শহর, নগর বা নগরী বলতে সাধারণত এমন একটি ঘনবসতিপূর্ণ বৃহৎ পৌর এলাকাকে বোঝায়, যেটি পারিপার্শ্বিক অঞ্চলের একটি কেন্দ্র হিসেবে কাজ করে ও সেখানকার অধিবাসীদের জন্য বিশেষায়িত সেবা প্রদান করে থাকে। কোনও পৌরবসতির জনসংখ্যার আকার বা এর এলাকার আয়তন ন্যূনতম কতটুকু হলে সেটিকে শহর বলা যায়, এ ব্যাপারে কোনও বিশ্বব্যাপী ঐকমত্যভিত্তিক সংজ্ঞা নেই। বাংলা রচনাতে কদাচিৎ শহর পরিভাষাটি দিয়ে কেবল ছোট শহরকে বোঝানো হতে পারে।
শহর এক ধরনের মানববসতি। শহরের চেয়ে ছোট বসতিগুলোকে ছোট শহর (টাউন), গ্রাম ও ছোট গ্রাম (হ্যামলেট) বলা হয়। অন্যদিকে শহরের চেয়ে বড় বসতিগুলোকে মহানগরী, অতিমহানগরী, পৌরপুঞ্জ ও মহাপৌরপুঞ্জ নামে ডাকা হয়। শহরকে কীভাবে অর্থের দিক দিয়ে ছোট শহর থেকে আলাদা করা হয়, সে বিষয়ে ভিন্নমত রয়েছে। তবে সাধারণত একটি শহরকে দুই বা ততোধিক প্রশাসনিক এলাকায় ভাগ করা হয়ে থাকে এবং শহরকে ঘিরে উপশহর বা শহরতলী থাকে, যেগুলো ছোট শহরের বেলায় প্রযোজ্য নয়। অনেক শহরের নিজস্ব প্রশাসন, ইতিহাস এবং আইন রয়েছে। সাধারণত একটি শহরের পয়ঃনিষ্কাশন, ভূমির ব্যবহার, গৃহায়ন, পরিবহন, আইন-শৃঙ্খলা ও নিরাপত্তা, ইত্যাদি বিষয়ে নিজস্ব নিয়মকানুন ও ব্যবস্থা থাকে। শহরের বিকাশ মানুষ এবং ব্যবসার প্রসার ঘটাতে সহায়তা করে। শহর প্রায়শই গ্রাম দ্বারা পরিবেষ্টিত থাকে। এখানে চাকরির সুযোগ-সুবিধাও বেশি থাকে। কালক্রমে একটি বর্ধনশীল শহরের আশেপাশের এলাকাগুলোও ঐ শহরের ভেতরে অন্তর্ভুক্ত হতে শুরু করে।
শহরে বসবাসের অনেক অসুবিধা যেমন আছে (যেমন কোলাহল, দূষণ, ভিড়, অপরাধ, ফুটপাথ দখল, ইত্যাদি), তেমনি গ্রামের তুলনায় শহরে বসবাস করা অনেক দিক থেকেই সুবিধাজনক। যখন অনেক মানুষ শহরের মতো একটি ক্ষুদ্র এলাকাতে গুচ্ছবদ্ধ হয়ে বাস করতে ও অন্যান্য কর্মকাণ্ড করতে শুরু করে, তখন তাকে পিণ্ডীভবন (agglomeration) বলে। এর ফলে হাজার হাজার দৈনন্দিন কর্মকাণ্ডের জন্য বিরাট দূরত্ব পাড়ি দেবার অসুবিধা কমে যায়। আদর্শ দৃষ্টিকোণ থেকে শহর হচ্ছে মানুষের মৌলিক অধিকার পূরণের নিশ্চয়তা প্রাপ্তির একটি স্থান যেখানে মানুষ বসবাস, চিকিৎসাসেবা, শিক্ষার সুব্যবস্থা, কর্মের সুযোগ, সামাজিক যোগাযোগ ও খেলাধুলা-বিনোদনের জন্য সুবিধাজনক একটি স্থান। শহরে গণপরিবহনের ব্যয় কম, আর অবকাঠামোর খরচও এককভাবে ব্যাঙ্ক লোন নিয়ে বা