তাজমহল

তাজমহল (হিন্দি: ताज महल, উর্দু: تاج محل) ভারতের উত্তর প্রদেশে আগ্রায় অবস্থিত একটি রাজকীয় সমাধি। মুঘল সম্রাট শাহজাহান তার স্ত্রী আরজুমান্দ বানু বেগম যিনি মুমতাজ মহল নামে পরিচিত, তার স্মৃতির উদ্দেশে এই অপূর্ব সৌধটি নির্মাণ করেন। সৌধটির নির্মাণ শুরু হয়েছিল ১৬৩২ খ্রিষ্টাব্দে যা সম্পূর্ণ হয়েছিল প্রায় ১৬৫৩ খ্রিষ্টাব্দে।

তাজমহল
তাজমহল
তাজমহলের দক্ষিণভাগ
অবস্থানআগ্রা, ভারত
স্থানাঙ্ক২৭°১০′৩০″ উত্তর ৭৮°০২′৩১″ পূর্ব / ২৭.১৭৫০০° উত্তর ৭৮.০৪১৯৪° পূর্ব / 27.17500; 78.04194
উচ্চতা (সমুদ্র পৃষ্ঠ থেকে)১৭১ মি (৫৬১ ফুট)
নির্মিত১৬৩২- ১৬৫৩
স্থপতিউস্তাদ আহমেদ লাহৌরি
স্থাপত্যশৈলীমুঘল
পরিদর্শন৩০ লাখের উপড়ে (২০০৩তে)
ধরনসাংস্কৃতিক
নির্ণায়ক১ম
মনোনীত১৯৮৩(৭ম সেশন)
সূত্র নং252
রাষ্ট্রতাজমহল ভারত
অঞ্চলএশিয়া-প্যাসিফিক

তাজমহলকে (কখনও শুধু তাজ নামে ডাকা হয়) মুঘল স্থাপত্যশৈলীর একটি আকর্ষণীয় নিদর্শন হিসেবে মনে করা হয়, যার নির্মাণশৈলীতে পারস্য, তুরস্ক, ভারতীয় এবং ইসলামী স্থাপত্যশিল্পের সম্মিলন ঘটানো হয়েছে। যদিও সাদা মার্বেলের গোম্বুজাকৃতি রাজকীয় সমাধিটিই বেশি সমাদৃত, তাজমহল আসলে সামগ্রিকভাবে একটি জটিল অখণ্ড স্থাপত্য। এটি ১৯৮৩ সালে ইউনেস্কো বিশ্বঐতিহ্যবাহী স্থান হিসেবে তালিকাভুক্ত করা হয়। বিশ্বের সপ্তম আশ্চর্যের অন্যতম তাজমহল। তখন একে বলা হয়েছিল 'বিশ্ব ঐতিহ্যের সর্বজনীন প্রশংসিত শ্রেষ্ঠকর্ম।'

ভূমিকা

তাজমহল বিশ্বের অপূর্ব সুন্দর স্মৃতিসৌধ ও মনোমুগ্ধকর নিদর্শন। ভালোবাসার অবিশ্বাস্য স্মরণীয় ভাস্কর্য। ইসলামিক স্থাপত্যের অপূর্ব নিদর্শন যা শান্তি ও সৌন্দর্যের প্রতীক।

তাজমহল 
শাহজাহান, যিনি তাজমহল নির্মাণ করিয়েছিলেন

১৬৩১ খ্রিষ্টাব্দে শাহজাহান, যিনি মুঘল আমলের সমৃদ্ধশালী সম্রাট ছিলেন, তাঁর দ্বিতীয় স্ত্রী মুমতাজ মহল-এর মৃত্যুতে প্রচণ্ডভাবে শোকাহত হয়ে পড়েন। মুমতাজ মহল তখন তাদের চতুর্দশ কন্যা সন্তান গৌহর বেগমের জন্ম দিতে গিয়ে মৃত্যুবরণ করেছিলেন।

তাজমহলের নির্মাণ কাজ মুমতাজের মৃত্যুর পর শুরু হয়। মূল সমাধিটি সম্পূর্ণ হয় ১৬৪৮ খ্রিস্টাব্দে এবং এর চারদিকের ইমারত এবং বাগান আরও পাঁচ বছর পরে তৈরি হয়। ১৬৬৩ খ্রিস্টাব্দে আগ্রা ভ্রমণ করে ফরাসি পর্যটক ফ্রান্সিস বেরনিয়ার (François Bernier) লিখছিলেন:

