মক্কা (আরবি: مكةˈmɛkkɛ/), পূর্ণ নাম: মাক্কাহ্ আল মুকার্রামাহ্, আরবি: مكة المكرمة ম্যাক্ক্যাল্মুক্যার্র্যাম্যা /ˈmɛkkɛlmuˈkɛrrɛmɛ/) সৌদি আরবের হেজাজের একটি শহর ও মক্কা প্রদেশের রাজধানী। সমুদ্রতল থেকে ২৭৭ মিটার (৯০৯ ফুট) উপরে একটি সংকীর্ণ উপত্যকায় শহরটি অবস্থিত, যা জেদ্দা শহর থেকে ৭০ কিলোমিটার (৪৩ মাইল) দূরে।২০১২ সালের হিসেব অনুযায়ী এখানে প্রায় ২ মিলিয়ন মানুষ বসবাস করেন। কিন্তু শহরটিতে এর প্রায় ৩ গুন মানুষ হিজরী জিলহজ্জ্ব মাসে হজ্জ্ব করতে আসেন।আবদুল্লাহ ইবনে যুবায়েরের খিলাফতের রাজধানী ছিল মক্কা
মক্কা | |
---|---|
مكّة المكرمة মক্কা আল মুকাররাম্মাহ | |
ডাকনাম: উম্ম আল কুউরা (মায়ের গ্রাম) | |
স্থানাঙ্ক: ২১°২৫′০″ উত্তর ৩৯°৪৯′০″ পূর্ব / ২১.৪১৬৬৭° উত্তর ৩৯.৮১৬৬৭° পূর্ব | |
দেশ | সৌদি আরব |
প্রদেশ | মক্কা প্রদেশ |
মক্কার নির্মাণ | +২০০০ খৃষ্টপৃর্ব |
প্রতিষ্ঠিতা | ইব্রাহিম আ. |
সৌদি আরবে যোগ দিয়েছে | ১৯২৪ |
সরকার | |
• মেয়র | ওসামা আল-বার |
• প্রদেশের প্রশাসক | খালিদ আল ফয়সাল |
জনসংখ্যা (২০০৭) | |
• শহর | ১৭,০০,০০০ |
• পৌর এলাকা | ২০,৫৩,৯১২ |
• মহানগর | ২৫,০০,০০০ |
মক্কার পৌরসভার হিসাব অনুসারে | |
সময় অঞ্চল | এএসটি (ইউটিসি+৩) |
ওয়েবসাইট | মক্কা পুরসভা |
মক্কা ইসলাম ধর্মের পবিত্রতম নগরী হিসেবে স্বীকৃত। এই শহরে মুহাম্মদ(সাঃ) এর জন্ম এবং এখানেই তিনি কুরআনের প্রথম ওহী লাভ করেন (বিশেষভাবে, হেরা গুহায় যা শহর থেকে ৩ কিলোমিটার দূরে)। মুসলিমরা প্রতি বছর হজ্জ্ব ও উমরাহ পালনের জন্য এখানে আসেন। মক্কার প্রাণকেন্দ্রে কাবা অবস্থিত। ইসলাম ধর্ম অনুযায়ী কাবা হলো পৃথিবীর প্রথম মসজিদ। মুসলিমরা প্রতিদিন পাঁচ বার নামায আদায়ের সময় এই কাবার দিকে মুখ ঘুরিয়ে রাখেন। এটি তাদের প্রার্থনার সময় দিক নির্দেশ করে। দীর্ঘদিন এই শহর মুহাম্মদ (সাঃ) এর বংশধররা শাসন করেছে। ১৯২৫ সালে ইবনে সৌদ এর মাধ্যমে সৌদি আরব রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠিত হলে সৌদ বংশ মক্কার দায়িত্ব লাভ করে। বর্তমানেও উক্ত রাজবংশ মক্কা শাসন করছে। আধুনিক যুগে এসে শহর বহুগুন সম্প্রসারিত হয়েছে। এর অবকাঠামো, রাস্তা-ঘাট, নাগরিক সুবিধা ইত্যাদির অনেক উন্নতি লক্ষ্য করা যায়। বিশ্বের