আশরাফুল আলম সাঈদ, যিনি হিরো আলম নামে অধিক পরিচিত, একজন বাংলাদেশী সঙ্গীত ভিডিও মডেল, অভিনেতা, গায়ক, রাজনীতিবিদ ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের আলোচিত ব্যক্তি। তিনি একজন স্বাধীন শিল্পী হিসাবে কাজ করেন ও সামাজিক প্ল্যাটফর্মগুলিতে ভিডিও প্রকাশ করে থাকেন। তিনি তার বেসুর গলায় গাওয়া গানের জন্য সর্বাধিক আলোচিত, সমালোচিত। এই কারণে তিনি বিভিন্ন ইন্টারনেট মিমের উপাদানেও পরিণত হয়েছেন। তাঁর নিজস্ব ইউটিউব চ্যানেলে ১৬ লক্ষের বেশি সাবস্ক্রাইবার রয়েছে। তিনি ২০১৮ সালের একাদশ সংসদ নির্বাচনে বগুড়া-৪ আসনের প্রার্থী হয়ে নতুন করে আলোচনায় আসেন। পরবর্তীতে তিনি বিভিন্ন সংসদ উপনির্বাচনেরও প্রার্থী হয়েছেন।
হিরো আলম | |
---|---|
জন্ম | আশরাফুল আলম সাঈদ ২০ জানুয়ারি ১৯৮৫ |
জাতীয়তা | বাংলাদেশি |
অন্যান্য নাম | হিরো আলম |
পেশা | অভিনেতা, গায়ক, রাজনীতিবিদ ও ব্যবসায়ী |
কর্মজীবন | ২০১৬-বর্তমান |
পরিচিতির কারণ | অভিনয় ও মডেলিং |
দাম্পত্য সঙ্গী | সাবিহা আক্তার সুমি (বি. ২০১০) নুসরাত জাহান জিমু (বি. ২০১৯; বিচ্ছেদ. ২০২২) |
২০২২ সালের ১০ ডিসেম্বর বিএনপির সংসদ সদস্যরা পদত্যাগ করলে বগুড়া-৬ (সদর) ও বগুড়া-৪ (কাহালু-নন্দীগ্রাম) আসনে ২০২৩ সালের ১ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত উপ-নির্বাচনে হিরো আলম স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে দুটো আসনেরই মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করে প্রতিদ্বন্দ্বীতা করেন। উপনির্বাচনে তিনি উভয় আসনে পরাজিত হলেও বগুড়া-৪ আসনে বিজয়ী প্রার্থীর সাথে তার ভোটের ব্যবধান ছিল মাত্র ৮৩৪। একই বছরের ১৭ জুলাই তিনি ঢাকা-১৭ আসনের উপনির্বাচনে অংশগ্রহণ করে পরাজিত হন, তবে ভোট চলাকালীন পুলিশের সামনে থেকেই আওয়ামী লীগের কর্মীদের মারধরের শিকার হওয়ার পাশাপাশি ভোটে অনিয়মের অভিযোগ তুলে ফলাফল প্রত্যাখ্যান করেন তিনি। তার উপর হামলার ঘটনায় জাতিসংঘও উদ্বেগ প্রকাশ করে। মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র ম্যাথিউ মিলারও তার নিয়মিত ব্রিফিংয়ে ঘটনাটি নিয়ে আলোকপাত করেন। ১৭ জুলাই ২০২৩ অনুষ্ঠিত নির্বাচনে অনিয়ম ও কারচুপির অভিযোগ ও মারধরের ঘটনা সামনে রেখে ফলাফল প্রত্যাখান করে ইসিতে পুনঃনির্বাচনের দাবী জানান হিরো আলম।
আশরাফুল আলম সাঈদ ১৯৮৫ সালের ২০ জানুয়ারি বগুড়া জেলার সদর উপজেলার এরুলিয়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। পারিবারিক অভাব-অনটনের কারণে তার পিতামাতা তাকে একই গ্রামের আব্দুর রাজ্জাকের পরিবারে পালক সন্তান হিসেবে তুলে দেয়। এই পরিবারের যথেষ্ট আর্থিক সচ্ছলতা না থাকায় ৭ম শ্রেণিতে পড়া অবস্থাতেই তিনি জীবিকা নির্বাহের চেষ্টা শুরু করেন।