বাংলা অনুবাদঃ

তাজমহল 
১৫৬০ খ্রিস্টাব্দে তৈরি হুমায়ূনের মাজার দেখতে প্রায় তাজমহলের মতন

প্রভাব

তাজমহল তৈরি হয়েছে বিভিন্ন ঐতিহ্যবাহী নকশার উপর, বিশেষ করে পারস্য ও মুঘল স্থাপত্য অনুসারে। নির্দিষ্ট কিছু নকশা তিমুর ও মুঘল ইমারতের মত হুবহু করা হয়েছে। যাদের মধ্যে তিমুরের গুর-ই-আমির, সমরখন্দে মুঘল সাম্রাজ্যের পূর্বসূরি, হুমায়ূনের মাজার, ইমাদ-উদ-দৌলার মাজার (কখনো ডাকা হয় শিশু তাজ নামে), এবং দিল্লীতে শাহজাহানের নিজের তৈরি দিল্লী জামে মসজিদ। তাঁর পৃষ্ঠপোষকতায়, মুঘল ইমারত পরিমার্জনের এক নতুন স্তরে পৌঁছায়। যেখানে পূর্ববর্তী মুঘল ইমারতসমূহ তৈরি হয়েছিল লাল বেলে পাথরে, শাহজাহান চালু করেছিলেন সাদা দামি মার্বেল পাথরের প্রচলন।

বাগান

তাজমহল 
তাজমহল

তাজমহলের সামনের চত্বরে একটি বড় "চাহার বাগ" (মুঘল বাগান পূর্বে চার অংশে বিভক্ত থাকত) করা হয়েছিল। ৩০০ মিটার X ৩০০ মিটার জায়গার বাগানের প্রতি চতুর্থাংশ উঁচু পথ ব্যবহার করে ভাগগুলোকে ১৬টি ফুলের বাগানে ভাগ করা হয়। মাজার অংশ এবং দরজার মাঝামাঝি অংশে এবং বাগানের মধ্যখানে একটি উঁচু মার্বেল পাথরের পানির চৌবাচ্চা বসানো আছে এবং উত্তর-দক্ষিণে একটি সরলরৈখিক চৌবাচ্চা আছে যাতে তাজমহলের প্রতিফলন দেখা যায়। এছাড়া বাগানে আরও বেশ কিছু বৃক্ষশোভিত রাস্তা এবং ঝরনা আছে।.

চাহার বাগ ভারতে প্রথম করেছিলেন প্রথম মুঘল সম্রাট বাবর, যা পারস্যের বাগানের মতো করে নকশা করা হয়েছিল। চারবাগ মানেই যাতে স্বর্গের বাগানের প্রতিফলন ঘটবে। মুঘল আমলের লেখায় এক ফার্সি মরমিবাদী স্বর্গের বাগানের বর্ণনা দিয়েছিলেন আদর্শ বাগান হিসেবে, যা পূর্ণ থাকবে প্রাচুর্যে। পানি বা জল এই বর্ণনায় একটি বড় ভূমিকা রেখেছে। ওই লেখায় আছে, স্বর্গের বাগানের মাধ্যখানে একটি পাহাড় থেকে তৈরি হয়েছে চারটি নদী, আর তা আলাদা হয়ে বয়ে গেছে বাগানের উত্তর, দক্ষিণ, পূর্ব ও পশ্চিমে।

তাজমহল 
রৈখিক চৌবাচ্চার পাশ দিয়ে হাটার রাস্তা

প্রায় সব মুঘল চারবাগসমূহ চতুর্ভুজাকৃতির, যার বাগানের মধ্যখানে মাজার বা শিবির থাকে। কিন্তু তাজমহল এ ব্যাপারটিতে অন্যগুলোর থেকে আলাদা কারণ এর মাজার অংশটি বাগানের মধ্যখানে হওয়ার বদলে বাগানের একপ্রান্তে অবস্থিত। যমুনা নদীর অপর প্রান্তে নতুন আবিষ্কৃত মাহতাব বাগ অন্যরকম তথ্যের আভাস দেয়, যমুনা নদীটি বাগানের নকশায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছিল যাতে তা স্বর্গের নদী হিসেবে অর্থবহ হয়।

বাগানের বিন্যাস এবং এর স্থাপত্যের বৈশিষ্ট্য যেমন এর ঝরনা, ইট অথবা মার্বেলের রাস্তা এবং জ্যামিতিক ইটের রেখার ফুলের বিছানা এগুলো হুবহু সালিমারের মতো এবং এই ক্রম নকশা করেছেন একই প্রকৌশলী আলি মারদান।

পরবর্তীকালে বাগানের গোলাপ, ড্যাফোডিল, বিভিন্ন ফলের গাছসহ অন্যান্য গাছগাছালির অতিপ্রাচুর্যের কথা জানা যায়। মুঘল সম্রাটদের উত্তরোত্তর অবক্ষয়ের সাথে সাথে বাগানেরও অবক্ষয় ঘটে। ইংরেজ শাসনামলে তাজমহলের রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব ইংরেজরা নেয়। তারা এ প্রাকৃতিক ভূ-দৃশ্যকে পরিবর্তন করে নতুন করে লন্ডনের আনুষ্ঠানিক বাগানের চেহারা দেয়।

অন্যান্য ইমারত

তাজমহল 
তাজমহলের প্রধান ফটক

তাজমহলের চত্বরটি বেলে পাথরের দুর্গের মতো দেয়াল দিয়ে তিন দিক থেকে বেষ্টিত। নদীর দিকের পাশটিতে কোনো দেয়াল নেই। এই দেয়ালবেষ্টনির বাইরে আরও সমাধি রয়েছে যার মধ্যে শাহজাহানের অন্য স্ত্রীদের সমাধি এবং মুমতাজের প্রিয় পরিচারিকাদের একটি বড়ো সমাধি রয়েছে। এ স্থাপত্যসমূহ প্রধানত লাল বেলে পাথর দ্বারা তৈরি, দেখতে সে সময়কার ছোটো আকারের মুঘল সাধারণ সমাধির মতো।