চতুর্থ উচ্চতম ভবন মক্কা রয়েল ক্লক টাওয়ার এই শহরেই অবস্থিত। উক্ত ভবনের মেঝের আয়তন সারা বিশ্বে তৃতীয় বৃহত্তম। শহর সম্প্রসারণের কারণে অনেক ঐতিহাসিক কাঠামো এবং প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন, যেমন আজিয়াদ দুর্গ হারিয়ে গেছে। প্রতি বছর ১৫ মিলিয়ন মুসলিম মক্কা শহর ভ্রমণ করে। ফলশ্রুতিতে শহরটি সারা বিশ্বের অন্যতম প্রধান বিশ্বজনীন শহরে পরিণত হয়েছে। এই শহরে অমুসলিমদের প্রবেশ নিষিদ্ধ।
আরবি 'مكة' শব্দের অনুবাদ ইংরেজিতে "Mecca" হিসেবে পরিচিত। তবে সৌদি সরকার এই বানানরীতি ব্যবহার করেনা। তারা এই শহরের ইংরেজি নাম করেছে 'Makkah', যা আরবি মূল শব্দের উচ্চারণের সবচেয়ে কাছাকাছি। গত শতকের আশির দশকে সৌদি সরকার এই বানান চালু করে, কিন্তু তবুও তা বিশ্বজুড়ে ব্যবহারের ক্ষেত্রে জনপ্রিয়তা লাভ করেনি। মক্কার আনুষ্ঠানিক নাম হলো مكة المكرمة (বাংলাঃ মক্কা-আল-মোকাররমা, ইংরেজিঃ Makkah al-Mukarramah বা Makkatu l-Mukarramah)। এর অর্থ সম্মানিত মক্কা। তবে ইংরেজিতে অনুবাদ করা হয় পবিত্র শহর মক্কা হিসেবে। ইংরেজিতে "Mecca" শব্দের অর্থ হলো এমন একটি জায়গা যা অনেক মানুষকে আকর্ষণ করে। বাস্তবেও এই শহর সারা বিশ্বের মুসলিমদের আকর্ষণ করে।
মক্কা পূর্বে "বাক্কা" নামেও পরিচিত ছিল।
ইসলামি ইতিহাস অনুযায়ী, হযরত ইসমাইল (আ) এর সময় সেখানে একত্ববাদ প্রচলিত থাকলেও কালক্রমে মক্কার মানুষেরা মূর্তিপূজা শুরু করে। ৫৭০ খ্রিস্টাব্দে হযরত মুহাম্মাদ (সা) এর জন্মের সময় সেখানে ৩৬০টি দেবদেবীর মূর্তি ছিল। পরে হযরত ইব্রাহীম (আ)/হযরত ইসমাইল (আ) এর অনুসরণ করা একত্ববাদ ধর্ম পুনঃপ্রতিষ্ঠার সময় ৬২৯ সালে হযরত মুহাম্মাদ (সা) সেসব মূর্তি অপসারণ করেন। একই সাথে হযরত ইসমাইল (আ) এর আমল থেকে চলে আসা হজ্বপ্রথা বহাল রাখা হয়। এজন্য অনেকে এটিকে পৌত্তলিক প্রথা মনে করলেও আসলে এর উৎস ছিল আরো আগে।
উত্তর আরবের নাবতীয়দের দেবতা হুবাল, উজ্জা- এরা জায়গা পায় মক্কার কাবাতে এবং এক পর্যায়ে মক্কাবাসীদের প্রধান রক্ষাকারী হয়ে দাঁড়ায়। কখনো কখনো কাবাকে কিংবা কালো পাথরকে নারীত্বের উর্বরতার প্রতীক অর্থেই দেখা হত বলে কিছু বর্ণনায় পাওয়া যায়, প্রাচীন কিছু আত্মজীবনীতে কাবাকে ব্যাকরণে স্ত্রীলিঙ্গ হিসেবে ধরা হয়। তাছাড়া প্রাচীন আরবের Fertility Rite (নারী বা পুরুষের উর্বরতা নিশ্চিত করতে যে উপাসনা করা হত) খুবই প্রচলিত ছিল। এরকম একটি Fertility Rite ছিল সম্পূর্ণ নগ্ন হয়ে কাবাঘর প্রদক্ষিণ করা। তখন বিশ্বাস করা হত, এতে নারীদের সন্তান জন্ম দেয়ার ক্ষমতা আর পুরুষদের সক্ষমতা আরো বাড়বে।
