লন্ডন: ইংল্যান্ড এবং যুক্তরাজ্যের রাজধানী

লন্ডন (ইংরেজি: London; /ˈlʌndən/ ⓘ) যুক্তরাজ্যে ও ইংল্যান্ডের রাজধানী এবং বৃহত্তম শহর। শহরটি গ্রেট ব্রিটেন দ্বীপের দক্ষিণাংশে অবস্থিত ইংল্যান্ডের দক্ষিণ-পূর্ব অংশে টেম্‌স নদীর তীরে অবস্থিত। বিশাল এই মহানগরীতে প্রায় ৮৮ লক্ষ লোকের বাস। এটি ইংল্যান্ড ও যুক্তরাজ্যের বৃহত্তম শহর। যুক্তরাজ্যের ১৩ শতাংশের বেশি লোক লন্ডনে বাস করে। ১৭শ শতক থেকে আজ পর্যন্ত লন্ডন ইউরোপের বৃহত্তম শহর। ১৯শ শতকে এটি বিশ্বের বৃহত্তম ও সবচেয়ে প্রভাবশালী নগরী ছিল। সেসময় শহরটি সুবৃহৎ ও সমৃদ্ধিশালী ব্রিটিশ সাম্রাজ্যর কেন্দ্রবিন্দু ছিল। যদিও লন্ডন বর্তমানে আর জনসংখ্যার বিচারে বিশ্বের সবচেয়ে বড় শহরগুলির একটি নয়, তা সত্ত্বেও এটি বিশ্বের প্রধানতম আর্থ-বাণিজ্যিক ও সাংস্কৃতিক রাজধানী শহরগুলির একটি হিসেবে পরিগণিত হয়।

লন্ডন
রাজধানী শহর
লন্ডন: মূল শহর ও মহানগর অঞ্চল, ইতিহাস, শিক্ষা ও ঐতিহ্য
টেম্‌স নদী এবং টাওয়ার ব্রিজ দ্য শার্ড সহ (বাম), টাওয়ার অব লন্ডন (ডান) এবং লন্ডন শহর (ডানে)
লন্ডন: মূল শহর ও মহানগর অঞ্চল, ইতিহাস, শিক্ষা ও ঐতিহ্য
লন্ডন আই
লন্ডন: মূল শহর ও মহানগর অঞ্চল, ইতিহাস, শিক্ষা ও ঐতিহ্য
নেলসনের কলাম
লন্ডন: মূল শহর ও মহানগর অঞ্চল, ইতিহাস, শিক্ষা ও ঐতিহ্য
সেন্ট পলস
লন্ডন: মূল শহর ও মহানগর অঞ্চল, ইতিহাস, শিক্ষা ও ঐতিহ্য
পিকাডিলি সার্কাস
লন্ডন: মূল শহর ও মহানগর অঞ্চল, ইতিহাস, শিক্ষা ও ঐতিহ্য
ক্যানারি ঘাট
Interactive map outlining London
লন্ডন ইংল্যান্ড-এ অবস্থিত
লন্ডন
লন্ডন
লন্ডন যুক্তরাজ্য-এ অবস্থিত
লন্ডন
লন্ডন
লন্ডন ইউরোপ-এ অবস্থিত
লন্ডন
লন্ডন
Location within England##Location within the United Kingdom##Location within Europe
স্থানাঙ্ক: ৫১°৩০′২৬″ উত্তর ০°৭′৩৯″ পশ্চিম / ৫১.৫০৭২২° উত্তর ০.১২৭৫০° পশ্চিম / 51.50722; -0.12750
সার্বভৌম রাষ্ট্রযুক্তরাজ্য
Constituent Countryইংল্যান্ড
অঞ্চললন্ডন (একই সীমানাবিশিষ্ট)
CountiesGreater London
City of London
Settled by Romans৪৭ খ্রীষ্টাব্দ
as Londinium
জেলাCity of London & ৩২ বরো
সরকার
 • ধরনExecutive mayoralty and deliberative assembly within unitary constitutional monarchy
 • শাসকGreater London Authority
মেয়র সাদিক খান (লেব.)
London Assembly
 • London Assembly14 constituencies
 • UK Parliament73 constituencies
 • ইউরোপীয় সংসদLondon constituency
আয়তন
 • Total৬০৭ বর্গমাইল (১,৫৭২ বর্গকিমি)
 • পৌর এলাকা৬৭১.০ বর্গমাইল (১,৭৩৭.৯ বর্গকিমি)
 • মহানগর৩,২৩৬ বর্গমাইল (৮,৩৮২ বর্গকিমি)
 • City of London১.১২ বর্গমাইল (২.৯০ বর্গকিমি)
 • Greater London৬০৬ বর্গমাইল (১,৫৬৯ বর্গকিমি)
উচ্চতা৩৬ ফুট (১১ মিটার)
জনসংখ্যা (২০১৮)
 • Total৮৯,০৮,০৮১
 • জনঘনত্ব১৪,৬৭০/বর্গমাইল (৫,৬৬৬/বর্গকিমি)
 • পৌর এলাকা৯৭,৮৭,৪২৬
 • মহানগর১,৪১,৮৭,১৪৬ (১st)
 • City of London৮,৭০৬ (৬৭th)
 • Greater London৮৮,৯৯,৩৭৫
GVA (2017)
 • Total£431 billion
($Wrong currency "2017" for GBR billion)
 • Per capita£48,857
($Wrong currency "২,০১৭" for GBR)
সময় অঞ্চলগ্রিনিচ মান সময় (UTC)
 • গ্রীষ্মকালীন (দিসস)ব্রিটিশ গ্রীষ্মকালীন সময় (ইউটিসি+০১:০০)
ডাক কোড এলাকা
২২ এলাকা
  • E, EC, N, NW, SE, SW, W, WC, BR, CR, DA, EN, HA, IG, KT, RM, SM, TW, UB, WD
  • (CM, TN; partially)
PoliceCity of London
Metropolitan
Fire and RescueLondon
AmbulanceLondon
International airportsHeathrow (LHR)
City (LCY)
Outside London:
Gatwick (LGW)
Stansted (STN)
Luton (LTN)
Southend (SEN)
GeoTLD.london
ওয়েবসাইটlondon.gov.uk