ভিতরের দিকে (বাগান) দেয়ালগুলো স্তম্ভ এবং ছাদ-সংবলিত। যা সাধারণত হিন্দু মন্দিরে দেখা যেত এবং পরে মুঘলদের মসজিদের নকশায় আনা হয়েছিল। দেয়ালগুলো বিচিত্র গম্বুজাকৃতির ইমারত দিয়ে সংযুক্ত যা থেকে বেশ কিছু জায়গা নজরে আসে, যা পর্যবেক্ষণ চৌকি হিসেবে ব্যবহার করা হত। যা বর্তমানে জাদুঘর হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে। তাজমহলে ঢোকার প্রধান ফটক বা দরজাও তৈরি হয়েছে মার্বেল পাথরে। দরজাটির নকশা ও ধরন মুঘল সম্রাটদের স্থাপত্যের কথাই স্মরণ করিয়ে দেয়। এর খিলানসমূহের আকৃতি হুবহু সমাধির খিলানসমূহের অনুরূপ এবং এর পিস্তাক খিলান সমাধির ক্যালিগ্রাফি বা চারুলিপির নকশার সাথে মিলিয়ে করা হয়েছে। এর ছাদে অন্যান্য বেলে পাথরের ইমারতের মতোই নকশা করা আছে, সেসব সুন্দর সুন্দর জ্যামিতিক আকৃতির।

তাজমহল 
জাওয়াবের ভিতরের নকশা

চত্বরের একেবারে শেষে বেলেপাথরের দু’টো বিশাল ইমারত রয়েছে যার সমাধির দিকের অংশ খোলা। এদের পিছন ভাগ পূর্ব ও পশ্চিম দিকের দেয়ালের সমান্তরাল।

তাজমহল 
তাজ মহল মসজিদ

দু’টো ইমারত দেখতে একেবারে হুবহু যেন একটা আরেকটির প্রতিচ্ছবি। পূর্ব দিকের ইমারতটি মসজিদ, অন্যটি হল জাওয়াব (উত্তর), যার মূল উদ্দেশ্য ছিল ভারসাম্য রক্ষা করা (যা মুঘল আমলে মেহমানদের থাকার জন্য ব্যবহৃত হত)। জাওয়াব আলাদা শুধু এর মেহরাম নেই আর এর মেঝে নকশা করা যেখানে মসজিদের মেঝে ৫৬৯ জন মুসল্লির নামাজ পড়ার জন্য কালো পাথর দিয়ে দাগ কাটা।

মসজিদটির প্রাথমিক নকশা শাহজাহানের তৈরি অন্যান্য ইমারতের মতোই। বিশেষ করে তার মসজিদ-ই-জাহান্নুমা অথবা দিল্লী জামে মসজিদ—একটি বড় ঘর যার উপর তিনটি গম্বুজ। মুঘল আমলের মসজিদগুলোর নামাজ পড়ার জায়গা তিন ভাগে ভাগ করা থাকত। বড়ো নামাজ পড়ার জায়গার দু'পাশে সামান্য ছোটো নামাজ পড়ার জায়গা। তাজমহলের প্রত্যেকটি নামাজ পড়ার জায়গার উপরে বিশাল গম্বুজ আছে কিন্তু জায়গাটি খোলা।

ইমারতটির নির্মাণ সম্পূর্ণ হয়েছিল ১৬৪৩ খ্রিষ্টাব্দে।

সমাধি

ভিত্তি

তাজমহল 
তাজমহলের মেঝের পরিকল্পনা।
তাজমহল 
প্রধান আইওয়ান এবং পার্শ্ব পিস্তাক

তাজমহলের মূলে হল তার সাদা মার্বেল পাথরের সমাধি। যা অন্যান্য মুঘল সমাধির মত মূলত পারস্যদেশীয় বৈশিষ্ট্য, যেমন আইওয়ানসহ প্রতিসম ইমারত, একটি ধনুক আকৃতির দরজা, উপরে বড় গম্বুজ রয়েছে। সমাধিটি একটি বর্গাকার বেদিকার উপর দাঁড়িয়ে রয়েছে। ভিত্তি কাঠামোটি বিশাল এবং কয়েক কক্ষবিশিষ্ট। প্রধান কক্ষটিতে মুমতাজ মহল ও শাহজাহানের স্মৃতিফলক বসানো হয়েছে, তাদের কবর রয়েছে এক স্তর নিচে।

