মা'সুমিহে দাদেহবলো (ফার্সি: هایده), হায়েদেহ (ফার্সি: معصومه ددهبالا) হিসেবে অধিক পরিচিত, ১০ এপ্রিল ১৯৪২ – ২০ জানুয়ারি ১৯৯০) ছিলেন কনট্রাল্টো কণ্ঠ পরিসীমার ফার্সি শাস্ত্রীয়, লোক এবং পপ সঙ্গীতধারার ইরানি সঙ্গীতশিল্পী। তিনি দুই দশকেরও অধিক সময় ধরে সঙ্গীতশিল্পে সক্রিয় ছিলেন এবং বিংশ শতাব্দীর ইরানের জনপ্রিয় গায়ক হিসেবে বিবেচিত।
হায়েদেহ | |
---|---|
প্রাথমিক তথ্য | |
জন্মনাম | মা'সুমিহে দাদেহবলো |
উপনাম | হায়েদেহ |
জন্ম | তেহরান, ইরান | ১০ এপ্রিল ১৯৪২
উদ্ভব | ইরান |
মৃত্যু | ২০ জানুয়ারি ১৯৯০ সান ফ্রান্সিস্কো, ক্যালিফোর্নিয়া, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র | (বয়স ৪৭)
ধরন | ফার্সি শাস্ত্রীয় লোক পপ সঙ্গীত |
পেশা | গায়ক |
কার্যকাল | ১৯৬৭–১৯৯০ |
ওয়েবসাইট | hayedehdocumentary |
মা'সুমিহে দাদেহবলো ১০ এপ্রিল ১৯৪২ সালে ইরানের তেহরানে জন্ম নেন। তিনি ইরানি সঙ্গীতশিল্পী ম্যাহেস্তির বড় বোন।
১৯৬৮ সালে বেতার তেহরানের ফার্সি ঐতিহ্যগত সঙ্গীত অনুষ্ঠানে ডাউউড পিরনিয়া পরিচালিত "গোলাহা ইয়ে রাঙ্গারং" (রঙিন ফুল) (ফার্সি: گلهای رنگارنگ) গান পরিবেশনের মাধ্যমে তার সঙ্গীত কর্মজীবন শুরু হয়।
হায়েদেহ ফার্সি বেহালাবাদক ও সুরকার আলী তাজভিদির সঙ্গে আওয়াজ (ফার্সি কণ্ঠ্যসঙ্গীত) অধ্যয়ন করেছেন।
রাহী মোয়ারির রচিত ও আলী তাজভিদি সুরকৃত আযাদেহ (১৯৬৮) হায়েদেহের প্রথম আনুষ্ঠানিক হিট এবং আত্মপ্রকাশ অ্যালবাম। ১৯৬৮ সালে বেতার তেহরানে গল-হা অর্কেস্ট্রার সাথে এটি প্রথম সঞ্চালিত হয়। একই বছর তিনি রাফতাম (১৯৬৮) শিরোনাম আরেকটি অ্যালবাম প্রকাশ করেন।
১৯৭০-এর দশকে হায়েদেহ তার শাস্ত্রীয় ফার্সি রুপরেখাতে ফার্সি পপ সঙ্গীত যুক্ত করেন। একই সময়ের মধ্যে তিনি বেশ-কয়েকজন লেখক, যেমন ফ্রেয়দুন খোশনুদ, জাহানবখশ পাজৌকি, আনোশিরাভন রোহানি এবং মোহাম্মদ হায়দারি সহকারে কাজ করেন। এই সময়ের মধ্যে হায়েদেহর বেজান তার, গোল-ই সাং, নওরোজ আমাদ এবং সোঘতী অন্তর্ভুক্ত।
২৯ আগস্ট ১৯৭৮ সালে, ইরানের ইসলামি বিপ্লবের কিছুদিন পূর্বে, হায়েদেহ যুক্তরাজ্যে অভিবাসিত হন। তিন বছর ধরে সেখানে থাকার পর, ১৯৮২ সালে তিনি যুক্তরাষ্ট্রে চলে যান এবং পূনরায় কর্মজীবন চালিয়ে যান।
হায়েদেহ ১৯৮২ সাল থেকে তার জীবনের শেষ পর্যন্ত লস এঞ্জেলেসে বসবাস করেন। বিপ্লব পরবর্তী ইরান ত্যাগীর সংখ্যা বৃদ্ধির ফলে সাউদার্ন ক্যালিফোর্নিয়ায় ইরানি সম্প্রদায়ের মধ্যে ৮০-এর দশকে হায়েদেহর কর্মজীবন আরও সমর্থীত হয়।
হায়েদেহ এই সময় অনেক সফল অ্যালবাম প্রকাশ করে এবং তার সকল গান ইরানে অবৈধ ঘোষিত হয়। তার রাজনৈতিক ও নস্টালজিক গান যেমন, "রৌজা-ই রোশন", "খোদাফেজ", "ফরিয়াদ" এবং "জিন্দেগি" ইরানি নির্বাসিত সম্প্রদায়ের কাছে ব্যাপক জনপ্রিয় হয়ে ওঠে।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে তার বেশিরভাগ গানের গীতিকার ও প্রযোজকদের মধ্যে ছিলেন সাদেদ নজউকি, মোহাম্মদ হেয়দারি এবং আন্দ্রনিক। তিনি এছাড়াও আর্মালান সারফারাজ, হোমা মীর-আফসার এবং বিজন সামন্দরের সাথে কাজ করেছেন। হায়েদেহের ৩০টিরও বেশি গানের রচয়িতা তার বন্ধু লেলা কাসরা (হেদিয়েহ নামেও পরিচিত), যিনি হায়েদেহর অনেক অ্যালবামে গানের মাঝেমাঝে কবিতা আবৃত্তি করেছেন। নির্বাসনের সময়, হায়েদেহ নিয়মিত লস এঞ্জেলেস ভিত্তিক ইরানি টেলিভিশন চ্যানেল আইআর টিভি, জামে-ই-জামে উপস্থিত হন।
