ভারতে নারীবাদ

ভারতে নারীবাদ হল ভারতের নারীদের রাজনৈতিক, সামাজিক ও অর্থনৈতিক সমানাধিকার প্রতিষ্ঠা ও রক্ষার আন্দোলন। এই ধারণাগুলিকে সংজ্ঞায়িত করার ক্ষেত্রেও এই আন্দোলনের অংশীদারেরা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিয়ে থাকেন। এটি ভারত রাষ্ট্রের মধ্যে নারীদের অধিকার প্রতিষ্ঠার আন্দোলন। অন্যান্য দেশের নারীবাদী আন্দোলনের মত ভারতেও এই আন্দোলনের মূল লক্ষ্যের মধ্যে আছে বিভিন্ন ক্ষেত্রে লিঙ্গ সমতা অর্জন: সমান পারিশ্রমিকে কাজ, স্বাস্থ্য ও শিক্ষায় সমানাধিকার এবং রাজনীতিতে সমানাধিকার। ভারতীয় নারীবাদীরা ভারতের নির্দিষ্ট পিতৃতান্ত্রিক সামাজিক পরিপ্রেক্ষিতে কিছু স্বতন্ত্র আন্দোলনও পরিচালনা করেছেন, যেমন সতীদাহ প্রথা রদ ও উত্তরাধিকার আইনের প্রতিষ্ঠা।

ভারতে নারীবাদ
জপলিন পাসরিচা ভারতে নারীবাদের প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক

ভারতে নারীবাদের ইতিহাসকে তিন ভাগে ভাগ করা যায়। অষ্টাদশ শতাব্দীর মধ্যভাগে ব্রিটিশ শাসনের আরম্ভের পর সতীদাহ প্রথার বিরোধিতার মাধ্যমে সূত্রপাত হয় প্রথম পর্বের। ঊনিশ শতকের মাঝামাঝি সংস্কারপন্থীরা শিক্ষায় সংস্কার করে নারী অধিকারের পক্ষে কথা বলতে শুরু করেন, বিভিন্ন প্রথায় নারীদের অংশগ্রহণের কথা বলেন। ১৯১৫ থেকে ভারতের স্বাধীনতা পর্যন্ত স্থায়ী দ্বিতীয় পর্বে মহাত্মা গান্ধী ভারত ছাড়ো আন্দোলন ও অন্যান্য আন্দোলনে নারীদের সামিল করে নেন এবং দেশের নানা স্থানে স্বতন্ত্র নারী সংগঠন গড়ে উঠতে থাকে। স্বাধীনতা-উত্তর অর্থাৎ তৃতীয় পর্বে ভারতে নারীবাদী আন্দোলনের মূল লক্ষ্য হয়েছে বিয়ের পর, কর্মক্ষেত্রে ও রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে মেয়েদের মর্যাদা অক্ষুণ্ণ রাখা।

ভারতের নারীবাদী আন্দোলনের সাফল্য এখনও অবধি সীমিত। আধুনিক ভারতের অধিবাসী নারীদের বহু ক্ষেত্রে বৈষম্যের শিকার হতে হয়। ভারতের পিতৃতান্ত্রিক সমাজব্যবস্থা নারীদের জমিতে অধিকার ও শিক্ষায় অধিকারের বিষয়গুলোতে বিশেষ প্রতিবন্ধকতার সৃষ্টি করে। গত দুই দশকে দেশে লিঙ্গভিত্তিক গর্ভপাতের প্রবণতা বেড়েছে। বর্তমান ভারতে নারীবাদ এগুলোকে নির্মূল করতে চায়।

ভারতে নারীবাদী আন্দোলনের সমালোচনাও হয়েছে। এই সমালোচনার মূল অভিযোগ হল এই আন্দোলন দেশের ইতোমধ্যেই বিশেষাধিকার প্রাপ্ত নারীদের মধ্যে বহুলাংশে কেন্দ্রীভূত হয়ে পড়ছে ও নিম্ন বর্ণের নারীদের অবহেলা করছে। এর ফলে বর্ণভিত্তিক নারী-সংগঠন ও আন্দোলনের সূত্রপাত হয়েছে।

ভারতীয় প্রেক্ষাপটে সংজ্ঞা

প্রাক-ঔপনিবেশিক সামাজিক কাঠামোতে নারীদের ভূমিকা থেকে বুঝা যায় যে নারীবাদ পাশ্চাত্যের তুলনায় ভারতে ভিন্নভাবে ধারণা করা হয়। ভারতে নারীদের বিষয়গুলো প্রথম সমাধান করা শুরু হয় যখন রাষ্ট্র একদল নারীবাদী গবেষক এবং সক্রিয়কর্মীর কাছে নারীদের অবস্থা নিয়ে একটি প্রতিবেদন পেশ করে। এই প্রতিবেদনে স্বীকার করা হয়েছে যে ভারতে নারীদেরকে কাঠামোগত শ্রেণিবিন্যাস এবং অবিচারের অধীনে নিপীড়ন করা হয়েছে। এই সময়ে ভারতীয় নারীবাদীরা নারী নির্যাতন নিয়ে পরিচালিত পাশ্চাত্য বিতর্ক দ্বারা প্রভাবিত হয়। যাইহোক, ভারতের ঐতিহাসিক ও সামাজিক সংস্কৃতির পার্থক্যের কারণে, ভারতীয় নারীদের পক্ষে বিতর্ক সৃজনশীলভাবে পরিচালনা করতে হয়, এবং কিছু পাশ্চাত্য ধারণা প্রত্যাখ্যান করতে হয়। ১৯৭৫-১৯৮৫ সালের দশককে জাতিসংঘের নারী দশক হিসেবে ঘোষণা করা হলে নারী বিষয়ক বিষয়গুলো আন্তর্জাতিক খ্যাতি অর্জন করতে শুরু করে।

ভারতীয় নারীবাদীরা ভারতীয় সমাজে কিছু বাধার সম্মুখীন হয় যা পাশ্চাত্য সমাজে বিদ্যমান নয় বা প্রচলিত নয়। যদিও ভারতীয় নারীবাদীদের তাদের পশ্চিমা সহকর্মীদের মত একই চূড়ান্ত লক্ষ্য আছে, তাদের নারীবাদের সংস্করণ ভারতের আধুনিক পিতৃতান্ত্রিক সমাজে তারা যে ধরনের বিষয় এবং পরিস্থিতির সম্মুখীন হয় তা মোকাবেলা করার জন্য নানাভাবে ভিন্ন হতে পারে। ভারতীয় নারীবাদীরা তাদের সমাজের পিতৃতান্ত্রিক কাঠামোকে নানাভাবে চ্যালেঞ্জ করার চেষ্টা করে। সম্পত পাল দেবী একজন প্রাক্তন সরকারী কর্মী এবং পাঁচ সন্তানের জননী, যিনি ভারতে বেড়ে ওঠার সময় তার নিজের সম্প্রদায়ের মধ্যে গার্হস্থ্য নির্যাতন এবং সহিংসতা লক্ষ্য করেন। এর ফলে, তিনি 'গুলাবি গ্যাং' নামে একটি সজাগ দল শুরু করার সিদ্ধান্ত নেন, যারা নির্যাতনকারীদের খুঁজে বের করে বাঁশের লাঠি দিয়ে মারধর করে যতক্ষণ না বিশ্বাস করা হয় যে তারা তওবা করেছে এবং এর শিকারব্যক্তিরা যথেষ্ট প্রতিশোধ নিয়েছে। ধর্মের ক্ষেত্রে, ভারতীয় নারীবাদীরা হিন্দুধর্মে নারী দেবীর শক্তিশালী ভাবমূর্তির প্রতি মনোযোগ আকর্ষণ করে। তারা ভারতীয় সমাজের প্রাক-ইতিহাস তুলে ধরেছেন এবং জোর দিয়েছেন যে ভারতীয় ইতিহাসের কিছু সময় আছে যা মূলত নারী-ভিত্তিক এবং মাতৃতান্ত্রিক ছিল না।

