পুরুষ হলো মানবজাতির পুং জাতীয় সদস্য। 'পুরুষ' শব্দটি পুং জাতীয় মানুষের প্রাপ্তবয়স্ক সদস্যদের জন্য সংরক্ষিত। 'ছেলে' বলতে পুরুষের শৈশবকালীন পরিচয় বুঝায়। তবে কখনো কখনো পুরুষ শব্দটি সকল বয়সের পুরুষকে বুঝাতে ব্যবহার করা হয়। যেমনঃ পুরুষদের বাস্কেটবল।
বিশ্বের অন্যান্য অধিকাংশ পুং জাতীয় স্তন্যপায়ী প্রাণীদের মত পুরুষের জিনোমে সাধারণত তার মায়ের কাছ থেকে আসা X ক্রোমোসোম এবং বাবার কাছ থেকে আসা Y ক্রোমোসোম থাকে। পুরুষ ভ্রুণ নারী ভ্রুণের চেয়ে অনেক বেশি পরিমাণে এন্ড্রোজেন হরমোন এবং অল্প পরিমাণে ইস্ট্রজেন হরমোন উৎপাদন করে থাকে। সেক্স স্টেরয়েড তৈরীর পরিমাণে পার্থক্যের জন্য মূলত একজন নারী ও পুরুষের শারীরবৃত্তীয় পার্থক্য সৃষ্টি করে। বয়ঃসন্ধিকালে এন্ড্রোজেন তৈরীতে উদ্দীপনা দেয় এমন হরমোনসমূহ গৌণ যৌন বৈশিষ্ট্য সৃষ্টি করে। এভাবে যৌন বৈশিষ্ট্যে বড় রকমের প্রভেদ তৈরী হয়। তবে এই নিয়মের ব্যাতিক্রম ঘটে উভলিঙ্গ ও হিজড়াদের ক্ষেত্রে।
ইংরেজি "Man" শব্দটি প্রাক-ইন্দো-ইউরোপীয় শব্দ-মুল *man (সংস্কৃত/আভিস্তান manu বা মানু, স্লাভিক mǫž ) থেকে এসেছে। আরও সরাসরি শব্দটি পুরাতন ইংরেজি থেকে এসেছে। পুরাতন ইংরেজিতে এর একটি নির্দিষ্ট অর্থ ছিলো 'প্রাপ্তবয়স্ক পুরুষ'। এই শব্দের দ্বারা অনির্দিষ্ট লিঙ্গবাচক মানুষকেও বোঝাতো। পুরাতন ইংরেজিতে সর্বনাম man শব্দটি ব্যবহৃত হত যেমনটি আধুনিক জার্মান ভাষায় 'one' নামকরণের জন্য ব্যবহৃত হয়। (যেমনঃ বলা হয় যে, man muss mit den Wölfen heulen)। পুরাতন ইংরেজির এই রূপ প্রোটো-জার্মানিক *mannz "মানুষ, ব্যক্তি" হতে এসেছে, যা থেকে আরও কিছু জার্মান শব্দ এসেছে যেমন, Mann, স্বামী ", "man, এক (সর্বনাম), প্রাচীন নর্স maðr, এবং গোথিক মান্না ইত্যাদি। টাকটিয়াস অনুসারে জার্মানির উপজাতিদের পৌরাণিক জনকের নাম বলা হতো Mannus। *Manus হলো ইন্দো-ইউরোপীয় পুরাণ অনুসারে দুনিয়ার প্রথম মানুষ।
পুরুষত্ব শব্দ দ্বারা স্বাধারণত পুং জাতীয় মানুষের একটি অবস্থা বুঝায় যা সে বয়ঃসন্ধিকালের মধ্য দিয়ে অর্জন করে, সে গৌণ যৌন বৈশিষ্ট্য প্রাপ্ত হয় এবং একজন প্রাপ্তবয়স্ক পুরুষের গঠন লাভ করে। ইংরেজিভাষী দেশসমূহে প্রাপ্তবয়স্ক পুরুষ বুঝাতে বিভিন্ন শব্দ ব্যবহার করা হয়, যেমন: guy, dude, buddy, bloke, fellow, chap এবং কখনো boy বা lad ইত্যাদি। পুরুষত্ব শব্দটির সাথে পুরুষালী এবং পুরুষত্ব শব্দ চলে আসে, যা দ্বারা একজন পুরুষের গুণাবলী এবং লিঙ্গ ভূমিকা নির্দেশ করে।