ইউরোপের অন্যান্য শহরগুলির তুলনায় লন্ডন ভৌগোলিকভাবে বেশি বিস্তৃত ও বিক্ষিপ্ত; শহরটির কোন আধিপত্য বিস্তারকারী প্রধান কেন্দ্র নেই। তাই সহজে শহরটির একটি সাধারণ বর্ণনা দেওয়া সম্ভব নয়। লন্ডন শহরটির বহুমুখী চরিত্র এর বিচিত্র ও স্বতন্ত্র অংশগুলিতে খুঁজে নিতে হয়। এই অংশগুলিতে আদিতে আলাদা আলাদা গ্রাম হিসেবে যাত্রা শুরু করেছিল, আর বর্তমান যুগে এসেও এগুলি তাদের স্বতন্ত্র চরিত্রের অনেকখানিই ধরে রেখেছে। লন্ডনের চেহারা অংশত তার অতীত দ্বারা সংজ্ঞায়িত, কেননা শহরের প্রধান প্রধান ভবন ও স্থাপনাগুলি লোকালয়টির ২০০০ বছরের ইতিহাসের সাক্ষী বহন করছে। কিন্তু লন্ডনের নব্য একটি চেহারাও আছে যা বহুজাতিক মিশ্রণের ফলাফল। নতুন এই লন্ডন আধুনিক ও চলতি।

লন্ডনের জলবায়ু সাধারণত আর্দ্র। আকাশ প্রায়ই মেঘাচ্ছন্ন থাকে এবং বছরের অর্ধেকসংখ্যক দিনে বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা থাকে। কিন্তু গড় বাৎসরিক বৃষ্টিপাতের পরিমাণ মাত্র ৭৫০ মিলিমিটার; ফলে এদিক থেকে লন্ডন মূলত শুষ্ক। জুলাই মাসের গড় তাপমাত্রা ১৮ ডিগ্রী ও গ্রীষ্মে সর্বোচ্চ ২৬ ডিগ্রী সেলসিয়াস; তাপদাহ বিরল ও স্বল্পস্থায়ী। এর বিপরীতে হিমশীতল ও কুয়াশাবৃত শীতকালে গড় তাপমাত্রা জানুয়ারি মাসে ৪ ডিগ্রী সেলসিয়াসে নেমে আসে।

