ইসোয়াতিনি

ইসোয়াতিনি (/ɛswəˈtiːnɪ/, সোয়াজি: eSwatini ) আনুষ্ঠানিকভাবে ইসোয়াতিনি রাজ্য (সোয়াজি: উম্বুসো ভাসওয়াটিনি) নামে পরিচিত। এছাড়াও এ দেশটি সোয়াজিল্যান্ড নামেও পরিচিত। এটি দক্ষিণাঞ্চলীয় আফ্রিকার একটি স্থলবেষ্টিত রাষ্ট্র। দেশটির উত্তর-পূর্ব দিকে মোজাম্বিক এবং উত্তর, পশ্চিম ও দক্ষিণে দক্ষিণ আফ্রিকার সঙ্গে সীমান্ত রয়েছে। দক্ষিণ থেকে উত্তরে ২০০ কিলোমিটার (১২০ মাইল) এবং পূর্ব থেকে পশ্চিমে ১৩০ কিলোমিটার (৮১ মাইল) বিস্তৃত ইসোয়াতিনি আফ্রিকার ক্ষুদ্রতম দেশগুলির মধ্যে অন্যতম। তা সত্ত্বেও দেশটির জলবায়ু এবং স্থলাঞ্চলে বিভিন্ন ধরনের বৈচিত্র্য রয়েছে। দেশটি শীতল এবং বৃষ্টিপাত যুক্ত উচ্চ পাহাড়ী এলাকা থেকে উষ্ণ এবং শুষ্ক নিম্ন এলাকা নিয়ে গঠিত।

ইসোয়াতিনি রাজ্য

Umbuso weSwatini (Swati)
ইসোয়াতিনির জাতীয় পতাকা
পতাকা
ইসোয়াতিনির জাতীয় মর্যাদাবাহী নকশা
জাতীয় মর্যাদাবাহী নকশা
নীতিবাক্য: 
"Siyinqaba" (Swati)
"আমরা একটি দুর্গ"
"আমরা একটি রহস্য"
"আমরা নিজেদের লুকিয়ে রাখি"
"আমরা শক্তিশালীদের অন্যতম"
জাতীয় সঙ্গীত: 
"এনকুলুএনকুলু ম্নিকাতি ওয়েতিবুসিসো তেমাস্বতি"
"হে ঈশ্বর, সোয়াজিদের আশীর্বাদদাতা"

 ইসোয়াতিনি-এর অবস্থান (গাঢ় নীল) আফ্রিকা-এ (আসমানী)
 ইসোয়াতিনি-এর অবস্থান (গাঢ় নীল)

আফ্রিকা-এ (আসমানী)

রাজধানী

২৬°৩০′ দক্ষিণ ৩১°৩০′ পূর্ব / ২৬.৫০০° দক্ষিণ ৩১.৫০০° পূর্ব / -26.500; 31.500
বৃহত্তম নগরীমানজিনি
সরকারি ভাষা
নৃগোষ্ঠী
  • ৮৪% সোয়াজি
  • ১০% জুলু
  • ০৬% অন্যান্য
ধর্ম
(2017)
জাতীয়তাসূচক বিশেষণ
  • এমাস্বাতি (plural)
  • লিসওয়াতি (singular)
সরকারএকক রাজতন্ত্র
• রাজা
মেসওয়াতি তৃতীয়
• এন্ডিলোভুকাতি
এন্টিফোম্বি
ক্লিওপ্লাস ডলামিনি
• প্রধান বিচারপতি
ভেকি মাফালালা
আইন-সভাপার্লামেন্ট
• উচ্চকক্ষ
সিনেট
• নিম্নকক্ষ
হাউস অফ অ্যাসেম্বলি
যুক্তরাজ্য হতে স্বাধীনতা
• গৃহীত
৬ সেপ্টেম্বর ১৯৬৮
• জাতিসংঘ সদস্যপদ লাভ
২৪ সেপ্টেম্বর ১৯৬৮
• বর্তমান সংবিধান
২০০৫
• পুনর্নামকরণ
১৯ এপ্রিল ২০১৮
আয়তন
• মোট
১৭,৩৬৪ কিমি (৬,৭০৪ মা) (১৫৩তম)
• পানি (%)
০.৯
জনসংখ্যা
• ২০২০ আনুমানিক
১১,৬০,১৬৪ (১৫৫তম)
• ২০১৭ আদমশুমারি
১০,৯৩,২৩৮
• ঘনত্ব
৬৬.৮/কিমি (১৭৩.০/বর্গমাইল) (১৩৫তম)
জিডিপি (পিপিপি)২০২১ আনুমানিক
• মোট
$১০.৭১৭ বিলিয়ন
• মাথাপিছু
$৯,৪০৯
জিডিপি (মনোনীত)২০২১ আনুমানিক
• মোট
$৪.৫১৭ বিলিয়ন
• মাথাপিছু
$৩,৯৬৫
জিনি (২০১৬)নেতিবাচক বৃদ্ধি ৫৪.৬
উচ্চ
মানব উন্নয়ন সূচক (২০১৯)বৃদ্ধি ০.৬১১
মধ্যম · ১৩৮তম
মুদ্রা
  • লিলাঙ্গেনি (এসজেডএল)
  • সাউথ আফ্রিকান রেন্ড(জেডএআর)
সময় অঞ্চলইউটিসি+২ (এসএএসটি)
গাড়ী চালনার দিকleft
কলিং কোড+২৬৮
ইন্টারনেট টিএলডি.sz
ওয়েবসাইট
www.gov.sz

দেশের জনসংখ্যার বেশিরভাগ অংশ জাতিগতভাবে সোয়াজি। দেশের মূল ভাষা সোয়াজি (স্থানীয় ভাবে সিসোয়াতি নামে পরিচিত)। সোয়াজিরা ১৮ তম শতাব্দীর মাঝামাঝি নাগভানে তৃতীয়-এর নেতৃত্বের অধীনে তাদের রাজ্য প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। দেশ ও সোয়াজি জাতি তাদের নাম গ্রহণ করেছে ১৯ শতকের রাজা মসোয়াতি দ্বিতীয়-এর থেকে, যার শাসনামলে সোয়াজি অঞ্চল বিস্তৃত এবং ঐক্যবদ্ধ ছিল। বর্তমান সীমানা ১৮৮১ সালে আফ্রিকা দখলের লড়াই-এর সময়কালে তৈরি হয়েছিল। দ্বিতীয় বোয়ার যুদ্ধের পর, সোয়াজিল্যান্ড নামে দেশটি ব্রিটিশের অধীনে ছিল ১৯০৩ সাল থেকে ১৯৬৮ সালের ৬ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত। ১৯৬৮ সালের ৬ সেপ্টেম্বর দেশটি স্বাধীনতা লাভ করে। ২০১৮ সালের এপ্রিল মাসে দেশের সরকারী নাম কিংডম অব সোয়াজিল্যান্ড থেকে কিংডম অব ইসোয়াতিনি-এ পরিবর্তন করা হয়, যা সাধারণত সোয়াজি ভাষায় ব্যবহৃত হয়।

দেশে দ্বৈতশাসন ব্যবস্থার সরকার রয়েছে। ১৯৮৬ সালের পর এনভেনমামা ("রাজা") মসোয়াতি তৃতীয় এবং এনডলভুকতি ("রানী মা") এনফোব্বি তফওয়ালা কর্তৃক দেশটি যৌথভাবে শাসিত হচ্ছে। রাজা রাষ্ট্রের প্রশাসনিক প্রধান। তিনি দেশের প্রধানমন্ত্রী এবং দেশের সংসদ উভয় কক্ষের (সেনেট এবং সংসদ অধিবেশনের) প্রতিনিধি নিযুক্ত করেন এবং রাষ্ট্রের রাষ্ট্রপতির দায়িত্ব পালন করেন। তিনি জাতির প্রথাগত উৎসব এবং বার্ষিক উমলংঙা অনুষ্ঠানের সময় সভাপতিত্ব করেন। সংসদ অধিবেশনে এবং সেনেট সংখ্যাগরিষ্ঠতা নির্ধারণের জন্য প্রতি পাঁচ বছরে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। ইসোয়াতিনির বর্তমান সংবিধান ২০০৫ সালে গৃহীত হয়েছিল। আগস্ট/সেপ্টেম্বরে অনুষ্ঠিত উমলংঙ্গা এবং ডিসেম্বর/জানুয়ারিতে অনুষ্ঠিত রাজপরিবার নাচ ইনভাল্লা দেশের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ উৎসব।

ইসোয়াতিনি একটি উন্নয়নশীল ছোট অর্থনীতির দেশ। দেশটি ৯.৭১৪ ডলারের মাথাপিছু জিডিপি দিয়ে এটি নিম্ন-মধ্যম আয়ের দেশ হিসাবে শ্রেণীবদ্ধ। সাউদার্ন আফ্রিকান কাস্টমস ইউনিয়ন (এসএসিইউ) এবং পূর্ব ও দক্ষিণ আফ্রিকা (সিএমএমএসএ) এর সাধারণ বাজারের সদস্য হিসাবে ইসোয়াতিনির প্রধান স্থানীয় বাণিজ্যিক অংশীদার হল দক্ষিণ আফ্রিকা। অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করার জন্য, ইসোয়াতিনি মুদ্রা লিলাঙ্গেনি দক্ষিণ আফ্রিকার রেন্ডে চূড়ান্ত। ইসোয়াতিনির প্রধান বিদেশী বাণিজ্যিক অংশীদার মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং ইউরোপীয় ইউনিয়ন। দেশের অধিকাংশ কর্মসংস্থান তার কৃষি ও উৎপাদন খাত দ্বারা সরবরাহ করা হয়। ইসোয়াতিনি সাউদার্ন আফ্রিকান ডেভেলপমেন্ট কমিউনিটি (এসএডিসি), আফ্রিকান ইউনিয়ন, কমনওয়েলথ নেশনস এবং জাতিসংঘের সদস্য।