মানুষের অনেক বৈশিষ্ট্যতে যৌন দ্বিরুপতা প্রদর্শিত হয়, যার অনেকের সাথে প্রজনন ক্ষমতার সাথে সরাসরি যোগাযোগ নেই, যদিও এই সমস্ত বৈশিষ্ট্য যৌন আকর্ষণে একটি উল্লেখযোগ্য ভূমিকা পালন করে। যৌন দ্বিরুপতার অভিব্যক্তি মানুষের উচ্চতা, ওজন এবং দেহের গঠনে খুঁজে পাওয়া যায়। যদিও এমন অনেক ঘটনা আছে যার সাথে সামগ্রিক বিষয়ের সাদৃশ্য নাও থাকতে পারে। যেমনঃ নারীর চেয়ে পুরুষের লম্বা হওয়ার ঝোঁক বেশি, কিন্তু উভয় ক্ষেত্রে এমন অনেক নারী ও পুরুষ আছে যাদের উচ্চতা মধ্যম পরিসীমায়।
পুরুষের গৌণ যৌন বৈশিষ্ট্যের কিছু উদাহরণ দেওয়া হলো যা একজন ছেলে অর্জন করে পুরুষ হয়ে উঠে।
মানবজাতির মধ্যে একজন ব্যক্তির লিঙ্গ নির্ধারিত হয় নিষেকের সময় শুক্রাণুতে অবস্থিত জেনেটিক উপাদানের মাধ্যমে। যদি একটি শুক্রাণু কোষ নিষেকের সময় X ক্রোমোসোম নিয়ে এসে ডিম্বানুর সাথে মিলিত হয় তবে গর্ভের সন্তান মেয়ে (XX) হবে। যদি শুক্রাণুটি Y ক্রোমোসোম বহন করে তবে সন্তান হবে ছেলে (XY)। যাদের জিনগত গঠন এরকম হয় না তারা উভলিঙ্গ বা হিজড়া হিসেবে জন্মে।
XY হিসেবের মাধ্যমে লিঙ্গ নির্ধারণ করার এই পদ্ধতি অধিকাংশ স্তন্যপায়ীদের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য। তবে এর বাইরেও অনেক পদ্ধতি আছে, যার মধ্যে কিছু নন-জেনেটিকও রয়েছে।
প্রাথমিক যৌন বৈশিষ্ট্য বলতে পুরুষ জননকোষ ও ডিম্বাশয় উৎপাদনঃ নারীদেহে ডিম্বাশয় ডিম্বানু তৈরী করে এবং পুরুষের দেহে শুক্রাশয় থেকে শুক্রাণু তৈরী করে। গৌণ যৌন বৈশিষ্ট্য বলতে অন্যান্য যৌন পার্থক্য নির্দেশ করে, যা শুক্রাণু ও ডিম্বানু সংঘবদ্ধ করতে পরোক্ষ ভাবে সহায়তা করে। এই বৈশিষ্ট্যের কারণেই নারী ও পুরুষের বিশেষায়িত ভিন্নতা দেখা যায়, যেমনঃ পুরুষ পাখির উজ্জ্বল পালক, মানুষের মুখের চুল, পূর্বরাগের মত আচরনগত বৈশিষ্ট্য ইত্যাদি।
একজন ব্যক্তি নিজেকে পুরুষ মনে করার জন্য অথবা তিনি পুরুষ হওয়ার জন্য শুধুমাত্র জৈবিক কারণ যথেষ্ট নয়। একজন উভলিঙ্গ ব্যক্তির শারীরিক বা জেনেটিক বৈশিষ্ট্য বিবেচনায় তাকে মিশ্র ধরনের বা একক ধরনের যৌন বৈশিষ্ট্য বিশিষ্ট মানুষ বলা যেতে পারে অথবা অন্যান্য ক্রাইটেরিয়া ব্যবহার করে তার লিঙ্গ নির্ধারণ করা যেতে পারে। অনেক হিজড়া ও ট্রান্স-সেক্সুয়াল (যারা এক ধরনের যৌন বৈশিষ্ট্য থাকার পর, তারা নিজেদের অন্য লিঙ্গের সদস্য মনে করে) ব্যক্তি আছেন, যাদের জন্মগত ভাবে মেয়ে নির্দেশ করলেও তাদের পুরুষ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়। তবে সামাজিক, আইনগত এবং ব্যক্তিগত সঙ্গার ভিত্তিতে নানারকম বৈচিত্র্য লক্ষ্য করা যায়।
