মুসাফিরের নামাজ

এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় ভ্রমনকারীকে মুসাফির বলা হয়। মুসাফির অবস্থায় নামাজ পড়ার নিয়মকে মুসাফিরের নামাজ বলে।

যদি কোন ব্যক্তি মোটামুটি ৪৮ মাইল (৭৭.২৩২ কিলোমিটার) রাস্তা অতিক্রম করে কোন স্থানে যাওয়ার উদ্দেশ্যে নিজ এলাকার লোকালয় থেকে বের হয়, তাকে ইসলামী শরীয়তের পরিভাষায় মুসাফির বলা হয়। তখন তাকে ইসলামী বিধান মোতাবেক মুসাফিরের নামাজ আদায় করতে হয়।

ইসলামে মুসাফিরের নামায: এটা মুসলিম পর্যটকদের একটি বৈশিষ্ট্য। লম্বা ভ্রমণে চার রাকাআত বিশিষ্ট নামায দুই রাকাআত পড়া।

মুসাফিরের নামায

মুসাফির ব্যক্তি পথিমধ্যে চার রাকাআত বিশিষ্ট ফরয নামায (অর্থাৎ জোহর,আসর ও ঈশার ফরয নামায) কে দুই রাকআত পড়বে। একে কছরের নামায বলে।

তিন রাকআত বা দুই রাকাআত বিশিষ্ট ফরয নামায, ওয়াজিব নামায এমনিভাবে সুন্নাত নামায পূর্ণ পড়তে হবে। এ হলো পথিমধ্যে থাকাকালীন সময়ের বিধান। আর গন্তব্য পৌঁছার পর যদি সেখানে ১৫ দিন বা তদুর্ধকাল থাকার নিয়ত হয় তাহলে কছর হবে না- নামায পূর্ণ পড়তে হবে। আর যদি ১৫ দিনের কম থাকার নিয়ত থাকে তাহলে কছর হবে। গন্তব্যস্থান নিজের বাড়ি হলে কছর হবে না, চাই যে কয় দিনই থাকার নিয়ত করুক।

মুসাফিরের জন্য নামায সংক্ষিপ্ত করে পড়া আল্লাহর পক্ষ থেকে তার প্রিয় বান্দাদের জন্য উপহার স্বরূপ। তাই মুসাফিরের জন্য ওয়াজিব হলো সেই উপহার গ্রহণ করা।

কছর করা কুরআন ও হাদীস দ্বারা প্রমাণিত।

আল্লাহ পাক কুরআনে বলেন,:

وَإِذَا ضَرَبْتُمْ فِي الْأَرْضِ فَلَيْسَ عَلَيْكُمْ جُنَاحٌ أَن تَقْصُرُوا مِنَ الصَّلَاةِ إِنْ خِفْتُمْ أَن يَفْتِنَكُمُ الَّذِينَ كَفَرُوا ۚ إِنَّ الْكَافِرِينَ كَانُوا لَكُمْ عَدُوًّا مُّبِينًا

অর্থ: তোমরা যখন যমীনে সফর কর এবং তোমাদের আশঙ্কা হয় যে, কাফিরগণ তোমাদেরকে বিপন্ন করবে, তখন সালাত কছর করলে তাতে তোমাদের কোনও গুনাহ নেই। নিশ্চয়ই কাফিরগণ তোমাদের প্রকাশ্য দুশমন।

অনেক হাদীসে এসেছে, মুহাম্মাদ (সা.) হজ্জ,ওমরা, যুদ্ধসহ যে কোন সফরে কছরের নামায পড়তেন। ইবনে ওমর থেকে বর্ণিত: “আমি মুহাম্মাদ (সা.) এর সাথে ছিলাম, তিনি সফরে (চার রাকাআত বিশিষ্ট নামায) দুই রাকাআতের বেশি পড়তেন না। আবুবকর ও ওমর একই রকম নামায পড়তেন।”

-বুখারী ও মুসলিম।

বিমান, গাড়ি, স্টিমার, ট্রেন, উট, পর্বতারোহণ ও পদব্রজ ভ্রমণের মধ্যে কোনও পার্থক্য নেই। সবগুলোই সফর বা ভ্রমণের আওতাভুক্ত। সব সফরেই নামায কছর করতে হবে।

কছরের নামায কখন শুরু করতে হবে:

মুসাফির তার নিজের এলাকা ত্যাগ করার পূর্বে কছরের নামায পড়া জায়েয হবে না।

একাধিক নামায একত্রীকরণ

মুসাফিরের জন্য দু’টি নামায এক সাথে পড়ার অবকাশ রয়েছে । উদাহরণস্বরূপ: জোহরের নামাযকে আসরের নামাযের সময়ে দেরি করে একসাথে পড়া। প্রত্যেক নামাযকে আলাদা আলাদা করে পড়তে হবে। প্রথমে জোহর তারপর আসর পড়তে হবে।

আসরের নামাযকে সময়ের আগে জোহরের সময়ে একসাথে পড়াও জায়েয আছে। এক্ষেত্রেও প্রথমে জোহর তারপর আসর পড়তে হবে।

