হান্স ক্রিশ্চিয়ান আন্দেরসেন(ডেনীয়: (ⓘ); এপ্রিল ২, ১৮০৫ - আগস্ট ৪, ১৮৭৫) ডেনীয় লেখক এবং কবি। তবে শিশু-সাহিত্যিক হিসাবে অধিক পরিচিত। রূপকথা লেখার জন্য তাকে রূপকথার জাদুকর নামে অভিহিত করা হয়।
হান্স ক্রিশ্চিয়ান আন্দেরসেন | |
---|---|
জন্ম | ওডেন্স, ফুনেন, ডেনমার্কের রাজ্য | ২ এপ্রিল ১৮০৫
মৃত্যু | ৪ আগস্ট ১৮৭৫ অস্টারব্রো, কোপেনহেগেন, ডেনমার্কের রাজ্য | (বয়স ৭০)
সমাধিস্থল | এসিস্টেন্স সিমেট্রি, কোপেনহেগেন |
পেশা | লেখক, কবি |
ভাষা | ডেনীয় |
জাতীয়তা | ডেনীয় |
সময়কাল | ডেনীয় স্বর্ণযুগ |
ধরনসমূহ | শিশু সাহিত্য, ভ্রমণকাহিনী |
বিষয় | রূপকথা |
উল্লেখযোগ্য রচনাবলি | দ্য লিটল মারমেইড দি আগলি ডাকলিং দি এমপেরর্স নিউ ক্লদস |
সক্রিয় বছর | ১৮২২-১৮৭৫ |
স্বাক্ষর | |
ওয়েবসাইট | |
Hans Christian Andersen Centre |
এন্ডারসনের রূপকথা, যার সংখ্যা ৩৩৮১ এর কম নয়, ১২৫ টিরও বেশি ভাষায় অনুবাদ করা হয়েছে। এই রূপকথাসমূহ পশ্চিমের যৌথ চেতনায় সাংস্কৃতিকভাবে অন্তর্ভুক্ত হয়েছে, শিশুরা সহজেই সেগুলো পাচ্ছে। তাঁর সবচেয়ে বিখ্যাত রূপকথাসমূহ হল "দি এমপেরর্স নিউ ক্লদস", "দ্য লিটল মারমেইড", "দ্য নাইটিংগেল", "দ্য স্নো কুইন", "দি আগলি ডাকলিং", "থাম্বেলিনা"। তার গল্পসমূহ বেলে, নাটক, এবং অ্যানিমেটেড এবং লাইভ-অ্যাকশন চলচ্চিত্রে ব্যবহৃত হয়েছে। কোপেনহেগেনের সবচেয়ে বিস্তৃত এবং সবচেয়ে ব্যস্ত বলেভার্ডের একটি হল "এইচ সি এন্ডারসন্স বলেভার্ড"।
হান্স ক্রিশ্চিয়ান এন্ডারসন ১৮০৫ সালের ২ এপ্রিল ডেনমার্কের ওডেন্সে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি তার পিতামাতার একমাত্র সন্তান ছিলেন। এন্ডারসনের বাবা এবং হান্স দুজনেই নিজেদের অভিজাতদের বংশধর বলে মনে করতেন, কারণ তার পিতামহী তার বাবাকে বলেছিলেন যে তাদের পরিবার উচ্চতর সামাজিক শ্রেণীভুক্ত ছিল। তবে তদন্ত-প্রমাণ এই গল্পগুলোকে মিথ্যা সাব্যস্ত করেছে। একটি দৃঢ় ধারণা রয়েছে যে এন্ডারসন রাজা সপ্তম ক্রিশ্চিয়ানের অবৈধ পুত্র ছিলেন, কিন্তু এই ধারণাটিরও বিতর্কিত।