দেশটির জনসংখ্যা অনেক স্বাস্থ্য সমস্যাগুলির মুখোমুখি। এইচআইভি/এইডস এবং ক্ষুদ্রতর ব্যাপ্তির যক্ষ্মা রোগ ব্যাপকভাবে বিস্তৃত। দেশে আনুমানিক ২৬% প্রাপ্তবয়স্ক জনসংখ্যা এইচআইভি আক্রান্ত। ২০১৮ সাল পর্যন্ত ৫৮ বছর ধরে ইসোয়াতিনি বিশ্বের ১২ তম সর্বনিম্ন আয়ুর দেশ। ইসোয়াতিনি জনসংখ্যার অধিকাংশ অল্প বয়স্ক, দেশের জনগণের গড় বয়স ২০.৫ বছর এবং ১৪ বছরের বা তার চেয়ে কম বয়সের লোকেরা দেশের মোট জনসংখ্যার ৩৭.৫%। বর্তমান জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার ১.২%।

ইতিহাস

প্রায় ২,০০,০০০ বছর আগে, প্রারম্ভিক প্রস্তর যুগে মানব ক্রিয়াকলাপের ইঙ্গিতকারী প্রত্নতাত্ত্বিক কিছু বস্তু ইসোয়াতিনিতে পাওয়া গেছে। ইসোয়াতিনিতে প্রাপ্ত প্রাগৈতিহাসিক রক আর্ট চিত্রকর্ম সমূহ প্রায় ২৭,০০০ বছর আগের। ১৯ শতকের পরবর্তী সময়ে এগুলো দেশের বিভিন্ন স্থানে পাওয়া যায়।

এই অঞ্চলের প্রাচীনতম পরিচিত বাসিন্দারা ছিল খোইসান শিকারী-সংগ্রাহক। বান্টু মাইগ্রেশনের সময় তারা এনগুনি জনগোষ্ঠীর দ্বারা প্রতিস্থাপিত হয়েছিলেন। এনগুনি জনগোষ্ঠী পূর্ব এবং মধ্য আফ্রিকার গ্রেট লেক অঞ্চল থেকে উদ্ভূত। ইসোয়াতিনিতে প্রায় ৪র্থ শতাব্দীর সময় থেকে কৃষি ও লোহার ব্যবহারের প্রমাণ পাওয়া যায়। বর্তমান সোথো এবং এনগুনি ভাষা ব্যবহারকারীদের পূর্বপুরুষরা ১১ শতকের পরেই বসতি স্থাপন শুরু করে।

সোয়াজি বসতি স্থাপনকারী (১৮তম এবং ১৯তম শতক)

সোয়াজি বসতি স্থাপনকারীরা তখন এনগওয়ানে (বা বাকাএনগওয়ানে ) নামে পরিচিত ছিল। ইসোয়াতিনিতে প্রবেশ করার আগে তারা পঙ্গোলা নদীর তীরে বসতি স্থাপন করেছিল। এর আগে তারা বর্তমান মাপুটো এবং মোজাম্বিকের কাছে টেম্বে নদীর এলাকায় রাজ্য স্থাপন করেছিল। ঐ অঞ্চলের জনগণের সাথে ক্রমাগত বিরোধ তাদের আরও উত্তরের দিকে ধাবিত করে। পরবর্তীতে এনগওয়ান তৃতীয় ম্লোশেনি পাহাড়ের পাদদেশে শিসেলওয়েনিতে তার রাজধানী স্থাপন করেন।

শোভুজা প্রথমের অধীনে, এনওয়াগনে জনগোষ্ঠী অবশেষে বর্তমানের ইসোয়াতিনি এর কেন্দ্রস্থলে জম্বোদজে তাদের রাজধানী স্থাপন করে।এই প্রক্রিয়ায় তারা এমাখান্দজাম্বিলি নামে পরিচিত দেশের আদি নৃ-গোষ্ঠীগুলি দ্বারা শাসিত অঞ্চলসমূহ জয় করে এবং নিজেদের অঞ্চলের অন্তর্ভুক্ত করে।

ইসোয়াতিনি 
১৯ শতকের একটি সোয়াজি পাত্র, কাঠে খোদাই করা

ইসোয়াতিনি নামটি এসেছে রাজা দ্বিতীয় মেসওয়াতির নাম থেকে।কাঁগওয়ানে হলো ইসোয়াতিনির একটি বিকল্প নাম, যে নামটি আগওয়ানে তৃতীয়-এর নামানুসারে করা হয়েছে। এনখোশি শব্দের আক্ষরিক অর্থ "রাজা"। মসোয়াতি দ্বিতীয় ছিলেন ইসোয়াতিনির যুদ্ধরত রাজাদের মধ্যে সর্বশ্রেষ্ঠ এবং তিনি দেশটির আয়তন বর্তমান আয়তনের দ্বিগুণ পরিমাণে প্রসারিত করেছিলেন।এমাখান্দজাম্বিলি গোষ্ঠীগুলিকে প্রাথমিকভাবে রাজ্যে বিস্তৃত স্বায়ত্তশাসনের সাথে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছিল এবং বিশেষ আচার এবং রাজনৈতিক মর্যাদা দেয়া হয়েছিল। তাদের স্বায়ত্তশাসনের পরিধি মসোয়াতি ব্যাপকভাবে হ্রাস করেছিলেন। তিনি ১৮৫০-এর দশকে তাদের কিছু অংশকে আক্রমণ করেছিলেন এবং পরাজিত করেছিলেন।

ক্ষমতার প্রসারণের সাথে মসোয়াতি বিজয়ের মাধ্যমে বা অন্য জনগোষ্ঠীসমূহকে আশ্রয় দিয়ে তার রাজ্যে আরও বেশি লোককে অন্তর্ভুক্ত করার সময় এমখান্দজাম্বিলির প্রভাবকে ব্যাপকভাবে হ্রাস করেছিলেন। পরে এই আগমনগুলি সোয়াজিদের কাছে ইমাফিকামুভা নামে পরিচিত হয়।

ইসোয়াতিনি 
দক্ষিণ আফ্রিকার অন্তর্ভুক্ত সোয়াজিল্যান্ড , ১৮৯৬ সালে

সোয়াজি জাতির স্বায়ত্তশাসন ১৯তম এবং বিংশ শতকের প্রথম দিকে দক্ষিণ আফ্রিকার ব্রিটিশ এবং ডাচ শাসন দ্বারা প্রভাবিত হয়েছিল। ১৮৮১ সালে ব্রিটিশ সরকার সোয়াজি স্বাধীনতাকে স্বীকৃতি দিয়ে একটি কনভেনশনে স্বাক্ষর করে, যদিও সেই সময়ে আফ্রিকা দখলের লড়াই চলছিল। ১৮৮৪ সালের লন্ডন কনভেনশনেও এই স্বাধীনতা স্বীকৃত হয়েছিল।

বিতর্কিত ভূমি/খনিজ অধিকার এবং অন্যান্য কারণে ১৮৮৯ সালে রাজা এমবান্ডজেনির মৃত্যুর পর ১৮৯০ সালে সোয়াজিল্যান্ডে একটি ট্রামভাইরাল প্রশাসন বজায় ছিল। এই সরকার ব্রিটিশ, ডাচ প্রজাতন্ত্র এবং সোয়াজি জনগণের প্রতিনিধিত্ব করেছিল। ১৮৯৪ সালে একটি কনভেনশন সোয়াজিল্যান্ডকে দক্ষিণ আফ্রিকান প্রজাতন্ত্রের অধীনে রাখে। ১৮৯৯ সালের অক্টোবরে দ্বিতীয় বোয়ার যুদ্ধের প্রাদুর্ভাবের আগ পর্যন্ত এটি এনগওয়ান পঞ্চমের -এর শাসনের অধীনে ছিল।

দ্বিতীয় বোয়ার যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর রাজা এনগওয়ান পঞ্চম ১৮৯৯ সালের ডিসেম্বরে মারা যান। তার উত্তরসূরি দ্বিতীয় সোভুজা মাত্র দুই মাস বয়সী ছিলেন। সোয়াজিল্যান্ড পরোক্ষভাবে ১৯০২ সাল পর্যন্ত দেশটিতে ব্রিটিশ এবং বোয়ার্সদের মধ্যে বিভিন্ন যুদ্ধে জড়িত ছিল।

সোয়াজিল্যান্ডে ব্রিটিশ শাসন (১৯০৬-১৯৬৮)

১৯০৩ সালে দ্বিতীয় বোয়ার যুদ্ধে ব্রিটিশদের বিজয়ের পর সোয়াজিল্যান্ড একটি ব্রিটিশ প্রোটেক্টরেট হয়ে ওঠে যা সোয়াজিল্যান্ড প্রোটেক্টরেট নামে পরিচিত। ১৯০৬ সাল পর্যন্ত যখন ট্রান্সভাল কলোনিদের স্ব-সরকার মঞ্জুর করা হয়েছিল তখন পর্যন্ত এর বেশিরভাগ প্রাথমিক প্রশাসন (উদাহরণস্বরূপ, ডাক পরিষেবা) দক্ষিণ আফ্রিকা থেকে পরিচালিত হয়েছিল। এর পরে সোয়াজিল্যান্ডকে ইউরোপীয় এবং অ-ইউরোপীয় (বা স্থানীয় রিজার্ভ) অঞ্চলে বিভক্ত করা হয়েছিল। শোভুজার আনুষ্ঠানিক রাজ্যাভিষেক হয়েছিল ১৯২১ সালের ডিসেম্বরে লাবোটসিবেনির রাজত্বের পরে।

