সোয়াদেশ তালিকা (/ˈswɒdɛʃ/) হচ্ছে ঐতিহাসিক ভাষাবিজ্ঞানের মৌলিক ধারণাগুলোর ধ্রুপদী সংকলন। একাধিক ভাষাকে সোয়াদেশ তালিকায় অনুবাদ করার মাধ্যমে গবেষকদের ঐসব ভাষার আন্তঃসম্পর্কের পরিমাণ নির্ধারণ করতে সাহায্য করে। সোয়াদেশ তালিকাটি ভাষাবিদ মরিস সোয়াদেশের নামে নামকরণ করা হয়েছে। এটি শব্দ-পরিসংখ্যান ( ভাষাগুলির বংশগত সম্পর্কের পরিমাণগত মূল্যায়ন) এবং শব্দসৃষ্টিতত্ত্বে (ভাষা বিভাজনের ডেটিং) ব্যবহার করা হয়। যদিও এই কাজের জন্য বিভিন্ন তালিকা আছে, তথাপি অধিকাংশ লেখক সোয়াদেশ তালিকা ব্যবহার করে থাকেন।
সোয়াদেশ নিজেই তার তালিকার বিভিন্ন সংস্করণ তৈরি করেন। তিনি ২২৫টি শব্দার্থের একটি তালিকা দিয়ে শুরু করেন, এবং তিনি সালিশ-স্পোকানে-কালিস্পেল ভাষার জন্য ১৬৫ শব্দে কমিয়ে আনেন। ১৯৫২ সালে তিনি ২১৫টি শব্দের একটি তালিকা প্রকাশ করেন। এর মধ্যে তিনি ১৬টিকে স্বচ্ছ এবং সার্বজনীন না হওয়ার জন্য বাদ দেন এবং নতুন একটি যুক্ত করেন। ফলে শব্দ সংখ্যা ২০০ তে পৌঁছায়। ১৯৫৫ সালে তিনি লিখেছিলেন, "গুণাগুণের চেয়ে সংখ্যা কম গুরুত্বপূর্ণ হওয়ায়, একমাত্র সমাধান হচ্ছে তালিকার কঠোর যাচাই-বাছাই ও প্রয়োজনে ছাঁটাই করা.... যদিও নতুন তালিকাটিতে ত্রুটি রয়েছে, তবে তা তুলনামূলকভাবে সহনশীল এবং সংখ্যায় কম।" ছোটখাট সংশোধনের পর, তিনি ১৯৭১ এবং ১৯৭২ সলে ১০০ শব্দে তার চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশ করেন।
ভাষাশাস্ত্রীয় পরীক্ষা তালিকার অন্যান্য সংস্করণও প্রকাশিত হয়। যেমন- রবার্ট লিস (১৯৫৩), জন এ. রিয়া (১৯৫৮:১৪৫ফ), ডেল হাইমস (১৯৬০:৬), ই. ক্রস (১৯৬৪: ২৪১টি ধারণাসহ), ডব্লিউ. জে. সামারিন (১৯৬৭:২২০ফ), ডি. উইলসন (১৯৬৯: ৫৭টি ধারণাসহ), লিওনেল বেন্ডার (১৯৬৯), আর.এল অসওয়াল্ড (১৯৭১), উইনফ্রেড পি. লেহমান (১৯৮৪:৩৫ফ), ডি. রঙ্গ (১৯৯২, সর্বত্র, বিভিন্ন সংস্করণ), সের্গেই স্টারস্টিন (১৯৮৪, সর্বত্র, বিভিন্ন সংস্করণ), উইলিয়াম এস. ওয়াই. ওয়াং (১৯৯৪), এম. লোর (২০০০, ১৮টি ভাষার ১২৮টি ধারণাসহ) বি. ক্যাসলার (২০০২) এবং আরও অনেকে। সিএলএলডি-পরিকল্পনা বিভিন্ন ভাষাগত অঞ্চল এবং সময়ে বিভিন্ন ধরনের তালিকা (ক্লাসিক্যাল সোয়াদেশ তালিকাসহ) সংগ্রহ করে; বর্তমানে ১৫০টিরও বেশি বিভিন্ন ধরনের তালিকা তালিকাভুক্ত হচ্ছে।