ভারতীয় নারীরা বিভিন্ন নিপীড়নমূলক পিতৃতান্ত্রিক পারিবারিক কাঠামোর মাধ্যমে বেঁচে থাকার সমঝোতা করে: বয়স, অর্ডিনাল স্ট্যাটাস, উৎপত্তি, বিবাহ এবং প্রজনন, এবং পিতৃতান্ত্রিক গুণাবলীর মাধ্যমে পুরুষদের সাথে সম্পর্ক। পিতৃতান্ত্রিক গুণাবলীর উদাহরণের মধ্যে রয়েছে যৌতুক, স্যারিং পুত্র ইত্যাদি, আত্মীয়তা, বর্ণ, সম্প্রদায়, গ্রাম, বাজার এবং রাষ্ট্র। তবে উল্লেখ্য যে ভারতের বেশ কয়েকটি সম্প্রদায়, যেমন কেরালার নায়ার, ম্যাঙ্গালোরের শেট্টি, কিছু মারাঠি গোত্র, এবং বাঙালি পরিবার, মাতৃতান্ত্রিক প্রবণতা প্রদর্শন করে। এই সম্প্রদায়ের মধ্যে, পরিবারের প্রধান সবচেয়ে বয়স্ক মহিলা, সবচেয়ে বয়স্ক পুরুষের বদলে। শিখ সংস্কৃতি এছাড়াও তুলনামূলকভাবে লিঙ্গ-নিরপেক্ষ হিসেবে বিবেচনা করা হয়।

পাশ্চাত্য ও ভারতীয় নারীবাদের মধ্যে সম্পর্ক নিয়ে ভারতীয় নারী আন্দোলনের মধ্যে তীব্র বিতর্ক হয়েছে। অনেক ভারতীয় নারীবাদী একই সাথে একটি নির্দিষ্ট "ভারতীয়" সংবেদনশীলতা এবং একই সাথে বিশ্বব্যাপী দল এবং ব্যক্তিদের সাথে একটি আন্তর্জাতিক নারীবাদী একাত্মতা দাবি করেন। ১৯৭০-এর দশকে পশ্চিমে উদারনৈতিক নারীবাদের উত্থান শিক্ষা ও কর্মসংস্থানে সমান সুযোগের দাবীর উপর গভীরভাবে মনোযোগ প্রদান করে, একই সাথে নারীদের প্রতি সহিংসতা বন্ধ করে দেয়। একটি বৃহৎ পরিসরে, ভারতে উদীয়মান নারীবাদী আন্দোলন পাশ্চাত্য আদর্শ দ্বারা প্রভাবিত হয়। তারা শিক্ষা এবং সমান অধিকারের আহ্বান জানিয়েছে কিন্তু তাদের আবেদন স্থানীয় বিষয় এবং উদ্বেগের সাথে খাপ খাইয়ে নিয়েছে, যেমন নারীদের প্রতি যৌতুক সংক্রান্ত সহিংসতা, সতী, যৌন নির্বাচিত গর্ভপাত এবং হেফাজতমূলক ধর্ষণ। কিছু ভারতীয় নারীবাদী পরামর্শ দিয়েছেন যে এই বিষয়গুলো প্রকৃতিতে বিশেষভাবে "ভারতীয়" নয়, বরং নারীদের উপর পিতৃতান্ত্রিক নিপীড়নের একটি বৃহত্তর প্রবণতার প্রতিফলন।


ইতিহাস

মৈত্রেয়ী চৌধুরীর মতে, ভারতের পুরুষদের দ্বারা পরিচালিত আন্দোলন এবং পরবর্তীকালে নারীরা যোগ দেয় এটা পশ্চিমের থেকে আলাদা।[তথ্যসূত্র প্রয়োজন] কিন্তু সামান্য পরে হলেও মহারাষ্ট্রে নারী অধিকার ও শিক্ষার অগ্রগামী প্রবক্তাদের দ্বারা স্বাধীনভাবে নারীবাদের উদ্যোগ নেওয়া শুরু হয়েছিল: সাবিত্রীবাই ফুলে, যিনি ১৮৪৮ খ্রিস্টাব্দে ভারতে প্রথম বালিকা বিদ্যালয় আরম্ভ করেছিলেন; তারাবাই শিন্ধে, যিনি ১৮৮২ খ্রিস্টাব্দে স্ত্রী পুরুষ তুলনা নামে ভারতের প্রথম নারীবাদী বই লিখেছিলেন; এবং পণ্ডিতা রমাবাই, যিনি পুরুষতন্ত্র ও হিন্দুধর্মের জাত-পাতের সমালোচনা করেন, তিনি অসবর্ণে বিবাহ করেন এবং খ্রিস্টান ধর্মে ধর্মান্তরিত হয়েছিলেন (১৮৮০ খ্রিস্টাব্দের দশকে)। বাঙালি সমাজ সংস্কারকদের প্রচেষ্টার মধ্যে ছিল সতীদাহ প্রথার বিলোপসাধন, এই জঘন্য ব্যবস্থায় সদ্যবিধবাকে তাঁর মৃত স্বামীর চিতায় সহমরণে জীবন্ত জ্বলানো হোত, বাল্যবিবাহ প্রথা বিলোপ, বিধবাদের সজ্জা বিকৃতকরণ, উচ্চবর্ণের হিন্দু বিধবাদের বিবাহ প্রচলন, নারী শিক্ষা বিস্তার, নারীদের আইনিভাবে সম্পত্তি পাওয়ার অধিকার, এবং নারীদের দত্তক নেওয়ার মতো মর্যাদার আইনগতভাবে স্বীকৃতিদান।

উনিশ শতক এমন একটা সময় ছিল যখন নারীদের অধিকাংশ সমস্যা প্রচারের আলোয় এসেছিল এবং সংস্কার শুরু করার ক্ষেত্র প্রস্তুত হয়েছিল। শুরুর দিকে ভারতীয় নারীদের জন্যে সংস্কার পুরুষদের দ্বারা পরিচালিত হয়েছিল। যাইহোক, উনিশ শতকের শেষ দিকে তাঁরা তাঁদের স্ত্রী, ভগিনী, কন্যা, আশ্রিতা এবং অন্যান্য ব্যক্তিদের প্রচেষ্টার সঙ্গে সামিল হয়েছিলেন যাতে প্রচারসমূহ নারী শিক্ষার মতো বিষয়গুলোকে প্রভাবিত করেছিল। বিশ শতকের শেষাংশে নারীরা নিজেদের স্বাধীন সংস্থা গঠনের মাধ্যমে স্বশাসন লাভ করেছিলেন। ত্রিশ দশকের শেষ এবং চল্লিশের দশকে নারীদের সক্রিয়তা গঠনের একটা বর্ণনামূলক শুরুয়াত দেখা দিয়েছিল। 'তর্কবাদী' তৈরিতে নারীবাদী ও মার্কসবাদের সঙ্গে জৈবিক সংযোগের দৃষ্টিতে এই বিষয়টা নতুনভাবে গবেষণালব্ধ এবং বৃদ্ধিপ্রাপ্ত হয়েছিল, এই সঙ্গে সাম্প্রদায়িকতা এবং জাতপাতের বিরোধীও হয়েছিল। ভারতের সংবিধান 'লিঙ্গের মধ্যে সমতা' সম্বন্ধে নিশ্চয়তা দিয়েছে, যেটা ১৯৭০ খ্রিস্টাব্দের দশক পর্যন্ত নারী আন্দোলনকে প্রশমিত করতে সক্ষম হয়েছিল।