লন্ডন মহানগর এলাকাটি এর সবচেয়ে প্রশস্ত অংশে সর্বোচ্চ ৩০ মাইল পর্যন্ত বিস্তৃত হতে পারে। মহানগরীর মোট আয়তন প্রায় ১৬১০ বর্গকিলোমিটার। এই বিশাল নগর ভূখণ্ডটি ৩৩টি প্রশাসনিক বিভাগে বিভক্ত (৩২টি বারো এবং সিটি অফ লন্ডন)। এই সুবিশাল নগর এলাকার মধ্যভাগে রয়েছে কেন্দ্রীয় লন্ডন নামের অঞ্চলটি। কেন্দ্রীয় লন্ডনের সিংহভাগই টেমস নদীর উত্তর তীরে অবস্থিত এবং এটি একটি মৃদু ঢাল বেয়ে ধীরে ধীরে উত্তরে উঠে গেছে। উপর্যুক্ত ৩৩টি প্রশাসনিক বিভাগের ১২টিই কেন্দ্রীয় লন্ডনে অন্তর্ভুক্ত। এদের মধ্যে সিটি অফ লন্ডন, ওয়েস্টমিনস্টার এবং ওয়েস্ট এন্ডের কয়েকটি নগর-জেলা অন্যতম। সিটি অফ লন্ডন নগরীর ঐতিহাসিক কেন্দ্র এবং একাই একটি প্রশাসনিক বিভাগ গঠন করেছে। ওয়েস্টমিনস্টারে ইংল্যান্ডের জাতীয় সরকারের কার্যালয় অবস্থিত। কেন্দ্রীয় লন্ডনের বাইরের অংশগুলি মূলত অনুচ্চ আবাসিক ভবন নিয়ে গঠিত।

লন্ডনের জনসংখ্যা প্রায় ৮৬ লক্ষ, যা সমগ্র যুক্তরাজ্যের জনসংখ্যার এক-দশমাংশেরও বেশি। অন্যান্য ব্রিটিশ ও মার্কিন শহরের তুলনায় লন্ডনের জনঘনত্বও বেশি, প্রতি বর্গকিলোমিটারে ৪৪৮০ জন। লন্ডনে ১৯শ শতকে আইরীয়, চীনা ও ইহুদী এবং ২০শ শতকের দ্বিতীয়ার্ধে ভারতীয় উপমহাদেশীয়, ক্যারিবীয় কৃষ্ণাঙ্গ ও পূর্ব আফ্রিকান কৃষ্ণাঙ্গ অভিবাসীদের আগমনের সুবাদে লন্ডন বর্তমানে একটি বহুজাতিক, বহুভাষিক ও বহুসাংস্কৃতিক বিশ্বনগরীতে পরিণত হয়েছে।

২০০০ বছরেরও বেশি ইতিহাসসমৃদ্ধ লন্ডন শহর নিজেই এক বিশাল জাদুঘর। তবে এই শহরে ১০০-রও বেশি জাদুঘর আছে, যা বিশ্বের সর্বোচ্চ। এদের মধ্যে ব্রিটিশ মিউজিয়াম, ভিক্টোরিয়া অ্যান্ড আলবার্ট মিউজিয়াম, ন্যাচারাল হিস্ট্রি মিউজিয়াম, সায়েন্স মিউজিয়াম ও মিউজিয়াম অফ লন্ডন সবচেয়ে বেশি উল্লেখযোগ্য। অন্যদিকে ট্রাফালগার চত্ত্বরের ন্যাশনাল গ্যালারি ও টেট গ্যালারিসহ আরও বহু চিত্রশালায় নতুন-পুরাতন ঘরানার বহু চিত্রকর্মের সংগ্রহ পরিদর্শন করা যায়।

বিনোদনের জন্য লন্ডন শহরে বহু বিশালাকার উদ্যান ও খেলার মাঠ আছে। এদের মধ্যে বৃহত্তমটি হল হাইড পার্ক নামক নগর উদ্যান। এর পশ্চিমেই অবস্থিত কেনসিংটন গার্ডেনস নামক উদ্যানটিতেও বহু লোক বেড়াতে আসেন। রিজেন্টস পার্ক নামক উদ্যানে লন্ডন চিড়িয়াখানাটি অবস্থিত। গ্রিন পার্ক ও সেন্ট জেমস পার্ক নামের রাজকীয় উদ্যান দুইটি ওয়েস্টমিনস্টার এলাকাতে এক দীর্ঘ সবুজ বেস্টনীর সৃষ্টি করেছে।

ক্রীড়াক্ষেত্রেও লন্ডনের গুরুত্ব অনেক। আর্সেনাল ও টটেনহাম লন্ডনের দুই স্থানীয় ফুটবল ক্লাব দল, লন্ডনের শহরতলী ওয়েম্বলির স্টেডিয়ামে ফুটবল অ্যাসোসিয়েশন (এফ এ) কাপ ফাইনাল অনুষ্ঠিত হয়। লর্ডস ইংরেজ ক্রিকেট তথা বিশ্ব ক্রিকেটের সবচেয়ে সম্মানবাহী ঐতিহাসিক মাঠ হিসেবে পরিচিত, যেখানে ইংল্যান্ডের জাতীয় ক্রিকেট দল ও বিদেশী দলগুলি টেস্ট ম্যাচ খেলে থাকে। আর লন্ডনের আরেক শহরতলী উইম্বলডনের ঘাসাচ্ছাদিত কোর্টগুলিতে টেনিসের ৪টি প্রধান বাৎসরিক প্রতিযোগিতার একটি অনুষ্ঠিত হয়।