তাজমহল 
তাজমহলের সর্বনিম্ন তলে শাহজাহান ও মুমতাজের কবর

ভিত্তিটি আদতে একটি কোণগুলো ভাঙা ঘনক্ষেত্র, প্রতিদিকে প্রায় ৫৫ মিটার (ডানে, মেঝের পরিকল্পনা দেখুন)। লম্বা পাশে একটি বড় পিস্তাক, অথবা বড় ধনুক আকৃতির পথ, আইওয়ানের কাঠামো, সাথে উপরে একই রকমের ধনুক আকৃতির বারান্দা। এই প্রধান ধনুক আকৃতির তোরণ বৃদ্ধি পেয়ে উপরে ইমারতের ছাদের সাথে যুক্ত হয়ে সম্মুখভাগ তৈরি করেছে। তোরণের অপর দিকে, বাড়তি পিস্তাকসমূহ উপরে পিছনের দিকে চলে গেছে, পিস্তাকের এই বৈশিষ্ট্যটি কোণার দিকে জায়গায় একইভাবে ব্যবহার করা হয়েছে। নকশাটি সম্পূর্ণভাবে প্রতিসম এবং ইমারতের প্রতিটি দিকেই একই রকম। চারটি মিনার রয়েছে, ভিত্তির প্রতিটি কোণায় একটি করে মিনার, ভাঙা কোণার দিকে মুখ করে রয়েছে।

গম্বুজ

তাজমহল 
ভিত্তি, গম্বুজ এবং মিনার

সমাধির উপরের মার্বেল পাথরের গম্বুজই সমাধির সবচেয়ে আকর্ষণীয় বৈশিষ্ট্য। এর আকার প্রায় ইমারতের ভিত্তির আকারের সমান, যা প্রায় ৩৫ মিটার। এর উচ্চতা হওয়ার কারণ গম্বুজটি একটি ৭ মিটার উচ্চতার সিলিন্ডার আকৃতির ড্রাম এর উপরে বসানো।

এর আকৃতির কারণে, এই গম্বুজকে কখনো পেয়াজ গম্বুজ অথবা পেয়ারা গম্বুজ বলেও ডাকা হয়। গম্বুজের উপরের দিক সাজানো হয়েছে একটি পদ্মফুল দিয়ে, যা তার উচ্চতাকে আরও দৃষ্টি গোচড় করে। গম্বুজের উপরে একটি পুরনো সম্ভবত তামা বা কাসার দণ্ড রয়েছে যাতে পারস্যদেশীয় ও হিন্দু ঐতিহ্যবাহী অলঙ্করণ রয়েছে।

তাজমহল 
গম্বুজের উপর সাজানো দন্ড

বড় গম্বুজটির গুরুত্বের কারণ এর চার কোণায় আরও চারটি ছোট গম্বুজ রয়েছে। ছোট গম্বুজগুলোও দেখতে বড় গম্বুজটির মতই। এদের স্তম্ভগুলো সমাধির ভিত্তি থেকে ছাদ পর্যন্ত উঠে গেছে। ছোট গম্বুজগুলোতেও কাসা বা তামার পুরনো দণ্ড আছে।

লম্বা মোচাকার চূড়া বা গুলদাস্তা ভিত্তি দেয়ালের পাশ দিয়ে উপরে উঠেছে এবং গম্বুজের উচ্চতায় দৃষ্টিগোচর হয়।

পদ্মফুল ছোট গম্বুজ ও গুলদাস্তাতেও রয়েছে।

চূড়া

বড় গম্বুজের উপর মুকুটের মত একটি পুরনো মোচাকার চূড়া রয়েছে। চূড়াটি ১৮০০ শতকের আগে স্বর্ণের নির্মিত ছিল, কিন্তু বর্তমানে এটি ব্রোঞ্জ দিয়ে তৈরি। এই চূড়াটিই পারস্যদেশীয় এবং হিন্দুদের শোভাবর্ধক উপাদানের মিলনের উৎকৃষ্ট উদাহরণ। চূড়ার উপরের অংশে আছে একটি চাঁদ, যা ইসলামিক উপাদান, এবং চূড়ার শিং তাক করা আছে স্বর্গ বা বেহেস্তের দিকে। বড় গম্বুজের উপর চূড়ার চাঁদ এবং তাক করা শিং মিলে একটি ঐতিহ্যবাহী চিহ্নের আকার ধারণ করে, যা হিন্দু দেবতা শিব এর চিহ্নের মত।

মিনার

মিনারগুলোর মূল বেদিকার কোণাগুলোতে রয়েছে- চারটি বড় চৌকি যাদের প্রতিটির উচ্চতা ৪০ মিটারেরও বেশি। মিনারগুলোতেও তাজমহলের প্রতিসমতার ব্যাপারটিই লক্ষ্য করা যায়।

চৌকিগুলো নকশা করা হয়েছে মসজিদের প্রথাগত মিনারের নকশায়, যেখানে মুয়াজ্জিন নামাজের জন্য আযান দেন। প্রতিটি মিনারেরই দুইটি বারান্দা দিয়ে তিনটি সমান উচ্চতায় ভাগ করা হয়েছে। মিনারের একেবারে উপরে শেষ বারান্দা রয়েছে যার উপরে সমাধির ছাতাগুলোর একই রকম একটি ছাতা রয়েছে।