পুরষের যৌন অঙ্গ তাদের প্রজনন তন্ত্রের অংশ। যা বীর্যথলি, বীর্যনালী, অন্ডকোষ, অন্ডকোষের থলি, পুরুষাঙ্গ এবং প্রস্টেট গ্রন্থির সমন্বয়ে গঠিত। পুরুষ প্রজনন তন্ত্রের অন্যতম কাজ হলো বীর্য তৈরী করা, যা শুক্রানু বহন করে। এই শুক্রানু মেয়েদের ডিম্বানুর সাথে মিলিত হয়। যখন শুক্রানু মহিলাদের জরায়ুতে প্রবেশ করে তখন ফ্যালোপিয়ান টিবে নিষেক ক্রিয়ার মাধ্যমে ডিম্বানু থেকে একটি ভ্রুণ বিকশিত হয়, যা শেষ পর্যন্ত শিশুতে পরিণত হয়। গর্ভকালীন সময়ে পুরুষ প্রজনন তন্ত্রের কোন অবদান নেই। তবুও পিতৃত্ব বা বংশ ব্যবস্থা আমাদের সমাজে আছে। পুরুষ প্রজনন ও সংশ্লিষ্ট অঙ্গ বিষয়ক জ্ঞানকে এন্ড্রোলোজি বলে।
স্তন্যপায়ী প্রাণীদের যে হরমোন তাদের যৌন বিভেদ সৃষ্টিতে প্রভাব বিস্তার করে তাদের বলা হয় এন্ড্রোজেন (মূলত টেস্টোসটেরন), যা পরবর্তীতে ডিম্বকোষ বিকাশে উদ্দীপনা দেয়। যৌন নির্গুণ ভ্রূণের ক্ষেত্রে টেস্টোসটেরন হরমোন ভ্রুণে Wolffian নালী, লিঙ্গ এবং অণ্ডকোষের মধ্যে ল্যাবিওস্রোটাল ভাঁজের বন্ধ বিকাশে সহায়তা করে। আরও একটি যৌন বিভেদে প্রভাবকারী গুরুত্বপূর্ণ হরমোন হলো এন্টি-মুলেরিয়ান হরমোন। এই হরমোন মুলেরিয়ান নালী তৈরীতে সাহায্য করে।
সাধারণভাবে পুরুষদের মধ্যে অনেকেই নারীদের সমজাতীয় রোগে ভুগে থাকেন। মেয়েদের তুলনায় পুরুষদের একটু বেশি অসুখ হয়। পুরুষদের আয়ুও নারীদের চেয়ে সামান্য কম, যদিও সাম্প্রতিক সময়ে এই বিভেদ কমে এসেছে।
পুরুষদের বয়ঃসন্ধিকালে গোনাডোট্রপিন হরমোনের সাথে টেস্টোসটেরন হরমোন পিটুইটারি গ্রন্থি থেকে নিঃসৃত হয়, যা স্পার্মাটোজেনেসিসকে উদ্দীপ্ত করে। এই সময় মহিলারা ইস্ট্রজেন ও প্রোজেসটেরন হরমোন দ্বারা প্রভাবিত হয়, যা তাদের পুরুষদের থেকে আলাদা বৈশিষ্ট্যময় করে তোলে।
পুরুষালীর শিকড় ছড়িয়ে আছে জেনেটিক্সের মধ্যে। যদিও বিভিন্ন সংস্কৃতিতে এর বিভিন্ন রূপ দেখা যায়, তবে কিছু সাধারণ দৃষ্টিভঙ্গি সকল জায়গায় একই। কখনো কখনো লিঙ্গ বিশারদগণ 'অধিপত্যবাদী পুরুষালী' শব্দ ব্যবহার করেন প্রভাবশালী পুরুষালীর প্রকরণ আলাদা করতে। বিংশ শতাব্দীর মধ্যভাগে যুক্তরাষ্ট্রে, উদাহরণস্বরূপ, জন ওয়েন পুরুষালীর একটি রূপ সংগঠিত করেছিলেন, যেখানে আলবার্ট আইনস্টাইন একজন পুরুষ তান্ত্রিক এবং একই সাথে 'আধিপত্যবাদী" নন।
