শিল্পা রাও: ভারতীয় গায়িকা

শিল্পা রাও (জন্ম: অপেক্ষা রাও, ১১ এপ্রিল ১৯৮৪) হলেন একজন ভারতীয় গায়িকা। ঝাড়খণ্ডের জমশেদপুরে জন্মগ্রহণকারী শিল্পা ১৩ বছর বয়সে মুম্বইয়ে চলে যান। সেখানে তিনি সেন্ট জেভিয়ার্স কলেজ থেকে ফলিত পরিসংখ্যানে স্নাতকোত্তর সম্পন্ন করেন। এই সময়ে তিনি তিন বছর বিজ্ঞাপনের জিঙ্গলে কণ্ঠ প্রদান করেন। কলেজে পড়াকালীন সঙ্গীত পরিচালক মিথুন শর্মা তাকে আনোয়ার (২০০৭) চলচ্চিত্রের তোসে নয়না গান রেকর্ডের প্রস্তাব দেন, যার মাধ্যমে শিল্পার বলিউডে নেপথ্য সঙ্গীতশিল্পী হিসেবে আত্মপ্রকাশ ঘটে। তিনি চলচ্চিত্রের গানে কণ্ঠ দিয়ে একটি ফিল্মফেয়ার পুরস্কার ও একটি স্ক্রিন পুরস্কারসহ একাধিক পুরস্কার অর্জন করেছেন।

শিল্পা রাও
২০১২ সালে জব তক হ্যায় জান এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে রাও
২০১২ সালে জব তক হ্যায় জান এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে রাও
প্রাথমিক তথ্য
জন্মনামঅপেক্ষা রাও
জন্ম (1984-04-11) ১১ এপ্রিল ১৯৮৪ (বয়স ৪০)
জমশেদপুর, ঝাড়খণ্ড, ভারত
ধরননেপথ্য সঙ্গীত
পেশানেপথ্য সঙ্গীতশিল্পী
বাদ্যযন্ত্রকণ্ঠ
কার্যকাল২০০৭-বর্তমান

রাও দ্য ট্রেন (২০০৭) চলচ্চিত্রের "ও আজনবি" এবং বাচনা অ্যায় হাসিনো (২০০৮) চলচ্চিত্রের "খোদা জানে" গান দিয়ে অধিকতর খ্যাতি অর্জন করেন। দ্বিতীয় গানটির জন্য তিনি ৫৪তম ফিল্মফেয়ার পুরস্কারে শ্রেষ্ঠ নারী নেপথ্য কণ্ঠশিল্পী বিভাগে মনোনীত হন এবং শ্রেষ্ঠ নারী নেপথ্য কণ্ঠশিল্পী বিভাগে স্ক্রিন পুরস্কার অর্জন করেন। পরের বছর তিনি ইলাইয়ারাজার সুরে পা (২০০৯) চলচ্চিত্রের "উড়ি উড়ি ইত্তেফাক" গানে কণ্ঠ দিয়ে ৫৫তম ফিল্মফেয়ার পুরস্কারে আরেকবার শ্রেষ্ঠ নারী নেপথ্য কণ্ঠশিল্পী বিভাগে মনোনীত হন। এরপর তিনি জব তক হ্যায় জান (২০১২) চলচ্চিত্রে এ আর রহমানের সুরে "ইশ্‌ক শাভা", ধুম ৩ (২০১৩) চলচ্চিত্রে প্রীতম চক্রবর্তীর সুরে "মালাং", এবং ব্যাং ব্যাং! (২০১৪) চলচ্চিত্রে বিশাল-শেখরের সুরে "মেহেরবান" গানে কণ্ঠ দেন। ২০১৯ সালে ওয়ার চলচ্চিত্রের "ঘুঙরু" গানে কণ্ঠ দিয়ে তিনি শ্রেষ্ঠ নারী নেপথ্য কণ্ঠশিল্পী বিভাগে ফিল্মফেয়ার পুরস্কার অর্জন করেন।