লন্ডন যুক্তরাজ্যের অর্থনীতির প্রাণকেন্দ্র। লন্ডনের অর্থনীতির আয়তন প্রায় ৬০ হাজার কোটি মার্কিন ডলার। লন্ডনের অর্থনীতি বিশ্বের ৫ম বৃহত্তম মহানগর অর্থনীতি। লন্ডন শহরের অর্থনীতি এতই বড় যে এটি আরেকটি উন্নত দেশ সুইডেনের সমগ্র অর্থনীতির সমান। লন্ডনের অর্থনীতি সমগ্র যুক্তরাজ্যের অর্থনীতির প্রায় এক-চতুর্থাংশ (২২%) গঠন করেছে। যুক্তরাজ্যের প্রায় এক-তৃতীয়াংশ মানুষের আর্থিক জীবন লন্ডনকে কেন্দ্রে করে আবর্তিত হয়। লন্ডনের চাকুরিজীবিদের সংখ্যাগরিষ্ঠ অংশ, প্রায় ৮৫%, সেবা খাতে কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করেন। লন্ডনে বিশ্বের একশতরও বেশি বহুজাতিক ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের সদর দফতর অবস্থিত।

মূল শহর ও মহানগর অঞ্চল

লন্ডনের দুটি দূরবর্তী বিন্দুর মধ্যবর্তী সর্বোচ্চ দূরত্ব প্রায় ৩০ মাইল। এর আয়তন ১৬১০ বর্গ কিমি (৬২০ বর্গ মা)। এই সুবৃহৎ শহরাঞ্চলটি ৩৩টি রাজনৈতিক এককে বিভক্ত। কেন্দ্রে অবস্থিত সিটি অফ লন্ডন ছাড়াও রয়েছে অধীনস্থ ৩২টি বরো। কেন্দ্রীয় অঞ্চলটিকে মধ্য লন্ডন নামে ডাকা হয় যার বেশির ভাগ অঞ্চলই টেম্‌স নদীর উত্তরে একটি মৃদুমন্দ ঢালু এলাকায় অবস্থিত। এই ঢালুটি আবার আরও উত্তর দিকে গিয়ে উঠতে শুরু করেছে। ৩৩টি রাজনৈতিক এককের মধ্যে ১২টিই এই মধ্যভাগে অবস্থিত যার মধ্যে রয়েছে সিটি অফ লন্ডন, সিটি অফ ওয়েস্টমিন্‌স্টার এবং পশ্চিম প্রান্তের জেলাসমূহ। সিটি অফ লন্ডন হচ্ছে লন্ডন শহরের প্রথাগত ও রাজনৈতিক কেন্দ্র আর সিটি অফ ওয়েস্টমিন্‌স্টার হল জাতীয় সরকারের দফ্‌তর ও মূল আসন। যতই প্রান্তের দিকে যাওয়া যায় জীবনযাত্রার উচ্চ মান ও চাকচিক্য ততই কমতে থাকে।