মিনারের ছাতাগুলোতেও একই রকমের কাজ করা হয়েছে যেমনটি করা হয়েছে পদ্মফুলের নকশা করা চূড়াতে। প্রতিটি মিনারই বেদিকার থেকে বাইরের দিকে কিঞ্চিৎ হেলানো আছে যাতে এ মিনার কখনও ভেঙ্গে পড়লেও যেন তা মূল সমাধির উপরে না পড়ে।

তাজ মহলের পরিদৃশ্যটি তলা হয় ২০০৫ সালে।

অলঙ্করণ

পাথরের খোদাই

(সূক্ষ্ম কারিগরি ভাল দেখা যাবে ছবির বড় সংস্করণে -- বড় করে দেখার জন্য ছবিতে ক্লিক করুন)

নির্মাণ

তাজমহল 
তাজমহলের মেঝের বিন্যাস

তাজমহল দেয়াল ঘেরা আগ্রা শহরের দক্ষিণ অংশের একটি জমিতে তৈরি করা হয়েছিল যার মালিক ছিলেন মহারাজা জয় শিং। শাহজাহান তাকে আগ্রার মধ্যখানে একটি বিশাল প্রাসাদ দেওয়ার বদলে জমিটি নেন। তাজমহলের কাজ শুরু হয় সমাধির ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপনের মাধ্যমে। প্রায় ৩ একর জায়গাকে খনন করে তাতে আলগা মাটি ফেলায় হয় নদীর ক্ষরণ কমানোর জন্য। সম্পূর্ণ এলাকাকে নদীর পাড় থেকে প্রায় ৫০ মিটার উঁচু করা সমান করা হয়। তাজমহল ৫৫ মিটার লম্বা। সমাধিটি নিজে ব্যাসে ১৮ মিটার এবং উচ্চতায় ২৪ মিটার।

তাজমহল 
আগ্রার কেল্লা থেকে তাজমহল দেখা যাচ্ছে

সমাধি এলাকায় যেখানে পানি চলে আসে সেখানে পরে কুয়া খনন করা হয়েছিল। যা পরে পাথর ফেলে ভরাট করা হয়েছিল, যা ছিল সমাধি ভিত্তিস্থাপন। [একই গভীরতায় আরও একটি কুয়া খনন করা হয়েছিল সময়ের সাথে সাথে পানির স্তর পরিমাপ করার জন্য।]

বাধা বাঁশ এর বদলে রাজমিস্ত্রিরা তাদের সাধারণ ভারা বাধার নিয়মে সমাধির ভেতরে এবং বাইরে একই রকম ইটের ভারা তৈরি করেন। ভারা এত বড় এবং জটিল ছিল যে তা শ্রমিকদের খুলে সরাতে প্রায় বছর লাগার কথা। উপাখ্যান অনুযায়ী, শাহজাহান ঘোষণা দিয়েছিলেন যে কেউ ভারার ইট নিয়ে যেতে পারবে এবং একরাতের মধ্যে কৃষক, দিনমজুর, চাষীরা ভারাটি সরিয়ে নিয়েছিল।

পনের কিলোমিটারের একটি ঢালু পথ তৈরি করা হয়েছিল নির্মাণের জন্য নির্দিষ্ট স্থানে মার্বেল পাথর ও অন্যান্য মালপত্র নেওয়ার জন্য। সমসাময়িক উৎস থেকে জানা যায়, ২০ ও ৩০টি করে ষাঁড় একসাথে বেধে বিশেষ ধরনের গরুর গাড়ীতে করে পাথর ঊঠানো হত।

পাথর উঠিয়ে ঠিক উচ্চতায় বসাতে কপিকল ব্যবহার করা হত। গাধা এবং ষাঁড়ের দল কপিকল নাড়াতে শক্তির যোগান দিতো।

নির্মাণকাজের ক্রম ছিল এরকম

  • ভিত্তি
  • সমাধি
  • চারটি মিনার
  • মসজিদ এবং জাওয়াব
  • প্রবেশ দরজা

ভিত্তি আর সমাধি নির্মাণ করতে সময় লেগেছিল প্রায় ১২ বছর। পুরো এলাকার বাকি অংশগুলো নির্মাণ করতে লেগেছিল আরও ১০ বছর। মোট ২২ বছর(১৬৩২খ্রিঃ-১৬৫৩খ্রিঃ)।(যেহেতু চত্বর এলাকাটি কয়েকটি ভাগে নির্মিত হয়েছিল তাই তৎকালীন ইতিহাস লেখকগণ নির্মাণ শেষের বিভিন্ন তারিখ উল্লেখ করেন। যেমন সমাধিটির কাজ শেষ হয়েছিল ১৬৪৩ খ্রিষ্টাব্দে, কিন্তু বাকি অংশগুলোর কাজ তখনও চলছিল।)

জল সঞ্চালন অবকাঠামো

তাজমহলের জন্য পানি বা জল সরবরাহ করা হত একটি জটিল অবকাঠামোর মাধ্যমে। পানি নদী থেকে উঠানো হতো কয়েকটি পুর দিয়ে- দড়ি ও বালটির মাধ্যমে পানি পশু দ্বারা টেনে তোলার এক পদ্ধতি। পানি একটি বড় চৌবাচ্চায় জমা হত, যা আরও আরও ৩০টি পুর দিয়ে উঠিয়ে তাজমহলের মাটির নিচের সরবরাহ চৌবাচ্চায় দেওয়া হতো।

