চুম্বক

চুম্বক (গ্রিক: μαγνήτις λίθος ম্যাগ্নেটিস লিথস, ম্যাগনেসিয়া পাথর) হলো এমন বস্তু যা বিশেষ আকর্ষণ ক্ষমতাসম্পন্ন। চুম্বকের এই ক্ষমতাকে চুম্বকত্ব বলা হয়। চুম্বকের চুম্বকত্বের কারণে চৌম্বক ক্ষেত্র তৈরি করে। এই চৌম্বকক্ষেত্র অদৃশ্য, কিন্তু এর মাধ্যমেই চুম্বকের প্রায় সব ধর্ম প্রকাশ পায়; এটি একটি বল যা তার চারপাশের ফেরোচৌম্বক পদার্থকে আকর্ষণ করে এবং অন্য চুম্বককে আকর্ষণ বা বিকর্ষণ করে। প্রথম স্থায়ী চুম্বক তৈরি করা হয় ইস্পাত দিয়ে।

চুম্বক
অ্যালনিকো দিয়ে তৈরী একটি নাল চুম্বক। চুম্বকটি নাল আকৃতির হওয়ায় এর দুইটি চৌম্বকীয় মেরু কাছাকাছি থাকে। এই আকৃতিতে মেরুদ্বয়ে খুবই শক্তিশালী চৌম্বক ক্ষেত্রের সৃষ্টি হয় যা চুম্বকটিকে একটি ভারী লোহার টুকরো তুলতে সক্ষম করে।

চুম্বক অনেক প্রকার - যথা: দণ্ড চুম্বক, গোল চুম্বক ইত্যাদি। কিন্তু পদার্থবিজ্ঞান অনুসারে, চুম্বক দুই প্রকার - ১) সাধারণ চুম্বক ২) তড়িৎচুম্বক। সাধারণ চুম্বক বলতে দণ্ড চুম্বককেই বোঝানো হয়।

চুম্বকের দুটি প্রান্ত - ১) উত্তর মেরু, ২) দক্ষিণ মেরু

    চুম্বক সম্পর্কিত কিছু তথ্য
  • চুম্বকের দুটো প্রান্তের মধ্যবর্তী দূরত্বকে চুম্বকের জ্যামিতিক দৈর্ঘ্য বলে।
  • চুম্বকের দুই মেরু বিন্দুর মধ্যবর্তী দূরত্ব কে চৌম্বক দৈর্ঘ্য বলে।
  • চৌম্বক দৈর্ঘ্য = ০.৮৬ × জ্যামিতিক দৈর্ঘ্য।
  • চুম্বকের সমমেরু পরস্পরকে বিকর্ষণ করে। উত্তরমেরু উত্তরমেরু কে বিকর্ষণ করে, আবার দক্ষিণ মেরু দক্ষিণ মেরুকে বিকর্ষণ করে।
  • চুম্বকের সাহায্য লোহাকে যেকোনো প্রকার মিশ্রণ থেকে পৃথক করা যায়।
  • বিপরীত মেরু পরস্পরকে আকর্ষণ করে। উত্তরমেরু দক্ষিণ মেরুকে আর দক্ষিণমেরু উত্তরমেরু কে আকর্ষণ করে।
  • পৃথিবী ও একটা বিরাট চুম্বক। চুম্বকের ধর্ম পৃথিবীর মধ্যেও বর্তমান।

চুম্বক (Magnet): যে সমস্ত বস্তু লোহা, নিকেল ও কোবাল্ট ইত্যাদি চৌম্বক পদার্থকে আকর্ষণ করে এবং যার দিগ্‌দর্শী ধর্ম আছে, তাকে চুম্বক বলে।

চৌম্বক পদার্থ: যে সমস্ত পদার্থ চুম্বক দ্বারা আকৃষ্ট হয় এবং যাদেরকে কৃত্রিম উপায়ে চুম্বকে পরিণত করা যায়, তাদের চৌম্বক পদার্থ বলে। যেমন, কাঁচা লোহা, ইষ্পাত, নিকেল, কোবাল্ট ইত্যাদি হল চৌম্বক পদার্থ।

চুম্বকত্ব: যে ধর্মের জন্য কোনো চুম্বক, চৌম্বক পদার্থকে আকর্ষণ করে এবং দিক নির্দেশ করতে পারে, সেই ধর্মকে চুম্বকের চুম্বকত্ব বলে। এই চুম্বকত্ব পদার্থের একটি ভৌত ধর্ম। কারণ এই ধর্মের জন্য পদার্থের অণুর গঠনের কোনো পরিবর্তন হয় না।

চুম্বকের প্রকারভেদ: উৎসের বিচারে চুম্বককে দুইভাগে ভাগ করা যায়: (i) প্রাকৃতিক চুম্বক (ii) কৃত্রিম চুম্বক

প্রাকৃতিক চুম্বক (Natural Magnet): প্রকৃতিতে লোহা ও অক্সিজেনের সমন্বয়ে তৈরি ম্যাগনেটাইট পাথর পাওয়া যায়, যার মধ্যে চুম্বকত্ব ধর্ম দেখা যায়, অর্থাৎ লোহা, নিকেল, কোবাল্ট ইত্যাদিকে আকর্ষণ করতে পারে এবং দিগ্‌দর্শী ধর্মও আছে, তাকে প্রাকৃতিক চুম্বক বা লোডস্টোন বলে। এর রাসায়নিক সংকেত Fe3O4। এই প্রাকৃতিক চুম্বকের নির্দিষ্ট কোনো আকার থাকে না। তাছাড়া এর আকর্ষণী ক্ষমতাও অনেক কম হয়।

