বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (সংক্ষেপে: বুয়েট) হচ্ছে বাংলাদেশের শীর্ষস্থানীয় প্রকৌশল-সম্পর্কিত উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠান। এটি ঢাকা শহরের লালবাগ থানার পলাশী এলাকায় অবস্থিত। কারিগরি শিক্ষা প্রসারের জন্য ১৮৭৬ সালে ঢাকা সার্ভে স্কুল নামে প্রতিষ্ঠিত স্কুলটি পরবর্তীতে আহসানউল্লাহ স্কুল অব ইঞ্জিনিয়ারিং এ পরিণত করা হয়। বাংলাদেশের স্বাধীনতার পরে এর নাম হয় বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়।
ধরন | সরকারি বিশ্ববিদ্যালয় |
---|---|
স্থাপিত | ১৮৭৬ (বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপান্তর: ১৯৬২) |
অধিভুক্তি | বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশন |
আচার্য | রাষ্ট্রপতি মোহাম্মদ সাহাবুদ্দিন |
উপাচার্য | সত্য প্রসাদ মজুমদার |
শিক্ষায়তনিক ব্যক্তিবর্গ | আনু. ৬০০ |
শিক্ষার্থী | আনু. ১০,০০০ |
স্নাতক | আনু. ৫০০০ |
অবস্থান | , , |
শিক্ষাঙ্গন | শহরের কেন্দ্রস্থলে, ৮৩.৯ একর (৩৩.৯৫ হেক্টর) |
সংক্ষিপ্ত নাম | বুয়েট |
ওয়েবসাইট | www |
বিশ্ববিদ্যালয় ক্রম | |
---|---|
বৈশ্বিক – সামগ্রিকভাবে | |
কিউএস বিশ্ব | ৮০০-৮৫০ (২০২৪) |
টিএইচএ বিশ্ব | ১০০১-১২০০ (২০২৪) |
আঞ্চলিক – সামগ্রিকভাবে | |
কিউএস এশিয়া | ১৯৯ (২০২৩) |
টিএইচএ এশিয়া | ৪০১-৫০০ (২০২৪) |
বুয়েট উনবিংশ শতাব্দীর শেষভাগে জরিপকারদের জন্য একটি জরিপ শিক্ষালয় হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়। ১৮৭৬ সালে তদানীন্তন ব্রিটিশ রাজ ঢাকা সার্ভে স্কুল নামে একটি প্রতিষ্ঠান চালু করে। এর উদ্দেশ্য ছিল সেই সময়কার ব্রিটিশ ভারতের সরকারি কাজে অংশগ্রহণকারী কর্মচারীদের কারিগরি শিক্ষা প্রদান করা। ঢাকার তৎকালীন নওয়াব খাজা আহসানউল্লাহ এ বিদ্যালয়ের প্রতি আগ্রহী হন এবং মুসলমানদের শিক্ষাদীক্ষায় অগ্রগতির জন্য তিনি ঢাকার সার্ভে স্কুলটিকে ইঞ্জিনিয়ারিং স্কুলে (বর্তমানে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়) উন্নীত করার পরিকল্পনা বাস্তবায়নের স্বার্থে এক লক্ষ ১২ হাজার টাকা প্রদানের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। তার জীবদ্দশায় তা সম্ভব হয়নি। তার মৃত্যুর পর তার পুত্র নওয়াব সলিমুল্লাহ ১৯০২ খ্রিষ্টাব্দে এই প্রতিশ্রুতি রক্ষা করেছিলেন। তার অনুদানে এটি পরবর্তীতে একটি স্বয়ংসম্পূর্ণ ইঞ্জিনিয়ারিং শিক্ষালয় হিসেবে প্রসার লাভ করে এবং তার স্বীকৃতি হিসেবে ১৯০৮ সালে বিদ্যায়তনটির নামকরণ করা হয় আহসানউল্লাহ ইঞ্জিনিয়ারিং স্কুল।