১৯২৩ এবং ১৯৬৩ সালের মধ্যে সোভুজা দ্বিতীয় সোয়াজি বাণিজ্যিক আমাডোডা প্রতিষ্ঠা করেন যা সোয়াজি রিজার্ভগুলিতে ছোট ব্যবসার লাইসেন্স প্রদানের জন্য চালু ছিল। শিক্ষায় খ্রিস্টান মিশনের আধিপত্য মোকাবেলায তিনি় সোয়াজি ন্যাশনাল স্কুলও প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। সময়ের সাথে সাথে তার মর্যাদা বৃদ্ধি পায় এবং সোয়াজি রাজকীয় নেতৃত্ব ব্রিটিশ প্রশাসনের দুর্বল শক্তি এবং দক্ষিণ আফ্রিকার ইউনিয়নে সোয়াজিল্যান্ডের অন্তর্ভুক্তি প্রতিরোধে সফল হয়েছিল।

১৯৬৩ সালের নভেম্বরে ব্রিটেন স্বাধীন সোয়াজিল্যান্ডের জন্য সংবিধান জারি করেছিল যার শর্তাবলীর অধীনে আইন ও নির্বাহী পরিষদগুলি প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। এই উন্নয়নের বিরোধিতা করেছিল সোয়াজি ন্যাশনাল কাউন্সিল (লিকোকো )। এই ধরনের বিরোধিতা সত্ত্বেও নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয় এবং ৯ সেপ্টেম্বর ১৯৬৪ সালে সোয়াজিল্যান্ডের প্রথম আইন পরিষদ গঠিত হয়। লেজিসলেটিভ কাউন্সিলের প্রস্তাবিত মূল সংবিধানের পরিবর্তনগুলি ব্রিটেন দ্বারা গৃহীত হয়েছিল এবং একটি হাউস অফ অ্যাসেম্বলি এবং সেনেটের জন্য একটি নতুন সংবিধান তৈরি করা হয়েছিল। এই সংবিধানের অধীনে নির্বাচন ১৯৬৭ সালে অনুষ্ঠিত হয়।

স্বাধীনতা (১৯৬৮-বর্তমান)

১৯৬৭ সালের নির্বাচনের পর ১৯৬৮ সালে স্বাধীনতা পুনরুদ্ধার না হওয়া পর্যন্ত সোয়াজিল্যান্ড একটি প্রোটেক্টরেট রাষ্ট্র ছিল।

১৯৭৩ সালের নির্বাচনের পর, সোয়াজিল্যান্ডের সংবিধান রাজা দ্বিতীয় সোভুজা দ্বারা স্থগিত করা হয়েছিল, যিনি ১৯৮২ সালে তার মৃত্যুর আগ পর্যন্ত ডিক্রি দ্বারা দেশ শাসন করেছিলেন। সেই মুহুর্তে দ্বিতীয় সোভুজা প্রায় ৮৩ বছর ধরে সোয়াজিল্যান্ড শাসন করে আসছিলেন, যা তাকে ইতিহাসের সবচেয়ে দীর্ঘস্থায়ী রাজা বানিয়েছিল। তার মৃত্যুর পর রিজেন্ট ডিজেলিউ শোংওয়ে রাষ্ট্রপ্রধান হিসেবে ১৯৮৫ সাল পর্যন্ত দেশ শাসন করেন। অতঃপর তাকে লিকোকো দ্বারা অপসারণ করা হয় এবং তার স্থলাভিষিক্ত হন রানীমাতা এনটিফোম্বি টিফওয়ালা, তিনি মসোয়াতি তৃতীয়ের মা এবং প্রতিনিধি হিসেবে অন্তর্বর্তীকালীনভাবে দেশ শাসন করেন। মসোয়াতি তৃতীয় ২৫ এপ্রিল ১৯৮৬-এ সোয়াজিল্যান্ডের রাজা এবং রাজত্বের মুকুট লাভ করেন।

১৯৯০-এর দশকে ছাত্র ও শ্রমিক বিক্ষোভের ফলে রাজাকে সংস্কারের আহ্বান জানানো হয়। এইভাবে সাংবিধানিক সংস্কারের দিকে সোয়াজিল্যান্ডের অগ্রগতি শুরু হয়, যা ২০০৫ সালে বর্তমান সোয়াজি সংবিধান প্রবর্তনের মাধ্যমে শেষ হয়। রাজনৈতিক নেতাকর্মীদের আপত্তি সত্ত্বেও এটি ঘটেছে। বর্তমান সংবিধান স্পষ্টভাবে রাজনৈতিক দলগুলোর মর্যাদা নিয়ে আলোচনা করে না।

নতুন সংবিধানের অধীনে প্রথম নির্বাচন ২০০৮ সালে হয়েছিল।সংসদ সদস্যরা ৫৫টি নির্বাচনী এলাকা (তিনখুন্দলা নামেও পরিচিত) থেকে নির্বাচিত হন। এই সংসদ সদস্যরা পাঁচ বছরের মেয়াদে দায়িত্ব পালন করেন,যা ২০১৩ সালে শেষ হয়।

২০১১ সালে, সোয়াজিল্যান্ড এসএকিইউ প্রাপ্তি হ্রাসের কারণে অর্থনৈতিক সংকটের সম্মুখীন হয়েছিল। এর ফলে সরকার প্রতিবেশী দক্ষিণ আফ্রিকার কাছ থেকে ঋণের জন্য অনুরোধ করে। তবে তারা ঋণের শর্তের সাথে একমত হননি কেননা এর মধ্যে রাজনৈতিক সংস্কার অন্তর্ভুক্ত ছিল।

এই সময়কালে, সোয়াজি সরকারের উপর আরও সংস্কার করার জন্য চাপ বৃদ্ধি পায়। নাগরিক সংগঠন এবং ট্রেড ইউনিয়নগুলির দ্বারা প্রকাশ্য প্রতিবাদ আরও সাধারণ হয়ে ওঠে। ২০১২ থেকে শুরু করে, এসএকিইউ প্রাপ্তির উন্নতি সোয়াজি সরকারের উপর আর্থিক চাপ কমিয়েছে। সংবিধান প্রবর্তনের পর দ্বিতীয় নতুন সংসদ ২০ সেপ্টেম্বর ২০১৩-এ নির্বাচিত হয়েছিল। এরপর রাজা সিবুসিসো ডলামিনিকে তৃতীয়বারের মতো প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নিয়োগ দেন।

১৯ এপ্রিল ২০১৮-এ, রাজা মসোয়াতি তৃতীয় ঘোষণা করেন যে সোয়াজিল্যান্ডের রাজ্য নিজের নাম পরিবর্তন করে ইসোয়াতিনি নাম রেখেছে , যা সোয়াজির স্বাধীনতার ৫০ তম বার্ষিকী উপলক্ষ্যে ইসোয়াতিনি রাজ্যের বর্তমান নামের প্রতিফলন। নতুন নাম ইসোয়াতিনির সোয়াজি ভাষায় অর্থ "সোয়াজিদের দেশ"। সুইজারল্যান্ডের সাথে বিভ্রান্তি রোধ করার উদ্দেশ্যে এ নতুন নামকরণ করা হয়েছিল।

ইসোয়াতিনির কর্মীরা ১৯ সেপ্টেম্বর ২০১৮-এ কম বেতনের বিরুদ্ধে সরকার বিরোধী বিক্ষোভ শুরু করে। তারা ট্রেড ইউনিয়ন কংগ্রেস অফ ইসোয়াতিনি (টিইউসিওএসডব্লিউএ) দ্বারা সংগঠিত তিন দিনের ধর্মঘটে গিয়েছিল যার ফলে স্বাভাবিক কার্যক্রমে ব্যাপক ব্যাঘাত ঘটে।

২০২১ সালের জুনের শেষের দিকে গণতন্ত্রপন্থী বিক্ষোভ সারা দেশে ছড়িয়ে পড়ে যার ফলে দাঙ্গা, লুটপাট এবং পুলিশ ও সৈন্যদের সাথে রাস্তায় সংঘর্ষ শুরু হয়। রাজা মসোয়াতি তৃতীয় এর সাথে যুক্ত অনেকগুলি বিল্ডিং বিক্ষোভকারীরা পুড়িয়ে দিয়েছে এবং পুলিশ রাজনৈতিক প্রতিপক্ষদের আক্রমণ ও গ্রেপ্তার করছে বলে জানা গেছে। দ্য নিউ ইয়র্ক টাইমস ভূমিবেষ্টিত দেশটির অশান্তিকে এভাবে সংজ্ঞায়িত করে বলেছে, "ইসোয়াতিনির স্বাধীনতার ৫৩ বছরে সবচেয়ে বিস্ফোরক নাগরিক অস্থিরতা।" রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তা বাহিনীর হাতে অন্তত ২০ জন নিহত হয়েছে এবং আরো ডজন খানেক আহত ও আটক হয়েছে।সরকার ইন্টারনেটও বন্ধ করে দিয়েছে যা সেই সময়ে দেশের নির্ভরযোগ্য সংবাদ পাওয়া কঠিন করে তুলেছে। রাজাকে দেশ ছেড়ে পালিয়ে যাওয়ার আহ্বান করা হয়েছিল, যদিও সরকারি কর্মকর্তারা সেই দাবিগুলিকে বিতর্কিত বলে অভিহিত করেছিলেন এবং প্রতিবাদ বন্ধ করার আহ্বান জানিয়েছিলেন।

ভূগোল

ইসোয়াতিনি 
ইসোয়াতিনির টপোগ্রাফিক মানচিত্র

ইসোয়াতিনি একটি চ্যুতির উপর অবস্থিত যা লেসোথোর ড্রাকেনসবার্গ পর্বতমালা থেকে উত্তরে জিম্বাবুয়ের পূর্ব উচ্চভূমির মধ্যকার অঞ্চলে অবস্থিত। এ অঞ্চলসমূহ কেনিয়ার গ্রেট রিফ্ট ভ্যালি গঠন করেছে।