তবে দূর দূরান্ত থেকে সকল ধর্মের মানুষ কাবা প্রদক্ষিণ করতে আসত। এই প্রথা অনেক আগে থেকেই বিদ্যমান ছিল, এখনও আছে। আর যেহেতু মক্কায় রক্তপাত নিষিদ্ধ বলে একটা অলিখিত নিয়ম ছিলই, তাই বিনা দাঙ্গায় ব্যবসা করার জন্য খুব আদর্শ জায়গা ছিল সেটি। আর হজ্বের মৌসুমে আগতদের সাথে ব্যবসা করে ফুলে-ফেঁপে ধনী হয়ে যেত মক্কার ব্যবসায়ীরা।
সৌদি আরবের রাজধানী রিয়াদ হলেও মুসলিমদের কাছে পবিত্র দুটো নগরী হলো মক্কা আর মদিনা। তৃতীয় পবিত্র নগরী জেরুজালেম।মক্কা মূলত পবিত্র কাবার শরিফের কারণেই পরিচিত। কাবা শব্দের অর্থ ‘ঘনক’, ‘কিউব’। কালো ঘরটার ঘনক আকৃতির কারণেই এই নাম। চার হাজার বছর আগে এই মক্কার আশপাশের অঞ্চল ছিল জনবিরল মরুভূমি।
আদি ইসলামিক সূত্র অনুযায়ী ইহুদী, খ্রিস্টান আর ইসলাম ধর্মের পিতা নবী আব্রাহাম/হযরত ইব্রাহিম (আ)-কে তাঁর স্ত্রী সারাহ ঈর্ষান্বিত হয়ে হাজেরার শিশুপুত্র ইসমাইল(আ)-কে মা-সহ চোখের আড়াল করতে অনুরোধ করেন। আল্লাহ্র আদেশে ইব্রাহিম (আ) ইসমাইল (আ)-কে তাঁর মা হাজেরাসহ এই মক্কার বিরান ভূমিতে রেখে আসেন, যদিও পুত্রবিচ্ছেদে তাঁর প্রচণ্ড কষ্ট হয়েছিল। সেখানে বুখারি শরিফ মতে ফেরেশতা জিবরাঈলের (আঃ) ডানার আঘাতে ‘জমজম’ কূপ সৃষ্টি হয়। বিরান মরুর বুকে পানির সন্ধান পেয়ে ঐ এলাকায় লোক জড়ো হতে থাকে এবং এক পর্যায়ে এই জায়গায় লোকালয় গড়ে ওঠে। ইসমাইলের নামানুসারে এই জনগোষ্ঠীকে বলা হত ইসমাইলাইট/ইসমাইলি। হযরত ইসমাইল (আ) তাদের কাছেই আরবি শেখেন, যেহেতু তাঁর মাতৃভাষা আরবি ছিল না।
ইসলামি সূত্র মতে, ইসমাইল বড় হবার পর হযরত ইব্রাহীম (আ) মক্কায় আসেন এবং আল্লাহ্র আদেশে এখানে কাবার নির্মাণ শুরু করেন পুত্রের সাথে। (মক্কার প্রাচীন নাম ছিল বাক্কা, আর মদিনার আগের নাম ছিল ইয়াসরিব) কাবার প্রাথমিক গঠন নির্মাণ শেষে একজন ফেরেশতা তাঁর কাছে অপার্থিব ‘সাদা’ পাথর নিয়ে আসেন, যেটা কাছের আবু-কুবাইস পর্বতের উপর আকাশ থেকে