পাঞ্জাবের ইতিহাস: ইতিহাসের বিভিন্ন দিক

পাঞ্জাব শব্দটির প্রথম উল্লেখ পাওয়া যায় ইবন বতুতার লেখা থেকে, যিনি চতুর্দশ শতকে এই অঞ্চলে পদার্পণ করেন। পরবর্তীকালে ষোড়শ শতকের মধ্যবর্তী সময়ে এই শব্দের বহুল প্রচার হয় ১৫৮০ সালে তারিখ-ই-শেরশাহ-সুরী নামক গ্রন্থ থেকে। যদিও মহাভারতে এই অঞ্চলের নাম পাওয়া যায় পঞ্চনদের দেশ হিসাবে। আবুল ফজল, তার আইন -ই- আকবরি গ্রন্থে পাঞ্জাবের কথা বলেছিলেন, যেখানে এই অঞ্চলটি লাহোরে এবং মুলতান, এই দুই ভাগে বিভক্ত ছিল। মুঘল সম্রাট জাহাঙ্গীর, তার তুযক-ই-জাহাঙ্গীরি গ্রন্থে পাঞ্জাবের কথা উল্লেখ করেছেন। ব্রিটিশ আমলে এই অঞ্চল ভারতের শস্য ভাণ্ডার হিসাবে পরিচিত ছিল। বর্তমানে, সেই পঞ্চনদ গুলির তিনটি পাকিস্থানের পাঞ্জাব প্রদেশে এবং দুটি ভারতের মধ্যে দিয়ে প্রবাহিত হয়ে পাকিস্থানে প্রবেশ করেছে।

সিন্ধু সভ্যতা

প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারের দ্বারা জানা যায়, প্রায় ৩৩০০ খ্রিস্টপূর্বাব্দে সিন্দু নদের উপত্যকায় কিছু ছোট ছোট সম্প্রদায়ের উন্মেষ হয়েছিল। পরবর্তীকালে এদের প্রসারণের ফলেই মানব সভ্যতার অন্যতম প্রাচীন সিন্ধু সভ্যতার বিকাশ ঘটে। এই সভ্যতার একটি বড় শর ছিল হরপ্পা, যার অবস্থান ছিল পশ্চিম পাঞ্জাবে সাহিওয়াল শহরের কাছাকাছি। ১৯০০ খ্রিস্টপূর্বাব্দের পরবর্তী সময়ে এই সভ্যতার দ্রুত বিনাশ ঘটে।

বৈদিক যুগ

বৈদিক যুগে রচিত হিন্দুদের পবিত্র গ্রন্থ বেদ এর মাধ্যমে, ইন্দো-আর্য সংস্কৃতির কথা প্রকাশ পেয়েছে। প্রাচীন পাঞ্জাবের (তৎকালীন সপ্ত সিন্ধু) আর্থ সামাজিক উন্নয়নের সাক্ষ্য, জনজীবনের আভাস পাওয়া যায়। বৈদিক সমাজের মূল স্তম্ভ ছিল উপজাতি ভিত্তিক সমাজব্যবস্থা । একাধিক পরিবারের সমন্বয়ে একটি গ্রাম গঠন করা হত। একাধিক গ্রাম মিলে গঠিত হত একটি জন। এই জন গুলির প্রধানকে রাজন বলা হত। এরা নিজেদের মধ্যে আন্তঃ উপজাতিগত যুদ্ধে লিপ্ত থাকত। এই যুদ্ধ থেকে বৃহৎ জনগোষ্ঠীর উত্থান হত। এই সমস্ত জনগোষ্ঠী সর্দার বা রাজাদের দ্বারা শাসিত হত। এর ফলে বিজয়ের রাজনৈতিক দর্শনের উপর ভিত্তি করে সাম্রাজ্যের উত্থান হত।

ঋকবেদের সময় একটি গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা ছিল "দশ রাজার যুদ্ধ", যা পরুশনি (অধুনা রবি নদী সঙ্গে চিহ্নিত) নদীর তীরে একদিকে ভরত বংশের ত্রতসু কুলের রাজা সুদাস এবং অন্য পক্ষে দশজন রাজার সংগঠনের মধ্যে সঙ্ঘটিত হয়েছিল।রাজা সুদাসকে বৈদিক ঋষি বশিষ্ঠ সমর্থন করেন।অপরপক্ষে ঋষি বিশ্বামিত্র নিয়েছিলেন সেই দশজন রাজার সংগঠনের পক্ষ।