  • সিটি অফ লন্ডন: লন্ডনের সবচেয়ে ঐতিহ্যবাহী কেন্দ্র হিসেবে পরিচিত এই অঞ্চলটির আয়তন খুবই কম, মাত্র ২.৬ বর্গ কিমি। একেবারে কেন্দ্রভাগে অবস্থিত এই অঞ্চলটি এখনও মূল শহর হিসেবে পরিচিত। আশেপাশের বৃহত্তর মেট্রোপলিটান অঞ্চল থেকে পৃথক করার জন্য এই অংশকে অতি মাত্রায় পূজিবাদী ধনিকদের বাসস্থান হিসেবে গড়ে তোলা হয়েছে। ৫০ সালের দিকে এই অংশেই লন্ডন একটি রোমান ঔপনিবেশিক শহর হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। লন্ডনে রোমানদের নির্মীত প্রথম সেতুকে কেন্দ্র করে এটি প্রতিষ্ঠা লাভ করেছিল। বর্তমানে লন্ডনের সকল বাণিজ্যিক কর্মকাণ্ডের কেন্দ্র হল এই কেন্দ্রীয় শহরের থ্রেডনিড্‌ল স্ট্রিট যা ব্যাংক নামে পরিচিত এলাকায় অবস্থিত। এই এলাকায় রয়েছে বিখ্যাত ব্যাংক অফ ইংল্যান্ড ভবন, রয়েল এক্সচেঞ্জ এবং স্টক এক্সচেঞ্জ। এখানকার স্থায়ী জনসংখ্যা মাত্র ৬,০০০ কিন্তু বিভিন্ন ব্যবসায়িক ও দাপ্তরিক কাজের উদ্দেশ্যে প্রতিদিন এখানে প্রায় ৩৫০,০০০ লোকের আগমন ঘটে। শহরের উত্তর প্রান্তে অবস্থিত বার্বিকান সেন্টার এখানকার একমাত্র আবাসিক এলাকা। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় জার্মানদের গোলার আঘাতে ক্ষতিগ্রস্ত শহরের দালানগুলোকে প্রতিস্থাপিত করার উদ্দেশ্যে বার্বিকান তৈরি করা হয়েছিল। এর সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ স্থাপত্য হচ্ছে সেন্ট পলের ক্যাথেড্রাল। ইংরেজ স্থপতি ক্রিস্টোফার রেন এর নকশা করেছিলেন। এছাড়া টাওয়ার অফ লন্ডন বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ।
  • সিটি অফ ওয়েস্টমিন্‌স্টার: সিটি অফ লন্ডন থেকে প্রায় ২ মাইল উপরের দিকে সিটি অফ ওয়েস্টমিন্‌স্টার অবস্থিত। একাদশ শতাব্দীর পর থেকে লন্ডনের ধর্মীয় ও রাজনৈতিক ক্ষমতার কেন্দ্র পরিণত হয় এই শহরটি। শহরের কেন্দ্র জুড়ে রয়েছে ওয়েস্টমিন্‌স্টার অ্যাবে। এডওয়ার্ড দ্য কনফেসর একাদশ শতকে এই বৃহৎ গির্জার নির্মাণকাজ শুরু করেন এবং ত্রয়োদশ শতকে এটি পুনর্নিমাণ করা হয়। ব্রিটেনের রাজতন্ত্রের সাথে এর যোগাযোগ তখন থেকেই। বিভিন্ন রাজকীয় অনুষ্ঠান এবং শেষকৃত্য এখানেই সম্পন্ন হয়ে থাকে। একে সমাধিস্থল হিসেবেও ব্যবহার করা হয় ৩০০০-এরও অধিক গুরুত্বপূর্ণ ও নামী-দামী লোকের সমাধি এখানে অবস্থিত। এর পাশের রাস্তা ধরে অবস্থিত হাউজ অফ পার্লামেন্ট যাকে রাষ্ট্রীয়ভাবে নিউ প্যালেস অফ ওয়েস্টমিন্‌স্টার নামে ডাকা হয়। আরও পশ্চিমে গেলে পাওয়া যায় ব্রিটেনের রাজার স্থায়ী সরকারী বাসভবন যার নাম বাকিংহাম প্রাসাদ। উত্তরে রয়েছে ট্রাফালগার স্কোয়ার যা লন্ডনের অবশিষ্ট পশ্চিমাংশের সাথে ওয়েস্টমিন্‌স্টারের রাজনৈতিক ও ধর্মীয় যোগসূত্র স্থাপন করেছে।
  • পশ্চিম প্রান্ত: ট্রাফালগার স্কোয়ারের পশ্চিম এবং উত্তরে লন্ডনের পশ্চিম প্রান্ত অবস্থিত। দৈনন্দিন বাজার-সদাই এবং বিনোদনের প্রধান কেন্দ্র হওয়ায় একে অনেক সময় লন্ডনের কেন্দ্র বলা হয়ে থাকে। এখানকার ব্যস্ততম বাজার এলাকা হচ্ছে অক্সফোর্ড স্ট্রিট যেখানে সেলফ্রিজেস, জন লুই এবং মার্ক ও স্পেন্সারের মত বড় বড় ডিপার্টমেন্টাল স্টোর রয়েছে। এছাড়াও নাইট্‌সব্রিজ এবং পিকাডিলিতে বেশ কিছু দোকান রয়েছে। পিকাডিলির উত্তর-পূর্বে অবস্থিত সোহো এবং কনভেন্ট গার্ডেন সেকশনে বিনোদনের প্রধান কেন্দ্রগুলো ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে। সোহো এবং কনভেন্ট গার্ডেন সপ্তদশ শতকে আবাসিক এলাকা হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। কিন্তু