আই. ডায়েনের সংস্করণ (১৯৯২, ৯৫টি বিভিন্ন ভাষার ২০০ ধারণা) হচ্ছে এমন সংস্করণ যা কোন আদর্শ মানের উদ্দেশ্য ব্যতীত শুধুমাত্র ইন্টারনেটের মাধ্যমে ইলেকট্রনিক প্রাপ্যতার জন্য ব্যবহার করা হয়। ২০১০ সাল হতে, এম. ডানের আশেপাশের একটি দল এই তালিকাটিকে উন্নয়ন এবং বৃদ্ধি করার চেষ্টা করছে।
মূলত, "স্থিতিশীলতা" ঠিক রেখে যতটা সম্ভব বেশি ভাষার সার্বজনীন ও সাংস্কৃতিক স্বাধীন প্রাপ্যতার জন্য, সোয়াদেশ তালিকার শব্দগুলো বেছে নেওয়া হয়েছিল। এরপর, মারিসা লোর ১৯৯৯, ২০০০ সহ, অনেক লেখক ভাষা সমূহের মধ্যে রুপান্তরের ফলে "সার্বজনীন" শব্দভান্ডারের অধীন তালিকার স্থিতিশীলতা এবং শব্দসৃষ্টিতত্ত্বর সম্ভাব্য ব্যবহার বিশ্লেষণ করেছেন।
মারিসা সোয়াদেশ তার স্বতঃস্ফূর্ততার ভিত্তিতে সোয়াদেশ তালিকা সংকলিত করেছিলেন। অতি সাম্প্রতিককালে বিভিন্ন ভাষা থেকে নিয়মানুবর্তিত তথ্যের ভিত্তিতে অনুরূপ তালিকা তৈরি করা হয়েছে, যেমন- ডলগোপালস্কি তালিকা (১৯৬৪) অথবা লিপজিগ-জাকার্তা তালিকা (২০০৯)। কিন্তু সোয়াদেশ তালিকা যতটা ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত হচ্ছে সেগুলো ততটা পরিচিত নয়।
শব্দ-পরিসংখ্যানে ভাষার উপবিভাগকে ব্যাখ্যা করা এবং শব্দসৃষ্টিতত্ত্বে "ভাষার শাখা তৈরির বিন্দু নির্ধারণ করার" জন্যে ভাষাশাস্ত্রীয় পরীক্ষা তালিকা ব্যবহার করা হচ্ছে। তালিকায় সমগোত্রীয় শব্দসমূহকে নির্দিষ্ট (এবং সংখ্যা গণনা) করা সহজ নয়, এমনকি কখনও কখনও তা বিতর্কের বিষয় হয়ে দাঁড়ায়। কেননা সমগোত্রীয় শব্দসমূহ দেখতে একই রকম হবে এমন নয় এবং সমগোত্রীয় হিসেবে স্বীকৃতি দিতে গেলে ঐ ভাষার ধ্বনির রীতিনীতি সম্পর্কে ধারণা থাকতে হবে। যেমন, ইংরেজি "হুইল" এবং সংস্কৃত "চক্র", হচ্ছে সমগোত্রীয়; যদিও উভয় ভাষার ইতিহাস জানা ছাড়া এটিকে স্বীকৃতি দেয়া সম্ভব নয়।
সোয়াদেশের চূড়ান্ত তালিকা ১৯৭১ সালে প্রকাশ হয়েছে, যাতে ১০০টি পদ রয়েছে। সোয়াদেশ ১৯৫২ এ অথবা সোয়াদেশ ১৯৫৫ এ (†) চিহ্নিত টিকায় পদসমূহের ব্যখ্যা পাওয়া যাবে।
^ "থাবা" শুধুমাত্র ১৯৫৫ সালে যোগ করা হয়েছিল, কিন্তু পরবর্তীতে অনেক সুপরিচিত বিশেষজ্ঞ এটিকে (আঙুল)নখ দ্বারা প্রতিস্থাপিত করেছেন, কেননা থাবার অভিব্যক্তি অনেক পুরোনো, বিলুপ্ত বা কম পরিচিত ভাষাগুলিতে পাওয়া যায় না।