বৌদ্ধ যুগ

বৌদ্ধ ধর্মগ্রন্থ ত্রিপিটকের অঙ্গুত্তরনিকায় অনুসারে ষোড়শ মহাজনপাদের অন্তর্গত জম্বুদ্বীপের কাছাকাছি গান্ধার এবং কম্বোজের উত্থান ঘটেছিল বুদ্ধের সময়ে। যদিও পালি সাহিত্যে কেবলমাত্র গান্ধার এবং কম্বোজের উপস্থাপনা করা হয়েছে। সিন্ধু অঞ্চলের উত্তরদিক অর্থাৎ কাশ্মীর, আফগানিস্তানের পূর্বাঞ্চল এবং পশ্চিম পাঞ্জাবের অধিকাংশ, যা এখন পাকিস্তানের অংশ হিসাবে পরিগণিত, এই অংশের অন্তর্ভুক্ত ছিল।

পাণিনি এবং কৌটিল্যের পাঞ্জাব

প্রাচীন সংস্কৃত ব্যাকরণবিদ পাণিনির জন্ম হয়েছিল শালাতুরা অঞ্চলে, যা পাকিস্তানের উত্তর-পশ্চিম সীমান্ত প্রদেশ আটকের কাছাকাছি আধুনিক লাহোর শহরের সঙ্গে চিহ্নিত। অর্থশাস্ত্রের রচয়িতা কৌটিল্যের লেখা থেকে এই প্রদেশের মানুষের অস্ত্রব্যবসার সঙ্গে জড়িত থাকার কথা জানা যায়। এরা সাধারণর ক্ষত্রিয় শ্রেণিভুক্ত ছিল। বস্তুত, বৃহত্তর পাঞ্জাবের সমগ্র অঞ্চলের মানুষ যুদ্ধ করতে পারদর্শী ছিল। এই অঞ্চলের মানুষরা প্রথমে ষষ্ঠ খ্রিস্টপূর্বাব্দে আকিমিনীয় শাসকদের বিরুদ্ধে এবং পরে চতুর্থ খ্রিস্টপূর্বাব্দে ম্যাসেডোনীয় আক্রমণকারীদের বিরুদ্ধে প্রবল প্রতিদ্বন্দ্বিতা গড়ে তোলেন যার সাক্ষ্য ইতিহাসে পাওয়া যায়।

সাম্রাজ্য

আকিমিনীয় সাম্রাজ্য

প্রাচীন গান্ধারের পশ্চিম ভাগ, কম্বোজ এবং উত্তর পাঞ্জাব প্রদেশের তক্ষশীলা আকিমিনীয় সাম্রাজ্যের পূর্বপ্রান্তের হিসাবে পরিগণিত হয়।

ইন্দো-সিথিয় সাম্রাজ্য

মাউয়েস ৮০ খ্রিস্টপূর্বাব্দে গান্ধার এবং তক্ষশিলা জয় করেন, কিন্তু তার মৃত্যুর পর এই সাম্রাজ্য ধ্বংস হয়ে যায়।৫৫ খ্রিস্টপূর্বাব্দ অব্ধি ভারতের উত্তরপশ্চিমাঞ্চল ইন্দো-সিথিয় সাম্রাজ্যের দ্বারা শাসিত হয়েছিল।

আলেকজান্ডারের অভ্যুত্থান

মৌর্য সম্রাজ্য

ইন্দো-গ্রিক সম্রাজ্য

কুষান যুগ

ইন্দো-পার্থিয়ান

গুপ্ত সম্রাজ্য

হূন যুগ

হর্ষবর্ধনের রাজত্বকাল

রাই রাজবংশ

শাহী সাম্রাজ্যের এবং মুসলিম আক্রমণ

গজনী রাজত্বকাল

দিল্লির সুলতানি আমল

মুঘল সাম্রাজ্য

দুরানি ও মারাঠা সাম্রাজ্য

শিখ আধিপত্য

শিখ সম্রাজ্য

ব্রিটিশ রাজত্বকাল

ভারতীয় প্রজাতন্ত্রের পাঞ্জাব ও পাকিস্তানে ইসলামী প্রজাতন্ত্রের পাঞ্জাব

পাঞ্জাব ইতিহাসের সময়কাল

  1. ৩৩০০ - ১৩০০ খ্রিষ্টপূর্বাব্দ: সিন্ধু সভ্যতা
  2. ২৬০০-১৯০০ খ্রিষ্টপূর্বাব্দ: হরপ্পা সভ্যতা
  3. ১৫০০-১০০০ খ্রিষ্টপূর্বাব্দ: বৈদিক সভ্যতা
  4. ৫৯৯ খ্রিষ্টপূর্বাব্দ: জৈনধর্ম
  5. ৫৬৭-৪৮৭ খ্রিষ্টপূর্বাব্দ বা ৪০০ খ্রিষ্টপূর্বাব্দ: বুদ্ধ
  6. ৫৫০-৬০০ খ্রিস্টপূর্বাব্দ: বৌদ্ধধর্মের প্রভাবশালী কাল
  7. ৫৫০-৬১৫ খ্রিস্টপূর্বাব্দ: সিন্ধু নদীর পশ্চিমে ফার্সি বহিরাক্রমণ