প্রারম্ভিক জীবন

শিল্পা রাও ১৯৮৪ সালের ১১ই এপ্রিল ঝাড়খণ্ড রাজ্যের জমশেদপুরে জন্মগ্রহণ করেন। তার জন্মনাম ছিল অপেক্ষা রাও, যা পরবর্তী কালে পরিবর্তন করে শিল্পা রাও রাখা হয়েছিল। তার ভাষ্য অনুসারে, শিল্পা নামের সাথে তিনি নিজেকে অধিক যুক্ত করতে পারেন, কারণ নামটিতে "শিল্প সম্পর্কীয়" ব্যাপার রয়েছে। শৈশবে তিনি গান গাওয়া শুরু করেন। তার পিতা এস বেঙ্কট রাও তার প্রথম সঙ্গীত শিক্ষক। তিনি শিল্পাকে সঙ্গীতের বিভিন্ন রাগের শিক্ষা দেন। তার পিতার শিক্ষা সম্পর্কে রাও বলেন, "তার শিক্ষাদানের কৌশল ছিল রীতিবিবর্জিত, কিন্তু তা ফলপ্রসূ ছিল।" শিল্পা জমশেদপুরের লিটল ফ্লাওয়ার স্কুল ও লয়লা স্কুলে পড়াশোনা করেন। স্কুলে তিনি সমবেত সঙ্গীত দলে অংশগ্রহণ করতেন। ১৯৯৭ সালে তিনি মুম্বই বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ফলিত পরিসংখ্যানে স্নাতকোত্তর ডিপ্লোমা করার উদ্দেশ্যে তার পরিবারের সাথে মুম্বইয়ে পাড়ি জমান। ২০০৪ সালে তিনি স্থায়ীভাবে মুম্বইয়ে চলে আসেন এবং সেন্ট জেভিয়ার্স কলেজ থেকে ফলিত পরিসংখ্যানে স্নাতকোত্তর সম্পন্ন করেন।

কর্মজীবন

২০০৭-২০০৮: কর্মজীবনের শুরু ও বাচনা অ্যায় হাসিনো

কলেজে পড়া অবস্থায় সঙ্গীত পরিচালক মিথুন শর্মার সাথে শিল্পার পরিচয় হয়, যিনি তাকে আনোয়ার (২০০৭) চলচ্চিত্রের "তোসে নয়না" গানের রেকর্ডের জন্য ডাকেন। এই গানটিকে তার সবচেয়ে নিষ্পাপ পরিবেশনা হিসেবে গণ্য করা হয়। এই গানটি সম্পর্কে রাও বলেন, "গানটি আমার খুবই প্রিয় এবং শিখেয়েছে সঙ্গীতের রোমাঞ্চ ও কৃতজ্ঞতাবোধ কি এবং কি হতে পারে।" যদিও রাও "তোসে নয়না" গানটিকে তার কর্মজীবনের প্রথম গান বলে থাকেন, কিন্তু তার চলচ্চিত্রে গান গাওয়া শুরু হয়েছিল এক আজনবি (২০০৫) চলচ্চিত্রের অর্ধ-যন্ত্রসঙ্গীত ধারার শিরোনাম গান "স্ট্রেঞ্জার অন দ্য প্রাউল" দিয়ে, এতে রাওয়ের আলাপ যুক্ত করা হয়েছিল। তিনি মিথুনের সাথে আরও দুটি চলচ্চিত্রে কাজ করেন, সেগুলো হল আগারদ্য ট্রেনআগার চলচ্চিত্রের "সেহরা" গানটি সঙ্গীত সমালোচকদের নিকট থেকে নেতিবাচক সমালোচনা অর্জন করলেও দ্য ট্রেন চলচ্চিত্রে "ও আজনবি" ও "তেরি তামান্না" গান দুটি প্রশংসিত হন। রেডিফ.কমের রাজা সেন বিশেষভাবে রাওয়ের কণ্ঠের প্রশংসা করেন। সালাম-এ-ইশ্‌ক চলচ্চিত্রের শুটিংকালে শঙ্কর-এহসান-লায় ত্রয়ীর শঙ্কর মহাদেবন পরিচালক নিখিল আডবাণীর কাছে রাওয়ের ব্যাপারে সুপারিশ করেন, যার ফলে তিনি এই চলচ্চিত্রের "সাইয়াঁ রে" গানটিতে কণ্ঠ দেন। সুকন্যা বর্মা রাওয়ের দুষ্টুমিপূর্ণ পরিবেশনার প্রশংসা করে বলেন, "শঙ্কর মহাদেবনের সক্রিয় উপস্থিতি সত্ত্বেও রাও নিজেকে আলাদা করতে পেরেছেন এবং ভীত ছিলেন না।" শিল্পা পুনরায় শঙ্কর-এহসান-লায়ের সাথে হাই স্কুল মিউজিক্যাল টু-এর "অল ফর ওয়ান" গানের হিন্দি সংস্করণে কণ্ঠ দেন।

