দক্ষিণ এশিয়ায় অন্তর্গত বাংলাদেশ একটি নদীমাতৃক দেশ। শাখা-প্রশাখাসহ প্রায় ৭০০ টি নদ-নদী বিপুল জলরাশি নিয়ে ২২,১৫৫ কিলোমিটার জায়গা দখল করে দেশের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে। বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড ২০১৩ সালে বাংলাদেশের নদ-নদীর সংখ্যা ছিল ৩১০টি । বর্তমানে বাংলাদেশের নদীর সংখ্যা প্রায় ৭০০ টি এ নদ-নদীগুলোর উপনদী ও শাখানদী রয়েছে। উপনদী শাখানদীসহ) বাংলাদেশের নদীর মোট দৈর্ঘ্য হলো প্রায় ২২,১৫৫ কিলোমিটার ।
বাংলাদেশের নদীর সংখ্যা কত এইটা নিয়ে বিতর্ক রয়েছে। আমাদের সমাজে ও বিসিএস ভিত্তিক বইগুলোতে ৭০০ বা ২৩০ টি এই তথ্য প্রচলিত রয়েছে। তবে বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড এর গবেষণা মতে বাংলাদেশের নদীর সংখ্যা ৪০৫ টি ।
বাংলাদেশের অধিকাংশ এলাকাই শত শত নদীর মাধ্যমে বয়ে আসা পলি মাটি জমে তৈরি হয়েছে। বাংলাদেশের প্রধান প্রধান নদ-নদীসমূহের তালিকা নিম্নে প্রদান করা হলঃ
বাংলাদেশ নদীমাতৃক দেশ। নদীমাতৃক বাংলাদেশে অসংখ্য নদনদী রয়েছে।এর মধ্যে প্রধান নদ-নদীগুলো হলো:
এই প্রধান নদ ও নদী গুলোর সংক্ষিপ্ত বিবরণ:
পদ্মা: পদ্মা নদী ভারত ও ভারতের উত্তরবঙ্গে গঙ্গা এবং বাংলাদেশের পদ্মা নামে পরিচিত। এর উৎপত্তিস্থল মধ্য হিমালয়ের গঙ্গোত্রী হিমবাহ। উত্তর ভারতের কয়েকটি রাজ্য অতিক্রম করে গঙ্গা রাজশাহী জেলা দিয়ে পদ্মা নামে বাংলাদেশের প্রবেশ করেছে। এটি গোয়ালন্দের নিকট ব্রহ্মপুত্রের প্রধান ধারা যমুনার সঙ্গে মিলিত হয়েছে। চাঁদপুরে এসে এ নদী মেঘনার সঙ্গে মিলিত হয়ে বরিশাল ও নোয়াখালী অতিক্রম করে বঙ্গোপসাগরে পতিত হয়েছে। বাংলাদেশের অন্যতম বৃহত্তম নদী গঙ্গা-পদ্মা বিধৌত অঞ্চলের আয়তন ৩৪,১৮৮ বর্গ কিঃমিঃ। পশ্চিম থেকে পূর্বের নিম্ন গঙ্গা অসংখ্য শাখা নদীর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে : ভাগীরথী,হুগলি,মাথাভাঙ্গা, ইছামতী,ভৈরব,কুমার,কপোতাক্ষ,নবগঙ্গা,চিত্রা,মধুমতি,আড়িয়াল খাঁ ইত্যাদি।
ব্রহ্মপুত্র ও যমুনা :তিব্বতের মানস সরোবরে ব্রহ্মপুত্র নদের উৎপত্তি হয়েছে। আসাম হয়ে বাংলাদেশের কুড়িগ্রাম জেলা এটি প্রবেশ করেছে। ব্রহ্মপুত্র প্রধান ধারাটি এক সময় ময়মনসিংহের মধ্য দিয়ে উত্তর পশ্চিম দিক থেকেও দক্ষিণ পূর্ব দিকে আড়াআড়িভাবে প্রবাহিত হতো। কিন্তু ১৭৮৭ সালে সংঘটিত ভূমিকম্পে ব্রহ্মপুত্র তলোদেশ উন্নীত হওয়ায় পানির ধারণ ক্ষমতা বাইরে চলে যায় এবং নতুন স্রোতধারায় একটি শাখা নদীর সৃষ্টি হয়। এই নতুন স্রত ধারাটি যমুনা নামে পরিচিত। এটি দক্ষিণের গোয়ালন্দ পর্যন্ত যমুনা নদী বলে পরিচিত। যমুনা শাখা নদীর ধলেশ্বরী এবং ধলেশ্বরী শাখা নদী বুড়িগঙ্গা। ধরলা ও তিস্তা ব্রহ্মপুত্র উপনদী। করতোয়া ও আত্রাই হল যমুনার উপনদী। ব্রহ্মপুত্রের দৈর্ঘ্য ২৮৯৭ কিলোমিটার। এর অববাহিকার আয়তন ৫,৮০,১৬০ বর্গ কিলোমিটার যার ৪৪,০৩০ কিলোমিটার বাংলাদেশে অবস্থিত।