পরবর্তীকালে এখানে দোকানপাট, নাট্যমঞ্চ এবং বিনোদন কেন্দ্র গড়ে উঠে। রাজকীয় অপেরা হাউজ এবং লন্ডনের ৪০টির-ও অধিক প্রধান নাট্যমঞ্চ এখানে অবস্থিত। এছাড়াও রয়েছে প্রচুর দোকানপাট, রেস্তোঁরা এবং বার। সোহো এবং কনভেন্ট হাউজের ঠিক পশ্চিমের অঞ্চলটি অপেক্ষাকৃত আবাসিক। তবে এখানেই হাইড পার্ক, কেনিংসটন গার্ডেন্‌স এবং রিজেন্ট্‌স পার্কের মত রাজকীয় পার্কগুলোর অবস্থান। পশ্চিম প্রান্তের উত্তর অংশে রয়েছে বিখ্যাত ব্রিটিশ জাদুঘর এবং লন্ডন বিশ্ববিদ্যালয়। এই উত্তর অংশটি শহরের বুদ্ধিজীবী ও লেখক-সাহিত্যিক মহলের আড্ডাখানা। বিংশ শতাব্দীর প্রথমভাগে এখানে বসবাসকারী লেখকদের যে সার্কেল গড়ে উঠেছিল তা ব্লুম্‌সবারি গ্রুপ নামে পরিচিত।
  • পূর্ব প্রান্ত এবং ডকল্যান্ডসমূহ: সিটি অফ লন্ডন এবং লন্ডন টাওয়ার পেরিয়েই লন্ডনের পূর্ব প্রান্তের অবস্থান। এখানের মূল স্থাপনা হচ্ছে লন্ডনের সব নৌ-বন্দর এবং জাহাজঘাট। এছাড়া অভিবাসীদের আবাস হিসেবেও স্থানটি পরিচিত। বস্তি অঞ্চল, দারিদ্র্য এবং সন্ত্রাসের কারণে এ স্থান কুখ্যাত। এই অঞ্চলেই দুর্ধর্ষ সন্ত্রাসী জ্যাক দ্য রিপারের আবির্ভাব ঘটেছিল। এখানকার বেথনালে গ্রিনে ভিক্টোরীয় যুগ থেকেই বস্তি অঞ্চল রয়ে গেছে। গরিব অভিবাসীদের বাসস্থান হলেও সাপ্তাহিক ছুটির সময়ে এখানকার রাস্তার পাশের বাজার বিখ্যাত হয়ে উঠে। বিশেষত মিড্‌লসেক্স স্ট্রিট জুড়ে অবস্থিত পেটিকোট লেনের বাজার পরিচিতি লাভ করেছে। জাহাজঘাটসমূহের প্রাণকেন্দ্র হচ্ছে আইল অফ ডগ্‌স যেখানে একসময় রাজকীয় কেনেল অবস্থিত ছিল। বর্তমানে প্রাচীন ডকইয়ার্ডসমূহ প্রতিস্থাপন করে নতুন জাহাজঘাট গড়ে তোলা হচ্ছে। ঘনবসতিপূর্ণ লন্ডনের উপর থেকে বাণিজ্যিক চাপ কমানোর জন্যই এই ব্যবস্থা করা হচ্ছে বলে মনে হয়।
  • উত্তর লন্ডন:ঊনবিংশ শতাব্দী নাগাদ উত্তর লন্ডনে কিছু বিচ্ছিন্ন গ্রাম ছাড়া আর কিছু ছিলনা। পাতাল রেলপথ তথা টিউব স্থাপনের পর এখানে উন্নয়নের সুযোগ সৃষ্টি হয়। রিজেন্ট্‌স ক্যানালে অবস্থিত ক্যামডেন টাউনে শহরের সবচেয়ে কমদামী পণ্যের বাজার রয়েছে। এখানে স্বল্প মূল্যে গহনা এবং পোশাক পাওয়া যায়। আরও উত্তরে গেলে পাওয়া যায় লন্ডনের সবচেয়ে খানদানী গ্রামগুলো। যেমন হ্যাম্পস্টিড (বিখ্যাত লেখকদের কেন্দ্রভূম) এবং হাইগেট (যেখানে লন্ডনের সবচেয়ে পরিচিত সমাধিস্থল অবস্থিত)। এখানকার সমাধিস্থলে কার্ল মার্ক্সের একটি বড় মূর্তি রয়েছে। উত্তর লন্ডনের একেবারে কেন্দ্রে রয়েছে ৮০০ একর আয়তন বিশিষ্ট [[হ্যাম্পস্টিড] হিথ]] নামক সুবৃহৎ পাবলিক পার্ক।
  • দক্ষিণ লন্ডন: টেম্‌স নদীর দক্ষিণ অংশ অনেক আগে থেকেই লন্ডন শহর থেকে বিচ্ছিন্ন অবস্থায় আছে। এখানে শহরের অখ্যাত সব বিনোদন কেন্দ্র যেমন পতিতালয়, বার এবং নাট্যমঞ্চ রয়েছে যেগুলো শহরের এখতিয়ার বহির্ভূত। অখ্যাত ব্যাংকসাইড থেকে সামান্য দূরে অবস্থান করছে সাউথওয়ার্ক ক্যাথেড্রাল যা ত্রয়োদশ শতকে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। ব্যাংকসাইডে মোরগ লড়াই এবং বেয়ার বেইটিংয়ের মত নিষ্ঠুর খেলাগুলো অনুষ্ঠিত হয়। এই ব্যাংকসাইডেই এলিজাবেথীয় নাট্যমঞ্চগুলো অবস্থিত। অপরাধ প্রবণতার দায়ে এগুলোকে মূল শহরের ভিতরে স্থাপন করতে দেয়া হতো না। এই নাট্যমঞ্চগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বিখ্যাত গ্লোব থিয়েটার যেখানে উইলিয়াম শেক্সপিয়ার তার অধিকাংশ নাটক মঞ্চস্থ করেছিলেন। সম্প্রতি এই নাট্যমঞ্চটির সংস্কার করা হয়েছে।