পতিত হয়েছিল (উল্কাপিণ্ড)। সেটা কাবার পূর্ব কোণে স্থাপন করে দেয়া হয়। আবার কোনো মতে, হযরত আদম (আ) নিজেই এ পাথর নিয়ে আসেন বেহেশত থেকে। কালের বিবর্তনে সেই সাদা পাথর কালো হতে থাকে এবং এটি এখন ইসলাম ধর্মের খুব গুরুত্বপূর্ণ পবিত্র বস্তু। সত্যি বলতে, বর্তমান কাবাঘরে সেই আদি কাবার কিছুই অবশিষ্ট নেই, কেবল দুটো পাথর ছাড়া। একটি হলো সেই পাথর, যাকে ‘হাজরে আসওয়াদ’ বলে, যার অর্থ ‘কালো পাথর’। আরেকটি হলো সেই পাথর, যেটিতে হযরত ইব্রাহীম (আ) এর পায়ের ছাপ আছে, যেটির উপর দাঁড়িয়ে তিনি নির্মাণকাজ পরিচালনা করতেন বলে বর্ণিত আছে। এর নাম ‘মাকামে ইব্রাহীম’।
৫৭০ সালে আব্রাহার হস্তিবাহিনীর আক্রমণের সময় কাবা রক্ষার অলৌকিক ঘটনা ঘটে।
৬০৫ সালে হযরত মুহাম্মাদ (সা) এই কালো পাথর নিয়ে একটি কোন্দল সমাধান করে দেন, যখন আগুনে কাবা পুড়ে গিয়ে অনেক ক্ষতি সাধিত হয়েছিল। নিজের হাতে তিনি পাথরটি পুনঃস্থাপন করেন কাবাতে। এখন সেই কালো পাথর রুপালি ফ্রেমে আবদ্ধ করে কাবার কোনে লাগানো আছে। এখান থেকে একটি দীর্ঘ লাইন মেঝেতে দাগ কাটা আছে অনেক দূর পর্যন্ত। এ লাইন থেকে শুরু করে একবার ঘড়ির কাঁটার বিপরীত দিকে ঘুরে আবার ঐ লাইনে আসা হলো একবার তাওয়াফ। এভাবে সাতবার তাওয়াফ করতে হয়। এটি হজ্বের একটি অংশ এবং হজ্ব মৌসুম বাদে ওমরাতেও এভাবে তাওয়াফ করতে হয়। প্রাচীনকালে বনী ইসরাঈলের লোকেরাও হুবহু এভাবে ঘুরে ঘুরে জেরুজালেম তাওয়াফ করত বলে ইহুদী পণ্ডিতগণ জানিয়েছেন।
ইসলামি বিশ্বাস অনুযায়ী এই পাথরে চুমু খেলে পাপমোচন হয়। তাই এই পাথরের সামনে সবসময়ই জটলা থাকে, কিংবা থাকে লম্বা লাইন, সবাই চুমু খাওয়ার জন্য উদগ্রীব।
কাবার এই কালো পাথরের উৎস নিয়ে অমুসলিমগণ যে গবেষণা করেননি তা না। কেউ বলেছেন এটি বিরল প্রজাতির পাথর, কেউ বলেছেন উল্কাপিণ্ড। কিন্তু এই পাথরের পানিতে ভাসতে পারার বৈশিষ্ট্য এরকম অনেক হাইপোথিসিস বাতিল করে দিয়েছে। এখনও এর উৎস শতভাগ নিশ্চিত করা যায়নি। কেউ কেউ ‘আরবের আটলান্টিস’ বলে পরিচিত বালির নিচে ডুবে থাকা পৌরাণিক ‘ইরাম’ নগরীর সাথে এই পাথরের সম্পর্ক খুঁজতে চেয়েছেন।
আরবের অন্য দেশের মত মক্কাও শীতকাল এ দিনে তাপমাত্রা ১৮ °সে (৬৪ °ফা) রাতে ৩০ °সে (৮৬ °ফা) তে ওঠা নামা করে।
মক্কা-এর আবহাওয়া সংক্রান্ত তথ্য | |||||||||||||