কৃত্রিম চুম্বক (Artificial Magnet): লোহা, ইষ্পাত , কোবাল্ট , নিকেল বা এদের বিভিন্ন সংকর ধাতুকে কয়েকটি বিশেষ পদ্ধতিতে চুম্বকে পরিণত করা হলে, ওই চুম্বককে কৃত্রিম চুম্বক বলে। প্রাকৃতিক চুম্বকের নির্দিষ্ট কোনো জ্যামিতিক আকার বা আকৃতি নেই এবং প্রাকৃতিক চুম্বকের চৌম্বক শক্তিও অনেক কম ও দিগ্‌দর্শী ধর্মও স্পষ্ট নয়। কিন্তু ব্যবহারিক ক্ষেত্রে বিশেষ আকার বিশিষ্ট শক্তিশালী চুম্বকের প্রয়োজন হয়। এইজন্য কৃত্রিম উপায়ে নানান আকারের চুম্বক প্রস্তুত করা হয়। এগুলিই কৃত্রিম চুম্বক।

আবার কোনও চুম্বকের চুম্বকত্ব স্থায়িত্বের উপর নির্ভর করে চুম্বককে দুটি ভাগে ভাগ করা যায়: (1) স্থায়ী চুম্বক (Parmanent Magnet): যে সমস্ত কৃত্রিম চুম্বকের চুম্বকত্ব অনেকদিন বজায় থাকে, সহজে নষ্ট হয় না, তাদের স্থায়ী চুম্বক বলে। যেমন: দন্ড চুম্বক, অশ্বখুরাকৃতি চুম্বক, চুম্বক শলাকা ইত্যাদি হল স্থায়ী চুম্বক।

(2) অস্থায়ী চুম্বক (Temporary Magnet): যে সমস্ত কৃত্রিম চুম্বকের চুম্বকত্ব বেশিদিন স্থায়ী হয় না, তাদের অস্থায়ী চুম্বক বলে। যেমন, কাঁচা লোহার দন্ডকে ঘর্ষণ প্রণালীতে চুম্বকে পরিণত করা হলে যদিও বেশ শক্তিশালী চুম্বকে পরিণত হয়, কিন্তু ওই চুম্বকের চুম্বকত্ব বেশি দিন স্থায়ী হয় না।

কঠিন চোম্বক পদার্থ : যে সকল কঠিন পদার্থ চোম্বক দ্বারা আকর্ষিত হয় তাকে কঠিন চোম্বক পদার্থ বলে ৷ যেমন : ঢালাই লোহা , বিশুদ্ধ লোহা , কার্বন ইস্পাত , সিলিকন ইস্পাত ইত্যাদি ৷


বহিঃসংযোগ

Tags:

ইস্পাতগ্রিক ভাষাচুম্বকত্বচৌম্বক ক্ষেত্রফেরোচৌম্বক পদার্থ

🔥 Trending searches on Wiki বাংলা:

বেফাকুল মাদারিসিল আরাবিয়া বাংলাদেশকমনওয়েলথ অব নেশনসনিউমোনিয়াতামান্না ভাটিয়ামানিক বন্দ্যোপাধ্যায়বিবাহদৈনিক ইনকিলাবপৃথিবীর বায়ুমণ্ডলআবদুল হামিদ খান ভাসানী২০২২–২৩ নিউজিল্যান্ড পুরুষ ক্রিকেট দলের পাকিস্তান সফর (ডিসেম্বর ২০২২)গ্রামীণফোনকলকাতাসূরা নাসইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগপ্রধান পাতামুম্বই ইন্ডিয়ান্সম্যানচেস্টার সিটি ফুটবল ক্লাবমেঘনাদবধ কাব্যআর্দ্রতাযুক্তরাজ্যমহেন্দ্র সিং ধোনিবাংলাদেশের প্রশাসনিক অঞ্চলযিনাবিতর নামাজআতিফ আসলামক্বিবলা পরিবর্তনপ্রাকৃতিক দুর্যোগমুহাম্মাদ ফাতিহকবিতাসুভাষচন্দ্র বসুরয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালোরদৈনিক যুগান্তরবেদতুরস্কজনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় (বাংলাদেশ)হুমায়ূন আহমেদমালয়েশিয়ার ইতিহাসসিলেটপ্রথম উসমানপ্রধান তাপ কর্মকর্তাশাহ সিমেন্টজিএসটি ভর্তি পরীক্ষাকাজলরেখাবেল (ফল)বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর কর্মরত জেনারেলদের তালিকাঅর্থ (টাকা)পশ্চিমবঙ্গের পঞ্চায়েত ব্যবস্থাচাকমাচৈতন্যভাগবতশবনম বুবলিপশ্চিমবঙ্গতানজিন তিশাইতালিসাইপ্রাসঅসহযোগ আন্দোলন (ব্রিটিশ ভারত)বীর শ্রেষ্ঠদিনাজপুর জেলাসাতই মার্চের ভাষণবিশ্বায়নবাংলাদেশের উপজেলাসিমেন্টইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ পিএলসিঢাকাভারতে নির্বাচননোয়াখালী জেলাভারতীয় জাতীয় কংগ্রেসবাসকশেখ মুজিবুর রহমানধর্মীয় জনসংখ্যার তালিকাবৃষ্টিপ্রিয়তমাসাঁওতালমেটা প্ল্যাটফর্মসপশ্চিমবঙ্গ মধ্য শিক্ষা পর্ষদঅসমাপ্ত আত্মজীবনীআডলফ হিটলার🡆 More