ইতিহাস

রোমান এবং স্যাক্সন যুগ

লন্ডন: মূল শহর ও মহানগর অঞ্চল, ইতিহাস, শিক্ষা ও ঐতিহ্য 
১৩০০ সালে লন্ডন রোমান সম্রাজ্যের মধ্যে সীমাবদ্ধ ছিল

৪৩ খ্রিষ্টাব্দে রোমানরা ব্রিটেন দখল করে পূর্ব ইংল্যান্ডের কোলচেস্টারে তাদের প্রাদেশিক রাজধানী স্থাপন করে। কোলচেস্টার যাবার পথ তৈরির উদ্দেশ্যে তারা টেম্‌স নদীর উপর একটি সেতু নির্মাণ করে এবং সেতুর এপারে লন্ডিনিয়াম শহরের পত্তন ঘটায়। সাধারণ রোমান ঔপনিবেশিক শহরগুলোর মতই সে শহরে দুইটি প্রধান সড়ক ছিল যে দুটি বৃহৎ ব্যাসিলিকাতে এসে মিলিত হয়েছে। এই ব্যাসিলিকার স্থানে এখন ব্যাংক অফ ইংল্যান্ড অবস্থিত। ২০০ সাল নাগাদ তারা এই শহরের চারপাশে একটি দেয়াল নির্মাণ করার মাধ্যমে পরবর্তীকালে সিটি অফ লন্ডন হিসেবে পরিচিত এলাকার সীমানা নির্ধারণ করে।

শিক্ষা ও ঐতিহ্য

লন্ডনের খ্যাতনামা উচ্চশিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলির মধ্যে লন্ডন বিশ্ববিদ্যালয়, লন্ডন স্কুল অব ইকোনমিক্স এবং কিংস কলেজ উল্লেখযোগ্য। এছাড়া এখানে চারুকলা ও বিভিন্ন ধ্রুপদী শিল্পকলার উপর অনেকগুলি বিশ্বসেরা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান আছে।

বিশ্ববিদ্যালয়

কলেজ ও অন্যান্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান

ভূগোল

লন্ডন, যাকে বৃহত্তর লন্ডনও বলা হয়, ইংল্যান্ডের নয়টি অঞ্চলের মধ্যে একটি এবং শহরটির বেশিরভাগ মহানগরী জুড়ে শীর্ষ স্তরের মহকুমা। লন্ডনের ছোট্ট প্রাচীন শহরটি একসময় পুরো বসতি নিয়ে গঠিত ছিল, কিন্তু এর শহুরে এলাকা বাড়ার সাথে সাথে লন্ডন কর্পোরেশন শহরটিকে তার শহরতলির সাথে একত্রিত করার প্রচেষ্টাকে প্রতিহত করে, যার ফলে "লন্ডন" বিভিন্ন উপায়ে সংজ্ঞায়িত হয় উদ্দেশ্য।

বৃহত্তর লন্ডনের ৪০ শতাংশ লন্ডন পোস্ট টাউন দ্বারা আচ্ছাদিত, যার মধ্যে 'লন্ডন' ডাক ঠিকানাগুলির অংশ। লন্ডন টেলিফোন এরিয়া কোড (020) বৃহত্তর এলাকা জুড়ে, আকারে বৃহত্তর লন্ডনের অনুরূপ, যদিও কিছু বাইরের জেলা বাদ দেওয়া হয়েছে এবং বাইরে কিছু জায়গা অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। বৃহত্তর লন্ডনের সীমানা M25 মোটরওয়েতে একত্রিত হয়েছে।

জলবায়ু

লন্ডন,ইংল্যান্ড
জলবায়ু লেখচিত্র
জাফেমামেজুজুসেডি
 
 
৫৯
 
 
 
৪৫
 
 
 