নারীর অধিকার আন্দোলনের সংস্কারের বছরগুলোতে লিঙ্গের মধ্যে পার্থক্য কমবেশি ধরে নেওয়া হয়েছিল যে, তাদের ভূমিকা, কার্যাবলি, লক্ষ্য এবং ইচ্ছাগুলো হচ্ছে আলাদা। ফলে তাদেরকে শুধু আলাদা হিসেবে লালনই নয়, তাদের প্রতি ব্যবহারেও পার্থক্য করা হোত। সময়ের সঙ্গে তাল মিলিয়ে এই পার্থক্যসমূহই নারী আন্দোলনের মুখ্য কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছিল। উনিশ শতকের গোড়ায় সংস্কারকদের যুক্তি ছিল যে, পুরুষ ও নারীর মধ্যে পার্থক্য সমাজে নারীদের অধীনতার কোনো কারণ ছিলনা। যাইহোক, পরবর্তীকালে সস্কারকরা এই অভিমত ব্যক্ত করেন যে, প্রকৃতপক্ষে এটাই সেই পার্থক্য যেটা নারীদের ভূকিকায়, উদাহরণস্বরূপ মায়েদের, সমাজে পরাধীন করে রেখেছিল; অতএব, নারীদের অধিকার সম্পর্কে প্রকৃত যত্নবান হওয়া উচিত ছিল। নারীদের সংস্থা গঠন এবং তাদের নিজেদের অংশগ্রহণের সঙ্গে সঙ্গে মা হিসেবে ভূমিকা পালন করাটা চাপের, কিন্তু অন্য চোখে দেখলে এই যুক্তি গ্রাহ্য হয় যে, নারীদের বক্তৃতা, শিক্ষা এবং বন্ধনমুক্তি দরকার। তবে, সময়ের সঙ্গে মা হিসেবে নারীদের পরিবর্তনের অধীনে চলতে হয়—পরিবারের ওপর নজর দিতে আদি মায়ের প্রতীক হিসেবে গড়ে উঠতে উদ্দীপক এবং কখনো বা পূর্বগানুকৃতি ছবির মতো হতে হয়।


প্রথম ধাপ: ১৮৫০-১৯১৫

ভারতে নারীবাদ 
কামিনী রায় (কবি এবং ভোটাধিকার আন্দোলনকারী) যিনি ১৮৮৬ খ্রিস্টাব্দে ভারতের প্রথম সাম্মানিকসহ স্নাতক

আধুনিকতার ঔপনিবেশিক উদ্যোগের ফলে গণতন্ত্র, সমতা এবং ব্যক্তিগত অধিকার এই ধারণাগুলো তৈরি হয়েছিল। জাতীয়তাবাদের উন্মেষ এবং বৈষম্যের আত্মদর্শন অভ্যাসের আলোয় জাতপাত ও লিঙ্গসম্পর্কের অঙ্গীভূত সমাজ সংস্কার সামনে এসেছিল। সতীদাহের (বিধবা জ্বালানো) মতো সামাজিক সমস্যার মূলোৎপাটন করার জন্যে ভারতে নারীবাদের প্রথম ধাপে পুরুষেরা উদ্যোগ নিয়েছিল, বিধবাদের পুনর্বিবাহে সম্মতি, বাল্যবিবাহ নিষিদ্ধ করা, এবং অস্বাক্ষরতা কমানো, এই সঙ্গে সম্মতির বয়স ও আইনগত হস্তক্ষেপের মাধ্যমে সম্পত্তির অধিকার নিশ্চিত করাও ছিল। কিছু উচ্চবর্ণের হিন্দু নারী তাদের মুখোমুখি হওয়া ব্রাহ্মণ্য ঐতিহ্যের সীমাবদ্ধতাকে অস্বীকার করেছিল। যাইহোক, উনিশ শতকের শেষ দিকে জাতীয়তাবাদী আন্দোলনের উন্মেষ ঘটায় ভারতীয় সমাজে নারীর অবস্থান উন্নত করার প্রয়াস কিছুটা ব্যাহত হয়েছিল। এই আন্দোলনগুলো বিশেষ করে পারিবারিক সম্পর্কের বাতাবরণে 'লিঙ্গ সম্পর্কগুলোতে ঔপনিবেশিক হস্তক্ষেপ রোধ করেছিল। উনিশ শতকের মাঝামাঝি থেকে শেষের দিকে হিন্দু পরিবারকে 'আধুনিক' করার ঔপনিবেশিক প্রচেষ্টাকে জাতীয় পর্যায়ে প্রতিরোধের কাঠামো তৈরি হয়েছিল। একই সঙ্গে যখন সরকার নারীদের বিবাহের বয়স ঠিক করার চেষ্টা করছিল তখন বিতর্কিত সম্মতির বয়স নিয়ে বিস্ফোরিত হতে থাকে।

ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক অগ্রগতি চলাকালীন ভারতের বেশ কিছু রাজ্যে নারীদের শাসন বজায় ছিল; যেমন, ঝাঁসি (ঝাঁসির রানি লক্ষ্মীবাই), কিট্টুর (রানি চান্নাম্মা), ভোপাল (কুইদিসা বেগম) এবং পাঞ্জাব (জিন্দ কাউর)।

দ্বিতীয় ধাপ: ১৯১৫-১৯৪৭

উক্ত সময়কালে ঔপনিবেশিক শাসনের বিরুদ্ধে সংগ্রাম তীব্রতর হয়েছিল। সেই সময় প্রধান কারণ হিসেবে ছিল জাতীয়তাবাদ। সাংস্কৃতিক পুনরুজ্জীবনবাদের হাতিয়ার হিসেবে যাকে বলা হয় ভারতীয় শ্রেষ্ঠত্ব সেটা ভিক্টোরিয়ান নারীত্বের সমকক্ষ অত্যাবশ্যকীয় ভারতীয় নারীত্বের প্রতীক হিসেবে দেখা দিয়েছিল: বিশেষ বলা হলেও সাধারণের জায়গা থেকে আলাদা ছিল। মহাত্মা গান্ধি ভারতীয় নারীদের বিস্তারিত গণআন্দোলনগুলোকে বৈধতা দিয়ে ব্রিটিশরাজের বিরুদ্ধে অসহযোগ আইন অমান্য আন্দোলনে পর্যবসিত করেছিলেন। তিনি নারীদের যত্নশীল, আত্মত্যাগ, বলিদান এবং সহনশীলতার ভূমিকাকে সমুচ্চ মর্যাদায় জনসাধারণ্যে তাদের স্থান প্রতিষ্ঠিত করেছিলেন। বরসাদ এবং বারদোলির গ্রামীণ সত্যাগ্রহে কৃষক রমণীদের ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ ছিল। অল ইন্ডিয়া উইমেন্স কনফারেন্স (এআইডবলুসি) এবং ন্যাশনাল ফেডারেশন অব ইন্ডিয়ান উইমেন (এনএফআইডবলু) শুধুমাত্র নারীদের সংগঠনদ্বয়ের একীকরণ হয়েছিল। নারীদের রাজনীতিতে অংশগ্রহণ, নারী ভোটাধিকার, সাম্প্রদায়িক পুরস্কার এবং রাজনৈতিক দলের নেতৃত্ব সম্পর্কিত সমস্যায় নারীরা একাগ্রভাবে নিবিষ্ট ছিল।

