সাগর: লবণাক্ত জলের পরস্পর সংযুক্ত জলরাশি

সাগর, দরিয়া, বা বিশ্ব মহাসাগর হলো লবণাক্ত জলের পরস্পর সংযুক্ত জলরাশি, যা পৃথিবীর উপরিতলের ৭০ শতাংশেরও বেশি অংশ আবৃত করে রেখেছে। সমুদ্র পৃথিবীর জলবায়ুকে সহনীয় করে রাখে এবং জলচক্র, কার্বন চক্র ও নাইট্রোজেন চক্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। প্রাচীন কাল থেকেই মানুষ সমুদ্র পরিভ্রমণ করছে ও সমুদ্রাভিযান চালিয়ে আসছে। তবে সমুদ্র-সংক্রান্ত বিজ্ঞানসম্মত চর্চা বা সমুদ্রবিজ্ঞানের সূচনা ঘটে মোটামুটিভাবে ১৭৬৮ থেকে ১৭৭৯ সালের মধ্যে ক্যাপ্টেন জেমস কুকের প্রশান্ত মহাসাগর অভিযানের সময়।

Waves breaking on the shore
উপকূলীয় সমুদ্র তরঙ্গ, পারাকাস জাতীয় সংরক্ষিত অঞ্চল, ইকা, পেরু
Shipping at Singapore Harbour
মানবজাতির বিকাশ ও বাণিজ্যের উন্নতির ক্ষেত্রে সাগর বরাবরই একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা গ্রহণ করে এসেছে। (উপরের ছবিতে) সিঙ্গাপুরের পোতাশ্রয় (বিশ্বের ব্যস্ততম ট্রান্সশিপমেন্ট বন্দর এবং সিঙ্গাপুর প্রণালী ও মালাক্কা প্রণালীর মধ্যবর্তী নৌপথ।

সমুদ্রের জলে সর্বাধিক পরিমাণে যে ঘনবস্তু দ্রবীভূত অবস্থায় রয়েছে, তা হল সোডিয়াম ক্লোরাইড। এছাড়া অন্যান্য অনেক মৌলের সঙ্গে রয়েছে ম্যাগনেসিয়াম, ক্যালসিয়ামপটাশিয়ামের লবণ। কয়েকটি মৌল রয়েছে অতিসূক্ষ্ম কেন্দ্রীভূত অবস্থায়। সমুদ্রজলের লবণাক্ততা সর্বত্র সমান নয়। পৃষ্ঠতল ও বড় বড় নদীর মোহনার কাছে জলের লবণাক্ততা কম; অন্যদিকে সমুদ্রের গভীরতর অংশে লবণাক্ততা বেশি। যদিও বিভিন্ন মহাসাগরগুলির মধ্যে দ্রবীভূত লবণের আপেক্ষিক অনুপাতের পার্থক্য কমই হয়। সমুদ্রের পৃষ্ঠতলের উপর দিয়ে প্রবাহিত বায়ু তরঙ্গ সৃষ্টি করে। সেই তরঙ্গ সমুদ্রের অগভীর স্থানে প্রবেশ করে ভেঙে পড়ে। সমুদ্রের উপরিতলের সঙ্গে বায়ুর ঘর্ষণের ফলে সমুদ্রস্রোতেরও সৃষ্টি হয়। এই সমুদ্রস্রোতগুলি ধীরগতিতে অথচ নিয়মিতভাবে মহাসাগরগুলির মধ্যে জল প্রবাহিত করে। মহাদেশগুলির গড়ন ও পৃথিবীর আবর্তন (কোরিওলিস প্রভাব) ইত্যাদি কয়েকটি কারণ এই প্রবাহের অভিমুখ নিয়ন্ত্রণ করে। বিশ্ব পরিবহণ বেষ্টণী নামে পরিচিত গভীর-সমুদ্রস্রোতগুলি মেরু অঞ্চল থেকে ঠান্ডা জল প্রত্যেকটি মহাসাগরে বহন করে আনে। নিজের অক্ষের চারিদিকে পৃথিবীর আবর্তন, পৃথিবীর চারিদিকে পরিক্রমণরত চাঁদের মাধ্যাকর্ষণ বল, সামান্য পরিমাণে সূর্যের মাধ্যাকর্ষণ বলের প্রভাবে সাধারণত দিনে দু’বার সমুদ্রপৃষ্ঠের উত্থান ও পতন ঘটে। এই ঘটনা জোয়ার-ভাটা নামে পরিচিত। উপসাগর ও নদীর মোহনায় জোয়ার-ভাটার মাত্রা অত্যন্ত বেশি হয়। মহাসমুদ্রের নিম্নবর্তী ভূগর্ভে ভূসাংগাঠনিক পাতের নড়াচড়ার ফলে সমুদ্রের তলদেশে ঘটা ভূমিকম্পের ফলে বিধ্বংসী সুনামির উদ্ভব ঘটে। অবশ্য আগ্নেয়গিরির অগ্ন্যুৎপাত, প্রবল ভূমিধ্বস অথবা উল্কাপিণ্ডের সংঘাতেও অনেক সময় সুনামির সৃষ্টি হয়ে থাকে।