২০১৩-বর্তমান: ফিল্মফেয়ার বিজয়

রাওয়ের অভিষেক ও দ্য ট্রেন চলচ্চিত্র মিথুন শর্মার সাথে কাজ করার পর তিনি ২০১৩ সালে পুনরায় তার সুরে থ্রিজি চলচ্চিত্রে অরিজিত সিঙের সাথে "খালবালি" গানে কণ্ঠ দেন। এরপর তিনি প্রীতম চক্রবর্তীর সুরে শ্রীরাম চন্দ্রার ইয়ে জওয়ানি হ্যায় দিওয়ানি চলচ্চিত্রে "সুবহানআল্লাহ", এবং ধুম ৩ (২০১৩) চলচ্চিত্রে "মালাং" গানে কণ্ঠ দেন। রাওয়ের মতে, "মালাং" গানটি অদ্বিতীয় এবং অন্য গানের চেয়ে ভিন্ন কারণ এতে "সুফি গানের স্পর্শ" ছিল।

২০১৪ সালের রাওয়ের প্রথম চলচ্চিত্রের গান ছিল সৌমিক সেনের সুরে গুলাব গ্যাং-এর "গুলাবি", এরপর তিনি ব্যাং ব্যাং! (২০১৪) চলচ্চিত্রে বিশাল-শেখরের সুরে "মেহেরবান" গানে কণ্ঠ দেন। ২০১৫ সালে তিনি ববি-ইমরানের সুরায়োজনে বদমাশিয়াঁ চলচ্চিত্রের "থোড়ে সে হাম" গানে কণ্ঠ দেন। দ্য টাইমস অব ইন্ডিয়া অনুসারে, রাও মোহিত চৌহানের সংস্করণ থেকে আরও বেশি নারীসুলভ গেয়েছেন। ২০১৯ সালে ওয়ার চলচ্চিত্রের "ঘুঙরু" গানে কণ্ঠ দিয়ে তিনি শ্রেষ্ঠ নারী নেপথ্য কণ্ঠশিল্পী বিভাগে ফিল্মফেয়ার পুরস্কার অর্জন করেন।

পুরস্কার ও মনোনয়ন

বছর বিভাগ মনোনীত গান চলচ্চিত্র/অ্যালবাম ফলাফল সূত্র
ফিল্মফেয়ার পুরস্কার
২০০৯ শ্রেষ্ঠ নারী নেপথ্য কণ্ঠশিল্পী "খুদা জানে" বাচনা অ্যায় হাসিনো মনোনীত
২০১০ "মুড়ি মুড়ি" পা মনোনীত
২০২০ "ঘুঙরু" ওয়ার বিজয়ী
আন্তর্জাতিক ভারতীয় চলচ্চিত্র অ্যাকাডেমি পুরস্কার
২০১০ শ্রেষ্ঠ নারী নেপথ্য কণ্ঠশিল্পী "মুড়ি মুড়ি" পা মনোনীত
২০০৯ "খুদা জানে" বাচনা অ্যায় হাসিনো
স্ক্রিন পুরস্কার
২০১০ শ্রেষ্ঠ নারী নেপথ্য কণ্ঠশিল্পী "মুড়ি মুড়ি" পা মনোনীত
২০০৯ "খুদা জানে" বাচনা অ্যায় হাসিনো বিজয়ী
গ্লোবাল ইন্ডিয়ান মিউজিক অ্যাকাডেমি পুরস্কার
২০১৪ শ্রেষ্ঠ অভিষেক "দম দম" কোক স্টুডিও (২য় মৌসুম) বিজয়ী
2012 শ্রেষ্ঠ পপ/রক একক "আই বিলিভ" (পরিক্রম, অগ্নি'র সাথে যৌথভাবে) দ্য ডিওয়ারিস্টস মনোনীত
ইন্ডিয়ান টেলিভিশন অ্যাকাডেমি পুরস্কার
2011 শ্রেষ্ঠ সঙ্গীতশিল্পী "বেকাবু" নব্য..নয়ে ধড়কন নয়ে সাওয়াল বিজয়ী
মির্চি সঙ্গীত পুরস্কার
২০১৬ বর্ষসেরা নারী কণ্ঠশিল্পী "বুলেয়া" অ্যায় দিল হ্যায় মুশকিল মনোনীত