একটি ছোট স্থলবেষ্টিত রাজ্য হিসেবে ইসোয়াতিনি উত্তর, পশ্চিম এবং দক্ষিণে দক্ষিণ আফ্রিকা প্রজাতন্ত্র এবং পূর্বে মোজাম্বিক দ্বারা সীমাবদ্ধ। ইসোয়াতিনির জমির পরিমাণ ১৭,৩৬৪ বর্গ কিলোমিটার (৬,৭০৪ বর্গমাইল)। ইসোয়াতিনির চারটি পৃথক ভৌগোলিক অঞ্চল রয়েছে। ইসোয়াতিনি আনুমানিক ২৬°৩০'দ, ৩১°৩০'পূ অঞ্চলে অবস্থিত মোজাম্বিক সীমান্ত বরাবর পাহাড় থেকে শুরু করে পূর্বে সাভানা এবং উত্তর-পশ্চিমে রেইন ফরেস্ট পর্যন্ত ইসোয়াতিনিতে বিভিন্ন ধরনের প্রাকৃতিক দৃশ্য দেখা যায়। দেশের মধ্য দিয়ে বেশ কিছু নদী প্রবাহিত হয়, যেমন গ্রেট উসুতু নদী।

মোজাম্বিকের সাথে পূর্ব সীমান্তে লুবোম্বো নামক স্থানে একটি পর্বতশৃঙ্গ রয়েছে, যার উচ্চতা প্রায় ৬০০ মিটার (২,০০০ ফুট)। পর্বতগুলি তিনটি নদীর গিরিখাত দ্বারা ভেঙে গেছে। নদী সমূহ হল এনগওয়াভুমা, উসুতু এবং এমবুলুজি নদী। এটি গরু পালনের জন্য বিখ্যাত।

ইসোয়াতিনি 
ইসোয়াতিনির ভূমিচিত্র

মিডলভেল্ডের উচ্চতা গড়ে সমুদ্রপৃষ্ঠ হতে ৭০০ মিটার (২,৩০০ ফুট) উঁচু। এটি ইসোয়াতিনির সবচেয়ে ঘনবসতিপূর্ণ অঞ্চল। এম্বাবেন হল ইসোয়াতিনির প্রধান বাণিজ্যিক ও শিল্প শহর। এটি মিডলভেল্ডে অবস্থিত।

ইসোয়াতিনির নিম্নভূমি সমুদ্রপৃষ্ঠ হতে প্রায় ২৫০ মিটার (৮২০ ফুট) উঁচু। অন্যান্য এলাকার তুলনায় এটি কম জনবহুল। প্রারম্ভিক দিনগুলিতে ম্যালেরিয়া রোগের কারণে এই অঞ্চলের উন্নয়ন বাধাগ্রস্ত হয়েছিল।

ইসোয়াতিনিতে তিনটি বাস্তুতন্ত্র রয়েছে। বাস্তুতন্ত্রসমূহ হল: মাপুটাল্যান্ড উপকূলীয় বন মোজাইক বাস্তুতন্ত্র, জাম্বেজিয়ান বাস্তুতন্ত্র এবং মোপেন বনভূমি বাস্তুতন্ত্র। দেশটি ২০২৮ ফরেস্ট ল্যান্ডস্কেপ ইন্টিগ্রিটি ইনডেক্স-এ ৪.২১/১০ স্কোর পেয়েছিল। এটি ১৭২টি দেশের মধ্যে বিশ্বব্যাপী ১৪২তম স্থানে রয়েছে।

জলবায়ু

ইসোয়াতিনি চারটি জলবায়ু অঞ্চলে বিভক্ত: হাইওয়েল্ড, মিডলভেল্ড, লোভেল্ড এবং লুবোম্বো মালভূমি। ঋতুগুলি উত্তর গোলার্ধের ঋতুগুলির বিপরীত, ডিসেম্বর মাস গ্রীষ্মের মাঝামাঝি এবং জুনের মাঝামাঝি শীতকাল। সাধারণভাবে বলতে গেলে, গ্রীষ্মের মাসগুলিতে বেশিরভাগ সময় বৃষ্টিপাত হয় এবং প্রায়ই বজ্রপাত হয়।

শীতকাল ইসোয়াতিনির শুষ্ক মৌসুম। পশ্চিমের হাইওয়েল্ডে বার্ষিক বৃষ্টিপাত সবচেয়ে বেশি। প্রতিবছর এখানে ১,০০০ হতে ২,০০০ মিমি (৩৯.৪ হতে ৭৮.৭ ইঞ্চি) এর মত বৃষ্টিপাত হয়। পূর্বের দিকে আরো কম বৃষ্টিপাতের পরিমাণ দেখা যায়, লোভেল্ডের বৃষ্টিপাতের পরিমাণ মাত্র ৫০০ থেকে ৯০০ মিমি (১৯.৭ থেকে ৩৫.৪ ইঞ্চি)।

তাপমাত্রার তারতম্যও বিভিন্ন অঞ্চলের উচ্চতার সাথে সম্পর্কিত। হাইওয়েল্ড তাপমাত্রা নাতিশীতোষ্ণ এবং কদাচিৎ অস্বস্তিকরভাবে গরম, যখন গ্রীষ্মে লোভেল্ড অঞ্চলের তাপমাত্রা ৪০ °সে (১০৪ °ফা) এর কাছাকাছি থাকতে পারে।

ঋতু অনুসারে এম্বাবেনে গড় তাপমাত্রা:

বসন্ত সেপ্টেম্বর অক্টোবর ১৮ °সে (৬৪.৪ °ফা)
গ্রীষ্ম নভেম্বর-মার্চ ২০ °সে (৬৮ °ফা)
শরৎ এপ্রিল-মে ১৭ °সে (৬২.৬ °ফা)
শীতকাল জুন-আগস্ট ১৩ °সে (৫৫.৪ °ফা)

জলবায়ু পরিবর্তন

ইসোয়াতিনির জলবায়ু প্রধানত পরিবর্তনশীল , যা ক্রমাগত খরা এবং ঝড়ের তীব্রতাসহ বৃষ্টিপাতের পরিবর্তনে স্পষ্ট। এটি মরুকরণের দিকে পরিচালিত হচ্ছে, যার ফলে খাদ্য নিরাপত্তাহীনতা বৃদ্ধি হচ্ছে এবং নদী প্রবাহ হ্রাস পাচ্ছে। মোট বৈশ্বিক গ্রিনহাউস গ্যাস নির্গমনের একটি নগণ্য অংশের জন্য দায়ী হওয়া সত্ত্বেও ইসোয়াতিনি জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ। ইসোয়াতিনি সরকার উদ্বেগ প্রকাশ করেছে যে জলবায়ু পরিবর্তন বিদ্যমান সামাজিক চ্যালেঞ্জ যেমন দারিদ্র্য, উচ্চ এইচআইভি প্রাদুর্ভাব এবং খাদ্য নিরাপত্তাহীনতাকে আরও বাড়িয়ে তুলছে এবং দেশের উন্নয়নের ক্ষমতাকে ব্যাপকভাবে সীমিত করবে। অর্থনৈতিকভাবে জলবায়ু পরিবর্তন ইতিমধ্যেই ইসোয়াতিনির ওপর বিরূপ প্রভাব ফেলেছে। উদাহরণস্বরূপ, ২০১৫-২০১৬ খরার কারণে চিনি এবং কোমল পানীয়ের উৎপাদন হ্রাস পেয়েছে, যা দেশটির রপ্তানি আয় হ্রাস করেছে। উল্লেখ্য, ইসোয়াতিনির বৃহত্তম অর্থনৈতিক রপ্তানি হল চিনি এবং কোমল পানীয়।

ইসোয়াতিনির প্রধান রপ্তানির অনেকগুলি প্রাথমিক এবং কৃষিজাত পণ্য এবং তাই পরিবর্তনশীল জলবায়ুর জন্য ঝুঁকিপূর্ণ।

জীববৈচিত্র্য এবং সংরক্ষণ

ইসোয়াতিনি 
গ্রেউয়া ভিলোসা

ইসোয়াতিনির একটি আনুষ্ঠানিক এবং অনানুষ্ঠানিক জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ ক্ষেত্র রয়েছে যা দেশের সমৃদ্ধ জৈবিক বৈচিত্র্যকে রক্ষা করে। এই অঞ্চলগুলি দেশের ভূমির প্রায় ৫% নিয়ে গঠিত। ইসোয়াতিনিতে মেরুদণ্ডী প্রাণীর ৮২০টিরও বেশি প্রজাতি এবং ২৪০০টিরও বেশি প্রজাতির উদ্ভিদ রয়েছে, যার মধ্যে অনেক স্থানীয় প্রজাতি রয়েছে। এই বৈচিত্র্য নির্দেশ করে যে ইসোয়াতিনি জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণের জন্য বিশ্বব্যাপী গুরুত্বপূর্ণ।

ভূমির অবক্ষয় এবং অন্যান্য ভূমি ব্যবহারের রূপান্তর হল জীববৈচিত্র্যের জন্য প্রধান হুমকি, যার মধ্যে রয়েছে বৃক্ষরোপণ , কৃষি (আইনি এবং অবৈধ-দুভাবেই), গুল্ম পরিষ্কার করা, বিদেশী এবং আক্রমণাত্মক উদ্ভিদের বিস্তার এবং অ-টেকসই সম্পদ আহরণ‌।

ইসোয়াতিনি জৈবিক বৈচিত্র্য সংক্রান্ত কনভেনশন (১৯৯৪), বিপন্ন প্রজাতির আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের কনভেনশন (এসআইটিইএস,১৯৭৩), জলবায়ু পরিবর্তন সম্পর্কিত ইউনাইটেড ন্যাশনাল ফ্রেমওয়ার্ক কনভেনশন (১৯৯২) এবং অন্যান্য পরিবেশ চুক্তির স্বাক্ষরকারী। জাতীয় জীববৈচিত্র্য ব্যবস্থাপনার জন্য দায়ী তিনটি প্রধান সরকারি মন্ত্রণালয়: ইসোয়াতিনি ন্যাশনাল ট্রাস্ট কমিশন (এসএনটিসি), ইসোয়াতিনি এনভায়রনমেন্ট অথরিটি (ইইএ) এবং কৃষি ও সমবায় মন্ত্রণালয় (এমওএসি)।

