ভারী ধাতু সাধারণত সেই ধাতুসমুহ যাদের ঘনত্ব, পারমাণবিক ভর অথবা পারমাণবিক সংখ্যা অনেক বেশি। ভারী ধাতু হওয়ার মানদন্ড বিভিন্ন ক্ষেত্রে বিভিন্ন রকম হয়। যেমন, ধাতুবিদ্যায় ঘনত্বের ভিত্তিতে সঙ্গায়িত করা হয়, পদার্থ বিজ্ঞানে যেখানে পারমাণবিক সংখ্যাই পার্থক্য নির্ণায়ক আবার রসায়নবিদরা রসায়নিক বৈশিষ্টের ওপর আরো জোর দেন। এর অনেক সংজ্ঞা থাকলেও সবচেয়ে বেশি গৃহীত সংজ্ঞা হল, যে মৌলের ঘনত্ব ৫ গ্রাম/সে.মি.৩ এর বেশি তারাই ভারী ধাতু।
সবচেয়ে কাছের পরিচিত ভারী ধাতুগুলো লোহা, তামা ও টিন আর দামী ভারী ধাতুগুলো হল রুপা, সোনা ও প্লাটিনাম। ১৮০৯ সালের আগে থেকে হালকা ধাতু যেমন, ম্যাগনেসিয়াম, অ্যালুমিনিয়াম ও টাইটানিয়াম এবং পাশাপাশি ভারী ধাতু যেমন, গ্যালিয়াম, থ্যালিয়াম ও হ্যাফনিয়াম আবিষ্কৃত হয়েছিল।
এদের কিছু আছে যেগুলো পরিপোষক পদার্থ (যেমন- লোহা, কোবাল্ট ও দস্তা) আর কিছু কম ক্ষতিকারক (যেমন, রুথিনিয়াম, রূপা ও ইন্ডিয়াম) কিন্তু কিছু আছে যেগুলোর বেশি পরিমাণ বিষাক্ত। অন্যান্য কিছু আছে যেগুলো বিষাক্ত যেমন- ক্যাডমিয়াম, মার্কারি ও সীসা। খনি, শিল্প বর্জ্য এবং কৃষিজ অবশিষ্ট্য এই বিষক্রিয়ার সম্ভাব্য উৎস।
তুলনামুলকভাবে ঘন হওয়ায় হালকা ধাতু থেকে কম প্রতিক্রিয়াশীল এবং হাইড্রক্সাইড ও সালফাইডের তুলনায় অনেক কম দ্রবণীয়। যদিও হালকা ধাতু থেকে ভারী ধাতু আলাদা করা সহজ কিন্তু কিছু হালকা ধাতু(বেরিলিয়াম, স্ক্যানডিয়াম, টাইটানিয়াম)র ভারী বৈশিষ্ট আছে আবার কিছু ভারী ধাতু(তামা, পারদ, সীসা)র হালকা বৈশিষ্ট আছে।
ভারী ধাতুগুলো তুলনামুলকভাবে ভূূত্বকে দুর্লভ কিন্তু আমাদের আধুনিক জীবনের বহু ক্ষেত্রে ব্যবহৃত। গলফ ক্লাব, গাড়ি, এন্টিসেপ্টিক্স, স্বপরিষ্কারক ওভেন, সৌর প্যানেল, মুঠোফোন ও কণা ত্বরক এ ব্যবহৃত হয়।
ভারী ধাতু নির্ণয় করার জন্য ব্যাপকভাবে গৃহীত কোন সংজ্ঞা নেই। ঘনত্বের ক্ষেত্রে শর্ত হচ্ছে ৩.৫ গ্রা./সে.মি.৩ থেক ৭ গ্রা./সে.মি.৩। পারমাণবিক ওজনের ক্ষেত্রে সোডিয়াম(২৩)এর চেয়ে বেশি বা ৪০( s ও f ব্লক ধাতু বাদে) এর বেশি বা ২০০(মারকিউরি থেকে) এর বেশি ।