হিরো আলম প্রথম দিকে নিজ গ্রাম এরুলিয়ায় সিডি বিক্রির কাজ করতেন এবং পরবর্তীতে স্যাটেলাইট টিভি সংযোগের (ক্যাবল পরিচালনা) ব্যবসায় নামেন। ক্যাবল সংযোগের ব্যবসা চলাকালে শখের বশে তিনি সঙ্গীত ভিডিও নির্মাণ শুরু করেন। আশরাফুল আলমের ইউটিউবে আপলোড করা সঙ্গীত ভিডিও নিয়ে ২০১৬ সালের দিকে সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যম বিশেষ করে ফেসবুকে বাংলাদেশের ব্যবহারকারীরা ট্রল এবং মিম তৈরি শুরু করলে দ্রুতই তিনি পরিচিত হয়ে উঠেন। এসময় মুশফিকুর রহিমসহ আরও বেশ কয়েকজন বাংলাদেশি তারকা আশরাফুল আলমের সাথে সেলফি তুলে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রকাশ করেন।
এরপর বিবিসি হিন্দি, জি নিউজ, এনডিটিভি, ডেইলি ভাস্কর, মিড-ডেসহ ভারতের প্রথম সারির সংবাদমাধ্যমগুলো তাকে নিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশ করে। ফলে তিনি ভারতীয় ইন্টারনেট ব্যবহারকারীদের মাঝে আলোচিত হন। ইয়াহু ইন্ডিয়ার এক জরিপ অনুসারে সেসময় ভারতীয় অভিনেতা সালমান খানের চেয়ে আলমকে বেশিবার গুগলে অনুসন্ধান করা হয়েছে।
১১ আগস্ট ২০১৭ তারিখে আশরাফুল আলম অভিনীত প্রথম ছবি মার ছক্কা মুক্তি পায়। ২০১৮ সালে তিনি বিজু দ্য হিরো নামে একটি বলিউড চলচ্চিত্রে অভিনয়ের জন্য চুক্তিবদ্ধ হন। এছাড়া বাংলাদেশে বেশকিছু বিজ্ঞানপনচিত্র ও স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্রে অভিনয় করেন। ২০১৮ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নিয়ে নিয়ে আবার আলোচনায় আসেন। ২০১৮ সালের গুগল অনুসন্ধানের প্রবণতায় বাংলাদেশে দশম অবস্থানে থাকেন হিরো আলম। হিরো আলমের জীবনী অবলম্বনে মহেশ রূপরাও ঘোদেশ্বর কর্তৃক নির্মিত ও পরিচালিত হিরো আলম শিরোনামের একটি হাস্যরসাত্মক মঞ্চনাটক ২০১৯ সালের ৬ জানুয়ারি আহমেদাবাদে মঞ্চস্থ হয়। প্রাপ্তবয়স্কদের জন্য নির্মিত এই মঞ্চনাটকটি সমালোচকদের প্রশংসা অর্জন করে। ২০১৯ সালের মে মাসে মঞ্চনাটকটি মঞ্চস্থ হয় মুম্বাইতে।
১৬ অক্টোবর ২০২০ মুক্তি পায় হিরো আলমের দ্বিতীয় সিনেমা 'সাহসী হিরো আলম'। সিনেমাটি পরিচালনা করেছেন এ আর মুকুল নেত্রবাদী আর প্রযোজনা করেন হিরো আলম নিজেই। হিরো আলমের বিপরীতে অভিনয় করেন তিন নায়িকা সাকিরা মৌ, রাবিনা বৃষ্টি ও নুসরাত জাহান। পরে তিনি গান গাওয়ার প্রতি মনোনিবেশ করেন ও তার প্রথম গান ছিল "বাবু খাইছো"।
এরপর তিনি বেশ কিছু গান ও ভিডিও ইন্টারনেটে ছাড়েন, যার মধ্যে অন্যতম ছিল কয়েকটি রবীন্দ্র সঙ্গীত ও নজরুলগীতি। তবে রবীন্দ্র সঙ্গীত ও নজরুলগীতি ছাড়ার পর তার বিরুদ্ধে এগুলো বিকৃত করে গাওয়ার অভিযোগ ওঠে। ২০২২ সালের ২৭ জুলাই, বাংলাদেশে পুলিশের গোয়েন্দা শাখা হিরো আলমকে তাদের কার্যালয়ে ডেকে নিয়ে যায়। পরে কখনও অনুমতি ছাড়া পুলিশের পোশাক পরবেন না, বিকৃত করে রবীন্দ্র ও নজরুল সঙ্গীত গাইবেন না মর্মে মুচলেকা দিয়ে ছাড়া পান। ছাড়া পেয়ে হিরো আলম বাংলাদেশের পুলিশের বিরুদ্ধে তার প্রতি মানসিক নির্যাতন ও অশোভন আচরণ করার অভিযোগ আনেন। হিরো আলমের উক্তি অনুসারে পুলিশ তাকে বলে যে, “তোর চেহারা কি হিরোর মতো? আয়নায় একবার নিজের চেহারা দেখেছিস? হিরোদের চেহারা কেমন হয় সিনেমায় দেখিস না? তোর হিরো আলম নাম পরিবর্তন করবি”। পরে হিরো আলমকে রবীন্দ্রনাথ ও নজরুলের গান গাইতে নিষেধ করায় গোয়েন্দা পুলিশের ভূমিকা নিয়ে সমালোচনা হয়। এছাড়া নাম থেকে 'হিরো' শব্দটি বাদ দেওয়া ও চেহারা নিয়ে তাচ্ছিল্য করার বিষয়টিকে অনেকে বর্ণবাদী আচরণ বলে আখ্যায়িত করেন। বিষয়টি বিবিসি, এএফপি-সহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমেরও খবর হয়।