এছাড়াও বিগ গেম পার্কস (বিজিপি, একটি বেসরকারী সংস্থা) গেম অ্যাক্টের ব্যবস্থাপনার দায়িত্বপ্রাপ্ত, যা বন্যপ্রাণী এবং সিআইটিইএস নিয়ন্ত্রণ করে।

দেশে ছয়টি গেজেটেড সংরক্ষিত এলাকা এবং দশটিরও বেশি অনানুষ্ঠানিক সংরক্ষিত এলাকা রয়েছে। আনুষ্ঠানিকভাবে গেজেটেড এলাকাগুলির মধ্যে রয়েছে: মালোটজা নেচার রিজার্ভ (ইএনটিসি), মান্তেঙ্গা নেচার রিজার্ভ (ইএনটিসি), ম্লাউলা নেচার রিজার্ভ (ইএনটিসি), মিলওয়ানে, এংখায়া গেম রিজার্ভস (বিজিপি) এবং হ্লেন রয়্যাল ন্যাশনাল পার্ক।

এগুলি ছাড়াও, অনেকগুলি ব্যক্তিগত এবং সম্প্রদায় প্রকৃতির সংরক্ষণাগার রয়েছে, সেইসাথে কিছু মিশ্র শাসন কাঠামো রয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে: ডোম্বেয়া গেম রিজার্ভ, এমবুলুজি গেম রিজার্ভ, শেউলা নেচার রিজার্ভ, ফোফোনিয়ান নেচার রিজার্ভ, রয়্যাল জোজিনি গেম রিজার্ভ, আইওয়াইএসআইএস (ইনয়োনি ইয়ামি), এনগওয়েম্পিসি ওয়াইল্ডনারনেস, সিবেবে এবং অন্যান্য। অন্যান্য সংরক্ষণ অঞ্চলের মধ্যে রয়েছে: ন্যাচারাল হিস্ট্রি সোসাইটি অফ ইসোয়াতিনি এবং ইসোয়াতিনি গেম রেঞ্চার্স অ্যাসোসিয়েশন (এসজিআরএ)।

২০১৪ থেকে ২০২১ সাল পর্যন্ত, ইসোয়াতিনি ইউএনডিপি এবং ইএনডিসি দ্বারা সহায়তাকৃত এবং জিইএফ দ্বারা অর্থায়ন করা "স্ট্রেংথেনিং দ্য ন্যাশনাল প্রটেক্টেড এরিয়াস সিস্টেম" প্রকল্পে (এসএনপিএএস) অংশগ্রহণ করেছিল।এই প্রকল্পটি সংরক্ষণের ফলাফলকে শক্তিশালী করার চেষ্টা করেছে এবং সারা দেশে জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণের জাতীয় পদচিহ্ন রেখেছে।

সংরক্ষণ সহায়তার জন্য যোগ্য ক্ষেত্রগুলি বিস্তৃত করার প্রয়াসে (যা প্রকৃতপক্ষে সংরক্ষণ ব্যবস্থাপনা করে) ইউএনডিপি ২০১৮ সালে অনানুষ্ঠানিক বা নন-গেজেটেড সংরক্ষণ এলাকার জন্য একটি নতুন বিভাগ প্রতিষ্ঠা করেছে।

এগুলোকে এখন বলা হয় ওইসিএম বা অন্যান্য কার্যকরী সংরক্ষণ ব্যবস্থা। এসএনপিএএস প্রকল্প এই ওইসিএম প্রকল্প গ্রহণ করেছে এবং ২০২১ সালে ইসোয়াতিনিতে অনানুষ্ঠানিক সংরক্ষণ ক্ষেত্রগুলিকে প্রত্যয়িত করা শুরু করেছে।

ইসোয়াতিনির ৫০৭টি পাখির প্রজাতি রয়েছে, যার মধ্যে ১১টি বিশ্বব্যাপী বিপন্ন প্রজাতি এবং চারটি প্রবর্তিত প্রজাতি রয়েছে এবং ১০৭টি স্তন্যপায়ী প্রজাতি ইসোয়াতিনিতে রয়েছে, যার মধ্যে রয়েছে সমালোচনামূলকভাবে বিপন্ন দক্ষিণ-কেন্দ্রীয় কালো গন্ডার এবং আরও সাতটি বিপন্ন বা দুর্বল প্রজাতি।

ইসোয়াতিনি পাখি সমৃদ্ধ দেশ, যার মধ্যে রয়েছে সাদা-ব্যাকড শকুন, সাদা-মাথা, ল্যাপেট-ফেসড এবং কেপ শকুন, মার্শাল ঈগল, ব্যাটেলিউর এবং লং-ক্রেস্টেড ঈগলের মতো রাপ্টার এবং মারাবু স্টর্কের দক্ষিণতম বাসা বাঁধার স্থান।

সরকার এবং রাজনীতি

ইসোয়াতিনি 
১৯৮৬ সাল থেকে মসোয়াতি তৃতীয় ইসোয়াতিনির রাজা।

রাজতন্ত্র

ইসোয়াতিনিতে সাংবিধানিক বিধান এবং সোয়াজি আইন ও রীতিনীতি চালু রয়েছে। এখানে গণতন্ত্র ও নিরঙ্কুশ রাজতন্ত্র উভয় ব্যবস্থা চালু রয়েছে। রাজ্যের প্রধান হলেন রাজা বা এনগুয়েনিয়ামা (অর্থ : সিংহ )। বর্তমানে রাজা হলেন মসোয়াতি তৃতীয়, যিনি ১৯৮২ সালে তার পিতা রাজা দ্বিতীয় সোভুজা মারা যাওয়ার পর ১৯৮৬ সালে সিংহাসনে আরোহণ করেন। দেশটির সংবিধান অনুসারে, এনগুয়েনিয়ামা সোয়াজি জাতির ঐক্য এবং অনন্তকালের প্রতীক।

তাকে রাজ্যের প্রশাসনিক প্রধান হিসাবে এবং একজন আধ্যাত্মিক ও জাতীয় রাষ্ট্রপ্রধান হিসাবে দেখা হয়েছিল এবং বাস্তব ক্ষমতা রাজার সাথে ভারসাম্য রক্ষা করেছিল। কিন্তু দ্বিতীয় সোভুজা-এর দীর্ঘ শাসনামলে এনডলোউকাটির ভূমিকা আরও প্রতীকী হয়ে ওঠে।

রাজা আইনসভা থেকে প্রধানমন্ত্রী নিয়োগ করেন এবং উপদেষ্টা পরিষদের সহায়তায় লিবন্ডলা (সংসদ) উভয় কক্ষে সংখ্যালঘু বিধায়ক নিয়োগ করেন। সংবিধানে রাজাকে বিশেষ স্বার্থের প্রতিনিধিত্ব করার জন্য সংসদে কিছু সদস্য নিয়োগ করার অনুমতি দেওয়া হয়েছে। তারা হলেন সেই ধরনের নাগরিক যারা নির্বাচনী প্রার্থী হতে পারেন কিন্তু নির্বাচিত হননি বা প্রার্থী হিসাবে দাঁড়াতে পারেনি। সংসদে মতামতের ভারসাম্য আনতে এটি করা হয়। বিশেষ নিয়োগ হতে পারে বিশেষ লিঙ্গ বা বর্ণের মানুষ, অক্ষমতার মানুষ, ব্যবসায়ী সম্প্রদায়, নাগরিক সমাজ, পণ্ডিত এবং প্রধানগণ।

সংসদ

ইসোয়াতিনির দ্বিকক্ষ বিশিষ্ট সংসদ বা লিবান্ডলা নামের সিনেট রয়েছে (৩০টি আসন; ১০জন সদস্য হাউস অফ অ্যাসেম্বলি দ্বারা নিযুক্ত এবং ২০ জন রাজা কর্তৃক নিযুক্ত; পাঁচ বছরের মেয়াদে কাজ করার জন্য নিয়োগপ্রাপ্ত হন) এবং হাউস অফ অ্যাসেম্বলি (৬৫ আসন; ১০ জন সদস্য রাজার দ্বারা নিযুক্ত এবং ৫৫ জন জনগণের ভোটে নির্বাচিত; পাঁচ বছরের মেয়াদে কাজ করার জন্য তারাও নিয়োগপ্রাপ্ত হন)। রাজা কর্তৃক সংসদ ভেঙ্গে দেওয়ার পর প্রতি পাঁচ বছর পর পর নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। সর্বশেষ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছিল ১৮ আগস্ট এবং ২১ সেপ্টেম্বর ২০১৮ তারিখে। নির্দলীয় পদ্ধতিতে ভোটগ্রহণ করা হয়।সমস্ত নির্বাচনী প্রক্রিয়া নির্বাচন ও সীমানা কমিশন দ্বারা তত্ত্বাবধান করা হয়।

রাজনৈতিক সংস্কৃতি

১৯৬৮ সালের ৬ সেপ্টেম্বর সোয়াজিল্যান্ডের স্বাধীনতার সময় সোয়াজিল্যান্ড একটি ওয়েস্টমিনিস্টার ব্যবস্থার ন্যায় সংবিধান গ্রহণ করে। ১২ এপ্রিল ১৯৭৩-এ রাজা দ্বিতীয় সোভুজা ডিক্রির মাধ্যমে এটি বাতিল করেন এবং সমস্ত নির্বাহী, বিচার বিভাগীয় এবং আইন প্রণয়ন বিষয়ে সর্বোচ্চ ক্ষমতা গ্রহণ করেন। হাউস অফ অ্যাসেম্বলির জন্য প্রথম নির্দলীয় নির্বাচন ১৯৭৮ সালে অনুষ্ঠিত হয়েছিল এবং সেগুলি রাজা কর্তৃক নির্ধারিত নির্বাচনী এলাকা হিসাবে টিনখুন্ডলার অধীনে পরিচালিত হয়েছিল এবং নির্বাচন তত্ত্বাবধানের জন্য রাজা কর্তৃক নিযুক্ত একটি নির্বাচনী কমিটি গঠন করা হয়েছিল।

