফএম, রেডিও স্টার এফএম ইত্যাদি।

এবং আন্তর্জাতিক মালিকানাধীন রেডিও স্টেশনের মধ্যে রয়েছে- আরএফআই, রেডিও হিট আফ্রিকা, রেডিও রয়্যাল মিডিয়া।

টেলিভিশন:

বুরুন্ডিতে টেলিভিশন ১৯৮৪ সালে প্রথম চালু হয়েছিল, যার কভারেজ ১৯৯২ সালে জাতীয় নাগালের মধ্যে ছিল। ২০০৪ সাল পর্যন্ত শুধুমাত্র একটি টেলিভিশন পরিষেবা ছিল, সরকারি মালিকানাধীন টেলিভিশন ন্যাশানাল ডু বুরুন্ডি

২০২১ সালে নিবন্ধিত টেলিভিশন স্টেশনগুলো হলো (টেলিযোগাযোগ কর্তৃপক্ষ): টেলিভিশন ন্যাশনাল ডু বুরুন্ডি, হেরিটেজ টিভি, রেমা টিভি, টেলিভিশন সালামা, সিটিজেন টিভি (স্যাটেলাইট) প্রভৃতি।

ইন্টারনেট:

বুরুন্ডি একটি ফাইবার-অপটিক তারের নেটওয়ার্কে ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেটের অ্যাক্সেস প্রশস্ত করতে $২৫ মিলিয়ন বিনিয়োগ প্রকল্প চালু করেছে।

সংবাদপত্র:

বুরুন্ডিতে জনপ্রিয় সংবাদপত্রের মধ্যে অন্তর্ভুক্ত: আর্ক-এন-সিয়েল, বুরুন্ডি ক্রেটিয়ান, বুরুন্ডি ট্রিবিউন প্রভৃতি।

ইওয়াকু, ১৯৯৩ সালে বিদেশে প্রতিষ্ঠিত এবং তারা ২০০৮ সালে বুরুন্ডিতে একটি সাপ্তাহিক প্রতিবেদন প্রকাশ করা শুরু করে। এটি দ্রুত বুরুন্ডিতে সর্বাধিক প্রচারিত সংবাদপত্র হয়ে ওঠে এবং ২০১৬ সাল পর্যন্ত এটিই একমাত্র ব্যক্তিগত মালিকানাধীন।

শিক্ষা

বুরুন্ডি 
বুরুন্ডির ক্যারোলাস ম্যাগনাস স্কুল

২০০৯ সালে, বুরুন্ডিতে প্রাপ্তবয়স্ক সাক্ষরতার হার অনুমান করা হয়েছিল ৬৭% (৭৩% পুরুষ এবং ৬১% মহিলা), যার সাক্ষরতার হার যথাক্রমে ৭৭% এবং ৭৬%, ১৫ থেকে ২৪ বছর বয়সী পুরুষ এবং মহিলাদের জন্য। ২০১৫ সাল নাগাদ, এটি ৮৫.৬% (৮৮.২% পুরুষ এবং ৮৩.১% মহিলা) বৃদ্ধি পেয়েছে। ২০০২ সাল থেকে প্রাপ্তবয়স্ক মহিলাদের মধ্যে সাক্ষরতা ১৭% বৃদ্ধি পেয়েছে। বুরুন্ডির অতিমাত্রায় দারিদ্র্যতার ফলে স্কুলে অনুপস্থিতির কারণে তুলনামূলকভাবে স্বাক্ষরতার হার কিছুটা কম।

বুরুন্ডিতে একটি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় আছে, বুরুন্ডি বিশ্ববিদ্যালয়। শহরগুলোতে জাদুঘর রয়েছে, যেমন বুজুম্বুরার বুরুন্ডি ভূতাত্ত্বিক যাদুঘর এবং বুরুন্ডি জাতীয় যাদুঘর এবং গিতেগায় বুরুন্ডি মিউজিয়াম অফ লাইফ অবস্থিত।

২০১০ সালে ওয়েস্টউড হাই স্কুল, যা কানাডার ছাত্রদের দ্বারা অর্থায়ন করা ছোট গ্রামে একটি নতুন প্রাথমিক বিদ্যালয় খোলা হয়েছিল।