আহসানউল্লাহ ইঞ্জিনিয়ারিং স্কুল তিন বছর মেয়াদী ডিপ্লোমা কোর্স দিতে শুরু করে পুরকৌশল, তড়িৎকৌশল এবং যন্ত্রকৌশল বিভাগে। শুরুতে একটি ভাড়া করা ভবনে বিদ্যালয়টির কার্যক্রম চলত। ১৯০৬ সালে সরকারি উদ্যোগে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদুল্লাহ হলের কাছে এর নিজস্ব ভবন নির্মিত হয়। এ স্থানের একটি উঁঁচু চিমনি কিছুদিন আগেও এই স্মৃতি বহন করত। ১৯১২ সালে এটি বর্তমান অবস্থানে স্থানান্তরিত হয়।
শুরুতে বিদ্যালয়টি ঢাকা কলেজের সাথে সংযুক্ত ছিল। পরবর্তীতে এটি জনশিক্ষা পরিচালকের অধীনে পরিচালিত হতে থাকে। মি. এন্ডারসন এর প্রথম অধ্যক্ষ নিযুক্ত হন। এরপর ১৯৩২ সালে শ্রী বি. সি. গুপ্ত ও ১৯৩৮ সালে জনাব হাকিম আলী অধ্যক্ষ নিযুক্ত হন।
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর বাংলার শিল্পায়নের জন্য তৎকালীন সরকার ব্যাপক পরিকল্পনা গ্রহণ করে। তখন এতদঞ্চলে দক্ষ জনশক্তির অভাব দেখা দেয়। তৎকালীন সরকার নিযুক্ত একটি কমিটি যন্ত্র, তড়িৎ, কেমি ও কৃষি প্রকৌশলে ৪ বছর মেয়াদী ডিগ্রি কোর্সে ১২০ জন ছাত্রের জন্য ঢাকায় একটি প্রকৌশল কলেজ স্থাপন এবং স্কুলটিকে তৎকালীন পলাশী ব্যারাকে স্থানান্তর করে পুর, যন্ত্র, ও তড়িৎ কৌশলে ৪ বছর মেয়াদী ডিপ্লোমা কোর্সে ৪৮০ জন ছাত্র ভর্তির সুপারিশ করেন। ১৯৪৭ সালের মে মাসে সরকার ঢাকায় একটি প্রকৌশল কলেজ স্থাপনের সিদ্ধান্ত নেন ও ছাত্র ভর্তির জন্য বর্তমান পশ্চিমবঙ্গের শিবপুরস্থ বেঙ্গল ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ ও ঢাকায় আহসানউল্লাহ ইঞ্জিনিয়ারিং স্কুলে পরীক্ষা নেয়া হয়।
১৯৪৭ এর দেশবিভাগের ফলে আহসানউল্লাহ ইঞ্জিনিয়ারিং স্কুলের মুষ্টিমেয় কয়েকজন শিক্ষক ছাড়া বাকি শিক্ষকদের সবাই ভারতে চলে যান ও ভারত থেকে ৫ জন শিক্ষক এ স্কুলে যোগদান করেন। ১৯৪৭ এর আগস্ট মাসে এটিকে আহসানউল্লাহ ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ রূপে উন্নীত করা হয় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে ইঞ্জিনিয়ারিং অনুষদ হিসেবে। জনাব হাকিম আলী এর অধ্যক্ষ নিযুক্ত হন।
১৯৪৮ সালের ফেব্রুয়ারিতে তৎকালীন পূর্ব-পাকিস্তান সরকার এই কলেজটিকে অনুমোদন দেন এবং এটি তখন পুরকৌশল, তড়িৎ প্রকৌশল, যন্ত্র প্রকৌশল, কেমিকৌশল, কৃষি প্রকৌশল ও টেক্সটাইল প্রকৌশল বিভাগে চার বছর মেয়াদী ব্যাচেলর ডিগ্রি এবং পুরকৌশল, তড়িৎ প্রকৌশল ও যন্ত্র প্রকৌশল বিভাগে তিন বছর মেয়াদী ডিপ্লোমা প্রদান করতে শুরু করে। তবে শেষ পর্যন্ত কৃষি ও টেক্সটাইলের পরিবর্তে ধাতব প্রকৌশল অন্তর্ভুক্ত হয়। ১৯৫৬ সালে কলেজে সেমিস্টার প্রথা চালু হয় ও নতুন পাঠ্যক্রম অনুমোদিত হয়। ১৯৫৭ সালে ডিগ্রি কোর্সে আসন সংখ্যা ১২০ থেকে বাড়িয়ে ২৪০ করা হয়। ১৯৫৮ সালে কলেজ থেকে ডিপ্লোমা কোর্স বন্ধ করে দেয়া হয়।