সমুদ্রে বিভিন্ন ধরনের ব্যাক্টেরিয়া, প্রোটিস্ট, শৈবাল, উদ্ভিদ, ছত্রাক ও প্রাণীর সন্ধান পাওয়া যায়। এই জন্য সমুদ্রে একটি বৈচিত্রময় সামুদ্রিক বাসস্থান ও বাস্তুতন্ত্র গড়ে উঠেছে। এই জাতীয় বাসস্থান ও বাস্তুতন্ত্র সমুদ্রের উপরিতলের সূর্যালোকিত জলভাগ ও তটরেখা থেকে উল্লম্বভাবে শীতল ও অন্ধকার সমুদ্রতলস্থ ক্ষেত্রের জলের উচ্চচাপযুক্ত সুগভীর অংশ এবং উত্তর মেরু অঞ্চলের বরফের তলায় স্থিত শীতল জল থেকে অক্ষরেখা বরাবর গ্রীষ্মমণ্ডলীয় অঞ্চলের বর্ণবৈচিত্র্যময় প্রবাল প্রাচীরগুলি পর্যন্ত প্রসারিত রয়েছে। উদ্ভিদ ও প্রাণীদের বেশ কিছু প্রধান গোষ্ঠীর বিবর্তন ঘটেছে সমুদ্রে। জীবনের উৎপত্তিও সম্ভবত সমুদ্রেই ঘটেছিল।সমুদ্রের রহস্য ঘেরা আচ্ছাদনে রয়েছে হাজারো বিস্ময়কর প্রাণি- ব্লবফিস, Japanese Spider Crab সহ কোলোসাল স্কুইড সহ আরও অনেক ।

সমুদ্র মানবজাতিকে প্রচুর খাদ্য সরবরাহ করে। এর মধ্যে মাছই প্রধান। তবে শেলফিস, স্তন্যপায়ী প্রাণী ও সামুদ্রিক শৈবাল পাওয়া যায় সমুদ্র থেকে। এগুলি হয় জেলেরা জাল ফেলে ধরে অথবা জলের তলায় চাষ করা হয়। এছাড়াও মানুষ সমুদ্রকে ব্যবহার করে বাণিজ্য, পর্যটন খনিজ উত্তলোন, বিদ্যুৎ উৎপাদন, যুদ্ধ ও সাঁতার, প্রমোদ ভ্রমণ ও স্কুবা ডাইভিং ইত্যাদি অবকাশ যাপনের কাজে। এই সব কাজকর্মের জন্য সমুদ্র দূষিত হয়। মানব সংস্কৃতিতেও সমুদ্রের গুরুত্ব অসীম। হোমারের ওডিসি মহাকাব্যের যুগ থেকে সাহিত্যে, সামুদ্রিক শিল্পকলায়, থিয়েটারে ও উচ্চাঙ্গ সংগীতে সমুদ্রের উপস্থিতি লক্ষণীয়। পৌরাণিক সাহিত্যের সিলা ইত্যাদি কয়েকটি ক্ষেত্রে সমুদ্র প্রতীকীভাবে দৈত্য হিসেবে চিত্রিত হয়েছে এবং অচেতন মন ও স্বপ্ন ব্যাখ্যার প্রতীক হিসেবে উপস্থাপিত হয়েছে।

উপসাগরসমূহের তালিকা

আটলান্টিক মহাসাগর

সাগর: উপসাগরসমূহের তালিকা, পাদটীকা, তথ্যসূত্র 
চিলির কেন্দ্রীয় সমুদ্রতীর
সাগর: উপসাগরসমূহের তালিকা, পাদটীকা, তথ্যসূত্র 
Mediterranean Sea on the coast of Antalya, Turkey at sunset.