তথ্যসূত্র

বহিঃসংযোগ

Tags:

শিল্পা রাও প্রারম্ভিক জীবনশিল্পা রাও কর্মজীবনশিল্পা রাও পুরস্কার ও মনোনয়নশিল্পা রাও তথ্যসূত্রশিল্পা রাও বহিঃসংযোগশিল্পা রাওজমশেদপুরঝাড়খণ্ডফিল্মফেয়ার পুরস্কারমিথুন শর্মামুম্বইস্ক্রিন পুরস্কার

🔥 Trending searches on Wiki বাংলা:

আল্লাহরানা প্লাজা ধসঋগ্বেদনামাজের সময়সমূহআনারসহিসাববিজ্ঞানমাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড, ময়মনসিংহআদমআন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসকারকসামাজিক বিজ্ঞানপদ্মা সেতুভূমি পরিমাপস্বামী বিবেকানন্দসম্প্রদায়সূরা নাসবাংলাদেশ ব্যাংকবাংলাদেশের মেডিকেল কলেজসমূহের তালিকাজয়নুল আবেদিনসিন্ধু সভ্যতাবাংলাদেশের মন্ত্রিসভাবাংলাদেশের নদীর তালিকাভারতের জনপরিসংখ্যানমাওয়ালিনিউমোনিয়াঅর্থনীতিপারমাণবিক অস্ত্রধারী রাষ্ট্রসমূহের তালিকাভারত ছাড়ো আন্দোলনগায়ত্রী মন্ত্রডেঙ্গু জ্বরমাহিয়া মাহিবাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়তাসনিয়া ফারিণনারী ক্ষমতায়নব্রহ্মপুত্র নদবাংলাদেশের উপজেলাওমানআব্বাসীয় স্থাপত্যকুড়িগ্রাম জেলাবাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলআয়তন অনুযায়ী এশিয়ার দেশসমূহের তালিকাযুক্তরাজ্যপ্রাণ-আরএফএল গ্রুপফ্রান্সগুপ্ত সাম্রাজ্যইসরায়েলগঙ্গা নদীম্যালেরিয়ামেয়েবিকাশবাংলাদেশের অর্থনীতিজাপানসিলেট বিভাগপশ্চিমবঙ্গ বিধানসভা নির্বাচন, ২০২১প্রাকৃতিক পরিবেশটাইফয়েড জ্বরবিজ্ঞানপারমাণবিক ভরের ভিত্তিতে মৌলসমূহের তালিকাডিপজলপথের পাঁচালী (চলচ্চিত্র)স্পিন (পদার্থবিজ্ঞান)ইস্তেখারার নামাজনিফটি ৫০বাংলাদেশের সংবিধানমুহাম্মাদের সন্তানগণসিফিলিসজান্নাতদৈনিক ইনকিলাব২৪ এপ্রিলতেভাগা আন্দোলনমঙ্গল গ্রহবাংলাদেশ পুলিশের মহাপরিদর্শকস্বাধীনতা দিবস (ভারত)নিউটনের গতিসূত্রসমূহআবুল কাশেম ফজলুল হকপরীমনি🡆 More