২০১৮ সালের হিসাবে, বুরুন্ডি শিক্ষায় তাদের মোট জিডিপির ৫.১% এর সমতুল্য বিনিয়োগ করেছে।

আরও দেখুন

গিতেগা

বুজুম্বুরা

আফ্রিকান দেশগুলোর তালিকা

তথ্যসূত্র

Tags:

বুরুন্ডি নামকরণবুরুন্ডি ইতিহাসবুরুন্ডি সরকার ও রাজনীতিবুরুন্ডি প্রশাসনিক অঞ্চলসমূহবুরুন্ডি ভূগোলবুরুন্ডি অর্থনীতিবুরুন্ডি জনপরিসংখ্যানবুরুন্ডি সংস্কৃতিবুরুন্ডি আরও দেখুনবুরুন্ডি তথ্যসূত্রবুরুন্ডি বহিঃসংযোগবুরুন্ডিউইকিপিডিয়া:বাংলা ভাষায় ফরাসি শব্দের প্রতিবর্ণীকরণগণতান্ত্রিক কঙ্গো প্রজাতন্ত্রগিতেগাচিত্র:En-Burundi-pronunciation.oggজার্মানিতাংগানিকা হ্রদতানজানিয়াপূর্ব আফ্রিকাফরাসি ভাষাবুজুম্বুরাবেলজিয়ামরুয়ান্ডাসাহায্য:Pronunciation respelling keyসাহায্য:আধ্ববসাহায্য:আধ্বব/ইংরেজিসোয়াহিলি ভাষাস্থলবেষ্টিত রাষ্ট্র

🔥 Trending searches on Wiki বাংলা:

কাজল১৫ এপ্রিলআয়রন ডোমস্বস্তিকাবড়ে মিয়াঁ ছোটে মিয়াঁ (২০২৪-এর চলচ্চিত্র)অ্যাস্টন ভিলা ফুটবল ক্লাবআন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসশব্দ (ব্যাকরণ)রসগোল্লাবেদইন্টার মিলানদিনাজপুর জেলাকাজল আগরওয়ালমুসাবর্তমান (দৈনিক পত্রিকা)মাথিশা পাথিরানাকস্তুরীসাহাবিদের তালিকাআল জাজিরাবাংলার ইতিহাসরজনীকান্ত সেনআবদুল হামিদ খান ভাসানীপদ্মা সেতুখালেদা জিয়ালোকসভা কেন্দ্রের তালিকাআডলফ হিটলারবাংলাদেশের রাষ্ট্রপতিদের তালিকাজেরুসালেমঈদুল ফিতরমেটা প্ল্যাটফর্মসনীল বিদ্রোহঅমর্ত্য সেনবঙ্গভঙ্গ (১৯০৫)ভ্লাদিমির পুতিনআমকাজাখস্তানমৌর্য সাম্রাজ্যফরাসি বিপ্লবের কারণস্বপ্ন যাবে বাড়িইয়েমেনসত্যজিৎ রায়ইসলামঅক্ষয় তৃতীয়াশ্রীকৃষ্ণকীর্তনরমনা পার্কবিদায় হজ্জের ভাষণবিহুনেপালযক্ষ্মাআমার সোনার বাংলাবদরের যুদ্ধমালয়েশিয়াশাকিব খানবাংলাদেশে হিন্দুধর্মরঙের তালিকামদজাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদকুয়েতসিলেটইহুদি ধর্মকলকাতাথানকুনিমাদারীপুর জেলাজান্নাতকাঠগোলাপমুহাম্মাদইন্টার মায়ামি ফুটবল ক্লাবটিকটকরাজশাহী বিভাগভালোবাসাবাংলাদেশের সর্বাধিক ব্যবসাসফল চলচ্চিত্রসমূহের তালিকাকাশ্মীরজাতীয় নিরাপত্তা গোয়েন্দাবাংলাদেশের উপজেলার তালিকাকারকবাংলাদেশের কোম্পানির তালিকারাম মন্দির, অযোধ্যাবিভিন্ন দেশের মুদ্রা🡆 More