এর মধ্যে ১৯৫১ সালে টি. এইচ. ম্যাথুম্যান এবং ১৯৫৪ সালে ড. এম. এ. রশিদ কলেজের অধ্যক্ষ হয়েছিলেন। এসময়ে এগ্রিকালচারাল এন্ড মেকানিক্যাল কলেজ অব টেক্সাস (বর্তমানে বিশ্ববিদ্যালয়) ও আহসানউল্লাহ কলেজের সাথে যৌথ ব্যবস্থাপনার চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়, ফলে ওখান থেকে অধ্যাপকগণ এদেশে এসে শিক্ষকতার মান, ল্যাবরেটরি ও পাঠ্যক্রম উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। শিক্ষকদের মানোন্নয়নের জন্য কিছু শিক্ষককে স্নাতকোত্তর পড়াশোনার জন্য টেক্সাস এ. এন্ড এম. কলেজে পাঠানো হয়। এসময় এশিয়া ফাউন্ডেশন লাইব্রেরিকে কিছু প্রয়োজনীয় বইপত্র দান করে এবং রেন্টাল লাইব্রেরি প্রথা চালু করা হয়। কলেজ থাকা অবস্থায় ছাত্রদের জন্য কেবল দুটি ছাত্রাবাস ছিলঃ মেইন হোস্টেল (বর্তমান ড. এম. এ. রশীদ ভবন) ও সাউথ হোস্টেল (বর্তমান নজরুল ইসলাম হল)
পাকিস্তান আমলে ১৯৬২ সালের ১ জুন তারিখে এটিকে একটি পূর্ণাঙ্গ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ে পরিণত করে নাম দেয়া হয় পূর্ব পাকিস্তান প্রকৌশল ও কারিগরী বিশ্ববিদ্যালয় (East Pakistan University of Engineering and Technology, or EPUET)। তৎকালীন কারিগরি শিক্ষা পরিচালক ড. এম. এ. রশিদ প্রথম ভাইস চ্যান্সেলর নিযুক্ত হন। অধ্যাপক এ. এম. আহমেদ প্রকৌশল অনুষদের প্রথম ডীন নিযুক্ত হন। খ্যাতনামা গণিতজ্ঞ এম. এ. জব্বার প্রথম রেজিস্ট্রার ও মমতাজউদ্দিন আহমেদ প্রথম কম্পট্রোলার নিযুক্ত হন। ড. এম. এ. রশিদের যোগ্য নেতৃত্বে বিশ্ববিদ্যালয়টি দৃঢ় ভিত্তির উপর প্রতিষ্ঠিত হয়।
বিশ্ববিদ্যালয়রূপে প্রতিষ্ঠিত হবার পরে ছাত্রদের জন্য তিনটি নতুন আবাসিক হল তৈরি করা হয়। অধ্যাপক কবিরউদ্দিন আহমেদ প্রথম ছাত্রকল্যাণ পরিচালক পদে নিযুক্ত হন। ১৯৬২ সালেই প্রথম স্থাপত্য ও পরিকল্পনা অনুষদে স্থাপত্য বিভাগ গঠন করা হয়, এই বিভাগের জন্য টেক্সাস এ. এন্ড এম. কলেজের কয়েকজন শিক্ষক যোগদান করেন। এভাবে প্রকৌশল ও স্থাপত্য এই দুটি অনুষদে পুর, যন্ত্র, তড়িৎ, কেমি ও ধাতব প্রকৌশল এবং স্থাপত্য বিভাগ নিয়ে প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় যাত্রা শুরু করে। ক্রমবর্ধমান চাহিদা পূরণের জন্য ১৯৬৪ সালে আসন সংখ্যা ২৪০ থেকে ৩৬০ জনে বৃদ্ধি করা হয়। একই বছরে বর্তমান ৭ তলা পুরকৌশল ভবন নির্মাণ শুরু হয়। ১৯৬৯-৭০ সালে আসন সংখ্যা ৪২০ জনে উন্নীত হয়। এসময় স্থাপত্য ও পরিকল্পনা অনুষদে ফিজিক্যাল প্ল্যানিং নামে একটি নতুন বিভাগ চালু হয়। এটিই পরবর্তীকালে নগর ও অঞ্চল পরিকল্পনা বিভাগে পরিণত হয়েছে।