সরবরাহ চৌবাচ্চায় থেকে পানি পৌঁছত আরও তিনটি সহায়ক চৌবাচ্চায়, যা থেকে তাজমহল এলাকায় পাইপ দ্বারা সংযুক্ত ছিল। একটি .২৫ মাটির তৈরি পাইপ প্রায় ১.৫ মিটার মাটির নিচ দিয়ে প্রধান চলার পথ বরাবর নেওয়া হয়েছে। যা চত্বরের মূল চৌবাচ্চাটি পূরণ করে। আরও তামার পাইপ দিয়ে উত্তর-দক্ষিণ দিকে নালার ঝরনাগুলোতে পানি সরবরাহ করা হতো। সহায়ক আরও নালা খনন করা হয়েছিল পুরো বাগানে সেচ দেয়ার জন্য।

ঝরনার পাইপগুলো সরাসরি সরবরাহ পাইপের সাথে যুক্ত ছিল না। এর বদলে, প্রতিটি ঝরনার নিচে একটি করে তামার পাত্র বসানো হয়েছিল। পানিতে প্রথম পাত্রগুলোতে ভরাট হত যাতে প্রতিটি ঝরনায় সমানভাবে পানির চাপ প্রয়োগ করা যায়।

পুরগুলো এখন আর অবশিষ্ট নেই, কিন্তু অবকাঠামোর অন্যান্য অংশ এখনো আগের মতই আছে।

কারিগর

তাজমহল কোন একজন ব্যক্তির দ্বারা নকশা করা নয়। এ ধরনের প্রকল্পে অনেক প্রতিভাধর লোকের প্রয়োজন।

বিভিন্ন উৎস থেকে তাজমহল নির্মাণ কাজে যারা অংশ নিয়েছিলেন তাদের বিভিন্ন নাম পাওয়া যায়।

  • পারস্যদেশীয় স্থপতি, ওস্তাদ ঈসা; চত্বরের নকশা করার বিশেষ ভূমিকায় অনেক স্থানেই তার নাম পাওয়া যায়।
  • পারস্য দেশের (ইরান) বেনারসের 'পুরু'; ফার্সি ভাষার এক লেখায় (দেখুন আইএসবিএন ৯৬৪-৭৪৮৩-৩৯-২) তাকে তত্ত্বাবধায়ক স্থপতি হিসেবে উল্লেখ করেছে।
  • বড় গম্বুজটির নকশা করেছিলেন ওত্তোমান সাম্রাজ্য থেকে আসা ইসমাইল খাঁন, যাকে গোলার্ধের প্রথম নকশাকারী এবং সে যুগের একজন প্রধান গম্বুজ নির্মাতা মনে করা হয়।
  • কাজিম খাঁন, লাহোরের বাসিন্দা, বড় গম্বুজের চূড়ায় যে স্বর্ণের দণ্ডটি ছিল, তিনি তা গড়েছিলেন।
  • চিরঞ্জিলাল, একজন পাথর খোদাইকারক যিনি দিল্লী থেকে এসেছিলেন; প্রধান ভাস্কর ও মোজাইকারক হিসেবে নেওয়া হয়েছিল।
  • পারস্যের (সিরাজ, ইরান) আমানত খাঁন, যিনি প্রধান চারুলিপিকর (তার নাম তাজমহলের প্রবেশপথের দরজায় প্রত্যায়িত করা আছে, সেখানে তার নাম পাথরে খোদাই করে লেখা আছে)
  • মোহাম্মদ হানিফ রাজমিস্ত্রিদের তত্ত্বাবধায়ক ছিলেন।
  • সিরাজ, ইরান থেকে মীর আব্দুল করিম এবং মুক্কারিমাত খাঁন, যারা ব্যবস্থাপনা ও আর্থিক দিকগুলো সামাল দিতেন।

মালামাল সামগ্রী ও উপাদান

তাজমহল তৈরি হয়েছে সাড়া এশিয়া এবং ভারত থেকে আনা বিভিন্ন উপাদান সামগ্রী দিয়ে। নির্মাণ কাজের সময় ১,০০০ এরও বেশি হাতি ব্যবহার করা হয়েছিল নির্মাণ সামগ্রী বহন করে আনার জন্য। আলো-প্রবাহী অস্বচ্ছ সাদা মার্বেল পাথর আনা হয়েছিল রাজস্থান থেকে, ইয়াশ্‌ব্‌- লাল, হলুদ বা বাদামী রঙের মধ্যম মানের পাথর আনা হয়েছেল পাঞ্জাব থেকে। চীন থেকে আনা হয়েছিল ইয়াশ্‌ম্‌- কঠিন, সাধা, সবুজ পাথর, স্ফটিক টুকরা। তিব্বত থেকে বৈদূর্য সবুজ-নীলাভ (ফিরোজা) রঙের রত্ন এবং আফগানিস্তান থেকে নীলকান্তমণি আনা হয়েছিল। নীলমণি- উজ্জ্বল নীল রত্ন এসেছিল শ্রীলঙ্কা এবং রক্তিমাভাব, খয়েরি বা সাদা রঙের মূল্যবান পাথর এসেছিল আরব থেকে। এ আটাশ ধরনের মহামূল্যবান পাথর সাদা মার্বেল পাথরেরে উপর বসানো রয়েছে।

