ছিয়াত্তরের মন্বন্তর

ছিয়াত্তরের মন্বন্তর বাংলার ইতিহাসে সর্বাপেক্ষা ভয়াবহ দুর্ভিক্ষ নামে পরিচিত। ১১৭৬ বঙ্গাব্দে ( খ্রি.

১৭৭০) এই দুর্ভিক্ষ হয়েছিল বলে একে 'ছিয়াত্তরের মন্বন্তর' বলা হয়।

ছিয়াত্তরের মন্বন্তর
দেশব্রিটিশ ভারত
অবস্থানবাংলা
মোট মৃত্যু১ কোটি
পর্যবেক্ষণনীতি ব্যর্থতা
জনসংখ্যার উপর প্রভাববাংলার জনসংখ্যা এক তৃতীয়াংশ কমে যায়
পরিণতিব্রিটিশদের কুশাসন
পূর্বসূরীদাক্ষিণাত্যে দুর্ভিক্ষ
উত্তরসূরীচালিসা দুর্ভিক্ষ

কারণ

১৭৫৬ সালে নবাব সিরাজউদ্দৌলা কলকাতা দখল করে নেবার পরে (২০ জুন) লর্ড ক্লাইভ এবং ওয়াটসন তামিলনাড়ু থেকে জাহাজযোগে সৈন্যবাহিনী নিয়ে আসেন ও কলকাতা পুনর্দখল করেন(২জানুয়ারি,১৭৫৭)। চন্দননগর দখল করার পরে সিরাজউদৌল্লাকে উৎখাত করার জন্য সিরাজের পরিবারের কয়েকজন ও মীরজাফর, উমিচাঁদ, জগত শেঠ প্রমুখদের সঙ্গে ষড়যন্ত্র করেন। চুক্তি মতো কাজ হয় ও নদীয়ার পলাশির প্রান্তরে সিরাজউদৌল্লার সঙ্গে প্রহসন মূলক যুদ্ধ হয়। সিরাজউদৌল্লা পরাজিত হয়ে পালাবার কালে ধরা পড়ে নিহত হন। চুক্তি মতো মীরজাফর নবাব হন এবং ক্লাইভ নগদ ত্রিশ লক্ষ টাকা ও চব্বিশ পরগনার জায়গিরদারি লাভ করেন। জায়গির থেকে ক্লাইভের বছরে তিন লক্ষ টাকা আয় হত। পরে ১৭৬০-এ ক্লাইভ দেশে ফিরে যান। এ দিকে তার অভাবে ইংরেজরা বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে, তখন আবার ক্লাইভের ডাক পড়ে। ক্লাইভ এ দেশে আবার ফিরে আসেন ১৭৬৫ খ্রিষ্টাব্দের মে মাসে এবং ইংরেজ সরকারের গভর্নর নিযুক্ত হন। তিনি তখন দিল্লির বাদশাহ শাহ আলমের কাছ থেকে বাংলা-বিহার-ওড়িশার দেওয়ানি লাভ করেন (১৭৬৫, আগস্ট ১)। বিহার-ওড়িশার প্রকৃত শাসন ক্ষমতা লাভ করে, নবাবের নামে মাত্র অস্তিত্ব থাকে। ফলে পূর্ব ভারতের এই অঞ্চলে যে শাসন-ব্যবস্থা চালু হয় তা দ্বৈত শাসন নামে পরিচিত। নবাবের হাতে থাকে প্রশাসনিক দায়িত্ব, আর রাজস্ব আদায় ও ব্যয়ের পূর্ণ কর্তৃত্ব পায় কোম্পানি। এতে বাংলার নবাব আসলে ক্ষমতাহীন হয়ে পড়ে আর এই সুযোগে কোম্পানির লোকেরা খাজনা আদায়ের নামে অবাধ লুণ্ঠন ও অত্যাচার শুরু করে দেয়।সে বছর অনাবৃষ্টি কারনে ফসলের উৎপাদন অনেক পরিমাণ কমে যায় । তদুপরি ভূমিরাজস্ব ব্যবস্থা এবং খাদ্যবাজারে মধ্যস্বত্বভোগীদের দৌরাত্ম্যের ফলে অবস্থার চরম অবনতি ঘটে। অথচ ব্রিটিশরাজের কোম্পানি শাসকরা পুরো বিষয়টিকে প্রাকৃতিক বিপর্যয় বলে দাবি করে। কিন্তু ভিন্ন সাক্ষ্য থেকে জানা যায় যে, ১৭৬৮ সনে আদায়কৃত রাজস্ব দেড় কোটি রুপির চেয়ে ১৭৭১ সনের আদায়কৃত রাজস্বের পরিমাণ ৫,২২,০০০ রুপি বেশি ছিল, অথচ এর আগের বছরেই ঘটে যায় দুর্ভিক্ষ। এভাবে, কোম্পানি শাসনের সহযোগিতায়, খাদ্যশস্যের বাজার থেকে মুনাফা লুট এবং অতিরিক্ত রাজস্ব আদায়ের উদ্দেশ্য চরিতার্থ করার কারণে জনমানুষের ভোগান্তি চরমে পৌঁছে। পরিণতিতে মারাত্মক দুর্ভিক্ষপীড়িত এলাকাগুলি হয়ে পড়ে জনশূন্য। জনসংখ্যার এক-তৃতীয়াংশ, প্রায় ১ কোটি মানুষ দুর্ভিক্ষে মারা যায়। কৃষি উৎপাদন আর রাজস্ব আদায় অনুরূপহারে কমে যায়। দেশে দেখা দেয় চরম বিপর্যয় ও দুর্ভিক্ষ। কয়েক লক্ষ মানুষ না খেতে পেয়ে মারা যান। এ সময় বাংলার গর্ভনর ছিলেন কার্টিয়ার।