---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|
মাস | জানু | ফেব্রু | মার্চ | এপ্রিল | মে | জুন | জুলাই | আগস্ট | সেপ্টে | অক্টো | নভে | ডিসে | বছর |
সর্বোচ্চ রেকর্ড °সে (°ফা) | ৩৭.৪ (৯৯.৩) | ৩৮.৩ (১০০.৯) | ৪২.৪ (১০৮.৩) | ৪৪.৭ (১১২.৫) | ৪৯.৪ (১২০.৯) | ৪৯.৬ (১২১.৩) | ৪৯.৮ (১২১.৬) | ৪৯.৭ (১২১.৫) | ৪৯.৪ (১২০.৯) | ৪৭.১ (১১৬.৮) | ৪১.২ (১০৬.২) | ৩৮.৪ (১০১.১) | ৪৯.৮ (১২১.৬) |
সর্বোচ্চ গড় °সে (°ফা) | ৩০.৫ (৮৬.৯) | ৩১.৭ (৮৯.১) | ৩৪.৯ (৯৪.৮) | ৩৮.৭ (১০১.৭) | ৪২.০ (১০৭.৬) | ৪৩.৮ (১১০.৮) | ৪৩.০ (১০৯.৪) | ৪২.৮ (১০৯.০) | ৪২.৮ (১০৯.০) | ৪০.১ (১০৪.২) | ৩৫.২ (৯৫.৪) | ৩২.০ (৮৯.৬) | ৩৮.১ (১০০.৬) |
দৈনিক গড় °সে (°ফা) | ২৪.০ (৭৫.২) | ২৪.৭ (৭৬.৫) | ২৭.৩ (৮১.১) | ৩১.০ (৮৭.৮) | ৩৪.৩ (৯৩.৭) | ৩৫.৮ (৯৬.৪) | ৩৫.৯ (৯৬.৬) | ৩৫.৭ (৯৬.৩) | ৩৫.০ (৯৫.০) | ৩২.২ (৯০.০) | ২৮.৪ (৮৩.১) | ২৫.৬ (৭৮.১) | ৩০.৮ (৮৭.৪) |
সর্বনিম্ন গড় °সে (°ফা) | ১৮.৮ (৬৫.৮) | ১৯.১ (৬৬.৪) | ২১.১ (৭০.০) | ২৪.৫ (৭৬.১) | ২৭.৬ (৮১.৭) | ২৮.৬ (৮৩.৫) | ২৯.১ (৮৪.৪) | ২৯.৫ (৮৫.১) | ২৮.৯ (৮৪.০) | ২৫.৯ (৭৮.৬) | ২৩.০ (৭৩.৪) | ২০.৩ (৬৮.৫) | ২৪.৭ (৭৬.৫) |
সর্বনিম্ন রেকর্ড °সে (°ফা) | ১১.০ (৫১.৮) | ১০.০ (৫০.০) | ১৩.০ (৫৫.৪) | ১৫.৬ (৬০.১) | ২০.৩ (৬৮.৫) | ২২.০ (৭১.৬) | ২৩.৪ (৭৪.১) | ২৩.৪ (৭৪.১) | ২২.০ (৭১.৬) | ১৮.০ (৬৪.৪) | ১৬.৪ (৬১.৫) | ১২.৪ (৫৪.৩) | ১০.০ (৫০.০) |
অধঃক্ষেপণের গড় মিমি (ইঞ্চি) | ২০.৮ (০.৮২) | ৩.০ (০.১২) | ৫.৫ (০.২২) | ১০.৩ (০.৪১) | ১.২ (০.০৫) | ০.০ (০.০) | ১.৪ (০.০৬) | ৫.০ (০.২০) | ৫.৪ (০.২১) | ১৪.৫ (০.৫৭) | ২২.৬ (০.৮৯) | ২২.১ (০.৮৭) | ১১১.৮ (৪.৪০) |
অধঃক্ষেপণ দিনগুলির গড় | ৪.০ | ০.৯ | ১.৮ | ১.৮ | ০.৭ | ০.০ | ০.৩ | ১.৫ | ২.০ | ১.৯ | ৩.৯ | ৩.৬ | ২২.৪ |
আপেক্ষিক আদ্রতার গড় (%) | ৫৮ | ৫৪ | ৪৮ | ৪৩ | ৩৬ | ৩৩ | ৩৪ | ৩৯ | ৪৫ | ৫০ | ৫৮ | ৫৯ | ৫৯ |
মাসিক সূর্যালোক ঘণ্টার গড় | ২৬০.৪ | ২৪৫.৮ | ২৮২.১ | ২৮২.০ | ৩০৩.৮ | ৩২১.০ | ৩১৩.১ | ২৯৭.৬ | ২৮২.০ | ৩০০.৭ | ২৬৪.০ | ২৪৮.০ | ৩,৪০০.৫ |
দৈনিক সূর্যালোক ঘণ্টার গড় | ৮.৪ | ৮.৭ | ৯.১ | ৯.৪ | ৯.৮ | ১০.৭ | ১০.১ | ৯.৬ | ৯.৪ | ৯.৭ | ৮.৮ | ৮.০ | ৯.৩ |
