নওরোজ (ফার্সি: نوروز, অর্থাৎ নতুন দিন) হল ইরানি সৌর বর্ষপঞ্জী অনুসারে পালিত ইরানি নববর্ষ। এই উৎসবকে পারস্য নববর্ষ হিসেবে অভিহিত করাও বহুল প্রচলিত।
নওরোজ نوروز | |
---|---|
পালনকারী | প্রধান দেশসমূহ: ইরান আলবেনিয়া আর্মেনিয়া আজারবাইজান জর্জিয়া (রাষ্ট্র) ইরাক কাজাখস্তান কসোভো কিরগিজিস্তান সিরিয়া তাজিকিস্তান তুরস্ক তুর্কমেনিস্তান উজবেকিস্তান বিশ্বব্যাপী ধর্মীয় গোষ্ঠীসমূহ: কুর্দি প্রবাসী জরথুস্ত্রবাদী, সুফি গোষ্ঠীসমূহের কিছু অংশ, ইসমাইলিস, বাহাই এবং প্রবাসী ইরানি নাগরিকবৃন্দ। এছাড়াও বসনিয়া, ককেসাস, ক্রিমিয়া, ভারত, ম্যাসিডোনিয়া, পাকিস্তান, সার্বিয়া, উইগুর জনগোষ্ঠী এবং চীনের সালার জনগোষ্ঠীর মধ্যেও অপ্রাতিষ্ঠানিক ভাবে পালিত। |
তাৎপর্য | নববর্ষ উৎসব |
উদযাপন | The Haftsin setting, Chahârshanbe Sûrî, Sizdah Bedar, etc. |
তারিখ | ২০, ২১ অথবা ২২ মার্চ |
নওরোজ পার্সিয়ান, কুর্দিস্তান, লুরিস্তিনি, বালুচি, আইজরি এবং বালুচী মানুষের জাতীয় দিবস।
নওরোজ মূলতঃ ইরানি জাতি ও বৃহত্তর ইরানের জনগোষ্ঠীর মধ্যে পালিত হয়ে থাকে। এছাড়া মধ্য এশিয়া, দক্ষিণ এশিয়া, উত্তর পশ্চিম চীন সহ বিশ্বের অন্যান্য বহু অঞ্চলে এই উৎসব পালনের রেওয়াজ প্রসারিত হয়েছে।
নওরোজ ইরানি বর্ষপঞ্জীর প্রথম দিনটির সূচনা করে। এটি উদ্যাপিত হয় জ্যোতির্বিজ্ঞানভিত্তিক গণনার দ্বারা নির্ণীত মহাবিষুবের দিনে, যা সাধারণতঃ ২১ মার্চ অথবা তার পূর্বাপর দিনে ঘটে। এই উৎসব একটি অন্যতম জরথুস্ত্রবাদী উৎসব হওয়ার কারণে দক্ষিণ এশিয়াতে বসবাসকারী জরথুস্ত্রবাদীদের মধ্যেও গুরুত্ব সহকারে পালিত হয়। যেদিন সূর্যের কিরণ নিরক্ষরেখার উপর লম্বভাবে এসে পড়ে ও দিন-রাত্রির দৈর্ঘ্য সমান হয় সেই দিনটিকে প্রতিবছর জ্যোতির্বিজ্ঞানের সাহায্যে নির্ণয় করে সমস্ত ইরানি পরিবার একত্রিত হয়ে বিভিন্ন আচার অনুষ্ঠান পালন করে থাকে।
ঐতিহ্যগত ভাবে নওরোজ একটি জরথুস্ত্রবাদী উৎসব এবং প্রচলিত বিশ্বাস অনুসারে জরথুস্ত্রবাদের প্রতিষ্ঠাতা জরথুস্ত্র স্বয়ং এই উৎসব উদ্ভাবন করেছিলেন। যদিও নওরোজের উৎসবের প্রকৃত সূচনাকাল সঠিকভাবে জানা সম্ভব হয়নি।
"নওরোজ" শব্দটি হল ফার্সি ভাষার একটি যৌগিক শব্দ। "নও" শব্দের অর্থ হল "নব" বা "নতুন" এবং "রোজ" শব্দের অর্থ হল "দিন"।