পৌরুষ বা সাহস পুংলিঙ্গের একটি রূপ বলা যায়। দৃঢ়তাসূচনা বা কারো অধিকার, দায়িত্বশীলতা, স্বার্থপরতা, নৈতিকতা, আন্তরিকতা ও সম্মানের জন্য উঠে দাঁড়ানো এর অন্তর্ভুক্ত বিষয়।
নৃবিজ্ঞান অনুযায়ী পুরুষালীর সামাজিক মর্যাদা ধন-সম্পদ, জাতি ও শ্রেণীর মতই। যেমনঃ পশ্চিমা সমাজে অধিক পুরুষালী বেশি মর্যাদা প্রদান করে। অনেক ইংরেজি শব্দ যেমন virtue ও virile (ইন্দো-ইউরোপীয় মূল হলো vir, এর অর্থ পুরুষ মানুষ) দ্বারা উক্ত বিষয় প্রতিফলিত হয়। শারীরিক বা নৈতিক শক্তির সমন্বয় উহ্য থাকে। সাধারণত ছেলেদের চেয়ে প্রাপ্তবয়স্ক পুরুষদের সঙ্গে অধিক ভাবে যুক্ত করা হয়।
একটি মহান চুক্তি যা এখন পুংলিঙ্গ বৈশিষ্ট্য উন্নতকরণের সাথে সম্পৃক্ত। মানব জাতির মধ্যে যৌন পার্থক্য সৃষ্টি প্রক্রিয়া বিশেষত প্রজনন পদ্ধতির ভিন্নতা জন্মগত। Y ক্রোমোজোমের SRY জিন উক্ত পদ্ধতিতে হস্তক্ষেপ করে কিছু চেইন ক্রিয়া ঘটায়। যেমনঃ সব কিছুই সমান রাখা, টেস্টিস গঠনে অগ্রণী ভূমিকা রাখা, এন্ড্রোজেন উৎপাদন, মাস্কুলাইজেশন ও ভাইরিলাইজেশনের মাধ্যমে প্রি-নেটাল ও পোস্ট-নেটাল এর হরমোন প্রভাবের সীমা ইত্যাদি। কারণ মাস্কুলাইজেশন জন্মগত মেয়েলি ক্রিয়াকে জৈবিক ক্রিয়া থেকে পুননির্দেশিত করে। একে বলা হয় ডিফেমিনাইজেশন।
শিশুর লিঙ্গ বিকাশ ক্রিয়া নিয়ে ব্যাপক বিতর্ক আছে।
অনেক সংস্কৃতিতে দেখা যায় একজনের বৈশিষ্ট্যসূচক লিঙ্গ না হলে সামাজিক সমস্যা তৈরী হয়। যেমন, পুরুষদের মধ্যে যদি মেয়েলি আচরণ প্রকাশ পায় তবে সমাজ তাকে হেয় প্রতিপন্ন করে। একই ঘটনা দেখা যায় ঐ সমস্ত মেয়েদের ক্ষেত্রে যাদের মধ্যে পুরুষালী বৈশিষ্ট্য দেখা যায়। সমাজবিজ্ঞান অনুসারে এই ধরনের লেবেলিং করা ও শর্ত আরোপ করাকে জেন্ডার এজাম্পশন (লিঙ্গ অনুমান) বলা হয়। এটি সমাজিকিকরণের একটা অংশ। অতিরিক্ত পুরুষালী প্রকাশের সংশ্লিষ্ট নিন্দাকে 'ম্যাকিজমো' বা 'টেস্টোসটেরন বিষক্রিয়া' শব্দ দ্বারা সঙ্গায়িত করা যায়।
পুরুষালীর উন্নয়নে সামাজিকিকরণ ও জিনতাত্ত্বিকতার আপেক্ষিক ভূমিকার গুরুত্ব একটি চলমান বিতর্কের বিষয়। সামাজিক অবস্থা অবশ্যই বড় একটি প্রভাব ফেলতে সক্ষম। বিভিন্ন আঙ্গিক দেখা লক্ষ্য করা যায় যে অধিকাংশ সংস্কৃতিতে পুরুষালীর পরিচয় বিদ্যমান।