এন্ডারসনের বাবা প্রাথমিক বিদ্যালয় পর্যন্ত পড়াশুনা করেছিলেন। তিনি এন্ডারসনকে সাহিত্যের সাথে পরিচয় করিয়ে দেন। তিনি তাকে আরব্য রজনীর গল্প পড়ে শুনাতেন। এন্ডারসনের মা, অ্যান মারি অ্যান্ডারসডেটার ছিলেন একজন অশিক্ষিত ধোপা। ১৮১৬ সালে তার স্বামীর মৃত্যুর পর ১৮১৮ সালে তিনি পুনরায় বিয়ে করেন। এন্ডারসনকে দরিদ্র ছেলেমেয়েদের জন্য নির্মিত স্থানীয় স্কুলে পাঠানো হয়। সেখানে তিনি মৌলিক শিক্ষা গ্রহণ করেন এবং একজন তাঁতির ও পরে একজন দর্জির সহকারী হিসেবে কাজ করে নিজের ভরণপোষণ করতেন। চৌদ্দ বছর বয়সে তিনি অভিনেতা কাজ খোঁজতে কোপেনহেগেনে যান। চমৎকার সুরেলা কণ্ঠের জন্য রয়েল ডেনিশ থিয়েটার তাকে গ্রহণ করে, কিন্তু শীঘ্রই তার কণ্ঠস্বর পরিবর্তন হয়ে যায়। থিয়েটারের একজন সহকর্মী তাকে বলেন যে তিনি এন্ডারসনকে একজন কবি ভেবেছিলেন। এই পরামর্শ গুরুত্ব সহকারে গ্রহণ করে, এন্ডারসন লেখার উপর মনোযোগ দিতে শুরু করেন।
রয়েল ডেনিশ থিয়েটারের পরিচালক জোনাস কলিন এন্ডারসেনকে অনেক ভালবাসতেন এবং তাকে স্লাগেলসে একটি গ্রামার স্কুলে পাঠান। রাজা ষষ্ঠ ফ্রেডেরিক যুবকদের শিক্ষার অংশ হিসেবে এই স্কুলটি নির্মাণ করেন। ততদিনে এন্ডারসেনের প্রথম গল্প "দ্য ঘোস্ট অ্যাট পালনাটোক্স গ্রেভ" (১৮২২) প্রকাশিত হয়েছিল। মেধাবী ছাত্র না হলেও, তিনি ১৮২৭ সাল পর্যন্ত এলসিনোরের একটি স্কুলে পড়াশুনা চালিয়ে যান।
পরে তিনি বলেন স্কুলের দিনগুলো ছিল তার জীবনের অন্ধকারতম এবং সবচেয়ে বিরক্তিকর দিন। এক স্কুলে তিনি তার স্কুল শিক্ষকের বাড়িতে থাকতেন, যেখানে তাকে নির্যাতন করা হত এবং বলা হত যে "তার চরিত্র ঠিক করতে হবে"। পরে তিনি বলেন যে সেই শিক্ষক তাকে লিখতে নিরুৎসাহিত করত, যা তাকে হতোদ্যম করে তুলেছিল।
এন্ডারসনের একটি প্রারম্ভিক রূপকথা হল "দ্য টালো ক্যান্ডেল" (ডেনীয়: Tællelyset)। এটি ২০১২ সালের অক্টোবরে ডেনমার্কের একটি সংরক্ষণাগারে আবিষ্কৃত হয়। ১৮২০ সালে লেখা গল্পটি একটি মোমবাতি নিয়ে, যা কখনো প্রশংসিত হয় নি। এন্ডারসন তখনও স্কুলে ছিলেন। বইটি স্থানীয় সংরক্ষণাগারে এক পরিবারের অন্যান্য পারিবারিক কাগজপত্রের সাথে সংরক্ষিত ছিল।