১৯৭১-এ বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের পরে এর নাম পরিবর্তন করে বর্তমানের নাম, অর্থাৎ বাংলাদেশ প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় রাখা হয়। পরবর্তীতে ২০০৩ সালে এর নামকরণ করা হয় বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়।[তথ্যসূত্র প্রয়োজন]
বুয়েট ক্যাম্পাস ঢাকার পলাশী এলাকায় অবস্থিত। বুয়েট, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও ঢাকা মেডিকেল কলেজে একই নওয়াবের প্রদানকৃত জমির উপরে গড়ে উঠেছে বিধায় পাশাপাশি অবস্থিত। ক্যাম্পাসের পশ্চিম দিকে ইইই, সিএসই এবং বিএমই বিভাগের জন্য ১২ তলা ইসিই ভবন নির্মিত হয়েছে। তবে ক্যাম্পাসের মূল অংশে যন্ত্রকৌশল, পুরাকৌশল, আর্কিটেকচার ভবনসহ ড. রশিদ একাডেমিক ভবন উপস্থিত। শিক্ষার্থীদের আবাসিক হলগুলো একাডেমিক ভবন থেকে হাঁটার দূরত্বে অবস্থিত। বর্তমানে ক্যাম্পাসের আয়তন হল ৭৬.৮৫ একর (৩১১,০০০ ব.মি.)।
বুয়েটে বর্তমানে ৬টি অনুষদের অধীনে ১৮টি বিভাগ রয়েছে।
অনুষদের নাম | বিভাগসমূহ | সংক্ষিপ্ত নাম |
---|---|---|
কেমিক্যাল এন্ড ম্যাটেরিয়ালস কৌশল অনুষদ | কেমিকৌশল বিভাগ | Ch.E |
বস্তু ও ধাতব কৌশল বিভাগ | MME | |
ন্যানোম্যাটেরিয়ালস এন্ড সিরামিক কৌশল বিভাগ | NCE | |
পেট্রোলিয়াম ও খনিজ সম্পদ কৌশল বিভাগ | PMRE | |
বিজ্ঞান অনুষদ | রসায়ন বিভাগ | Chem |
গণিত বিভাগ | Math | |
পদার্থবিজ্ঞান বিভাগ | Phys | |
পুরকৌশল অনুষদ | পুরকৌশল বিভাগ | CE |
পানিসম্পদ কৌশল বিভাগ | WRE | |
যন্ত্রকৌশল অনুষদ | যন্ত্রকৌশল বিভাগ | ME |
নৌযান ও নৌযন্ত্র কৌশল বিভাগ | NAME | |
ইন্ডাস্ট্রিয়াল এন্ড প্রোডাকশন প্রকৌশল বিভাগ | IPE | |
তড়িৎ ও ইলেকট্রনিক কৌশল অনুষদ | তড়িৎ ও ইলেকট্রনিক কৌশল বিভাগ | EEE |
কম্পিউটার সায়েন্স ও প্রকৌশল বিভাগ | CSE | |
বায়োম্যাডিকেল প্রকৌশল বিভাগ | BME | |
স্থাপত্য এবং পরিকল্পনা অনুষদ | স্থাপত্য বিভাগ | Arch. |
মানবিক বিভাগ | Hum | |
নগর ও অঞ্চল পরিকল্পনা বিভাগ | URP | |
মোট অনুষদ: ৬ টি | মোট বিভাগ: ১৮ টি |
জ্ঞান-বিজ্ঞান সম্প্রসারণ এবং প্রকৌশল ও প্রযুক্তিতে দক্ষ জনশক্তি গড়ে তোলার লক্ষ্যে বুয়েটে ৪টি ইনস্টিটিউট প্রতিষ্ঠিত হয়। এগুলো হলঃ