খরচ

তৎকালীন নির্মাণ খরচ অনুমান করা কঠিন ও কিছু সমস্যার কারণে তাজমহল নির্মাণে কত খরচ হয়েছিল তার হিসাবে কিছুটা হেরফের দেখা যায়। তাজমহল নির্মাণে তৎকালীন আনুমানিক ৩২ মিলিয়ন রুপি খরচ হয়েছিল বলে ধারণা করা হয়। কিন্তু শ্রমিকের খরচ, নির্মাণে যে সময় লেগেছে এবং ভিন্ন অর্থনৈতিক যুগের কারণে এর মূল্য অনেক, একে অমূল্য বলা হয়।

ইতিহাস

তাজমহলের নির্মাণ কাজ শেষ হতে না হতেই শাহ জাহান তার পুত্র আওরঙ্গজেব দ্বারা ক্ষমতাচ্যুত ও আগ্রার কেল্লায় গৃহবন্দি হন। কথিত আছে, জীবনের বাকি সময়টুকু শাহ জাহান আগ্রার কেল্লার জানালা দিয়ে তাজমহলের দিকে স্থির দৃষ্টিতে তাকিয়েই কাটিয়েছিলেন। শাহ জাহানের মৃত্যুর পর আওরঙ্গজেব তাকে তাজমহলে তার স্ত্রীর পাশে সমাহিত করেন। একমাত্র এ ব্যাপারটিই তাজমহলের নকশার প্রতিসমতা নষ্ট করেছে। ১৯ শতকের শেষ ভাগে তাজমহলের একটি অংশ মেরামতের অভাবে খুব খারাপভাবে নষ্ট হয়। ১৮৫৭ সালের সিপাহী বিপ্লবের সময় ইংরেজ সৈন্যরা তাজমহলের বিকৃতি সাধন করে আর সরকারি কর্মচারীরা বাটালি দিয়ে তাজমহলের দেয়াল থেকে মূল্যবান ও দামি নীলকান্তমণি খুলে নেয়।

তাজমহল 
যুদ্ধের সময় রক্ষাকারী ভারা

১৯ শতকের শেষ দিকে লর্ড কার্জন তাজমহল পুনর্নির্মাণের একটি বড় প্রকল্প হাতে নেন। প্রকল্পের কাজ ১৯০৮ সালে শেষ হয়। তিনি তাজমহলের ভিতরের মঞ্চে একটি বড় বাতি (যা কায়রো মসজিদে ঝুলানো একটি বাতির অনুকরণে তৈরি করার কথা ছিল কিন্তু তৎকালীন কারিগরেরা ঠিক হুবহু তৈরি করতে পারেনি ) বসিয়েছিলেন। তখনই বাগানের নকশা পরিবর্তন করে ইংরেজ পার্কের মত করে গড়া হয় যা এখনও রয়েছে।

বিংশ শতাব্দীতে তাজমহলের ভাল রক্ষণাবেক্ষণ হয়। ১৯৪২ সালে যখন জার্মান বিমান বাহিনী এবং পরে জাপানি বিমান বাহিনী দ্বারা আকাশপথে হামলা চালায় তৎকালীন সরকার তখন তাজমহল রক্ষার জন্য এর উপর একটি ভারা তৈরি করেছিল (ছবি দেখুন)। ১৯৬৫ এবং ১৯৭১ সালে পাকিস্তান-বাংলাদেশ যুদ্ধের সময় তাজমহলকে ভারা দিয়ে ঢেকে দেওয়া হয়েছিল যাতে বিমান চালকদের ভ্রম তৈরি করে। কারণ ভারত বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে বিশ্বব্যাপী অকুণ্ঠ সমর্থন জুগিয়েছিল ।

তাজমহল সম্প্রতি যে হুমকির মুখে পড়েছে তা হল যমুনা নদীর তীরের পরিবেশ দূষণ। সাথে আছে মাথুরাতে তেল পরিশোধনাগারের কারণে সৃষ্ট এসিড বৃষ্টি (যা ভারতীয় উচ্চ আদালত নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছে)।

১৯৮৩ সালে তাজমহলকে ইউনেস্কোর বিশ্ব ঐতিহ্যবাহী স্থাপনা হিসেবে তালিকাভুক্ত করা হয়।

পর্যটনকেন্দ্র

নির্মাণের পর থেকেই তাজমহল বহু পর্যটককে আকর্ষিত করেছে। এমনকি তাজমহলের দক্ষিণ পাশে ছোট শহর তাজ গঞ্জি বা মুমতাজাবাদ আসলে গড়ে তোলা হয়েছিল পর্যটকদের জন্য সরাইখানা ও বাজার তৈরির উদ্দেশ্যে যাতে পর্যটক এবং কারিগরদের চাহিদা পূরণ হয়।