প্রথমদিকে তিনি নিজ এলাকায় একাধিক স্থানীয় নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেন। এর মধ্যে একটিতে তিনি মাত্র ৭০ ভোটে হেরে যান। পরবর্তীতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পরিচিতি পাওয়ার পর তিনি ২০১৮ সালের একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে হিরো আলম জাতীয় পার্টি থেকে বগুড়া-৪ আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার জন্য মনোনয়নপত্র কেনেন। পরে দলটি থেকে মনোনয়ন না পাবার পর বগুড়া-৪ আসন থেকে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। নির্বাচনে তিনি পান ৬৩৮ ভোট এবং মোট প্রদত্ত ভোটের এক অষ্টমাংশ ভোট না পাবার দরুন তার জামানত বাজেয়াপ্ত করা হয়। ২০১৯ সালের মে মাসে তিনি জাতীয় পার্টির সাংস্কৃতিক অঙ্গসংগঠন জাতীয় সাংস্কৃতিক পার্টির কেন্দ্রীয় কমিটির সহসাংগঠনিক সম্পাদক হিসেবে নিযুক্ত হন।
২০২২ সালের ১০ ডিসেম্বর বিএনপির সংসদ সদস্যরা পদত্যাগ করলে বগুড়ার বগুড়া-৬ (সদর) এবং বগুড়া-৪ (কাহালু-নন্দীগ্রাম) আসনে উপ-নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করা হয়। হিরো আলম স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে দুটো আসনেরই মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেন। ২০২৩ সালের ৮ জানুয়ারি তথ্যগত ত্রুটি ও প্রস্তাবক, সমর্থকদের স্বাক্ষরের গরমিল পাওয়ায় নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তা তার মনোনয়নপত্র বাতিল করেন। এরপর উচ্চ আদালতে রিট করে ১৭ জানুয়ারি হিরো আলম প্রার্থিতা ফিরে পান। ২০২৩ সালের ১ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত উপনির্বাচনে তিনি মাত্র ৮৩৪ ভোটে বগুড়া-৪ আসনে হেরে যান। যদিও তিনি নির্বাচনের ফলাফল বর্জন করার পাশাপাশি "নির্বাচন সংশ্লিষ্টরা" ফল ঘোষণার সময় কালক্ষেপন করে তাকে "ষড়যন্ত্র করে হারিয়ে দেওয়া"র অভিযোগ করেন। উপ নির্বাচনে হারলেও তার সমর্থকরা তাকে "জনতার এমপি" উপাধিতে ভূূূষিত করে। পরবর্তীতে একই বছরের জুনে অভিনেতা ফারুকের মৃত্যুতে শূন্য হওয়া ঢাকা-১৭ আসনের উপনির্বাচনে প্রার্থী হওয়ার ঘোষণা দেন তিনি। সেবার তার মনোনয়নপত্র বাতিল হয়। কিন্তু পরবর্তীতে নির্বাচন কমিশনে তার করা আপিলের মাধ্যমে প্রার্থীতা ফিরে পান। ৫ জুলাই ২০২৩ ঢাকা-১৭ উপনির্বাচনের প্রথম নির্বাচনী প্রচারণায় জনসংযোগকালে মহাখালীতে হামলার শিকার হন তিনি। হামলার ঘটনা ও সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য দারস্থ হয়ে মার্কিন দূতাবাসে চিঠি পাঠান হিরো আলম। ১৭ জুলাই ২০২৩ অনুষ্ঠিত এই নির্বাচনে