ভারতীয় নারীদের জন্যে ১৯২০ খ্রিস্টাব্দের দশক ছিল এক নতুন যুগ যাকে 'নারীবাদ' হিসেবে অভিহিত করা হয় কেননা, ওই সময়কালেই নারীদের স্থানীয় সমিতিগুলো প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। এই সমিতিগুলো নারীদের শিক্ষার সমস্যা, কর্মরত নারীদের জীবনযাপনের উন্নতির কৌশল, এবং অল ইন্ডিয়া উইমেন্স কনফারেন্সের মতো জাতীয় স্তরের সমিতি গঠনে জোর দিয়েছিল। এআইডবলুসি নিবিড়ভাবে ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেসের অনুমোদিত ছিল। মহাত্মা গান্ধির নেতৃত্বে এই সংস্থা জাতীয়তাবাদী ও উপনিবেশবিরোধী আন্দোলনে অংশগ্রহণ করেছিল। এর ফলে নারীদেরকে গণ সংহতি এবং ভারতীয় জাতীয়তাবাদের অবিচ্ছেদ্য অংশ হিসেবে প্রস্তুত করেছিল। প্রকৃতপক্ষে নারীগণ ১৯৩০ খ্রিস্টাব্দের দশকের আইন অমান্য আন্দলনসহ নানা জাতীয়তাবাদী এবং উপনিবেশবিরোধী প্রচেষ্টার খুব গুরুত্বপূর্ণ অংশ হয়ে উঠেছিল।

স্বাধীনতার পরবর্তীকালে অল ইন্ডিয়া উইমেন্স কনফারেন্স কার্যকর ছিল এবং ১৯৫৪ সালে ভারতীয় কমিউনিস্ট পার্টি তাদের নিজস্ব নারী শাখা ন্যাশনাল ফেডারেশন অব ইন্ডিয়ান উইমেন গঠন করে। যাই হোক, ১৯৪৭ খ্রিস্টাব্দে স্বাধীনতার ঠিক পর পর নারীবাদী আলোচ্যসূচি এবং আন্দোলনগুলো সেভাবে কার্যকর ছিলনা, কেননা, জাতি গঠনের ওপরই নারীবাদী সমস্যা নিয়ে জাতীয়তাবাদী আলোচ্যসূচিগুলো অগ্রাধিকার পেয়েছিল।

স্বাধীনতা সংগ্রামে নারীদের অংশগ্রহণ স্বাধীন ভারতে তাদের সমালোচনামূলক চেতনার উন্মেষ ঘটিয়েছিল। তার ফলে ভারতীয় সংবিধানে নারীদের ভোটাধিকার ও অন্যান্য নাগরিক অধিকার নথিভুক্ত হয়। সেখানে ইতিবাচক পদক্ষেপের মাধ্যমে নারীদের উন্নয়ন, মায়ের স্বাস্থ্য ও শিশুর যত্নের ব্যবস্থা (ক্রেশ), সমান কাজে সমান পারিশ্রমিক ইত্যাদির সংস্থান রাখা হয়েছে। রাষ্ট্র নারীদের প্রতি একটা পৃষ্ঠপোষক ভূমিকা গ্রহণ করেছে। উদাহরণস্বরূপ, ভারতের সংবিধানে বর্ণিত হয়েছে যে, নারীরা হল জনসাধারণের মধ্যে একটা 'দুর্বল অংশ' এবং সেইহেতু তারা যাতে সমানভাবে কাজ করতে পারে এব্যাপারে সহায়তা দিতে হবে। এইরূপে ভারতীয় নারীদেরকে পশ্চিমের নারীদের মতো প্রাথমিক অধিকারের জন্যে লড়াই করতে হয়নি। তবে মৌলিক অধিকার ও গণতন্ত্রের অর্জিত ধারণাকে যখন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক আদর্শ এবং কাঠামো নারীদের সম্মান করতে ব্যর্থ হওয়ার পর পরই ওই কল্পরাজ্য শেষ হয়ে যায়।

স্বাধীনোত্তর কাল (১৯৪৭ খ্রিস্টাব্দ পরবর্তী)

ভারতে নারীবাদ 
ইন্দিরা গান্ধি ছিলেন ভারতের প্রথম প্রধানমন্ত্রী জওহরলাল নেহরুর একমাত্র সন্তান। তিনি হলেন ভারতের প্রথম ও একমাত্র মহিলা প্রধানমন্ত্রী যিনি দ্বিতীয় সর্বাধিক সময়কাল ভারতের প্রধানমন্ত্রী ছিলেন।

স্বাধীনতার পরবর্তীকালে নারীবাদীরা কাজের ব্যাপ্তির পুনর্সজ্ঞায়িত করে যাতে নারীরা দেশের কর্মশক্তিতে যোগদান করতে অনুমতি লাভ করে। স্বাধীনতার আগে বেশির ভাগ নারীবাদীরা শ্রমশক্তিতে লিঙ্গ বিভাজনের শিকার হতো। যাই হোক, ১৯৭০ খ্রিস্টাব্দের দশকে অতীতে তৈরি হওয়া অসাম্যকে চ্যালেঞ্জ জানিয়েছিল এবং সংরক্ষণের জন্যে লড়াই করেছিল। অসাম্যের মধ্যে ছিল নারীদের জন্যে অসম পারিশ্রমিক, নারীদের 'অদক্ষ' ক্ষেত্রে অবনমন, শ্রমের ক্ষেত্রে নারীদের সংরক্ষিত বাহিনী হিসেবে গণ্ডিবদ্ধ রাখা। অন্যভাবে বলতে গেলে নারীবাদীদের লক্ষ্য ছিল নারীরা যে অত্যাবশ্যকীয়ভাবে সস্তা মূলধন হিসেবে ব্যবহৃত হোত সেই বিনামূল্যে সেবার বিলুপ্তি ঘটানো। ১৯৭০ খ্রিস্টাব্দের দশকে নারীবাদী শ্রেণি-সচেতনতাও সামনে এসেছিল, যেখানে নারীবাদীদের স্বীকৃত অসাম্যগুলো শুধু পুরুষ ও নারীর মধ্যেই সীমাবদ্ধ ছিলনা, এমনকি শক্তি কাঠামোর মধ্যে জাতি, উপজাতি, ভাষা, ধর্ম, অঞ্চল, শ্রেণি ইত্যাদি ছিল। যখন নারীদের ছাপিয়ে যাওয়া প্রচার তাদের প্রচেষ্টাগুলোকে নিবদ্ধ করেছিল তখন একটা গোষ্ঠীর চাহিদা পূরণ করার পর অন্য গোষ্ঠীর মধ্যে অসাম্য দেখা দেয়নি। বর্তমান একুশ শতকের শুরুতে ভারতীয় নারীবাদী আন্দোলন একটা উচ্চতায় পৌঁছেছে যেখানে নারীদের সমাজে এক প্রয়োজনীয় সদস্য হিসেবে দেখা হয় এবং তাদের তুলনা করার অধিকার, ব্যক্তিগত জীবনে কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতা এবং তাদের আত্মনিয়ন্ত্রণের অধিকারও থাকে।

১৯৬৬ খ্রিস্টাব্দে ইন্দিরা গান্ধি প্রথম মহিলা ভারতের প্রধানমন্ত্রী হন। তিনি উপর্যুপরি তিন দফায় ভারতের প্রধানমন্ত্রী (১৯৬৬-৭৭) ছিলেন এবং ১৯৮০ থেকে ১৯৮৪ খ্রিস্টাব্দে তাঁর হত্যাকাল পর্যন্ত চতুর্থ দফায় তিনি প্রধানমন্ত্রী ছিলেন।

