লাভক্ষতির সাম্যাবস্থা বিশ্লেষণ

লাভক্ষতির সাম্যাবস্থা বিশ্লেষণ বা আয়ব্যয়ের সাম্যাবস্থা বিশ্লেষণ (ইংরেজি Break-even Analysis) ব্যষ্টিক অর্থনীতির একটি বহুল প্রচলিত ধারণা যার সাহায্যে পণ্যের এমন একটি উৎপাদন-পরিমাণ নিরূপণ করা হয়, যেখানে একটি ব্যবসায় প্রতিষ্ঠানের না-হবে কোনও মুনাফা, না-হবে কোনও ক্ষতি। কোনও ব্যবসায় প্রতিষ্ঠানকে মুনাফা অর্জন করতে হলে লাভক্ষতির সাম্যাবস্থায় অবস্থিত পরিমাণের চেয়ে বেশী পণ্য উৎপাদন ও বিক্রয় করতে সক্ষম হতে হবে। ঐ প্রতিষ্ঠানের পণ্য উৎপাদন ও বিক্রয়ের পরিমাণ লাভক্ষতির সাম্যাবস্থায় অবস্থিত পরিমাণের নিচে নেমে গেলে ক্ষতি হতে থাকবে। যারা ব্যবসায় পরিচালনা করে থাকেন, তাদের জন্য লাভক্ষতির সাম্যাবস্থা বিশ্লেষণ একটি উপকারী অনুশীলন।

লাভক্ষতির সাম্যাবস্থা বিশ্লেষণ
লাভক্ষতির সাম্যাবস্থা বিশ্লেষণের এই চিত্রে দেখানো হয়েছে যে লাভক্ষতির সাম্যবিন্দুতে ব্যবসায় প্রতিষ্ঠানের কোনো লাভ বা ক্ষতি হয় না।

উৎপাদন ব্যয় ও আহৃত আয়ের সম্পর্ক

লাভক্ষতির সাম্যাবস্থা বিশ্লেষণে শিল্পপ্রতিষ্ঠানের উৎপাদন ব্যয় ও আহৃত আয়ের সম্পর্ক পরীক্ষা করা হয়ে থাকে। যে কোনো বিনিয়োগ বা ব্যবসায়ের লক্ষ্য মুনাফা অর্জন করা। মুনাফা পণ্যের মূল্যের একটি অংশ অর্থাৎ সরলভাবে বলা যায় পণ্যমূল্য = উৎপাদন ব্যয় + মুনাফা। কিন্তু উৎপাদন ব্যয় দুই প্রকার: একটি হলো স্থায়ী ব্যয় আর অপরটি হলো পরিবর্তনশীল ব্যয়। একটি শিল্পপ্রতিষ্ঠানের স্থাপনের পর কোনো উৎপাদন না হলে অর্থাৎ উৎপাদিত পণ্যের পরিমাণ শূন্য হলে স্থায়ী ব্যয় থাকবে কিন্তু পরিবর্তনশীল ব্যয় হবে শূন্য। উৎপাদন শুরু এবং উৎপাদনের পরিমাণ বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে সমানুপাতিক হারে পরিবর্তনশীল ব্যয় বৃদ্ধি পেয়ে থাকে। অন্যদিকে উৎপাদনের পরিমাণ যাই হোক না কেন, স্থায়ী ব্যয় হবে এক ও অভিন্ন। এই জন্যে ডান পাশের চিত্রে স্থায়ী ব্যয়ের রেখাটি আনুভূমিক অক্ষের সমান্তরাল। আর পরিবর্তনশীল ব্যয়ের রেখাটির সূত্রপাত উল্লম্ব অক্ষের ওপর থেকে। পরিবর্তনশীল ব্যয়ের রেখাটি মূলবিন্দু (০,০) থেকে উত্থিত হয়ে ডান দিকে ঊর্ধ্বগামী।

মোট ব্যয় = স্থায়ী ব্যয় + পরিবর্তনশীল ব্যয়। তাই উল্লম্ব অক্ষের ওপর যে বিন্দু থেকে স্থায়ী ব্যয় শুরু হয়েছে সে একই বিন্দু থেকে মোট ব্যয় রেখাটি উত্থিত হয়ে ডান দিকে ঊর্ধ্বগামী।