এন্ডারসনের রূপকথার গল্প লেখার প্রাথমিক প্রচেষ্টা ছিল শৈশবে তিনি যেসব গল্প শুনেছেন তার পুনর্বিন্যাস। প্রথমদিকে তার মৌলিক রূপকথাসমূহ অনুবাদ করতে অসুবিধার কারণে তেমন স্বীকৃতি লাভ করে নি। ১৮৩৫ সালে এন্ডারসন তার রূপকথা (ডেনীয়: Eventyr; অনুবাদ: "চমৎকার কাহিনী") এর প্রথম দুটি কিস্তি প্রকাশ করেন। প্রথম ভলিউমে আরও গল্প যুক্ত করে ১৮৩৭ সালে প্রকাশিত হয়। এই সংকলনে "দ্য টিন্ডারবক্স", "দ্য প্রিন্সেস অ্যান্ড দ্য পিয়া", "থাম্বেলিনা", "দ্য লিটল মারমেইড", এবং "দি এমপেরর্স নিউ ক্লদস"সহ নয়টি গল্প যোগ করা হয়। এই গল্পগুলো প্রকাশের পরপরই স্বীকৃতি লাভ করে নি এবং বিক্রিও কম হয়েছিল। একই সময়ে এন্ডারসনের "ও. টি." (১৮৩৬) এবং "অনলি আ ফিডলার" এর (১৮৩৭) এই দুটি উপন্যাস সফলতার মুখ দেখে। দ্বিতীয় উপন্যাসটি যুবক সরেন কিয়ের্কেগার পর্যালোচনা করেছিলেন।
১৮৩৭ সালে সুইডেন ভ্রমণের পর এন্ডারসন স্ক্যান্ডিনেভিজম থেকে অনুপ্রাণিত হন এবং একটি কবিতা লেখার জন্য মনঃস্থির করেন যেখানে সুইডেন, ডেনস, এবং নরওয়েজিয়ানদের সম্পর্ককে উল্লেখ থাকবে। ১৮৩২ সালের জুলাই মাসে ফুনেন দ্বীপে ভ্রমণকালে এন্ডারসন "নর্ডিকের সৌন্দর্য, তিনটি জাতির একসাথে বেড়ে ওঠা" নিয়ে লিখেন তার কবিতা জেগ এর এন স্ক্যান্ডিনভ ("আমি একজন স্ক্যান্ডিনেভিয়ান"), যা স্ক্যান্ডিনেভিয়ার জাতীয় সঙ্গীতের অংশ। সুরকার অটো লিন্ডব্লাড কবিতাটিকে সঙ্গীতে রূপান্তর করেন এবং ১৮৪০ সালের জানুয়ারি মাসে এই সঙ্গীতের সুরটি প্রকাশিত হয়। ১৮৪৫ সালে এটি জনপ্রিয়তার শীর্ষে অবস্থান করেকরে, যা পরে খুব কমই গাওয়া হয়েছিল।
এন্ডারসন ১৮৩৮ সালে আরেকটি সংকলন নিয়ে রূপকথার গল্পে ফিরে আসেন। "ফেয়ারি টেলস টোল্ড ফর চিলড্রেন, নতুন সংকলন, প্রথম পুস্তিকা" (Eventyr, fortalte for Børn. Ny Samling), বইটিতে "দ্য ডেইজি," "দ্য স্টেডফাস্ট টিন সোলজার" এবং "দ্য ওয়াইল্ড সোয়ান্স" গল্পগুলো অন্তর্ভুক্ত ছিল।
১৮৪৫ সাল ছিল এন্ডারসনের সবচেয়ে সফল বছর। এই বছরে চারটি রপকথার অনুবাদ প্রকাশিত হয়। "দ্য লিটল মারমেইড" সাময়িকী বেন্টলিস মিসেলানিতে প্রকাশিত হয় এবং এর পরপরই দ্বিতীয় সংকলন "ওয়ান্ডারফুল স্টোরিজ ফর চিলড্রেন" প্রকাশিত হয়। অন্য দুটি সংকলন, "আ ডেনিশ স্টোরি বুক" এবং "ডেনিশ ফেয়ারি টেলস অ্যান্ড লিজেন্ডস"ও গৃহীত হয়। লন্ডনের সাময়িকী অ্যাটেনজিমে ১৮৪৬ সালের ফেব্রুয়ারি সংখ্যায় প্রকাশিত এক পর্যালোচনায় "ওয়ান্ডারফুল স্টোরিজ" সম্পর্কে বলা হয়, "এটি এমন একটি বই যা বাস্তব ও রুপকথায় পরিপূর্ণ, বইটি নাতনিদের জন্য যেমন দাদাদের জন্য তার চেয়ে কম নয়, যারা একবার বইটি হাতে পেয়েছেন তারা কোন একটি শব্দ এড়িয়ে যেতে পারবে না।"