১৯৯৩ সালের নির্বাচন পর্যন্ত, ব্যালট গোপন ছিল না, ভোটারদের নিবন্ধন করা হয়নি এবং তারা সরাসরি প্রতিনিধি নির্বাচন করতেন না। এ প্রক্রিয়ার পরিবর্তে ভোটাররা পছন্দের প্রার্থীর জন্য মনোনীত একটি গেট অতিক্রম করতেন। এভাবেই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতো। পরবর্তীতে ১৯৯৬ সালের জুলাই মাসে রাজা মসোয়াতি তৃতীয়ের দ্বারা একটি সাংবিধানিক পর্যালোচনা কমিশন নিযুক্ত করা হয়েছিল, যেখানে প্রধান ব্যক্তি, রাজনৈতিক কর্মী এবং ইউনিয়নবাদীদের সমন্বয়ে একটি নতুন সংবিধানের জন্য জনসাধারণের জমা দেওয়া এবং খসড়া প্রস্তাবগুলি বিবেচনা করা হয়েছিল।

এ নির্বাচন নিয়ে গঠিত কমিশনের মন্তব্যের জন্য খসড়া প্রকাশ করা হয়েছিল মে ১৯৯৯ এবং নভেম্বর ২০০০-এ। সোয়াজিল্যান্ডের সুশীল সমাজ সংস্থা এবং অন্যত্র মানবাধিকার সংস্থাগুলির দ্বারা এইগুলির কঠোর সমালোচনা করা হয়েছিল৷ একটি নতুন সংবিধান প্রণয়নের জন্য ২০০১ সালের ডিসেম্বরে একটি ১৫ সদস্যের দল ঘোষণা করা হয়েছিল। এই দলের বেশ কয়েকজন সদস্য রাজপরিবারের ঘনিষ্ঠ ছিলেন।

২০০৫ সালে সংবিধান কার্যকর করা হয়েছিল। সাংবিধানিক সংস্কার নিয়ে দেশে এখনো অনেক বিতর্ক রয়েছে। সত্তরের দশকের গোড়ার দিকে রাজকীয় আধিপত্যের বিরুদ্ধে সক্রিয় প্রতিরোধ ছিল।

নির্বাচন

মনোনয়ন গোষ্ঠী প্রধানদের মধ্যে সঞ্চালিত হয়।মনোনয়নের দিন, মনোনীত প্রার্থীর হাত উত্থাপন করা হয় এবং মনোনীত ব্যক্তিকে তিনি মনোনয়ন গ্রহণ করেন কিনা তা নির্দেশ করার সুযোগ দেওয়া হয়। যদি তিনি এটি গ্রহণ করেন, তবে তাকে কমপক্ষে দশজন সদস্য দ্বারা সমর্থিত হতে হবে। প্রার্থীরা প্রধানত সংসদ সদস্য, নির্বাচনী এলাকার প্রধান ( ইন্ডভুনা ) এবং নির্বাচনী কার্যনির্বাহী কমিটির ( বুকোফো ) পদের জন্য মনোনীত হন। মনোনীতদের সর্বনিম্ন সংখ্যা চার এবং সর্বোচ্চ দশজন।

প্রাইমারি নির্বাচনও প্রধান পদে অনুষ্ঠিত হয়। এটা গোপন ব্যালটের মাধ্যমে অনুষ্ঠিত হয়। প্রাথমিক নির্বাচনের সময়, ভোটারদের সেই নির্দিষ্ট প্রধানের জন্য কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য (বুকোফো) নির্বাচন করার সুযোগ দেওয়া হয়। সংসদের উচ্চাকাঙ্ক্ষী সদস্য এবং নির্বাচনী প্রধানও প্রতিটি রাজ্য থেকে নির্বাচিত হন। মাধ্যমিক ও চূড়ান্ত নির্বাচন তিনখুন্দলা নামক আসনে অনুষ্ঠিত হয়।

প্রাথমিক নির্বাচনে জয়ী প্রার্থীরা ইনখুন্দলা বা নির্বাচনী স্তরে মাধ্যমিক নির্বাচনের জন্য মনোনীত বলে বিবেচিত হয়। সংখ্যাগরিষ্ঠ ভোটে মনোনীত ব্যক্তিরা বিজয়ী হন এবং তারা সংসদ সদস্য বা নির্বাচনী এলাকার প্রধান হন।

বিদেশী সম্পর্ক

ইসোয়াতিনি জাতিসংঘ, কমনওয়েলথ অফ নেশনস, আফ্রিকান ইউনিয়ন, পূর্ব ও দক্ষিণ আফ্রিকার সাধারণ বাজার এবং দক্ষিণ আফ্রিকান উন্নয়ন সম্প্রদায়ের সদস্য। ২০১৯ সালের হিসাবে, এটি আফ্রিকার একমাত্র দেশ যেটি তাইওয়ানের সাথে সম্পর্ক বজায় রেখেছে এবং গণপ্রজাতন্ত্রী চীনের সাথে সম্পর্ক রাখেনি।

বিচার বিভাগ

ইসোয়াতিনির বিচার ব্যবস্থা একটি দ্বৈত ব্যবস্থা। ২০০৫ সালের সংবিধান চারটি আঞ্চলিক ম্যাজিস্ট্রেট আদালত, একটি হাইকোর্ট এবং একটি আপিল আদালত (সুপ্রিম কোর্ট) নিয়ে গঠিত পশ্চিমা আদলের উপর ভিত্তি করে একটি আদালত ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করেছে, যা রাজার নিয়ন্ত্রণ থেকে স্বাধীন। এছাড়াও, ঐতিহ্যবাহী আদালত (সোয়াজি আদালত বা প্রথাগত আদালত) ছোটখাটো অপরাধ এবং প্রথাগত সোয়াজি আইন ও প্রথার লঙ্ঘন নিয়ে কাজ করে।

বিচারকরা রাজা কর্তৃক নিযুক্ত হন এবং সাধারণত দক্ষিণ আফ্রিকার প্রবাসী হন। সুপ্রিম কোর্ট, যা পূর্ববর্তী আপিল আদালতের প্রতিস্থাপিত হয়েছে, প্রধান বিচারপতি এবং কমপক্ষে চারজন সুপ্রিম কোর্টের বিচারক নিয়ে গঠিত। হাইকোর্ট প্রধান বিচারপতি এবং কমপক্ষে চারজন হাইকোর্টের বিচারপতি নিয়ে গঠিত।

প্রধান বিচারপতিরা

  • ১৯৬৭-১৯৭০: স্যার ইসাডোর ভিক্টর এলগান
  • ১৯৯৮-২০০২: স্ট্যানলি স্যাপায়ার
  • ২০০২-২০০৭: জ্যাকবাস আনানন্দেল (ভারপ্রাপ্ত)
  • ২০০৭-২০১০: রিচার্ড বান্দা
  • ২০১০-২০১৫: মাইকেল রামোদিবেদী
  • ২০১৫-বর্তমান: ভেকি মাফলালা

সামরিক

ইসোয়াতিনি 
সোয়াজি সেনা কর্মকর্তারা

ইসোয়াতিনি সামরিক প্রতিরক্ষা বাহিনী প্রাথমিকভাবে অভ্যন্তরীণ বিক্ষোভের সময় কিছু সীমান্তে প্রতিরক্ষা এবং শুল্ক আদায়ের দায়িত্ব পালনে ব্যবহৃত হয়। সামরিক বাহিনী কখনই বিদেশী সংঘর্ষে জড়ায়নি। রাজা হলেন প্রতিরক্ষা বাহিনীর সর্বাধিনায়ক এবং প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের মূল মন্ত্রী।

প্রতিরক্ষা বাহিনীতে আনুমানিক ৩,০০০ জন সদস্য রয়েছে, যার মধ্যে সেনাবাহিনী সবচেয়ে বড় অংশ। এখানে একটি ছোট বিমান বাহিনী রয়েছে, যা প্রধানত রাজার পাশাপাশি পণ্যসম্ভার এবং কর্মীদের পরিবহন, অনুসন্ধান ও উদ্ধার ফাংশন সহ ভূমি জরিপ করা এবং জাতীয় জরুরী পরিস্থিতিতে জরিপ করার জন্য ব্যবহৃত হয়।

প্রশাসনিক বিভাগ

অঞ্চলগুলি একজন আঞ্চলিক প্রশাসক দ্বারা পরিচালিত হয়, যিনি প্রতিটি ইনখুন্ডলায় নির্বাচিত সদস্যদের দ্বারা সহায়তা করেন।