তদ্রুপভাবে মাগরিব ও ঈশার নামাযের ক্ষেত্রেও করতে পারবে।

ফজর ও জোহর বা মাগরিব ও আসর একত্রে পড়া জায়েয নেই।

সফরের সময় জামাআতে নামায:

মুসাফিরের জন্য মুকীমের ইমাম হয়ে নামাজ পড়া জায়েয আছে। এক্ষেত্রে সে দুই রাকাত নামায আদায় করে সালাম ফেরাবে এবং মুকীম একাকী নামায শেষ করে নিবে। মুসাফিরের জন্য মুস্তাহাব হলো সালাম ফিরিয়ে মুক্তাদীর বলা" আপনারা নামায পূর্ণ করুন, আমি মুসাফির"

মুসাফির ব্যক্তি মুকীম ইমামের পিছনে নামায পড়লে কছর করবে না, পূর্ণ নামাযই পড়তে হবে।

ইমাম মুসলিম ইবনে ওমর থেকে বর্ণনা করেন-“মুসাফির ইমামের সাথে চার রাকাআত পড়বে, আর একা পড়লে দুই রাকাআত পড়বে।”

মুসাফিরের জন্য আরো কতিপয় মাসআলা

  • মুসাফির ব্যক্তির ব্যস্ততা থাকলে ফজরের সুন্নাত ব্যতীত অন্যান্য সুন্নাত ছেড়ে দেওয়া দুরস্ত আছে। ব্যস্ততা না থাকলে সব সুন্নাত পড়তে হবে।
  • যারা লঞ্চ, স্টীমার, প্লেন, বাস, ট্রাক ইত্যাদির চালক বা কর্মচারী, তারাও অনুরূপ দূরত্বের সফর হলে পথিমধ্যে কছর পড়বে। আর গন্তব্য স্থানের মাসআলা উপর্যুক্ত নিয়ম অনুযায়ী হবে।
  • ১৫দিন বা তার বেশি থাকার নিয়ত হয়নি এবং পূর্বেই চলে যাবে চলে যাবে করেও যাওয়া হচ্ছে না- এভাবে ১৫দিন বা তার বেশি থাকা হলেও কছর পড়তে হবে।

তথ্যসূত্র

Tags:

মুসাফিরের নামাজ মুসাফিরের নামাযমুসাফিরের নামাজ একাধিক নামায একত্রীকরণমুসাফিরের নামাজ সফরের সময় জামাআতে নামায:মুসাফিরের নামাজ মুসাফিরের জন্য আরো কতিপয় মাসআলামুসাফিরের নামাজ তথ্যসূত্রমুসাফিরের নামাজমুসাফির

🔥 Trending searches on Wiki বাংলা:

সৌরজগৎমুকেশ আম্বানিমিশরবৃষ্টিযাকাতের নিসাবজাপানগ্রিনহাউজ গ্যাসনরেন্দ্র মোদীসূরা ইয়াসীনদৈনিক প্রথম আলোপর্তুগালমোরা একটি ফুলকে বাঁচাবো বলে যুদ্ধ করিকক্সবাজারব্যাপনবাংলা লিপিব্রহ্মপুত্র নদদেশ অনুযায়ী ইসলামমসজিদে কুবানামাজের সময়সমূহভারতীয় জনতা পার্টিমোহিত শর্মাবসন্ত উৎসবশেখ মুজিবুর রহমানের হত্যাকাণ্ডদক্ষিণ এশীয় আঞ্চলিক সহযোগিতা সংস্থাকোকা-কোলাজগদীশ চন্দ্র বসুব্যাংকফেসবুকদোলযাত্রাঢাকাআযানআসমানী কিতাবইতিহাসমহাত্মা গান্ধীইসরায়েলতাজমহলগোপাল ভাঁড়জাতিসংঘসালাহুদ্দিন আইয়ুবিকোপা আমেরিকাবিরাট কোহলিঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়েইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগমহাদেশকম্পিউটারপ্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরওয়ালাইকুমুস-সালামবাংলাদেশের জাতীয় পতাকাসূর্যাস্তষড়রিপুবাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নরদের তালিকাসূর্য সেনঈদুল ফিতরনারী খৎনাদিনাজপুর জেলাকালেমাবিশেষ্যজাতীয় গণহত্যা স্মরণ দিবসরামমোহন রায়বাংলাদেশের ব্যাংকসমূহের তালিকা১৮৫৭ সিপাহি বিদ্রোহপিঁয়াজগর্ভধারণকপালকুণ্ডলাসহীহ বুখারীকাজী নজরুল ইসলামইসলামি সহযোগিতা সংস্থাকোস্টা রিকা জাতীয় ফুটবল দলবিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিমফিতরাপশ্চিমবঙ্গে ভারতের সাধারণ নির্বাচন, ২০২৪বাংলাদেশের নদীবন্দরের তালিকাতক্ষকজাতীয় সংসদফরাসি বিপ্লবের পূর্বের অবস্থার‍‍্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নস্ক্যাবিসবাটা🡆 More