ভারতীয় ফৌজদারি কার্যবিধি কোড, ১৯৭৩ আইনের ৫৩এ ধারা মোতাবেক অভিযুক্ত ব্যক্তির কিছু ডাক্তারি পরীক্ষার ব্যবস্থা আছে। অন্যদিকে ভারতীয় ফৌজদারি কার্যবিধি কোডের ১৬৪এ ধারা অনুযায়ী ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তির ডাক্তারি পরীক্ষা করা হয়ে থাকে।

১৯৮৬ খ্রিস্টাব্দে মেরি রয় তাঁর কেরালিয়ান সিরিয়ান খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের উত্তরাধিকার আইনের বিরুদ্ধে ভারতের সর্বোচ্চ ন্যায়ালয়ে একটা মামলা জিতেছিলেন। ওই বিচার পৈতৃক সম্পত্তির ব্যাপারে সিরিয়ান খ্রিস্টান নারীদের তাদের সহোদরদের সঙ্গে সমানাধিকার নিশ্চিত করেছে। তখনো পর্যন্ত সিরিয়ান খ্রিস্টান সম্প্রদায় ত্রিবাঙ্কুর উত্তরাধিকার আইন, ১৯১৬ এবং কোচিন উত্তরাধিকার আইন, ১৯২১―এই দুই আইনের বিধান অনুসরণ করত, যখন সারা ভারতে ওই একই সম্প্রদায় ভারতীয় উত্তরাধিকার আইন, ১৯২৫ অনুসরণ করত।

১৯৯১ খ্রিস্টাব্দে কেরালা উচ্চ ন্যায়ালয় সবরিমালা মন্দিরে ১০ বছরের ওপরে এবং ৫০ বছরের নিচে নারীদের প্রবেশ নিষিদ্ধ করে, কেননা, তারা ওই সময়কালে ঋতুমতী হয়। যাইহোক, ২০১৮ খ্রিস্টাব্দের ২৮ সেপ্টেম্বর ভারতের সর্বোচ্চ ন্যায়ালয় মন্দিরে নারীদের প্রবেশের ওপর নিষেধাজ্ঞা তুলে নেয়। আদালতের ভাষ্য ছিল যে, নারীদের প্রতি যেকোনো ক্ষেত্রে বৈষম্য, এমনকি ধর্মীয় বিধিনিষেধ হলেও তা অসাংবিধানিক।

ইস্যু

নথিগত অগ্রগতি সত্ত্বেও অনেক সমস্যা এখনও রয়ে গেছে যা ভারতীয় নারীদের নতুন অধিকার এবং সুযোগের সম্পূর্ণ সুবিধা নিতে বাধা দেয়।

এমন অনেক ঐতিহ্য এবং রীতিনীতি রয়েছে যা শত শত বছর ধরে ভারতীয় সংস্কৃতির একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। ধর্মীয় আইন এবং প্রত্যাশা, বা প্রতিটি নির্দিষ্ট ধর্মের তৈরি "ব্যক্তিগত আইন" প্রায়শই ভারতীয় সংবিধানের সাথে দ্বন্দ্ব তৈরি করে এবং নারীদের আইনগত অধিকার ও ক্ষমতা সংকুচিত করার চেষ্টা করে। বৈধতা থাকা সত্ত্বেও ভারত সরকার ধর্ম এবং ধর্মীয় ব্যক্তিগত আইনে হস্তক্ষেপ করে না। ভারতীয় সমাজ মূলত পরিবার এবং সম্প্রদায়ের মধ্যে শ্রেণীবদ্ধ ব্যবস্থা নিয়ে গঠিত। এই শ্রেণিবিন্যাসগুলি বয়স, লিঙ্গ, ক্রমাবস্থান, আত্মীয়তা সম্পর্ক (পরিবারের মধ্যে), বর্ণ, বংশ, সম্পদ, পেশা এবং ক্ষমতার ভিত্তিতে তৈরি হতে পারে। যখন সামাজিক রীতিনীতি এবং অর্থনৈতিক প্রয়োজনের উপর ভিত্তি করে পরিবারের মধ্যে শ্রেণিবিন্যাস উদ্ভূত হয় তখন দরিদ্র পরিবারের মেয়েরা দুর্বলতা এবং স্থিতিশীলতার দ্বিগুণ প্রভাব ভোগ করে। জন্ম থেকেই মেয়েরা স্বয়ংক্রিয়ভাবে কম প্রাপ্তির অধিকারী হয়; খেলার সময় থেকে শুরু করে খাবার ও শিক্ষায় মেয়েরা সবসময় তাদের ভাইদের চেয়ে কম প্রাপ্তির আশা করতে পারে। তাদের পরিবারের আয় এবং সম্পদেও মেয়েরা কম অধিকার পেয়ে থাকে, যা দরিদ্র ও গ্রামীণ ভারতীয় পরিবারের মধ্যে আরও বৃদ্ধি পেয়েছে। শুরু থেকেই ধরে নেওয়া হয় যে নারীরা কোনও ক্ষতিপূরণ বা স্বীকৃতি ছাড়াই সর্বদা ও সারা জীবন কঠোর পরিশ্রম এবং ক্লান্তিকর দায়িত্বের বোঝা বহন করবে।

ভারতীয় সমাজ হচ্ছে একটি পিতৃতান্ত্রিক সমাজ, সংজ্ঞা অনুসারে যা এমন সংস্কৃতি ধারণ করে যেখানে পুরুষদেরকে পিতা বা স্বামীর দায়িত্বে এবং পরিবারের আনুষ্ঠানিক প্রধান হিসেবে বলে ধরে নেওয়া হয়। একটি পিতৃগোত্রজ ব্যবস্থা সমাজকে পরিচালনা করে, যেখানে পুরুষ পরম্পরার মাধ্যমে বংশপরিচয় এবং উত্তরাধিকার নির্ধারিত হয় এবং পুরুষরা সাধারণত পারিবারিক সম্পদ বন্টনের নিয়ন্ত্রণে থাকে।

ভারতীয় জীবনের এই ঐতিহ্য এবং উপায়গুলি এত দীর্ঘ সময় ধরে কার্যকর ছিল যে এই ধরনের জীবনযাত্রায় নারীরা অভ্যস্ত হয়ে উঠেছে এবং তার এমনটাই প্রত্যাশা করে। ভারতীয় নারীরা প্রায়শই তাদের সাংবিধানিক অধিকারের পূর্ণ সুবিধা নেন না কারণ তারা এগুলো সম্পর্কে সঠিকভাবে সচেতন বা অবহিত নন। নারীদের ভোটাধিকারেরও দুর্বল ব্যবহার দেখা যায়, কারণ তাদের রাজনৈতিক সচেতনতা এবং রাজনৈতিক কার্যকারিতার বুদ্ধিবৃত্তি বেশ কম। নারীদেরকে প্রায়শই বিষয়গুলি সম্পর্কে অবহিত হতে উৎসাহিত করা হয় না। এই কারণে, রাজনৈতিক দলগুলি নারী প্রার্থীদের জন্য খুব বেশি সময় বিনিয়োগ করে না কারণ একটি ধারণা রয়েছে যে এটি একটি "অপচয় বিনিয়োগ"।