তথ্যসূত্র

বহিঃসংযোগ

Tags:

পাঞ্জাবের ইতিহাস সিন্ধু সভ্যতাপাঞ্জাবের ইতিহাস বৈদিক যুগপাঞ্জাবের ইতিহাস বৌদ্ধ যুগপাঞ্জাবের ইতিহাস পাণিনি এবং কৌটিল্যের পাঞ্জাবপাঞ্জাবের ইতিহাস সাম্রাজ্যপাঞ্জাবের ইতিহাস শাহী সাম্রাজ্যের এবং মুসলিম আক্রমণপাঞ্জাবের ইতিহাস শিখ আধিপত্যপাঞ্জাবের ইতিহাস ব্রিটিশ রাজত্বকালপাঞ্জাবের ইতিহাস ভারতীয় প্রজাতন্ত্রের পাঞ্জাব ও পাকিস্তানে ইসলামী প্রজাতন্ত্রের পাঞ্জাবপাঞ্জাবের ইতিহাস পাঞ্জাব ইতিহাসের সময়কালপাঞ্জাবের ইতিহাস তথ্যসূত্রপাঞ্জাবের ইতিহাস বহিঃসংযোগপাঞ্জাবের ইতিহাস

🔥 Trending searches on Wiki বাংলা:

ওজোন স্তরবাংলাদেশবাংলাদেশের মেডিকেল কলেজসমূহের তালিকাহার্নিয়াচট্টগ্রাম জেলাশিব নারায়ণ দাসকলকাতা নাইট রাইডার্সকারকবাংলাদেশের পোস্ট কোডের তালিকাহরমোনপাল সাম্রাজ্যবেলি ফুলপথের পাঁচালী (চলচ্চিত্র)নরেন্দ্র মোদীহস্তমৈথুনের ইতিহাসশর্করারানা প্লাজা ধসবাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীদের তালিকাইউরোপীয় দেশগুলো ও অধীনস্থ ভূভাগের তালিকাসিলেটঅভিস্রবণবিটিএসবাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীরাধাজান্নাতময়ূরী (অভিনেত্রী)নেপোলিয়ন বোনাপার্টপলাশীর যুদ্ধকোষ বিভাজনবাংলাদেশের প্রধান বিচারপতিমাটিডাচ্-বাংলা ব্যাংক পিএলসিবাংলাদেশের শিক্ষামন্ত্রীরামকৃষ্ণ পরমহংসফেনী জেলাব্রিটিশ ভারতমৈমনসিংহ গীতিকাবাংলাদেশের স্থল বন্দরসমূহের তালিকানেপালঅস্ট্রেলিয়াবনলতা সেন (কবিতা)পহেলা বৈশাখজনগণমন-অধিনায়ক জয় হেআস-সাফাহজবাঢাকা জেলাশ্রাবস্তী দত্ত তিন্নিবঙ্গাব্দইসলাম ও হস্তমৈথুনরূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রমেঘনা বিভাগ২০২২–২৩ নিউজিল্যান্ড পুরুষ ক্রিকেট দলের পাকিস্তান সফর (এপ্রিল ২০২৩)জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় (বাংলাদেশ)তাজমহলই-মেইলমিয়োসিসপ্রিয়তমাবাংলা সাহিত্যশশী পাঁজারশীদ খানযোহরের নামাজবাংলাদেশ সরকারি কর্ম কমিশনকাবাব্যঞ্জনবর্ণরাষ্ট্রবিজ্ঞানদি ইনস্টিটিউট অব চার্টার্ড একাউন্ট্যান্টস অব বাংলাদেশযতিচিহ্নশক্তিবিবর্তননারীগুপ্ত সাম্রাজ্যবিজয় দিবস (বাংলাদেশ)জ্যামাইকাগর্ভধারণবিরাট কোহলিকাঠগোলাপদেশ অনুযায়ী ইসলাম🡆 More