১৯৯০ সালের ২০ জানুয়ারি সান ফ্রান্সিস্কো, ক্যালিফোর্নিয়ার কাসাব্লাংকা ক্লাবের কনসার্টের কয়েক ঘণ্টা পর, হার্ট অ্যাটাকে মারা যান। তার বয়স ছিলো ৪৭ বছর। তার ডায়াবেটিস এবং উচ্চ রক্তচাপ ছিল। মৃত্যুর কয়েক সপ্তাহ পরই বাহরাইনে একটি লাইভ কনসার্টে তার সঞ্চালনের কথা ছিলো। ক্যালিফোর্নিয়ার ফার্সি আইটি বিশেষজ্ঞ খোসরো মোতারজেমি, এই সাড়ে তিন ঘণ্টার কনসার্টের একটি ভিডিও রেকর্ড করলেও অজানা কারণে আনুষ্ঠানিকভাবে তা প্রকাশ করা হয়নি।
তনি দিন পর ২৪ জানুয়ারি, হায়েদেহ লস অ্যাঞ্জেলেস, ক্যালিফোর্নিয়ার ওয়েস্টউড ভিলেজ মেমোরিয়াল পার্ক সিমেট্রিতে সমাধিস্খ করা হয়। মৃত্যুর কিছুদিন আগে একটি অ্যালবাম রেকর্ড করছে হায়েদেহ।
হায়েদেহর অ্যালবাম এখনও সেরা বিক্রয়ের তালিকায় রয়েছে এবং তার গান ক্রমাগত ইরানি টেলিভিশন এবং বেতার চ্যানেলে বাজানো হয়। তার অনেক কালজয়ী গান বিখ্যাত ইরানি পপ গায়কেরা গেয়েছেন। হুসমন্দ আঘিলি হায়েদেহর "সারব" গেয়েছেন, পারভেজ রহমান পানাহা তার "সাল", শাহলা সারশার "হায়দেহ ইন মেমরি" নামে একটি দুঃখজনক গান করেছিলেন, গায়ক আমির ২০০৮ সালে হায়দেহের গান "সোঘতী"-এর কভার করেছেন এবং ম্যাহেস্তি তার বোনের স্মৃতিতে আরও তিনটি গান করেছেন।
এনসাইক্লোপিডিয়া ইরানিকায় অধ্যাপক এরিক নখজভানির মতে: "Analogous to Delkash, before her, Hayedeh sang with technical authority and passionate energy. Her laryngeal control made it possible for her to produce a series of graceful vibrato and glissando vocalizations required by the Avaz Persian vocal music. She could smoothly pass from the upper reaches of her alto voice to the lower, fuller, and darker range of the contralto. This mixture of strong laryngeal strength and learned vocal technique gave her alto-contralto voice a rare, powerful resonance and texture in the performance of the Avaz. Furthermore an acute sense for musical timing, the rhythmic flow of vocal music, affective musical phrasing, and poetic delivery enabled her to express and interpret effectively any songs she sang."
ইরানি পিয়ানোবাদক ও সাংবাদিক পেজমান আকবরজাদে হায়েদেহ লেজেন্ডারি পার্সিয়ান ডিভা নামে হায়েদেহ সম্পর্কে একটি তথ্যচিত্র তৈরি করেছেন, যা ২০০৯ সালের জানুয়ারিতে এ প্রথমবারের মতো আমস্টারডামে প্রদর্শিত হয়েছিল। ২০০৯ সালের মে মাসে লস এঞ্জেলেসের নূর ইরানি চলচ্চিত্র উৎসবে প্রামাণ্যচিত্রটির মার্কিন প্রিমিয়ার প্রদর্শিত হয়েছিল এবং সেরা প্রামাণ্যচিত্রের মনোনয়ন লাভ করে। প্রামাণ্যচিত্রটি ৯বম আন্তর্জাতিক নির্বাসন চলচ্চিত্র উৎসব (সুইডেন) এবং নেদারল্যান্ডসে ৪র্থ ইরানি চলচ্চিত্র উৎসবে প্রদর্শিত হয়েছিল।
২০১০ সালের ২০ জানুয়ারি হায়েদেহর ২০তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে আমস্টারডামে ফার্সি ডাচ নেটওয়ার্ক কর্তৃক প্রামাণ্যচিত্রটির ডিভিডি সংস্করণ মুক্তি পায়।
This article uses material from the Wikipedia বাংলা article হায়েদেহ, which is released under the Creative Commons Attribution-ShareAlike 3.0 license ("CC BY-SA 3.0"); additional terms may apply (view authors). বিষয়বস্তু সিসি বাই-এসএ ৪.০-এর আওতায় প্রকাশিত যদি না অন্য কিছু নির্ধারিত থাকে। Images, videos and audio are available under their respective licenses.
®Wikipedia is a registered trademark of the Wiki Foundation, Inc. Wiki বাংলা (DUHOCTRUNGQUOC.VN) is an independent company and has no affiliation with Wiki Foundation.