সোয়াদেশ–ইয়াখুন্টোভ তালিকা হলো সোয়াদেশ তালিকার ৩৫ শব্দের একটি উপসেট যা রাশিয়ান ভাষাবিদ সের্গেই ইয়াখতোভ দ্বারা বিশেষভাবে প্রতিষ্ঠিত। এটি সের্গেই স্টারোস্টিনের মতো ভাষাবিদেরা শব্দ-পরিসংখ্যানে ব্যবহার করেছেন। সোয়াদেশ নম্বরসহ, এগুলো হলো:
হোলম্যান ও অন্যান্য (২০০৮) চীনা উপভাষাগুলোর মধ্যে সম্পর্ক নির্ধারণ করতে গিয়ে সোয়াদেশ-ইয়াকোন্তোভ তালিকাটির তুলনায় মূল সোয়াদেশ-১০০ তালিকাকে অধিকতর উপযুক্ত মনে করেন। আবার দেখেন ভিন্ন আরেকটি তালিকা (৪০ শব্দ) সোয়াদেশ-১০০ তালিকার মতই সঠিক। যাহোক, তারা বিভিন্ন প্রতিষ্ঠিত ভাষার শব্দের ধারণ করার ক্ষমতার মধ্যে তুলনা করে, শব্দের তুলনামূলক স্থিতিশীলতা পরিমাপ করেন। তারা পুরাতন এবং নতুন বর্গের মধ্যে পারস্পরিক সম্পর্কের কোন পরিসংখ্যানগত উল্লেখযোগ্য পার্থক্য খুজেঁ পান নি।
তারা সোয়াদেশ নম্বর এবং তুলনামূলক স্থিতিশীলতা সহ সোয়াদেশ-১০০ তালিকার নিম্ন প্রদত্ত ক্রমটি তৈরি করেন (হোলম্যান ও অন্যান্য, পরিশিষ্ট. ৪০-শব্দ তালিকার শব্দসমূহে তারকাচিহ্ন যুক্ত করা হলো):
ভিয়েতনাম এবং থাইল্যান্ডের প্রতীকী ভাষা অধ্যয়নে, ভাষাবিদ জেমস উডওয়ার্ড উল্লেখ করেছেন যে কথ্য ভাষার উপর প্রয়োগকৃত সনাতন সোয়াদেশ তালিকা প্রতীকী ভাষা ভাষীদের জন্য অনুপযুক্ত ছিল। প্রতীকী ভাষার মধ্যে সম্পর্কের ক্ষেত্রে, সর্বনাম এবং শরীরের অংশগুলির মতো সূচকের লক্ষণগুলির জন্য সোয়াদেশ তালিকা অতিমানে পৌঁছেছে। পরিবর্তিত তালিকাটি নিম্নরূপ, যার অধিকাংশই বর্ণানুক্রমিক:
This article uses material from the Wikipedia বাংলা article সোয়াদেশ তালিকা, which is released under the Creative Commons Attribution-ShareAlike 3.0 license ("CC BY-SA 3.0"); additional terms may apply (view authors). বিষয়বস্তু সিসি বাই-এসএ ৪.০-এর আওতায় প্রকাশিত যদি না অন্য কিছু নির্ধারিত থাকে। Images, videos and audio are available under their respective licenses.
®Wikipedia is a registered trademark of the Wiki Foundation, Inc. Wiki বাংলা (DUHOCTRUNGQUOC.VN) is an independent company and has no affiliation with Wiki Foundation.