উৎস ১: জেদ্দা আঞ্চলিক আবহাওয়া কেন্দ্র | |||||||||||||
উৎস ২: Deutscher Wetterdienst (sun, 1986–2000) |
এই অনুচ্ছেদটি খালি। আপনি এখানে যোগ করে সাহায্য করতে পারেন। |
এই অনুচ্ছেদটি খালি। আপনি এখানে যোগ করে সাহায্য করতে পারেন। |
হাজিদের জন্য সকল স্বাস্থ্য সেবা বিনা মূল্যে দেওয়া হয়।
মক্কা নগরীতে খুবই ঘন জনবসতি। মক্কার দীর্ঘ মেয়াদের স্থায়ী বাসিন্দারা পুরাতন শহরে বাস করে এবং অনেকেই হজ্বের কাজ করে যা স্থানীয়ভাবে হজ্বশিল্প নামে পরিচিত। সৌদি আরবের হজ্ব মন্ত্রী আইয়াদ মাদানী বলেন, "আমাদের হজ্ব প্রস্তুতি কখনোই শেষ হয় না।"
বছরজুড়েই হজ্বযাত্রীরা শহরে আসতে থাকেন উমরা হজ্ব পালন করতে। প্রতিবছর গড়ে ৪০ লক্ষ মুসলমান মূল হজ্বে অংশ নিতে মক্কা নগরীতে জমায়েত হয়।
প্রধানত মধ্য এশিয়া, দক্ষিণ এশিয়া, দক্ষিণ পূর্ব এশিয়া, ইউরোপ, মধ্যপ্রাচ্য এবং আফ্রিকা থেকে বিভিন্ন নৃগোষ্ঠী মুসলমানেরা হজ্বের উদ্দেশ্যে আসেন। হজ্বযাত্রীদের কেউ কেউ থেকে যান এবং শহরের বাসিন্দা হয়ে যান। বার্মার থেকে যাওয়া লোকেরা এখানে সব থেকে পুরাতন এবং তারা একটি সম্প্রদায় গড়ে তুলতে পেরেছে যাদের সংখ্যা আড়াই লক্ষের কাছাকাছি। বিগত ৫০ বছরে শত সহস্র কাজ করতে আসা অভিবাসী এখানে জমায়েত হয়েছে।
সৌদি আরবের সাধারণ আইনে অমুসলিমদের মক্কা নগরীতে প্রবেশাধিকার নেই। জালিয়াতির মাধ্যমে প্রবেশের চেষ্টা করলে গ্রেফতার এবং শাস্তি হতে পারে। আহমাদিয়াদেরও প্রবেশাধিকার নেই কারণ সাধারণ মুসলমানেরা তাদেরকে অমুসলমান হিসেবে বিবেচনা করে। যদিও অনেক অমুসলিম এবং আহমাদিয়া শহরটি ভ্রমণ করেছেন। নিবন্ধিত তথ্যানুসারে প্রথম অমুসলিম হচ্ছে লুডোভিকো ডি ভার্থেমা, তিনি ১৫০৩ সালে মক্কা ভ্রমণ করেন। ১৫১৮ সালের ডিসেম্বর মাসে শিখ ধর্মের প্রবর্তক গুরু নানক সাহিব মক্কা ভ্রমণ করেন। বিখ্যাতদের একজন হচ্ছেন রিচার্ড ফ্রান্সি বুর্টন, যিনি আফগানিস্তান থেকে কাদিরিয়া সুফির ছদ্মবেশে ১৮৫৩ সালে মক্কা ভ্রমণ করেন। সৌদি সরকার আল কোরআনের নবম সুরার ২৮ নম্বর আয়াত দ্বারা তাদের নিজেদের অবস্থান সমর্থন করে।
উসমানীয় খিলাফতের শেষের দিকে এবং হাশেমী আমলে মক্কায় ধীরে ধীরে আনুষ্ঠানিক শিক্ষার উন্নতি হতে শুরু করে। অবস্থার উন্নতির জন্য সর্বপ্রথম জেদ্দার একজন ব্যবসায়ী মুহাম্মদ আলি জায়নাল রিদা উদ্যোগ নেন। তিনি ১৯১১-১২ সালে ৪০০০০০ পাউন্ড ব্যয়ে মাদরাসাত আল-ফালাহ প্রতিষ্ঠা করেন।