মেঘনা: আসামের বরাক নদী নাগা মণিপুর অঞ্চলে উৎপত্তি হয়ে সিলেটের সুরমা ও কুশিয়ারা নদীর সাথে মিলিত হয়েছে। এই মিলিত ধারা সুনামগঞ্জ জেলার আজমিরীগঞ্জের কাছে কালনী নামে দক্ষিণ পশ্চিম দিকে অগ্রসর হয়ে মেঘনা নাম ধারণ করেছে। এটি কিশোরগঞ্জের ভৈরব বাজার অতিক্রম করে পুরাতন ব্রহ্মপুত্রের সঙ্গে মিলিত হয়েছে। মুন্সিগঞ্জের কাছে বুড়িগঙ্গা,ধলেশ্বরী ও শীতলক্ষ্যা জলধারায় মেঘনায় এসে যুক্ত হয়েছে। সেখান থেকে চাঁদপুরের কাছে পদ্মা সাথে মিলিত বিস্মিত মোহনায় সৃষ্টি করেছে। এটি পতিত হয়েছে বঙ্গোপসাগরে। মনু,তিতাস,গোমতী, বাউলাই মেঘনার শাখা নদী। বর্ষার সময় প্লাবন ও পলি মাটিতে মেঘনা বাংলাদেশের উর্বরতা বৃদ্ধি করে।
কর্ণফুলী: বাংলাদেশের দক্ষিণ পূর্ব অঞ্চলের প্রধান নদী কর্ণফুলী। এর উৎপত্তিস্থল লুসাই পাহাড়ে। ৩২০ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের নদী চট্টগ্রাম শহরের খুব কাজটি এবং বঙ্গোপসাগরে পতিত হয়েছে। কর্ণফুলীর প্রধান উপনদী হচ্ছে কাপ্তাই, হালদা, কাসালাং ও রাঙখিয়াং।বাংলাদেশের প্রধান সমুদ্র বন্দর চট্টগ্রাম কর্ণফুলী তীরে অবস্থিত। পানি বিদ্যুৎ কেন্দ্র এবং চট্টগ্রাম বন্দরের জন্য এ নদীর গুরুত্ব অধিক।
বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড বা "পাউবো" বাংলাদেশের নদীগুলোকে সংখ্যাবদ্ধ করেছে এবং প্রতিটি নদীর একটি পরিচিতি নম্বর দিয়েছে। এর ফলে তাদের হিসাব অনুযায়ী বাংলাদেশে নদীর সংখ্যা এখন মোট ৭০০ টি। পাউবো কর্তৃক নির্ধারিত দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের নদী (১০২টি) , উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের নদী (১১৫টি), উত্তর-পূর্বাঞ্চলের নদী (৮৭টি), উত্তর-কেন্দ্রীয় অঞ্চলের নদী (৬১টি), পূর্ব-পাহাড়ি অঞ্চলের নদী (১৬টি) এবং দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলের নদী (২৪টি) হিসেবে বিভাজন করে তালিকাভুক্ত করা হয়েছে।
রাকতী নদী
কিনসী নদী ( সুনাম গন্জ ) সারী গোয়াইন নদী ( গোয়াইন নদী )
উপরে উল্লেখিত আন্তঃসীমান্ত নদী এবং বাংলাদেশের অভ্যন্তরে প্রবাহিত ৪০৫টি নদী ছাড়াও আরও প্রায় চার শতাধিক নদী রয়েছে। সেসবের কিছু নদীর নাম নিচে দেয়া হলো।
This article uses material from the Wikipedia বাংলা article বাংলাদেশের নদীর তালিকা, which is released under the Creative Commons Attribution-ShareAlike 3.0 license ("CC BY-SA 3.0"); additional terms may apply (view authors). বিষয়বস্তু সিসি বাই-এসএ ৪.০-এর আওতায় প্রকাশিত যদি না অন্য কিছু নির্ধারিত থাকে। Images, videos and audio are available under their respective licenses.
®Wikipedia is a registered trademark of the Wiki Foundation, Inc. Wiki বাংলা (DUHOCTRUNGQUOC.VN) is an independent company and has no affiliation with Wiki Foundation.