আলোকবর্তিকা ২০১৬ সালের অক্টোবর মাসে তড়িৎ ও ইলেকট্রনিক কৌশল বিভাগের '১৪ ব্যাচের কতিপয় শিক্ষার্থী দ্বারা প্রতিষ্ঠিত একটি উন্মুক্ত গ্রন্থাগার। কোনো নিবন্ধন ছাড়াই যে কেউ এখান থেকে যেকোন বই নিতে পারবেন। তবে একটি বই নিলে তাকে গ্রন্থাগারে একটি বই দিতে হবে। ২০১৮ সালের নভেম্বর মাসে মূল ক্যাম্পাসে আলোকবর্তিকার অপর একটি শাখা প্রতিষ্ঠিত হয়।
অধ্যাদেশ ১৯৬২ অনুযায়ী বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ে সকল সাংগঠনিক রাজনীতি নিষিদ্ধ করা হয়েছে । আবরার ফাহাদ নামে বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন ছাত্রকে বুয়েট ছাত্রলীগ কর্তৃক পিটিয়ে হত্যার পর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ড. সাইফুল ইসলাম ক্যাম্পাসে সব ধরনের ছাত্র রাজনীতি এবং রাজনৈতিক সংগঠন ও তাদের কার্যক্রম নিষিদ্ধ ঘোষণা করেন। বিশ্ববিদ্যালয় অধ্যাদেশ অনুযায়ী, ক্যাম্পাসে শিক্ষক রাজনীতিও নিষিদ্ধ করা হয়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে ১০৩৬ আসনের একটি কেন্দ্রীয় মিলনায়তন কমপ্লেক্স রয়েছে। এতে শীতাতপ নিয়ন্ত্রকসহ আধুনিক সকল সুযোগ-সুবিধা বিদ্যমান। এ কমপ্লেক্সে মিলনায়তন ছাড়াও ১৮৬ আসনের সেমিনার কক্ষ ও শিক্ষার্থীদের জন্য একটি ক্যাফেটেরিয়া রয়েছে। এছাড়া পুরকৌশল ভবনের দোতলায় ২০০ আসনবিশিষ্ট আরেকটি সেমিনার কক্ষ আছে। শিক্ষা ও বিনোদনের জন্য চলচ্চিত্র প্রদর্শনের জন্য এতে ৩৫ ও ১৬ মি. মি. ফিল্ম প্রোজেক্টর রয়েছে।
প্রায় ২০,০০০ বর্গফুট জুড়ে বিশ্ববিদ্যালয় লাইব্রেরির চারতলা ভবনটি ক্যাম্পাসের কেন্দ্রস্থলে অবস্থিত। লাইব্রেরিতে আধুনিক সকল সুবিধা রয়েছে। এখানে শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত পরিবেশে একসাথে প্রায় ২০০ জন ছাত্রের একসাথে পড়ার ব্যবস্থা আছে। বুয়েট লাইব্রেরিতে রেফারেন্স ও জার্নালের একটি বিশাল সংগ্রহ রয়েছে। রিপোগ্রাফিক বিভাগ নামে একটি বিভাগ রয়েছে যাতে রেফারেন্স বই ফটোকপি করার ব্যবস্থা রয়েছে।
বুয়েটে স্বাস্থ্য রক্ষার মৌলিক সুবিধাদি সংবলিত একটি স্বাস্থ্যকেন্দ্র ( বুয়েট হেলথ কমপ্লেক্স) রয়েছে। রোগ নির্ণয়ে সহায়ক অত্যাধুনিক এক্স-রে মেশিন, আলট্রাসনোগ্রাম, ই.সি.জি. মেশিন এবং আধুনিক স্বয়ংসম্পূর্ণ একটি প্যাথলজিক্যাল ল্যাব আছে।
বুয়েটের শিক্ষার্থীদের নিয়মিত শরীরচর্চা এবং ইনডোর গেম্স খেলার সুবিধার্থে বাস্কেটবল কোর্ট সংবলিত একটি সমৃদ্ধ ব্যায়ামাগার রয়েছে। এটি শেরে বাংলা হলের দক্ষিণে পাশে বিশাল জায়গা জুড়ে অবস্থিত।