লিঙ্গ ভূমিকার ঐতিহাসিক উন্নয়ন বিভিন্ন ক্ষেত্র যেমন, আচরণগত জিনতত্ত্ব, বিবর্তনীয় মনোবিজ্ঞান, মানুষের বাস্তুসংস্থান ও সামাজিক জীববিজ্ঞান ইত্যাদির সাথে সম্বোধন করা যায়। সমস্ত মানব-সংস্কৃতি মনে হয় যেন লিঙ্গ ভূমিকার উন্নয়নে উৎসাহিত করে বিভিন্ন মাধ্যমে যেমন, সাহিত্য, পোশাক, গান ইত্যাদি। উদাহরণস্বরূপঃ হোমারের মহাকাব্য, কিং আর্থারের গল্প, কনফুসিয়াসের আদর্শ উপাখ্যান বা মুহাম্মাদের সিরাত ইত্যাদি। পুরুষালীর বিশেষায়িত চিকিৎসা পাওয়া যায় কিছু লেখায় যেমন, ভগবত গীতা বা বুশিদো'র লেখা হাগাকুরি তে।
প্রাগৈতিহাসিক সংস্কৃতিতে মনে করা হয় পুরুষদের কিছু অধিকৃত সামাজিক ও সাংস্কৃতিক ভূমিকা আছে। মানবজাতির বিভিন্ন দলে একই অবস্থা দেখা যায়। একদল শিকারীর সমাজে, পুরুষরা প্রায়ই ছিলো, যদি না তারা বড় কোন শিকার ধরার জন্য দায়ী হয়, পোষ্য প্রাণী ধরা ও লালন পালন করে, স্থায়ী নিবাস, বসতি প্রতিরক্ষা ও অন্যান্য কাজ যেখানে পুরুষের দেহ এবং শক্তিশালী স্থানিক-চেতনা খুব বেশি গুরুত্বপূর্ণ। কিছু নৃবিজ্ঞানী বিশ্বাস করেন যে এটা হলো পুরুষ জাতি যাদের নেতৃত্বে নিওথিলিক বিপ্লব ঘটেছিলো এবং পশুদের নিয়ে অন্তরঙ্গ জ্ঞান রাখার জন্য তারা হয়ে উঠে প্রাক-ঐতিহাসিক যুগের প্রথম পশু খামারের মালিক।
ইতিহাস জুড়ে সমাজে পুরুষদের ভূমিকা ব্যাপকভাবে পরিবর্তিত হয়েছে। কৃষিভিত্তিক সমাজ যখন পরিবর্তিত হয়ে গেলো, তখন পুরুষের পেশী শক্তির ওপর নির্ভরশীলতা অনেকাংশে কমে গেল। পুরুষদের জন্য ঐতিহ্যগত লিঙ্গভূমিকা কঠোর পরিশ্রমের দিক থেকে একই কাজ আধুনিক ও সহজ ভাবে করার দিকে ঝুঁকে গেল। গরীব শ্রমজীবিদের মধ্যে তাদের পরিবারের ভরণপোষণ মেটানো, বিশেষত শিল্প বিকাশ ও অর্থনৈতিক মন্দার সময়ে, তারা কয়েক ঘণ্টা ধরে বিভিন্ন ঝুকিপূর্ণ কাজ করতে অনেকটা বাধ্য হয়ে পড়ে। অনেক শিল্পোন্নত দেশে কম ঝুঁকিপূর্ণ কাজের দিকে অধিক আগ্রহ লক্ষ্য করা যায়। এই সমাজে জ্ঞান অর্জন করা ও আত্মনির্ভরশীল হওয়া সকল পুরুষদের লক্ষ্য হয়ে দাঁড়ায়।
পুরুষ আন্দোলন হলো দীর্ঘ সংগ্রামের একটি অংশ যা নারীদের সম-অধিকারের মর্যাদা দেয়ার জন্য ও সকল লিঙ্গের জন্য সমান সুযোগ দেয়, এমনকি যদি বিশেষ সম্পর্ক ও শর্ত যা সেচ্ছায় কোন অংশীদারত্ব যা বিয়ের সাথে যুক্ত হয়, তবুও। এই স্বীকৃতি আদায়ের জন্য কিছু জটিলতা সৃষ্টি হয়, যা এই সমাজের রীতি ও অভ্যেসের কারণে ঘটে