ভারতে নারী ও পুরুষের অনুপাত ৯৩৩: ১০০০ থেকে দেখা যায় যে দেশে পুরুষদের তুলনায় নারীদের সংখ্যা কম রয়েছে। এটি শিশুহত্যা সহ বেশ কয়েকটি বিষয়ের কারণে এবং মেয়েশিশু ও সন্তান ধারণকারী নারীদের কম যত্নের কারণে হয়ে থাকতে পারে। যদিও অবৈধ ঘোষণা করা হয়েছে তারপরও শিশুহত্যা এখনও গ্রামীণ ভারতে খুব সাধারণ এবং আরও লক্ষণীয় হয়ে উঠছে। এটি এই কারণে যে, বিশেষ করে গ্রামাঞ্চলে পরিবারগুলিকে তাদের মেয়ের বিয়ে দেওয়ার সময় যে যৌতুক দিতে হবে তারা তা বহন করতে অপারগ। শিশুহত্যার মতো যৌতুক প্রদানও অবৈধ, কিন্তু এখনও গ্রামীণ ভারতে এটি একটি সচরাচর প্রচলিত ঘটনা। যদি তারা একটি ছেলেসন্তান উৎপাদন করতে "সক্ষম" না হয় তবে নারীদেরকে তাদের স্বামীরা "মূল্যহীন" বলে মনে করে এবং ক্ষেত্রবিশেষে তারা অনেক নির্যাতনেরও সম্মুখীন হয়ে থাকে।

জন্ম অনুপাত

১৯৯১ থেকে ২০০১ সালের মধ্যে ভারতের জনসংখ্যার নারী-পুরুষ অনুপাত প্রতি ১০০ জন ছেলের মধ্যে ৯৪.৫ জন মেয়ে থেকে কমে প্রতি ১০০ জন ছেলের মধ্যে ৯২.৭ জন মেয়ে হয়েছে। কেরলের মতো দেশের কিছু অংশে তেমন পতন ঘটেনি, কিন্তু বিত্তশালী ভারতীয় রাজ্য পাঞ্জাব, হরিয়ানা, গুজরাত এবং মহারাষ্ট্রে নারী-পুরুষ অনুপাত খুব দ্রুত হ্রাস পেয়েছে (এই রাজ্যগুলিতে নারী-পুরুষ অনুপাত ছিল ৭৯.৩ থেকে ৮৭.৮ এর মধ্যে)। এটি প্রসব বৈষম্যের প্রমাণ এবং একটি ইঙ্গিত দেয় যে লিঙ্গ-নির্বাচনমূলক গর্ভপাত আরও ব্যাপক হয়ে উঠেছে। ভারতীয় সংসদ এই কারণে ভ্রূণের লিঙ্গ নির্ধারণ কৌশল ব্যবহার নিষিদ্ধ করেছে, কিন্তু এই আইনের প্রয়োগ মূলত উপেক্ষা করা হয়েছে।

বিবাহ

ভারতীয় নারীদের গড় জীবনের অধিকাংশই সাংসারিকভাবে অতিবাহিত হয়; অনেক নারী এখনও ১৮ বছর বয়সের আগে বিবাহিত, এবং ভারতে অবিবাহের ঘটনা কম। সন্তান ধারণ এবং শিশুদের লালন পালন ভারতীয় নারীদের জন্য প্রাথমিক প্রাপ্তবয়স্কতার মানদণ্ড। সুতরাং, যদি তারা আদৌ শ্রমশক্তিতে প্রবেশ করে তবে এটি ভারতীয় পুরুষদের চেয়ে অনেক পরে। শহুরে ভারতীয় পুরুষরা ২৫ থেকে ২৯ বছর বয়সের মধ্যে তাদের শ্রমশক্তির অংশগ্রহণের শীর্ষে পৌঁছেছেন, অন্যদিকে শহুরে ভারতীয় নারীরা ৪০ থেকে ৪৪ বছর বয়সের মধ্যে এটি করেন। এই কারণে নারীরা দক্ষতা অর্জনের জন্য কম সময় এবং চাকরির উন্নতির জন্য কম সুযোগ পেয়ে থাকেন।

ভারতীয় শ্রমশক্তিতে মধ্যে নারীদের একটি দুর্বল প্রতিনিধিত্ব রয়েছে। মাধ্যমিক ও প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ছেলেদের তুলনায় মেয়েদের ঝরে পড়ার হার দশ শতাংশ বেশি, সেইসাথে পুরুষদের তুলনায় তাদের সাক্ষরতার মাত্রা কম। যেহেতু ভারতে বেকারত্বও বেশি, তাই নিয়োগকারীদের পক্ষে আইনটি হেরফের করা সহজ, বিশেষ করে যখন এটি নারীদের ক্ষেত্রে আসে। কারণ পুরুষদের সাথে নারীদের তর্ক না করা ভারতীয় সংস্কৃতির অংশ। উপরন্তু, শ্রমিক ইউনিয়নগুলি নারীদের চাহিদার প্রতি অসংবেদনশীল।

ভারতের গুলাবি গ্যাং গোলাপী শাড়ি পরে ও শারীরিক আক্রমণের বিরুদ্ধে সুরক্ষার জন্য লাঠি (বাঁশের লাঠি) বহন করে এবং অপমানকারী স্বামীদের শাস্তি দেয়, প্রকাশ্যে লজ্জা দেয় এবং কখনও কখনও তাদের মারধর করে। তারা যৌতুকজনিত মারধর, যৌতুকজনিত মৃত্যু, ধর্ষণ, বাল্যবিবাহ, পরিত্যাগ, মেয়েদের শিক্ষা থেকে বঞ্চিত করা, শিশু উত্ত্যক্তকরণ এবং যৌন হয়রানি সম্পর্কেও কাজ করে। তারা এই বিষয়গুলি এবং দুর্নীতির মতো সম্প্রদায়কে প্রভাবিত করে এমন অন্যান্য বিষয়গুলি তদন্তের দাবিতে পুলিশ স্টেশনগুলিতে আক্রমণ করেছে। ভারতের পুলিশরা কুখ্যাতভাবে দুর্নীতিগ্রস্ত এবং কখনও কখনও কেবলমাত্র একটি পূর্ণ মাত্রার নারী দাঙ্গার হুমকিই তাদেরকে কাজ করতে বাধ্য করে। তাদের মধ্যে কতজন আছে তা কেউ জানে না। অনুমান করা হয় যে তাদের সংখ্যা ২৭০,০০০ থেকে ৪০০,০০০ অবধি হতে পারে।

২০১৮ সালে ভারতের সুপ্রিম কোর্ট "একজন পুরুষের পক্ষে কোন বিবাহিত নারীর স্বামীর অনুমতি ছাড়া তার সাথে যৌন সম্পর্ক স্থাপনকরা অপরাধ" আইন বাতিল করে দিয়েছে।

পোশাক

আরেকটি বিষয় যা নারীদের উদ্বিগ্ন করে তা হ'ল তাদের আরোপিত পোশাক বিধি। ইসলাম অনুসারে পুরুষ ও নারী উভয়কেই বিনয়ী পোশাক পরতে হবে; এই ধারণাটি হিজাব নামে পরিচিত এবং আচরণ ও পোশাকের একটি বিস্তৃত ব্যাখ্যা প্রদান করে। বাহ্যিকভাবে আরোপিত নিয়ন্ত্রণের চরম সীমা নিয়ে নারীবাদীদের মধ্যে মিশ্র মতামত রয়েছে। অন্যান্য ধর্মের নারীরাও পোশাক বিধি অনুসরণ করবেন বলে আশা করা হয়।

২০১৪ সালে, মুম্বইয়ের একটি ভারতীয় পারিবারিক আদালত রায় দেয় যে একজন স্বামী তার স্ত্রীকে কুর্তা, জিন্স বা শাড়ি পরতে বাধ্য করলে তা নারী নির্যাতনের শামিল এবং বিবাহবিচ্ছেদ চাওয়ার ভিত্তি হতে পারে। এটি বিশেষ বিবাহ আইন, ১৯৫৪ এর ২৭(১)(ঘ) ধারায় সংজ্ঞায়িত করা হয়েছে।