এলাকার উন্নয়নের স্তরের উপর নির্ভর করে স্থানীয় সরকারকে আলাদাভাবে কাঠামোবদ্ধ গ্রামীণ ও নগর পরিষদে বিভক্ত করা হয়েছে। যদিও স্থানীয় কর্তৃপক্ষের বিভিন্ন রাজনৈতিক কাঠামো রয়েছে, কার্যকর নগর পরিষদ হল পৌরসভা এবং গ্রামীণ পরিষদ হল টিনখুন্ডলা৷ ইসোয়াতিনিতে ১২টি পৌরসভা ও ৫৫টি তিনখুন্দলা রয়েছে। শহরাঞ্চলে তিন স্তরের সরকার রয়েছে এবং এগুলো হল সিটি কাউন্সিল, টাউন কাউন্সিল এবং টাউন বোর্ড। শহর বা শহরের আকার বিবেচনা করে আঞ্চলিক সরকারের সংখ্যা বাড়তে বা কমতে পারে। গ্রামীণ এলাকায় তিনটি স্তর রয়েছে। এগুলো হল আঞ্চলিক প্রশাসন, তিনখুন্দলা এবং প্রধান রাজ্য। বিভিন্ন উপ-কমিটির সুপারিশের ভিত্তিতে পূর্ণ কাউন্সিলের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। টাউন ক্লার্ক হল প্রতিটি স্থানীয় কাউন্সিল কাউন্সিল বা টাউন বোর্ডের প্রধান উপদেষ্টা। দুটি সিটি কাউন্সিল, তিনটি টাউন কাউন্সিল এবং সাতটি টাউন বোর্ড নিয়ে বারোটি ঘোষিত নগর এলাকা রয়েছে। ইসোয়াতিনির প্রধান শহরগুলি হল মানজিনি, এমবাবেন, হ্লাঙ্গানো এবং সিতেকি। এ শহরসমূহ ইসোয়াতিনি অঞ্চল সমূহের আঞ্চলিক রাজধানীও। প্রথম দুটিতে সিটি কাউন্সিল এবং পরের দুটিতে টাউন কাউন্সিল রয়েছে। উল্লেখযোগ্য জনসংখ্যাবিশিষ্ট অন্যান্য ছোট শহর বা শহুরে এলাকা হল ইজুলউইনি, মাতসাফা, হ্লাতিখুলু, পিগস পিক, সিমুনি এবং বিগ বেন্ড। উপরে উল্লিখিত হিসাবে, ইসোয়াতিনিতে ৫৫টি টিনখুন্ডলা রয়েছে এবং প্রত্যেকে ইসোয়াতিনির হাউস অফ অ্যাসেম্বলিতে একজন করে প্রতিনিধি নির্বাচন করে। প্রতিটি ইনখুন্দলায় একটি উন্নয়ন কমিটি ( বুকোফো ) রয়েছে যা তার এলাকার বিভিন্ন নির্বাচনী প্রধানদের থেকে পাঁচ বছরের মেয়াদে নির্বাচিত হয়। বুকোফো ইনখুন্ডলার কাছে তাদের বিভিন্ন প্রধান রাজ্যের স্বার্থ এবং উদ্বেগের সমস্ত বিষয় নিয়ে আসে এবং ইনখুন্ডলার সিদ্ধান্তগুলি প্রধানদের কাছে ফিরিয়ে নেয়। বুকোফোর চেয়ারম্যান ইনখুন্ডলাতে নির্বাচিত হন এবং তাকে ইন্দভুনা ইয়ে এনখুন্দলা বলা হয়।

ইসোয়াতিনি এবং তাদের প্রধান শহরগুলির প্রশাসনিক অঞ্চল
অঞ্চল রাজধানী বৃহত্তম শহর এলাকা
(বর্গ কিলোমিটার)
জনসংখ্যা
হোহোহো এমবাবনে এমবাবনে ৩,৬২৫ ৩,২০,৬৫১
লুবোম্বো সাইটকি সাইটকি ৫,৮৪৯ ২,১২,৫৩১
মানজিনি মানজিনি মানজিনি ৪,০৯৩ ৩,৫৫,৯৪৫
শিসেলওয়েনি নহলঙ্গানো নহলঙ্গানো ৩,৭৮৬ ২,০৪,১১১

অর্থনীতি

ইসোয়াতিনি 
ইসোয়াতিনির রপ্তানির একটি আনুপাতিক চিত্র

ইসোয়াতিনির অর্থনীতি বৈচিত্র্যময়। কৃষি, বনজ এবং খনিজ সম্পদ জিডিপির প্রায় ২৩%। উৎপাদন (টেক্সটাইল এবং চিনি-সম্পর্কিত প্রক্রিয়াকরণ) জিডিপি এবং পরিষেবাগুলির ২৭% প্রতিনিধিত্ব করে। সরকারী পরিষেবা সমূহ জিডিপির ৫০% গঠন করে। টাইটেল ডিড ল্যান্ডস (টিডিএল) এ উচ্চমূল্যের ফসল (চিনি, বনজ, এবং সাইট্রাস) উৎপন্ন হয়‌। উচ্চ স্তরের বিনিয়োগ এবং সেচ এবং উচ্চ উৎদনশীলতা এ অঞ্চলের একটি বৈশিষ্ট্য।[তথ্যসূত্র প্রয়োজন]

জনসংখ্যার প্রায় ৭৫% সোয়াজি নেশন ল্যান্ডে (এসএনএল) জীবিকা নির্বাহের জন্য কৃষিতে নিযুক্ত। বাণিজ্যিক খামারের বিপরীতে সোয়াজি নেশন ল্যান্ড কম উৎপাদনশীলতা এবং বিনিয়োগ লাভ করে। সোয়াজি অর্থনীতির এই দ্বৈত প্রকৃতি ইসোয়াতিনিতে বৈষম্য বাড়িয়ে তুলছে।

আখের চাষ হলো দেশের প্রধান সম্পদের উৎস। এজন্য অনেক অঞ্চলে গ্রামীণ জনগোষ্ঠীকে বাধ্যতামূলকভাবে উচ্ছেদ করে বাগান গড়ে তোলা, শিশু শ্রম, ৬০ ঘন্টা পর্যন্ত কাজের সপ্তাহ ইত্যাদি বৈষম্য দেখা যায়।ইন্টারন্যাশনাল ট্রেড ইউনিয়ন কনফেডারেশন শ্রমিকদের দুরবস্থা বলতে বোঝায় "কঠিন এবং অস্বাস্থ্যকর কাজের অবস্থা, দুর্বিষহ মজুরি এবং ইউনিয়ন করার যে কোনো প্রচেষ্টার সহিংস দমন।" ইসোয়াতিনির অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি প্রতিবেশীদের তুলনায় পিছিয়ে রয়েছে।২০০১ সাল থেকে প্রকৃত জিডিপি প্রবৃদ্ধি গড়ে ২.৮%, যা অন্যান্য দক্ষিণ আফ্রিকান কাস্টমস ইউনিয়ন (এসএকিইউ) সদস্য দেশগুলির বৃদ্ধির তুলনায় প্রায় ২ শতাংশ কম। নিম্ন কৃষি উৎপাদনশীলতা, বারবার খরা, এইচআইভি/এইডস-এর বিধ্বংসী প্রভাব এবং একটি অত্যধিক বড় এবং অদক্ষ সরকারি সেক্টর সম্ভবত এই অবস্থার জন্য দায়ী। ১৯৯০ এর দশকের শেষের দিকে ইসোয়াতিনির অর্থনীতির অবনতি ঘটে যা এক দশক আগে উল্লেখযোগ্য উদ্বৃত্তের পরে সংঘটিত হয়। রাজস্ব হ্রাস এবং ব্যয় বৃদ্ধির সংমিশ্রণ উল্লেখযোগ্য বাজেট ঘাটতির দিকে পরিচালিত করে।

ইসোয়াতিনি 
এম্বাবনে কেন্দ্রীয় ব্যাংক

উল্লেখযোগ্য ব্যয় আরও অর্থনৈতিক বৃদ্ধির দিকে পরিচালিত করেনি এবং দরিদ্রদের উপকার করেনি। বর্ধিত ব্যয়ের বেশিরভাগই মজুরি, স্থানান্তর এবং ভর্তুকি সম্পর্কিত বর্তমান ব্যয়ে চলে গেছে। মজুরি বিল জিডিপির ১৫% এবং মোট সরকারি ব্যয়ের ৫৫%। এসএকিইউ রাজস্বের সাম্প্রতিক দ্রুত বৃদ্ধি রাজস্ব পরিস্থিতিকে গতিশীল করেছে এবং ২০০৬ সাল থেকে একটি উল্লেখযোগ্য উদ্বৃত্ত রেকর্ড করা হয়েছে। এসএকিইউ রাজস্ব বর্তমান সরকারের মোট রাজস্বের ৬০% এর বেশি। ইতিবাচক দিক থেকে, গত ২০ বছরে বহিরাগত ঋণের বোঝা উল্লেখযোগ্যভাবে হ্রাস পেয়েছে এবং দেশীয় ঋণ প্রায় নগণ্য; ২০০৬ সালে জিডিপির শতাংশ হিসাবে বৈদেশিক ঋণ ছিল ২০% এর কম।

ইসোয়াতিনির অর্থনীতি দক্ষিণ আফ্রিকার অর্থনীতির সাথে খুব ঘনিষ্ঠভাবে জড়িত, যেখান থেকে এটি তার আমদানির ৯০% এর বেশি গ্রহণ করে এবং যেখানে এটি তার রপ্তানির প্রায় ৭০% পাঠায়। ইসোয়াতিনির অন্যান্য প্রধান ব্যবসায়িক অংশীদার হল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং ইইউ, যাদের কাছ থেকে দেশটি পোশাক ও চিনি রপ্তানির জন্য নির্বাচিত হয়েছে। তারা আফ্রিকান গ্রোথ অ্যান্ড অপারচুনিটি অ্যাক্ট (এজিওএ) এর অধীনে দেশটি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে পোশাক রপ্তানি করবে এবং ইইউতে চিনি রপ্তানি করবে।

এই চুক্তির অধীনে পোশাক এবং চিনি রপ্তানি খাত ভাল করেছে, যা দ্রুত অর্থনৈতিক বৃদ্ধি এবং বিদেশী প্রত্যক্ষ বিনিয়োগের একটি শক্তিশালী প্রবাহ নিশ্চিত করেছে। ২০০০ থেকে ২০০৬ সালের মধ্যে বস্ত্র রপ্তানি ২০০% বৃদ্ধি পেয়েছে এবং একই সময়ের মধ্যে চিনি রপ্তানি ৫০% এরও বেশি বৃদ্ধি পেয়েছে।

ইসোয়াতিনি 
ইসোয়াতিনি দক্ষিণ আফ্রিকান কাস্টমস ইউনিয়নের অংশ।(সবুজ রঙে চিহ্নিত)