ইরানি বর্ষপঞ্জীর প্রথম দিনটি হল মহাবিষুব, অর্থাৎ বসন্তের প্রথম দিন। মহাবিষুবের সময় সূর্য সরাসরি নিরক্ষরেখার উপর অবস্থান করে। এই সময় সূর্যের কিরণ উত্তর ও দক্ষিণ গোলার্ধে সমানভাবে ছড়িয়ে যায়। খ্রিস্টীয় একাদশ শতাব্দীতে ইরানি বর্ষপঞ্জীতে একটি গুরুত্বপূর্ণ সংস্কারসাধন করা হয়, যার মূল উদ্দেশ্য ছিল বর্ষ শুরুর দিনটি অর্থাৎ নওরোজকে মহাবিষুবের দিনে স্থির করে দেওয়া। এই বিষয়ে ইরানি বিজ্ঞানী নাসির আল-দিন আল-তুসি কর্তৃক প্রদত্ত সংজ্ঞা হল: "নববর্ষের প্রথম দিনটি (নওরোজ) হল সেইদিন যেদিন সূর্য মধ্যাহ্নের আগে মেষ রাশিতে প্রবেশ করবে।"
== ইতিহাস ও ঐতিহ্য ==
বিশ্বব্যাপী
জরথুস্ত্রবাদী সম্প্রদায়ের মধ্যে বছরের প্রথম দিন হিসেবে পালিত হয় নওরোজ। দক্ষিণ এশীয় বংশোদ্ভূত পারসি জরথুস্ত্রবাদীরা গ্রেগোরিয় বর্ষপঞ্জী অনুসারে নির্দিষ্ট তারিখ ২১ মার্চ নওরোজ পালন করে থাকে এবং অপরদিকে ইরানি বংশোদ্ভূত জরথুস্ত্রবাদীরা অন্যান্য ইরানিদের সাথেই জ্যোতির্বিজ্ঞানের গণনায় নির্ণীত মহাবিষুবের সঠিক দিনেই তা পালন করে। যেহেতু ভারত, পাকিস্তান এবং ইরানে জরথুস্ত্রবাদীদের বিভিন্ন সম্প্রদায় বিভিন্ন বর্ষপঞ্জী মেনে চলে, সেহেতু তাদের নওরোজ পালনের তারিখের ক্ষেত্রেও তারতম্য থাকে। জরথুস্ত্রবাদী বর্ষপঞ্জীর ফসলি সংস্করণ অনুসারে নওরোজ মার্চেই উদ্যাপিত হয়, এবং বর্তমানে অধিকাংশ জরথুস্ত্রবাদীই এই তারিখে নওরোজ পালন করে।
জরথুস্ত্রবাদী বর্ষপঞ্জীর অন্যান্য সংস্করণ অনুসারে নওরোজ দু'বার পালিত হয়ে থাকে। প্রথমটি পালিত হয় জামশেদি নওরোজ নামে, বসন্তের সূচনা হিসেবে ২১ মার্চ এবং দ্বিতীয় নওরোজটি পালিত হয় জুলাই/অগস্টে, নববর্ষ হিসেবে।
This article uses material from the Wikipedia বাংলা article নওরোজ, which is released under the Creative Commons Attribution-ShareAlike 3.0 license ("CC BY-SA 3.0"); additional terms may apply (view authors). বিষয়বস্তু সিসি বাই-এসএ ৪.০-এর আওতায় প্রকাশিত যদি না অন্য কিছু নির্ধারিত থাকে। Images, videos and audio are available under their respective licenses.
®Wikipedia is a registered trademark of the Wiki Foundation, Inc. Wiki বাংলা (DUHOCTRUNGQUOC.VN) is an independent company and has no affiliation with Wiki Foundation.