প্রভাব

১৯৪৭ সালে দেশটি স্বাধীনতা লাভ করে এবং গণতান্ত্রিক সরকার গ্রহণ না করা পর্যন্ত নারীবাদ ভারতীয় জীবনে অর্থ অর্জন করতে পারেনি বা একটি অপারেশনাল নীতিতে পরিণত হয়নি। স্বাধীনতার পরে ভারতীয় সংবিধান সমতা, লিঙ্গ বা ধর্মের ভিত্তিতে বৈষম্য থেকে মুক্তি এবং ধর্মীয় স্বাধীনতার নিশ্চয়তা দেয়। এছাড়াও নারীদের স্বাস্থ্য, শিক্ষা, কর্মসংস্থান এবং কল্যাণ প্রদানের জন্য সাতটি পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনা তৈরি করা হয়েছিল। ষষ্ঠ পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনা নারীদেরকে "উন্নয়নে অংশীদার" ঘোষণা করে।

কর্মসংস্থান

সাধারণভাবে, ভারতীয় সমাজের অশিক্ষিত এবং গ্রামীণ অংশে, যা মোট জনসংখ্যার একটি প্রধান শতাংশ গঠন করে, মহিলাদের অর্থনৈতিক বোঝা হিসাবে দেখা হয়। উৎপাদনশীলতায় তাদের অবদান বেশিরভাগই অদৃশ্য কারণ তাদের পারিবারিক এবং গার্হস্থ্য অবদান উপেক্ষা করা হয়। ভারতীয় মহিলারা কৃষি ও সংশ্লিষ্ট কার্যক্রমে মোট কর্মসংস্থানের প্রায় ৩৬ শতাংশ, পরিষেবা খাতে প্রায় ১৯ শতাংশ এবং ২০ সাল পর্যন্ত শিল্প খাতে প্রায় ১২.৫ শতাংশ অবদান রেখেছেন। মহিলাদের মধ্যে উচ্চ নিরক্ষরতার হার তাদের পুরুষদের তুলনায় কম বেতন, অদক্ষ চাকরির সুরক্ষা সহ কম বেতনের মধ্যে সীমাবদ্ধ রাখে। এমনকি কৃষি কাজের ক্ষেত্রে যেখানে পুরুষ এবং মহিলাদের কাজ অত্যন্ত অনুরূপ, মহিলাদের এখনও পুরুষদের মতো একই পরিমাণ এবং কাজের ধরনের জন্য কম বেতন পাওয়ার সম্ভাবনা বেশি। যদিও ভারত সরকার কর্মীদের মধ্যে বৈষম্য দূর করার চেষ্টা করেছে, তবুও মহিলারা অসম আচরণ পান। "পুরুষদের মহিলাদের তুলনায় পদোন্নতি পাওয়ার সম্ভাবনা বেশি-তা ছাড়া, পুরুষদের জন্য তাদের কাজের প্রকৃতি প্রায়শই এই পদোন্নতির সাথে পরিবর্তিত হয়, মহিলাদের মতো নয়, যারা সাধারণত কেবল দায়িত্ব বৃদ্ধি পায় এবং কাজের চাপ বেশি পায়।"। তবে এইমস নার্স ইউনিয়ন নার্সিং অফিসার নিয়োগের জন্য লিঙ্গ বৈষম্যের অভিযোগ করেছে, মহিলা প্রার্থীদের ৮০ শতাংশ পদ দিয়েছে এবং পুরুষ প্রার্থীদের অবশিষ্ট রয়েছে।

১৯৫৫ সালে বলিউড গ্রুপ সিনে কস্টিউম মেক-আপ আর্টিস্ট অ্যান্ড হেয়ার ড্রেসার্স অ্যাসোসিয়েশন (সিসিএমএএ) একটি নিয়ম তৈরি করে যা মহিলাদের মেকআপ শিল্পী হিসাবে সদস্যপদ পেতে দেয় না। যাইহোক, ২০১৪ সালে ভারতের সুপ্রিম কোর্ট রায় দেয় যে এই নিয়মটি অনুচ্ছেদ ১৪ (সাম্যের অধিকার), ১৯(১)(জি) (যে কোনও পেশা সম্পাদনের স্বাধীনতা) এবং অনুচ্ছেদ ২১ (স্বাধীনতার অধিকার) এর অধীনে প্রদত্ত ভারতীয় সাংবিধানিক গ্যারান্টি লঙ্ঘন করে। ভারতের সুপ্রিম কোর্টের বিচারকরা বলেছিলেন যে মহিলা মেকআপ শিল্পী সদস্যদের উপর নিষেধাজ্ঞার কোনও "যৌক্তিক তাকা" নেই যে কারণটি অর্জন করা হয়েছে এবং নাগরিকদের জন্য নিশ্চিত সাংবিধানিক অধিকারের সাথে "অগ্রহণযোগ্য, অনুমোদিত এবং অসামঞ্জস্যপূর্ণ"। আদালত এই নিয়মকে অবৈধ বলে মনে করেছে, যেখানে বলা হয়েছে যে, যে কোনও শিল্পী, মহিলা বা পুরুষ, এই শিল্পে কাজ করার জন্য, তারা যে রাজ্যে কাজ করতে চায় সেখানে তাদের অবশ্যই পাঁচ বছরের ডোমিসাইল স্ট্যাটাস থাকতে হবে। ২০১৫ সালে ঘোষণা করা হয় যে চারু খুরানা প্রথম মহিলা যিনি সিনে কস্টিউম মেক-আপ আর্টিস্ট অ্যান্ড হেয়ার ড্রেসার্স অ্যাসোসিয়েশন দ্বারা নিবন্ধিত হয়েছেন।

বিশ্বায়ন

ভারতে মহিলাদের উপর বিশ্বায়নের প্রভাব সম্পর্কে নারীবাদীরাও উদ্বিগ্ন। কিছু নারীবাদী যুক্তি দেখান যে বিশ্বায়ন অর্থনৈতিক পরিবর্তনের দিকে পরিচালিত করেছে যা মহিলাদের জন্য, বিশেষ করে শ্রমিক শ্রেণী এবং নিম্নবর্ণের মহিলাদের জন্য আরও সামাজিক এবং অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জ উত্থাপন করেছে। ভারতের বহুজাতিক সংস্থাগুলিকে মুক্ত বাণিজ্য অঞ্চল এবং ঘামের দোকানে 'তরুণ, কম বেতনভোগী এবং সুবিধাবঞ্চিত মহিলাদের' শ্রমকে কাজে লাগাতে এবং কল সেন্টারগুলিতে "তরুণ নিম্ন মধ্যবিত্ত, শিক্ষিত মহিলাদের" ব্যবহার করতে দেখা গেছে। এই মহিলাদের কয়েকটি কার্যকর শ্রম অধিকার, বা সম্মিলিত পদক্ষেপের অধিকার রয়েছে।

এর পাশাপাশি, বহুজাতিক কর্পোরেশনগুলিকে সারা দেশে আদর্শ মহিলাদের একটি সমগোত্রীয় চিত্রের বিজ্ঞাপন দিতে দেখা যায় যা মহিলাদের শরীরের পরিবর্তন বৃদ্ধি ঘটায় বলে যুক্তি দেওয়া হয়। এটি ভারতীয় মহিলাদের আন্তর্জাতিক সৌন্দর্য প্রতিযোগিতায় বিজয়ী হওয়ার মাধ্যমে প্রদর্শিত জাতীয়তাবাদী গর্বের আকারেও প্রকাশিত হয়। কিছু নারীবাদীর মতে, এই ধরনের উন্নয়ন নারীদের বৃহত্তর যৌন স্বায়ত্তশাসন এবং তাদের শরীরের উপর আরও নিয়ন্ত্রণ প্রস্তাব দিয়েছে। যাইহোক, অন্যান্য অনেক নারীবাদী মনে করেন যে নারী দেহের এই ধরনের পরিবর্তন কেবল পুরুষ কল্পনাকে খাওয়ানোর উদ্দেশ্য পূরণ করেছে।

শিক্ষা

অন্ধ্র প্রদেশের কালেদা গ্রামীণ বিদ্যালয়ের মেয়েরা।

ভারতে নারীবাদ 
Girls in Kalleda Rural School, Andhra Pradesh.