১৮৭২ সালের বসন্তে এন্ডারসন তার বিছানা থেকে পড়ে গিয়ে মারাত্মকভাবে আহত হন। এই আঘাত থেকে তিনি সম্পূর্ণ সুস্থ্য হয়ে উঠতে পারেন নি। এর পরপরই তার যকৃতের ক্যান্সার দেখা দেয়।
১৮৭৫ সালের ৪ আগস্ট তিনি কোপেনহেগেনের কাছে তার ঘনিষ্ঠ বন্ধু ব্যাংকার মরিৎজ মেলচিয়র এবং তার স্ত্রীর বাড়ি রোলিগ্রেডে (আক্ষরিকভাবে: প্রশান্ততা) মারা যান। তার মৃত্যুর কিছুদিন আগে, এন্ডারসন তার অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া সঙ্গীত সম্পর্কে একটি সুরকারকে পরামর্শ দিয়ে বলেছিলেন: "আমার অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া যারা আসবে তাদের বেশির ভাগই হবে শিশুরা, তাই তাদের ছোট পদক্ষেপের মত গানে বিটেও সময় নিবেন।" তার মরদেহ কোপেনহেগেনের নওর্র্রো এলাকার কলিন্স পরিবারের পারিবারিক সমাধি অ্যাসিসটেন্স কির্কেগারে সমাহিত করা হয়। তবে ১৯১৪ সালে আরেকটি সমাধিতে (বর্তমানে "ফ্রেডেরিক্সবার্গস অলদর কির্কেগার" নামে পরিচিত) এন্ডারসনের সমাধির পাথরটি স্থানান্তরিত হয়, যেখানে ছোট কোলিন পরিবারের সদস্যদের সমাহিত করা হয়। একটি সময় পর্যন্ত, তার, এডওয়ার্ড কলিন এবং হেনরিয়েত্তা কলিনের কবর অচিহ্নিত ছিল। বর্তমানে কলিন দম্পতির নাম উল্লেখ ছাড়াই এইচ.সি. এন্ডারসনের সমাধি চিহ্নিত দ্বিতীয় আরেকটি পাথর নির্মিত হয়েছে, তবে তিনটি সমাধিই এখনও একই প্লটে রয়েছে।
এই নিবন্ধটি অসম্পূর্ণ। আপনি চাইলে এটিকে সম্প্রসারিত করে উইকিপিডিয়াকে সাহায্য করতে পারেন। |
This article uses material from the Wikipedia বাংলা article হান্স ক্রিশ্চিয়ান অ্যান্ডারসন, which is released under the Creative Commons Attribution-ShareAlike 3.0 license ("CC BY-SA 3.0"); additional terms may apply (view authors). বিষয়বস্তু সিসি বাই-এসএ ৪.০-এর আওতায় প্রকাশিত যদি না অন্য কিছু নির্ধারিত থাকে। Images, videos and audio are available under their respective licenses.
®Wikipedia is a registered trademark of the Wiki Foundation, Inc. Wiki বাংলা (DUHOCTRUNGQUOC.VN) is an independent company and has no affiliation with Wiki Foundation.