বর্তমানে, তাজমহলে ২ থেকে ৩ মিলিয়ন পর্যটক আসে যার মধ্যে ২,০০,০০০ পর্যটক বিদেশি, যা একে ভারতের সবচেয়ে জনপ্রিয় পর্যটনকেন্দ্রে পরিণত করেছে। সবচেয়ে বেশি পর্যটক আসে ঠান্ডা মৌসুমে অক্টোবর, নভেম্বর ও ফেব্রুয়ারি মাসে। বায়ু দূষণকারী যানবাহন তাজমহলের কাছে আসা নিষিদ্ধ। তাই, পর্যটকদের গাড়ি রাখার স্থান থেকে পায়ে হেঁটে অথবা বৈদুতিক বাসে করে তাজমহলে আসতে হয়। খাওয়াসপুরাগুলো পর্যটকদের জন্য পুনরায় চালু করা হয়েছে।

বর্তমানে তাজ দর্শনের খরচ ভারতীয়দের জন্য মাত্র ৪০ টাকা।। সার্ক দেশের পর্যটকদের জন্য তাজের প্রবেশমূল্য ৫৩০ টাকা। আর বাকি বিশ্বের জন্য তা ১০০০ টাকা।

২০১৪ সালের ২৫ শে ডিসেম্বর থেকে তাজমহল পরিদর্শনের জন্যও পর্যটক দের জন্য অনলাইন টিকিটের ব্যবস্থা করছে আর্কিয়োলজিক্যাল সার্ভে অফ ইণ্ডিয়া ।

আরও জানতে

তথ্যসূত্র

বহিঃসংযোগ

৭৮°০২′৩২″ পূর্ব / ২৭.১৭৫০০° উত্তর ৭৮.০৪২২২° পূর্ব / 27.17500; 78.04222

Tags:

তাজমহল ভূমিকাতাজমহল বাগানতাজমহল অন্যান্য ইমারততাজমহল সমাধিতাজমহল অলঙ্করণতাজমহল নির্মাণতাজমহল ইতিহাসতাজমহল পর্যটনকেন্দ্রতাজমহল আরও জানতেতাজমহল তথ্যসূত্রতাজমহল বহিঃসংযোগতাজমহলআরজুমান্দ বানু বেগমউর্দু ভাষাভারতমুঘলমুমতাজ মহলশাহজাহানহিন্দি ভাষা১৬৩২১৬৫৩

🔥 Trending searches on Wiki বাংলা:

ইসলামে বিবাহসালমান শাহব্রাজিল জাতীয় ফুটবল দলঅরিজিৎ সিংসাদিকা পারভিন পপিসেভেন আপমহেন্দ্র সিং ধোনিখ্রিস্টধর্মরাঙ্গামাটি জেলাযাকাতইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্সপুরুষাঙ্গের চুল অপসারণঅশোক (উদ্ভিদ)সুলতান সুলাইমানরাজশাহীষষ্ঠী দেবীবাংলাদেশের পদমর্যাদা ক্রমমাযহাবআয়করকরিম বেনজেমাকলকাতা মেট্রোর স্টেশনগুলির তালিকাঅশোকতারাবীহঝড়এ. পি. জে. আবদুল কালামআফগানিস্তানবাংলাদেশের সরকারি ছুটির দিনবিজ্ঞাপনচট্টগ্রাম বিভাগমুঘল সম্রাটশ্রাদ্ধহিন্দুধর্মইংরেজি ভাষাদেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীকাজল আগরওয়ালমুখমৈথুনতিতাস কমিউটারহিন্দু পঞ্জিকাচৈত্রগাজন উৎসবগিমাশ্রীলঙ্কাশাকিব খান অভিনীত চলচ্চিত্রের তালিকাবাংলাদেশের জনশুমারি ও গৃহগণনা ২০২২নারায়ণগঞ্জ জেলালোকসভামাশাআল্লাহসূর্যগ্রহণরক্তশূন্যতাপাল সাম্রাজ্যইউরোপীয় দেশগুলো ও অধীনস্থ ভূভাগের তালিকাআদমদৈনিক প্রথম আলোটাইফয়েড জ্বরশ্রী স্বপনকুমারের বাদামী হায়নার কবলেতৃণমূল কংগ্রেসইউসুফশিশ্ন বর্ধনধর্ষণস্ক্যাবিসজাতিবিষ্ণুসহস্রনামবাংলার শক্তিপীঠের তালিকাজেমস (সঙ্গীতজ্ঞ)শিবসালমান এফ রহমানজালাল উদ্দিন মুহাম্মদ রুমিগরুশুক্রাণুবাংলা স্বরবর্ণমার্কিন যুক্তরাষ্ট্রনামাজলিওনার্দো দা ভিঞ্চিবড়ে মিয়াঁ ছোটে মিয়াঁ (২০২৪-এর চলচ্চিত্র)ইউরোপীয় ইউনিয়নবটবাংলাদেশে পেশাদার যৌনকর্মকিশোরগঞ্জ জেলা🡆 More