পরিচিতদের সাথে ভাগাভাগি করে নেওয়া যায়, যে ব্যাপারটিকে "পিণ্ডীভবনের অর্থনীতি" বলে। এটি একটি নগর স্থাপত্য উৎপত্তির অন্যতম মূল কারণ। নগর জীবনের সুবিধা ও অর্থনৈতিক লাভের কারণে উন্নত বিশ্বের দেশগুলোতে সিংহভাগ নাগরিক শহরে বাস করে। যেমন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অঙ্গরাজ্য ক্যালিফোর্নিয়ার ৯৫% জনগণই কোনও না কোনও শহরে বাস করে।
শহর কেন উৎপত্তি লাভ করে সে বিষয়ে কোন নির্ধারিত প্রমাণ নেই। তবে অনেক তত্ত্ববিদ ধারণা করেন, কিছু মৌলিক প্রয়োজন মেটানোর তাগিদেই শহর জন্মলাভ করে।
ধারণা করা হয়, কৃষি বিপ্লব শহর সৃষ্টির মূল। এই বিপ্লব কৃষির উদ্ভাবন করায়। এরফলে মানুষ খাদ্য উৎপাদনের তাগিদে স্থায়ীভাবে একস্থানে বসবাস শুরু করে। এই ঘন জনবসতির ফলেই ধীরে ধীরে শহর গড়ে ওঠে। পল বাইরোচ তার শহর এবং অর্থনৈতিক উন্নতি বইয়ে বলেন, কৃষির ফলেই মানুষ একসাথে বসবাস করার প্রয়োজন অনুভব করে এবং এই মৌলিক প্রয়োজন মেটানোর জন্যই মানুষ শহর গড়ে তোলে।
গ্রামীণ তত্ত্ববিদ জেন জ্যাকবস বলেন, শহরের উৎপত্তিই কৃষির আবিষ্কারকে তরান্বিত করে, তবে তার এ যুক্তি অকাট্য বলে মেনে নেয়া হয় না।
বিভিন্ন দেশে বিভিন্নভাবে শহরকে সাজানো হয়। তবে অধিকাংশ ক্ষেত্রেই গ্রিড পদ্ধতিতে শহর তৈরি হয়। হাজার বছর আগে চীনে এই পদ্ধতি অনুসরণ করা হয়েছিল। আলেকজান্ডার দ্য গ্রেটের পরিকল্পনাবিদ ডিনোক্রেটস অব রোডস এই পরিকল্পনা করেছিলেন।
দক্ষিণ এশিয়ায় স্থান-নামে প্রত্যয় হিসেবে নগর শব্দের বহুল প্রচলন আছে। যেমন—
বাংলাদেশে নগর প্রত্যয়যুক্ত ১৫টি উপজেলা আছে। যথা,
এই নিবন্ধটি অসম্পূর্ণ। আপনি চাইলে এটিকে সম্প্রসারিত করে উইকিপিডিয়াকে সাহায্য করতে পারেন। |
This article uses material from the Wikipedia বাংলা article শহর, which is released under the Creative Commons Attribution-ShareAlike 3.0 license ("CC BY-SA 3.0"); additional terms may apply (view authors). বিষয়বস্তু সিসি বাই-এসএ ৪.০-এর আওতায় প্রকাশিত যদি না অন্য কিছু নির্ধারিত থাকে। Images, videos and audio are available under their respective licenses.
®Wikipedia is a registered trademark of the Wiki Foundation, Inc. Wiki বাংলা (DUHOCTRUNGQUOC.VN) is an independent company and has no affiliation with Wiki Foundation.