উত্তর মহাসাগর

ভারত মহাসাগর

প্রশান্ত মহাসাগর

দক্ষিণ মহাসাগর

  • Weddell Sea
  • Ross Sea
  • Great Australian Bight
  • Gulf Saint Vincent
  • Spencer Gulf
  • Scotia Sea
  • Amundsen Sea
  • Bellingshausen Sea
  • Davis Sea

ভূমধ্য সাগরসমূহ

পাদটীকা

তথ্যসূত্র

উল্লিখিত গ্রন্থ

বহিঃসংযোগ

Tags:

সাগর উপসমূহের তালিকাসাগর পাদটীকাসাগর তথ্যসূত্রসাগর উল্লিখিত গ্রন্থসাগর বহিঃসংযোগসাগরকার্বন চক্রজলচক্রজলরাশিজেমস কুকনাইট্রোজেন চক্রলবণাক্ত জলসমুদ্রবিজ্ঞান

🔥 Trending searches on Wiki বাংলা:

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়পৃথিবীকুকি-চিন ন্যাশনাল ফ্রন্টচরিত্রহীন (উপন্যাস)বুর্জ খলিফাকানন দেবীতামিম বিন হামাদ আলে সানিবেলি ফুলতৃণমূল কংগ্রেসহাদিসবৃহস্পতি গ্রহসাদ্দাম হুসাইনক্বিবলা পরিবর্তননৃত্যতুলসীতাপপ্রবাহসন্ধিসাইবার অপরাধকুতুব মিনারচিরস্থায়ী বন্দোবস্তজহির রায়হানসাতক্ষীরা জেলা৬৯ (যৌনাসন)বর্ডার গার্ড বাংলাদেশপূরণবাচক সংখ্যা (ভাষাতত্ত্ব)মহেন্দ্র সিং ধোনিবাংলাদেশের জলবায়ুবাংলাদেশ ছাত্রলীগবাংলাদেশ আওয়ামী লীগনিউমোনিয়াইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউনপূর্ণিমা (অভিনেত্রী)ওবায়দুল কাদেরবাংলাদেশের জেলাভারতের রাষ্ট্রপতিদের তালিকামুম্বই ইন্ডিয়ান্সইতিহাসমহাস্থানগড়ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ পিএলসিসূর্যগ্রহণশিক্ষকপ্রাকৃতিক ভূগোলবিশ্ব বই দিবস২০২২–২৩ নিউজিল্যান্ড পুরুষ ক্রিকেট দলের পাকিস্তান সফর (ডিসেম্বর ২০২২)এস এম শফিউদ্দিন আহমেদচুম্বকহনুমান চালিশাআগরতলা ষড়যন্ত্র মামলারামমোহন রায়উত্তর চব্বিশ পরগনা জেলাবঙ্গাব্দআয়াতুল কুরসিআল-আকসা মসজিদবিরাট কোহলিবাংলার ইতিহাসসার্বিয়ারূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রটাইফয়েড জ্বরসতীদাহসূরা ফাতিহাপল্লী সঞ্চয় ব্যাংকবাংলাদেশের জাতীয় সংসদের সদস্যদের তালিকাযৌন প্রবেশক্রিয়াকলাস্পিন (পদার্থবিজ্ঞান)ধর্ষণবাংলাদেশের ইউনিয়নসূরা নাসবাংলা সাহিত্যমৌলিক পদার্থের তালিকাসমাজতন্ত্রবঙ্গভঙ্গ (১৯০৫)সরকারজলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবসালাহুদ্দিন আইয়ুবিবঙ্গভঙ্গ আন্দোলনবাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দলকনডম🡆 More