ই.সি.ই (ECE) ভবন এ ৭০৫ নম্বর রুমটি ভার্চুয়াল ক্লাসরুম হিসেবে ব্যবহার করা যায়। আই.আই.সি.টি এর তত্ত্বাবধানে এই ভার্চুয়াল ক্লাসরুমটিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগের ছাত্র এবং শিক্ষকগণ বিভিন্ন দূরবর্তী শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বা ব্যক্তিগনের সাথে ক্লাস শেয়ার এবং মেধার আদান প্রদান করতে পারেন। ভার্চুয়াল ক্লাসরুমটিতে আধুনিক সকল সুবিধা রয়েছে। এখানে শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত পরিবেশে একসাথে প্রায় ১০০ জন যে কোন ভার্চুয়াল সমাবেশ করতে পারবেন।
বুয়েটে নয়টি ছাত্রাবাস রয়েছে। এর মধ্য থেকে আহসান উল্লাহ হল (উত্তর) শুধুমাত্র হিন্দু ধর্মালম্বীদের জন্য বরাদ্দ। শহীদ স্মৃতি হল তরুণ শিক্ষক এবং স্নাতকোত্তর ছাত্রদের জন্য বরাদ্দকৃত যাদের কোন প্রাতিষ্ঠানিক আবাসস্থল নেই। এছাড়াও আধুনিক সুবিধাসম্পন্ন ১২ তলা ছাত্রী হল নির্মাণ প্রায় শেষের দিকে।
হলগুলো বিভিন্ন সময়ে তৈরি করা হয়েছে। একারণে বিভিন্ন হল বিভিন্ন স্থাপত্যশৈলীর নিদর্শন বহন করে। প্রতিটি হলের তত্ত্বাবধানে থাকেন প্রভোস্ট। সাধারণত সিনিয়র শিক্ষকদের মধ্য থেকে প্রভোস্ট নির্বাচন করা হয়। প্রতিটি হলে তিনজন সহকারী প্রভোস্ট নিযুক্ত আছেন।
হলগুলোর বেশিরভাগই জাতীয় বীর ও নেতাদের স্মরণে নামকরণ করা হয়েছে। হলগুলো হল:
হলের নাম | বর্তমান প্রভোস্ট | আসনসংখ্যা |
আহসান উল্লাহ হল | অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ শাহজাহান মন্ডল | ৩৬৪ (পশ্চিম) ২৩৭ (উত্তর) |
তিতুমীর হল | অধ্যাপক ড. জীবন পোদ্দার | ৪৩৯ |
কাজী নজরুল ইসলাম হল | অধ্যাপক ড. আব্দুল আলীম | ৩২১ |
সাবেকুন নাহার সনি হল | অধ্যাপক ড. উম্মে কুলসুম নাভেরা | ৪৭৮ |
শের-এ-বাংলা হল | অধ্যাপক ড. এ.কে.এম মঞ্জুর মোর্শেদ | ৪২০ |
সোহরাওয়ার্দী হল | অধ্যাপক ড. শেখ আনোয়ারুল ফাত্তাহ | ৪৩৬ |
ড. এম. এ. রশীদ হল | অধ্যাপক ড. মো. ইলিয়াছ | ৪৬৮ |
শহীদ স্মৃতি হল | অধ্যাপক ড. মো. শহীদুল ইসলাম | ২০৬ |
বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হল | - | - |
This article uses material from the Wikipedia বাংলা article বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়, which is released under the Creative Commons Attribution-ShareAlike 3.0 license ("CC BY-SA 3.0"); additional terms may apply (view authors). বিষয়বস্তু সিসি বাই-এসএ ৪.০-এর আওতায় প্রকাশিত যদি না অন্য কিছু নির্ধারিত থাকে। Images, videos and audio are available under their respective licenses.
®Wikipedia is a registered trademark of the Wiki Foundation, Inc. Wiki বাংলা (DUHOCTRUNGQUOC.VN) is an independent company and has no affiliation with Wiki Foundation.