অন্যদিকে আয় রেখাটি মূলবিন্দু (০,০) থেকে উত্থিত হয়ে ডান দিকে ঊর্ধ্বগামী। আয় রেখাটি মোট ব্যয় রেখাটির তুলনায় বেশী খাড়া। এ দুটি রেখা পরস্পর একটি বিন্দুতে পরস্পর ছেদ করে। এই বিন্দুটিকে বলা হয় লাভক্ষতির সাম্যবিন্দু। চিত্রে এই বিন্দুটি নামাঙ্কিত। কারণ এই বিন্দু নির্দেশ করে এমন একটি পরিমাণ যা উৎপাদন করলে অর্জিত আয় আর মোট ব্যয় সমান হবে। অর্থাৎ, লাভক্ষতির সাম্যবিন্দুতে আয় = মোট ব্যয়। তাই এই পরিমাণ উৎপাদন থেকে কোনো মুনাফা উপার্জ্জিত হবে না কারণ মুনাফা = আয় - মোট ব্যয়

লাভক্ষতির সাম্যবিন্দু থেকে যদি লম্বভাবে একটি রেখা নিচ বরাবর আঁকা হয় তবে তা আনুভূমিক অক্ষের ওপর বিন্দুতে ছেদ করে। এই বিন্দুটি লাভক্ষতির সাম্যাবস্থায় উৎপাদনের পরিমাণ। এই পরিমাণের কম উৎপাদন করলে শিল্পপ্রতিষ্ঠানের ক্ষতি হবে। অন্যদিকে এই পরিমাণের বেশী উৎপাদন করলে শিল্পপ্রতিষ্ঠানের মুনাফা হবে।


তথ্যসূত্র

Tags:

ব্যষ্টিক অর্থনীতি

🔥 Trending searches on Wiki বাংলা:

মুসাফিরের নামাজপ্রথম বিশ্বযুদ্ধের কারণঅর্শরোগমহাত্মা গান্ধীজাযাকাল্লাহবিষ্ণুসত্যজিৎ রায়জোট-নিরপেক্ষ আন্দোলনবাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরইশার নামাজসিঙ্গাপুরস্মার্ট বাংলাদেশজলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবসূরা ইয়াসীনআমইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউনবন্ধুত্ববাংলাদেশের সর্বাধিক ব্যবসাসফল চলচ্চিত্রসমূহের তালিকাইসলাম ও হস্তমৈথুনবেগম রোকেয়াআল্লাহর ৯৯টি নামখাদ্যপথের পাঁচালী (চলচ্চিত্র)বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর কর্মরত জেনারেলদের তালিকানেপালনিরোবাংলাদেশের জাতীয় পতাকাপূরণবাচক সংখ্যা (ভাষাতত্ত্ব)মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়মৌসুমীশ্রীকৃষ্ণকীর্তনই-মেইলময়মনসিংহদীন-ই-ইলাহিরাশিয়াহরে কৃষ্ণ (মন্ত্র)আর্জেন্টিনা জাতীয় ফুটবল দলমুতাজিলামোশাররফ করিমবাংলাদেশি কবিদের তালিকামহাদেশবাংলা ভাষা আন্দোলনযুক্তরাজ্যবাংলাদেশের জেলাউদ্ভিদজলবায়ুপৃথিবীর বায়ুমণ্ডলকিরগিজস্তানজানাজার নামাজপর্তুগিজ ভারতপ্রাকৃতিক সম্পদজরায়ুক্ষুদিরাম বসুএশিয়াজাতীয় সংসদমাহরামচট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়গৌতম বুদ্ধশাহ জাহানমুহাম্মাদের স্ত্রীগণসমাজসহীহ বুখারীআইজাক নিউটনহস্তমৈথুনপানিপথের প্রথম যুদ্ধইন্দোনেশিয়াঅলিউল হক রুমিব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলাবাংলাদেশে পালিত দিবসসমূহমুসাবাগদাদপুলিশএ. পি. জে. আবদুল কালামনিউটনের গতিসূত্রসমূহজব্বারের বলীখেলাডায়াচৌম্বক পদার্থনগরায়নশেখ হাসিনা🡆 More