চিহ্নিত পরিমাণ কিছু ভারী ধাতু, বেশির ভাগ চতুর্থ পর্যায়ের ধাতুগুলো নির্দিষ্ট কিছু জৈব প্রক্রিয়ার জন্য দরকারী। এগুলো হল- লোহা, তামা ( অক্সিজেন ও তড়িৎ সংবহন), কোবাল্ট (জটিল সংশ্লেষন ও কোষীয় বিপাক) , দস্তা (হাইড্রোলাইজেশন), ভ্যানাডিয়াম, ম্যাঙ্গানিজ (এনজাইম কার্যকারিতা), ক্রোমিয়াম (গ্লুকোজ সদ্ব্যবহার), নিকেল (কোষের বৃদ্ধি), আর্সেনিক (কিছু প্রাণির বিপাকীয় বৃদ্ধি) ও সেলেনিয়াম(হরমোন তৈরী)। পঞ্চম ও ষষ্ঠ পর্যায়ের কিছু ভারী ধাতু পুষ্টিগতভাবে কম প্রয়োজনীয় এবং কম পরিমাণে থাকে। পঞ্চম পর্যায়ের, মলিবডেনাম জারণ-বিজারণ বিক্রিয়ার অনুঘটক; ক্যাডমিয়াম সামুদ্রিক ডায়াটমের ক্ষেত্রে কাজ করে। ষষ্ঠ পর্যায়ের টাংস্টেন ব্যাক্টেরিয়ার বিপারকীয় কাজে সাহায্য করে। ৭০ কেজি ওজনের মানবদেহে গড়ে ০.০১% ভারী ধাতু থাকে।
উপাদান | মিলিগ্রাম |
---|---|
লোহা | ৪০০০ |
জিঙ্ক | ২৫০০ |
সীসা | ১২০ |
তামা | ৭০ |
টিন | ৩০ |
ভ্যানাডিয়াম | ২০ |
ক্যাডমিয়াম | ২০ |
নিকেল | ১৫ |
সেলেনিয়াম | ১৪ |
ম্যাঙ্গানিজ | ১২ |
অন্যান্য | ২০০ |
মোট | ৭০০০ |
ভারী ধাতু মাঝে মাঝে খুবই ক্ষতিকর অথবা পরিবেশের জন্য ক্ষতিকারক হয়। কিছু ভারী ধাতু বেশি পরিমাণে হলে অথবা নির্দিষ্ট গঠনে থাকলে বিষাক্ত হয়।
অনেক সময় ক্রোমিয়াম, আর্সেনিক, ক্যাডমিয়াম, পারদ ও সীসার অধিক ব্যবহার ও এদের কিছু রাসায়নিক গঠন পরিবেশে বিষক্রিয়ার সৃষ্টি করে। উদাহরনসরুপ, ষড়যোজী ক্যাডমিয়াম পারদ বাষ্প বা অনেক পারদ যৌগের মত বিষাক্ত হতে পারে। ক্রোমিয়াম (ষড়যোজী গঠনে) আর ক্যান্সারের জন্য দায়ী; ক্যাডমিয়াম হাড়ের রোগ সৃষ্টি করে; পারদ ও সীসা কেন্দ্রীয় স্নায়ুতন্ত্রে ক্ষতি করে।
This article uses material from the Wikipedia বাংলা article ভারী ধাতু, which is released under the Creative Commons Attribution-ShareAlike 3.0 license ("CC BY-SA 3.0"); additional terms may apply (view authors). বিষয়বস্তু সিসি বাই-এসএ ৪.০-এর আওতায় প্রকাশিত যদি না অন্য কিছু নির্ধারিত থাকে। Images, videos and audio are available under their respective licenses.
®Wikipedia is a registered trademark of the Wiki Foundation, Inc. Wiki বাংলা (DUHOCTRUNGQUOC.VN) is an independent company and has no affiliation with Wiki Foundation.