৩৯
 
১২
 
 
৪২
 
১৫
 
 
৪৬
 
১৮
 
 
৪৭
 
২২
১২
 
 
৪৬
 
২৪
১৪
 
 
৫৩
 
২৩
১৪
 
 
৫০
 
২০
১২
 
 
৬৫
 
১৬
 
 
৬৭
 
১১
 
 
৫৭
 
সেলসিয়াস তাপমাত্রায় সর্বোচ্চ এবং সর্বোনিম্ন গড়
মিলিমিটারে বৃষ্টিপাতের মোট পরিমাণ

লন্ডন একটি নাতিশীতোষ্ণ মহাসাগরীয় জলবায়ু অঞ্চল। লন্ডনে সর্বোচ্চ বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয় ১৭৫৫ সালের নভেম্বরে (১৮৯ মি.মি)। সর্বোচ্চ আর্দ্রতা ১৯০৩ সালে রেকর্ড করা হয় (৯৬৯ মি.মি)। সবচেয়ে শুষ্কতম বছর ছিল ১৯২১। বছরে গড় বৃষ্টিপাত ৫০০ মি.মি। যুক্তরাজ্যের ফলে লন্ডনের উপর নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে। জলবিজ্ঞান বিশেষজ্ঞদের মতে,২০৫০ সালের মধ্যে লন্ডনে ভূগর্ভস্থ পানি শেষ হয়ে যেতে পারে।

২০২২ সালের জুলাই মাসে,লন্ডনের তাপমাত্রা রেকর্ড ৪০° সেলসিয়াস ছাড়িয়ে যায়। ফলে শহরের বিভিন্ন স্থানে আগুন ছড়িয়ে পড়ে।

টীকা

Tags:

লন্ডন মূল শহর ও মহানগর অঞ্চললন্ডন ইতিহাসলন্ডন শিক্ষা ও ঐতিহ্যলন্ডন ভূগোললন্ডন টীকালন্ডন তথ্যসূত্রলন্ডনইংরেজি ভাষাইংল্যান্ডগ্রেট ব্রিটেনচিত্র:En-gb-London.oggটেম্‌স নদীব্রিটিশ সাম্রাজ্যযুক্তরাজ্যরাজধানীশহরসাহায্য:আধ্বব/ইংরেজি

🔥 Trending searches on Wiki বাংলা:

বদরের যুদ্ধে অংশগ্রহণকারী সাহাবাদের তালিকাশিশ্ন বর্ধনবিবাহবাংলাদেশ-ভারত ছিটমহলতরমুজগর্ভধারণময়মনসিংহমিজানুর রহমান আজহারীপ্রিমিয়ার লিগযৌন প্রবেশক্রিয়াওসামা বিন লাদেনইহুদি ধর্মওমানইন্সটাগ্রামমৌলিক পদার্থের তালিকাটেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রাসোমালিয়াইব্রাহিম (নবী)ভরিবাংলাদেশের যাত্রীবাহী ট্রেনের তালিকাআলহামদুলিল্লাহপ্রাণ-আরএফএল গ্রুপআহমদ ছফাজর্ডানযুক্তফ্রন্টথ্যালাসেমিয়ালাঙ্গলবন্দবিভিন্ন ধর্ম ও বিশ্বাসের তালিকাকুরআনবিষ্ণুভূমধ্যসাগরপ্রথম বিশ্বযুদ্ধের কারণইসলামে বহুবিবাহইরানের সর্বোচ্চ নেতাজনগণমন-অধিনায়ক জয় হেঢাকা মেট্রোরেলপুরুষাঙ্গের চুল অপসারণজাপানকাশ্মীর১৫ এপ্রিলবাংলাদেশের নদীর তালিকাশরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়আর্জেন্টিনা জাতীয় ফুটবল দলজনি সিন্সআয়তন অনুযায়ী এশিয়ার দেশসমূহের তালিকাআলমগীর (অভিনেতা)রংপুররিয়াল মাদ্রিদ ফুটবল ক্লাবমুম্বই ইন্ডিয়ান্সজাতীয় স্মৃতিসৌধপানিহামাসআলিইসরায়েলের জনসংখ্যার পরিসংখ্যানআমহিন্দুধর্মসর্বজিৎ সিংন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব নিউরোসায়েন্সেস ও হাসপাতালজর্ডানের ধর্মশাকিব খান অভিনীত চলচ্চিত্রের তালিকানকশীকাঁথা এক্সপ্রেসবাংলাদেশে পালিত দিবসসমূহচাহিদাবাংলাদেশ ব্যাংকবাংলার ইতিহাসবঙ্গোপসাগরতক্ষকচট্টগ্রামস্ক্যাবিসহরিচাঁদ ঠাকুরপশ্চিমবঙ্গের জেলাবটবাংলাদেশের রাষ্ট্রপতিদের তালিকাপরীমনিমোহনবাগান সুপার জায়ান্ট🡆 More