মক্কায় ছেলে-মেয়ে উভয়ের জন্য অনেক সরকারি ও বেসরকারি স্কুল রয়েছে। ২০০৫ সালে ছেলেদের জন্য ৫৩২ এবং মেয়েদের জন্য ৬৮১ টি স্কুল ছিল। শিক্ষার মাধ্যম আরবি তবে ইংরেজিকে দ্বিতীয় ভাষা হিসেবে জোর দেয়া হয়। কিছু স্কুল যেগুলো বিদেশীদের দ্বারা প্রতিষ্ঠিত হয়েছে সেখানে ইংরেজিকে শিক্ষার মাধ্যম হিসেবে গ্রহণ করা হয়েছে। তারা জঘন্যতম ফ্রি-মিক্সিংয়ের অনুমতি দেয় যা অন্যান্য স্কুল দেয়না।
উচ্চশিক্ষার জন্য একমাত্র বিশ্ববিদ্যালয়, উম্মুল কুরা বিশ্ববিদ্যালয়, যা ১৯৪৯ সালে কলেজ হিসাবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল এবং ১৯৭৯ সালে বিশ্ববিদ্যালয় হয়।
২০১০ সালে সাদানিয়াস ফসিল আবিষ্কারের ফলে মক্কা নগরী প্রাইমেট ইভোলিউশন এর বিচারে জীবাশ্মবিজ্ঞানের গুরুত্বপূর্ণ সাইটে পরিণত হয়েছে। সাদানিয়াসদের প্রাইমেট হিসেবে বিবেচনা করা হয়। জীবাশ্ম প্রাপ্তির স্থানটি বর্তমানে লোহিত সাগরের কাছে অবস্থিত যা ২৮ মিলিয়ন এবং ২৯ মিলিয়ন বছর আগে জংগলাকীর্ণ ছিলো।
জীবাশ্মবিজ্ঞানীরা এই এলাকায় আরো জীবাশ্ম পাওয়ার আশায় গবেষণা চালিয়ে যাচ্ছে।
সৌদি শাসনামলে মক্কা নগরীর টেলিকমিউনিকেশন ব্যবস্থা বিকশিত হয়। বাদশাহ আব্দুল আজিজ আল সউদ সুশাসনের মাধ্যম হিসেবে দেখতেন। হেজাজের আলীর শাসনামলে নগরীতে মাত্র ২০ টি টেলিফোন ছিলো, ১৯৩৬ সালে তা এক লাফে বেড়ে দাঁড়ায় ৪৫০ এ যা দেশের মোট টেলিফোনের অর্ধেক। ১৯৮৫ সালে অন্যান্য শহরের মত মক্কাও আধুনিক টেলিফোন, টেলেক্স, বেতার এবং টেলিভিশন যোগাযোগব্যবস্থা অর্জন করে।
হাশিমী সাম্রাজ্যকালে নির্দিষ্টসংখ্যক বেতার যোগাযোগব্যবস্থা স্থাপন করা হয়। ১৯২৯ সালে অত্র অঞ্চলের বিভিন্ন শহরে ওয়্যারলেস স্টেশন বসানো হয়। একটি নেটওয়ার্ক তৈরী হয় যা ১৯৩২ সালে পূর্নাংগ ভাবে চালু হয়। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পরে বিদ্যমান নেটওয়ার্ক এর ব্যপকহারে বর্ধন ও উন্নয়ন সাধন হয়। সেই সময় হজ্বযাত্রীদের নির্দেশনা দিতে বেতার পরিসেবা ব্যবহৃত হতে থাকে। ১৯৫০ সালে আরাফাত দিবস থেকে সম্প্রচার শুরু হয় এবং ১৯৫৭ সাল পর্যন্ত এই ধারা বাড়তেই থাকে। সেই সময়ে রেডিও মক্কা ছিলো মধ্যপ্রাচ্যের সব থেকে শক্তিশালী স্টেশন যার ক্ষমতা ছিলো ৫০ কিলো ওয়াট। পরে ৪৫০ কিলো ওয়াটে উন্নীত হয়। প্রথম দিকে সংগীত প্রচার করা না হলেও আস্তে আস্তে সম্প্রচার শুরু হয়।