তিনি জাতীয় পার্টির প্রার্থীকে পিছনে ফেলে ২য় স্থানে থেকে পরাজিত হন। নির্বাচনে অনিয়মের অভিযোগ তুলার পাশাপাশি কেন্দ্রের বাইরে আওয়ামী লীগের কর্মীরা তাকে হামলা ও বেধড়ক মারধর করার ঘটনা উল্লেখ করে নির্বাচনের ফল প্রত্যাখ্যানের সিদ্ধান্ত জানান। পাশাপাশি তিনি ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সরকারের অধীনে আর কোনো নির্বাচনে অংশগ্রহণ না করার ঘোষণা দেন। হিরো আলমের উপর হামলার বিচার চেয়ে আন্তর্জাতিক সংস্থা অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল ছাড়াও বাংলাদেশে অবস্থিত ১৩টি দেশের দূতাবাস ও হাইকমিশন যৌথ বিবৃতি দেয়।
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ২০২৪ এ অংশগ্রহণ করে বগুড়া ৪ আসনে হেরে জামানত হারান।
২০১৯ সালে একুশে বইমেলায় তার আত্মজীবনী “দৃষ্টিভঙ্গি বদলান আমরা সমাজকে বদলে দেবো” প্রকাশিত হয়, যেটি প্রকাশ করে তরফদার প্রকাশনী এবং বইটি সম্পাদনা করেন সৌরভ আলম সাবিদ।
আশরাফুল আলম ব্যক্তিগত জীবনে সাবিহা আক্তার সুমির সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন। এই দম্পতির আলো ও আঁখি নামে দুই মেয়ে এবং কবির নামে এক ছেলে রয়েছে। স্ত্রী নির্যাতনের অভিযোগে করা এক মামলায় ২০১৯ সালের মার্চে তিনি গ্রেফতার হন। এবং পরবর্তীতে এপ্রিল মাসের ১৮ তারিখে জামিনে মুক্তি পান।
এখনও মুক্তি পায়নি এমন চলচ্চিত্র বোঝায় |
সাল | চলচ্চিত্র | চরিত্র | উদ্ধৃতি | সূত্র |
---|---|---|---|---|
২০১৭ | মার ছক্কা | হিরো আলম | প্রথম আবির্ভাব | |
২০২০ | সাহসী হিরো আলম | হিরো আলম | ||
২০২৩ | আমি টোকাই | ২ জুন ২০২৩ মুক্তি | ||
ঘোষিত হবে | বিজু দ্য হিরো | ঘোষিত হবে | হিন্দি চলচ্চিত্রে প্রথম আবির্ভাব |
সাল | চলচ্চিত্র | চরিত্র | উদ্ধৃতি |
---|---|---|---|
২০১৮ | প্রতিবাদী হিরো আলম | হিরো আলম | |
মাটি | |||
টারজান দ্য হিরো আলম | টারজান | ||
২০১৯ | আলম দ্য পাওয়ার | হিরো আলম | |
বাদাম ভালোবাসা | |||
বিধবার সংসার | |||
ভাইয়ের ভালোবাসা | |||
২০২০ | কিপটা | হিরো আলম | |
হিংস্র বাঘ | |||
পালটা জবাব | |||
বরিশাইল্লা বউ | |||
যোগ্যতা | |||
২০২১ | হিরো এখন জিরো | ||
মা বড় না বউ বড় | |||
ধর্ষিত বোন | |||
বাঁশির সুরে পরি পাগল | |||
মোটু পাতলুর প্রেম | পাতলু | ||
আলম দালাল | আলম দালাল | ||
মায়ের প্রতি ভালোবাসা |
This article uses material from the Wikipedia বাংলা article হিরো আলম, which is released under the Creative Commons Attribution-ShareAlike 3.0 license ("CC BY-SA 3.0"); additional terms may apply (view authors). বিষয়বস্তু সিসি বাই-এসএ ৪.০-এর আওতায় প্রকাশিত যদি না অন্য কিছু নির্ধারিত থাকে। Images, videos and audio are available under their respective licenses.
®Wikipedia is a registered trademark of the Wiki Foundation, Inc. Wiki বাংলা (DUHOCTRUNGQUOC.VN) is an independent company and has no affiliation with Wiki Foundation.