পাদটীকা

তথ্যসূত্র

বহিঃসংযোগ

Tags:

ছিয়াত্তরের মন্বন্তর কারণছিয়াত্তরের মন্বন্তর পাদটীকাছিয়াত্তরের মন্বন্তর তথ্যসূত্রছিয়াত্তরের মন্বন্তর বহিঃসংযোগছিয়াত্তরের মন্বন্তরদুর্ভিক্ষবাংলার ইতিহাস

🔥 Trending searches on Wiki বাংলা:

আমবিটিএসমূত্রনালীর সংক্রমণআবদুল হামিদ খান ভাসানীসাহারা মরুভূমিবাংলাদেশী জাতীয় পরিচয় পত্রনোয়াখালী জেলাস্নাতক উপাধিতাজমহলখলিফাদের তালিকাগোপাল ভাঁড়তাপমাত্রাবাংলাদেশ সেনাবাহিনীর প্রধানএস এম শফিউদ্দিন আহমেদবঙ্গবন্ধু সেতুরাম নবমীমিশনারি আসনবাঙালি হিন্দু বিবাহসূরা ইয়াসীনগঙ্গা নদীবিরাট কোহলিপ্রাকৃতিক পরিবেশগ্রীষ্মনেত্রকোণা জেলামাইটোসিসমানুষবায়ুদূষণজলচর পাখিইংরেজি ভাষান্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব নিউরোসায়েন্সেস ও হাসপাতালময়মনসিংহডেঙ্গু জ্বরবাংলাদেশ রেলওয়েআয়তন অনুযায়ী ভারতের রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলসমূহের তালিকাবাংলাদেশের কোম্পানির তালিকাশিবনারায়ণ দাসপাণ্ডু রাজার ঢিবিদ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনমুনাফিকশিয়া ইসলামআসমানী কিতাবত্রিভুজচুয়াডাঙ্গা জেলাপুরুষে পুরুষে যৌনতাভারতের সংবিধানের অনুচ্ছেদ ৩৭০মেষ রাশি (জ্যোতিষ শাস্ত্র)শিশ্ন বর্ধনবাংলাদেশের উপজেলার তালিকাইমাম বুখারীঅরিজিৎ সিংজীবনানন্দ দাশঢাকা বিভাগরামকৃষ্ণ পরমহংসরবীন্দ্রসঙ্গীতসূরা ফাতিহামুতাজিলাচেন্নাই সুপার কিংসআডলফ হিটলারব্রিটিশ রাজের ইতিহাসজীববৈচিত্র্যটাইটানিকএ. পি. জে. আবদুল কালামমহাস্থানগড়রামপ্রসাদ সেনঅক্ষয় তৃতীয়াঅকাল বীর্যপাতভারতের স্বাধীনতা আন্দোলনক্লিওপেট্রানামাজের নিয়মাবলীমুহাম্মাদপশ্চিমবঙ্গ মধ্য শিক্ষা পর্ষদপ্রথম মুয়াবিয়াবাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়মেঘনাদবধ কাব্যচড়ক পূজাকলকাতাবাংলাদেশের পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের তালিকা🡆 More