থাকে। অর্থনৈতিক পরিবর্তন ও নারীবাদী আন্দোলনের সমন্বয়ে সাম্প্রতিক সময়ে কিছু সমাজে দেখা যায় পুরুষরা কর্মক্ষেত্রে নারীদের সাথে প্রতিযোগিতা করছে, যেখানে ঐতিহ্যগত ভাবে নারীরা পৃথক ছিলো। কিছু কিছু বড় কর্পোরেশনে দেখা যায় কাজ পাওয়ার শর্ত কর্মীর মেধা, প্রচলিত লিঙ্গ বৈষম্য সেখানে নেই। লিঙ্গ ভূমিকার কিছু ভালো ও কিছু খারাপ প্রভাব পশ্চিমা সমাজের পুরুষদের কর্মক্ষেত্রের ওপর পড়ে ( মহিলাদের ক্ষেত্রেও একই, তবে ভিন্ন ভাবে)। একইভাবে শিক্ষা, সহিংসতা, স্বাস্থ্য যত্ন, রাজনীতি, পিতৃত্ব ইত্যাদি ক্ষেত্রেও প্রভাব পড়ে। গবেষণায় দেখা গেছে কিছু এলাকায় পুরুষ বিরোধী প্রবণতা প্রাধান্য পাচ্ছে, ফলশ্রুতিতে মেয়েদের জন্য কিছু অন্যায্য সুবিধা দেওয়া হতে পারে।
লিঙ্গ ভূমিকার ভিন্নতা নির্ণয় ও তুলনা করতে পারসনের মডেল ব্যবহার করা হয়। মডেল ক পুরুষ ও নারীর পার্থক্য বর্ণনা করে, মডেল খ লিঙ্গ ভূমিকার পূর্নাঙ্গ বাঁধা ও সমস্যা বর্ণনা করে। যুক্তরাষ্ট্রের সংস্কৃতি ও অবকাঠামোর ওপর ভিত্তি করে এর উদাহরণ গ্রহণ করা যায়। বাস্তবে এমন চরম অবস্থান খুব কম পাওয়া যায়। প্রত্যেকের আলাদা আচরণ এই মেরুর মধ্যে পড়ে। সবচেয়ে কমন মডেল, যা যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যে বাস্তব জীবনে অনুসরণ করা হয়, তা হলো 'দ্বৈত বোঝা মডেল'।
কিছু পদ ও টাইটেল শুধুমাত্র পুরুষদের জন্য সংরক্ষিত আছে। যেমন: রোমান ক্যাথলিক গির্জার পোপ এবং বিশপ পুরুষ ছাড়া কেউ হতে পারে না। ক্যাথলিক গির্জা ছাড়াও অন্যান্য ধর্মের ধর্মগুরুদের ক্ষেত্রে একই বিষয় দেখা যায়। অনেক দেশে রাজা হওয়ার সুযোগ শুধু ছেলেদেরই থাকে। বংশের উত্তরাধিকার সূত্রে সবচেয়ে জ্যেষ্ঠ পুরুষ সন্তান পরবর্তী রাজা হয়ে থাকেন।
This article uses material from the Wikipedia বাংলা article পুরুষ মানুষ, which is released under the Creative Commons Attribution-ShareAlike 3.0 license ("CC BY-SA 3.0"); additional terms may apply (view authors). বিষয়বস্তু সিসি বাই-এসএ ৪.০-এর আওতায় প্রকাশিত যদি না অন্য কিছু নির্ধারিত থাকে। Images, videos and audio are available under their respective licenses.
®Wikipedia is a registered trademark of the Wiki Foundation, Inc. Wiki বাংলা (DUHOCTRUNGQUOC.VN) is an independent company and has no affiliation with Wiki Foundation.