মক্কায় ছোট আকারে মক্কা পূর্ব বিমানবন্দর অবস্থিত হলেও কোন উড়োজাহাজ পরিসেবা চালু না থাকায় শহরের কেন্দ্র থেকে ১০০ কিলোমিটার দূরে জেদ্দায় অবস্থিত বাদশাহ আব্দুল আজিজ আন্ত:র্জাতিক বিমানবন্দরের উপর নির্ভর করতে হয়। অধিক সংখ্যক হজ্বযাত্রী পরিবহনের সুবিধার্থে এই বিমানবন্দরে বিশেষ ভাবে নির্মিত টার্মিনাল রয়েছে যেখানে একই সাথে ৪৭ খানা বিমান ওঠানামা করতে পারে এবং হজ্ব মৌসুমে প্রতিঘণ্টায় ৩৮০০ জন হজ্বযাত্রীকে অভ্যর্থনা জানাতে পারে।
আল মাশায়ের আআল মুগাদ্দেসসাহ মেট্রো হচ্ছে মক্কা শহরের একটি মেট্রো লাইন যা ২০১০ সালের ১৩ নভেম্বর চালু হয়। এই ১৮.১ কিলোমিটার বিস্তৃত রেল যোগাযোগ ব্যবস্থা দ্বারা হজ্ব মৌসুমে হজ্বযাত্রীদের আরাফাত পর্বত, মুজদালিফা এবং মিনায় নেওয়া হয়।
মক্কা মেট্রো দাপ্তরিক ভাবে মক্কা মাস রেইল ট্রান্সপোর্ট নামে পরিচিত, শহরের মধ্যে চার লেনের রেল লাইন। এটি হজ্বমৌসুমে হজ্বযাত্রীদের পরিবহনকারী আল মাশায়ের আল মুগাদ্দেসসাহ'র সাথে যুক্ত হবে।
সৌদি আরবে একটি উচ্চগতির রেললাইন নির্মাণ চলছে। এটা ৪৪৪ কিলোমিটার বিস্তৃত হবে যা মক্কা এবং মদিনা শহরকে সংযুক্ত করবে। লাইনটি চালু হলে মক্কা থেকে মদিনার পথে যাত্রার সময় ২ ঘণ্টা কম লাগবে। স্পেনের একটি বিজিনেস কনসোর্টিয়াম এটা নির্মাণ করবে।
মক্কা নগরীকে সংযুক্তকারী কিছু আন্তঃনগর হাইওয়ে হচ্ছে:
This article uses material from the Wikipedia বাংলা article মক্কা, which is released under the Creative Commons Attribution-ShareAlike 3.0 license ("CC BY-SA 3.0"); additional terms may apply (view authors). বিষয়বস্তু সিসি বাই-এসএ ৪.০-এর আওতায় প্রকাশিত যদি না অন্য কিছু নির্ধারিত থাকে। Images, videos and audio are available under their respective licenses.
®Wikipedia is a registered trademark of the Wiki Foundation, Inc. Wiki বাংলা (DUHOCTRUNGQUOC.VN) is an independent company and has no affiliation with Wiki Foundation.