মেয়েদের শিক্ষার সর্বোত্তম স্তরে পৌঁছানোর সম্ভাবনা কম হওয়ার কিছু প্রধান কারণের মধ্যে রয়েছে যে মেয়েদের বাড়িতে তাদের মায়েদের সহায়তা করার জন্য প্রয়োজন, বিশ্বাস করার জন্য উত্থাপিত হয়েছে যে গার্হস্থ্য কাজের জীবন তাদের নির্ধারিত পেশা, নিরক্ষর মা রয়েছে যারা তাদের সন্তানদের শিক্ষিত করতে পারে না, পুরুষদের উপর অর্থনৈতিক নির্ভরশীলতা রয়েছে, এবং কখনও কখনও বাল্যবিবাহের অধীন হয়। [উদ্ধৃতি প্রয়োজন] অনেক দরিদ্র পরিবার তাদের মেয়েদের তাড়াতাড়ি বিয়ে করে এই বিশ্বাস নিয়ে যে সে যত বেশি বাড়িতে থাকবে, তত বেশি তাদের তার মধ্যে বিনিয়োগের প্রয়োজন হবে। এছাড়াও এটি একটি জনপ্রিয় বিশ্বাস যে তাদের তাড়াতাড়ি বিয়ে করা উচিত যাতে তারা তাদের জীবনের প্রথম দিকে অফ-স্প্রিং তৈরি করে।

১৯৮৬ সালে ভারতে জাতীয় শিক্ষা নীতি (এনপিই) তৈরি করা হয় এবং সরকার মহিলা সামাখ্যা নামে এই কর্মসূচি চালু করে, যার লক্ষ্য ছিল নারীর ক্ষমতায়নের দিকে। প্রোগ্রামের লক্ষ্য হল মহিলাদের তাদের সম্ভাবনা উপলব্ধি করার জন্য একটি শেখার পরিবেশ তৈরি করা, তথ্য দাবি করা শিখতে এবং তাদের নিজের জীবনের দায়িত্ব নেওয়ার জ্ঞান খুঁজে বের করা। ভারতের কিছু নির্দিষ্ট ক্ষেত্রে অগ্রগতি হচ্ছে এবং বিদ্যালয়ে মেয়েদের তালিকাভুক্তি বৃদ্ধি পাচ্ছে এবং শিক্ষক বৃদ্ধি পেতে শুরু করেছে। ২০০১ সালের মধ্যে নারীদের সাক্ষরতা সামগ্রিক মহিলা জনসংখ্যার ৫০% অতিক্রম করেছে, যদিও এই পরিসংখ্যান এখনও বিশ্বের মান এবং এমনকি ভারতের মধ্যে পুরুষ সাক্ষরতার তুলনায় খুব কম ছিল। পুরুষ শিক্ষার্থীদের সাথে মেলানোর জন্য মহিলারা যে শিক্ষার স্তর পান তা উন্নত করার চেষ্টা এখনও করা হচ্ছে।

প্রভাব

  • বাছাই পর্যায়ে আইআইএম ইন্দোর এখন মহিলা প্রার্থীদের অতিরিক্ত নম্বর দিচ্ছে।
  • ডিআরডিও ২০১৯ সালে শুধুমাত্র মেয়েদের জন্য বৃত্তি প্রকল্প চালু করেছিল।
  • হরিয়ানার মেয়েরা এখন স্নাতক ডিগ্রি সহ পাসপোর্ট পাবেন।

তথ্যসূত্র

Tags:

ভারতে নারীবাদ ভারতীয় প্রেক্ষাপটে সংজ্ঞাভারতে নারীবাদ ইতিহাসভারতে নারীবাদ ইস্যুভারতে নারীবাদ প্রভাবভারতে নারীবাদ তথ্যসূত্রভারতে নারীবাদনারীনারীবাদী আন্দোলনপিতৃতন্ত্রভারতলিঙ্গ সমতাসতীদাহ

🔥 Trending searches on Wiki বাংলা:

এল নিনোফেনী জেলাশিব নারায়ণ দাসএশিয়ার সার্বভৌম রাষ্ট্র ও নির্ভরশীল অঞ্চলসমূহের তালিকাশ্রমিক সংঘবাংলাদেশের সংবিধানের সংশোধনীসমূহ২০২৪ আইসিসি পুরুষ টি২০ বিশ্বকাপআন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসজলবায়ু পরিবর্তন অভিযোজনবিদ্যালয়নেতৃত্বআলাওলবাঙালি সাহিত্যিকদের তালিকা (কালানুক্রমিক)চিয়া বীজদ্বাদশ জাতীয় সংসদ সদস্যদের তালিকাইউরোই-মেইলদ্য কোকা-কোলা কোম্পানিমিয়ানমারপারমাণবিক অস্ত্রধারী রাষ্ট্রসমূহের তালিকাঅ্যান্টিবায়োটিক তালিকাবায়ুমণ্ডলমীর মশাররফ হোসেনপ্রান্তিক উপযোগপাললিক শিলাযতিচিহ্নযৌনসঙ্গমলালবাগের কেল্লামানিক বন্দ্যোপাধ্যায়সুকান্ত ভট্টাচার্যবাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীদের তালিকাসিলেটবাংলাদেশের ব্যাংকসমূহের তালিকাসাঁওতাল বিদ্রোহহৃৎপিণ্ডশিক্ষাআলী খামেনেয়ীভৌগোলিক আয়তন অনুযায়ী সার্বভৌম রাষ্ট্র ও নির্ভরশীল অঞ্চলসমূহের তালিকাক্লাউড কম্পিউটিংরাজশাহী বিভাগঈদুল আযহাচাকমাচুম্বকউত্তর চব্বিশ পরগনা জেলামুহাম্মদ ইকবালহরমোনদ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনসিলেট বিভাগবঙ্গভঙ্গ আন্দোলনমানব শিশ্নের আকারবাংলাদেশের বিশ্ববিদ্যালয়ের তালিকাজিএসটি ভর্তি পরীক্ষাআলিভারতবাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরমনসামঙ্গলমানব দেহমিশ্র অর্থনীতিজয়া আহসানযোগাযোগমাইকেল মধুসূদন দত্তইউরোপইসলাম ও হস্তমৈথুনঊনসত্তরের গণঅভ্যুত্থানমূত্রনালীর সংক্রমণপথের পাঁচালী (চলচ্চিত্র)বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়বাংলাদেশের জনগণের মৌলিক অধিকারআব্বাসীয় খিলাফতইসলামি সহযোগিতা সংস্থালালনবাংলা একাডেমিবাংলাদেশের উপজেলাঅন্নদামঙ্গলএ. পি. জে. আবদুল কালামবিশেষণ🡆 More