রপ্তানি খাতের ক্রমাগত প্রাণবন্ততা টেক্সটাইলের জন্য বাণিজ্য পছন্দ অপসারণ, পূর্ব এশিয়ার দেশগুলির জন্য অনুরূপ পছন্দগুলিতে যোগদান এবং ইইউ বাজারে চিনির জন্য অগ্রাধিকারমূলক মূল্যের কারণে হুমকির মুখে পড়েছে৷ ইসোয়াতিনিকে এইভাবে পরিবর্তিত বৈশ্বিক পরিবেশে প্রতিযোগিতামূলক থাকার চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হতে হবে। এই চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হল বিনিয়োগের পরিবেশ।

সম্প্রতি সমাপ্ত বিনিয়োগ জলবায়ু মূল্যায়ন এই বিষয়ে কিছু ইতিবাচক ফলাফল প্রদান করে। ইসোয়াতিনি ফার্মগুলি সাব-সাহারান আফ্রিকায় সবচেয়ে বেশি উৎপাদনশীল। তবে তারা অন্যান্য অঞ্চলের সবচেয়ে বেশি উৎপাদনশীল মধ্য-আয়ের দেশগুলির ফার্মগুলির তুলনায় কম উৎপাদনশীল। তারা নিম্ন মধ্যম আয়ের দেশগুলির থেকে কিছুটা এগিয়ে, কিন্তু অপর্যাপ্ত শাসন ব্যবস্থা এবং অবকাঠামোর কারণে ইসোয়াতিনির উন্নয়ন বাধাগ্রস্ত হয়।

ইসোয়াতিনির মুদ্রা লিলাঞ্জেনি দক্ষিণ আফ্রিকার মুদ্রার সাথে পেগ করা হয়েছে, যা দক্ষিণ আফ্রিকায় ইসোয়াতিনির আর্থিক নীতির অন্তর্ভুক্ত। সাউদার্ন আফ্রিকান কাস্টমস ইউনিয়নের শুল্ক এই বছরের সরকারি রাজস্বের ৭০% সমান হতে পারে এবং দক্ষিণ আফ্রিকা থেকে কর্মীদের রেমিটেন্স যথেষ্ট পরিমাণে অভ্যন্তরীণভাবে অর্জিত আয়ের পরিপূরক। ইসোয়াতিনি আইএমএফ প্রোগ্রামের যোগ্যতা অর্জনের জন্য যথেষ্ট দরিদ্র নয়। যাইহোক, দেশটি সিভিল সার্ভিসের আকার কমাতে এবং পাবলিক এন্টারপ্রাইজে খরচ নিয়ন্ত্রণ করতে লড়াই করছে। সরকার প্রত্যক্ষ বিদেশী বিনিয়োগের পরিবেশ উন্নত করার চেষ্টা করছে।

সরকারী পরিষেবাগুলির অবস্থা খুব খারাপ। দেশে মাত্র বারোটি পাবলিক অ্যাম্বুলেন্স রয়েছে, প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলিতে সাধারণত আর ক্যান্টিন দেখা যায় না এবং ফার্মেসিগুলি অদৃশ্য হয়ে যাচ্ছে।

১৫,০০০ ব্যবসায়ীরা দেশের বেশিরভাগ সম্পদ নিয়ে যায়। এই ধনীদের মধ্যে রয়েছে দক্ষিণ আফ্রিকার বিনিয়োগকারীরা যারা সোয়াজিল্যান্ডে তিনগুণ সস্তা কর্মী খুঁজতে এসেছেন এবং একদল শ্বেতাঙ্গ ব্যবসায়ী যারা ব্রিটিশ বসতি স্থাপনকারীদের উত্তরাধিকারী।

রাজা মসোয়াতি তৃতীয় সরকারী খরচের জন্য জাতীয় বাজেটের ৮% পান। সশস্ত্র বাহিনীর মতো পুলিশ বাহিনী বাজেটের ৫% পায়।

সমাজ

জনসংখ্যা

ইসোয়াতিনি 
১৯৫০-২০২১ সালে ইসোয়াতিনির জনসংখ্যা (হাজারে)

ইসোয়াতিনির জনসংখ্যার বেশিরভাগই জাতিগতভাবে সোয়াজি। অল্প সংখ্যক জুলু এবং সাদা আফ্রিকানদের সাথে মিশ্রিত, যাদের বেশিরভাগই ব্রিটিশ এবং আফ্রিকান বংশোদ্ভূত। ঐতিহ্যগতভাবে সোয়াজিরা কৃষক এবং পশুপালক ছিল, কিন্তু বেশিরভাগই এখন ক্রমবর্ধমান শহুরে আনুষ্ঠানিক অর্থনীতি এবং সরকারী কাজের সাথে কৃষিকাজ এবং পশুপালন মিশ্রিত করে জীবিকা নির্বাহ করে। কিছু সোয়াজি দক্ষিণ আফ্রিকার খনিতে কাজ করে।

ইসোয়াতিনিতে মোজাম্বিক থেকে পর্তুগিজ বসতি স্থাপনকারী এবং আফ্রিকান উদ্বাস্তুরা এসেছিলেন। ইসোয়াতিনি খ্রিস্টধর্ম কখনও কখনও ঐতিহ্যগত বিশ্বাস এবং অনুশীলনের সাথে মিশ্রিত হয়। অনেক ঐতিহ্যবাদীরা বিশ্বাস করেন যে বেশিরভাগ সোয়াজি জনগণ রাজাকে একটি বিশেষ আধ্যাত্মিক ভূমিকার অধিকারী বলে মনে করেন।

জনসংখ্যা কেন্দ্রীভূত শহরসমূহ

এটি ইসোয়াতিনির প্রধান শহর ও শহরগুলির একটি তালিকা। নীচের সারণীতে জনসংখ্যা এবং অঞ্চলও রয়েছে।

পদমর্যাদা শহর ১৯৮৬ সালের আদমশুমারি আদমশুমারি ১৯৯৭ ২০০৫ সালের অনুমান অঞ্চল
১. মানজিনি ৪৬,০৫৮ ৭৮,৭৩৪ ১,১০,৫৩৭ মানজিনি
২. এমবাবনে ৩৮,২৯০ ৫৭,৯৯২ ৭৬,২১৮ হোহোহো
৩. নহলঙ্গানো ৪,১০৭ ৬,৫৪০ ৯,০১৬ শিসেলওয়েনি
৪. সাইটকি ২,২৭১ ৪,১৫৭ ৬,১৫২ লুবোম্বো

ভাষা

সিস্বতী (স্বাতি, সোয়াজি বা সিস্বতী নামেও পরিচিত) হল এনগুনি গোষ্ঠীর একটি বান্টু ভাষা, যেটি ইসোয়াতিনি এবং দক্ষিণ আফ্রিকায় কথ্য। এই ভাষা ২৫ লক্ষ লোকের কথ্য ভাষা এবং স্কুলে পড়ানো হয় এ ভাষায়। ইংরেজির পাশাপাশি সিস্বতী ইসোয়াতিনির একটি সরকারী ভাষা এবং দক্ষিণ আফ্রিকার অন্যতম সরকারী ভাষা। ইংরেজি হল স্কুল, ব্যবসা পরিচালনা এবং প্রেসে যোগাযোগের মাধ্যম।

প্রায় ৭৬,০০০ মানুষ জুলু ভাষায় কথা বলে। সোঙ্গা ভাষা সমগ্র অঞ্চল জুড়ে ১৯,০০০ লোকের কথ্য ভাষা। আফ্রিকান ভাষা আফ্রিকান বংশোদ্ভূত কিছু বাসিন্দাদের কথ্য ভাষা হিসেবে ব্যবহৃত হয়। মোজাম্বিক এবং উত্তর ও মধ্য পর্তুগাল থেকে পর্তুগিজ ভাষাভাষীদের বৃহৎ জনগোষ্ঠীর কারণে বিদ্যালয়ে পর্তুগিজকে তৃতীয় ভাষা হিসেবে চালু করা হয়েছে।

ধর্ম

ইসোয়াতিনিতে মোট জনসংখ্যার ৮৩ শতাংশ খ্রিস্টধর্ম মেনে চলে। আফ্রিকান জায়নিস্ট (৪০%) সহ অ্যাংলিকান, প্রোটেস্ট্যান্ট এবং আদিবাসী আফ্রিকান গির্জাগুলিতে সংখ্যাগরিষ্ঠ খ্রিস্টান রয়েছে। তারপরে জনসংখ্যার ৬% এ রোমান ক্যাথলিক ধর্ম রয়েছে। ১৮ জুলাই ২০১২-এ, এলিনাহ ওয়ামুকোয়া, সোয়াজিল্যান্ডের অ্যাংলিকান বিশপ নির্বাচিত হন। তিনি আফ্রিকার প্রথম মহিলা যিনি একজন বিশপ হন এবং ২০২১ সালের জানুয়ারিতে তার মৃত্যুর আগ পর্যন্ত সেই পদে দায়িত্ব পালন করেন। জনসংখ্যার পনের শতাংশ ঐতিহ্যবাহী আফ্রিকান ধর্ম অনুসরণ করে[তথ্যসূত্র প্রয়োজন] ; দেশে প্রচলিত অন্যান্য অ-খ্রিস্টান ধর্মের মধ্যে রয়েছে ইসলাম (২%) , বাহাই ধর্ম (০.৫%), এবং হিন্দুধর্ম (০.২%)। ২০১৩ সালে ১৪টি ইহুদি পরিবার ছিল।

ইসোয়াতিনি নন-সিভিল বিবাহ যেমন ইসলামিক-রীতি বিবাহ চুক্তিকে স্বীকৃতি দেয় না।

স্বাস্থ্য

২০১৬ সালের হিসাবে, বিশ্বে ১৫ থেকে ৪৯ বছর বয়সী লোকেদের মধ্যে ইসোয়াতিনিতে এইচআইভির সর্বাধিক প্রকোপ রয়েছে (২৭.২%)।

শিক্ষা

ইসোয়াতিনি 
ইসোয়াতিনির একটি গ্রামীণ প্রাথমিক বিদ্যালয়

ইসোয়াতিনিতে শিক্ষা শুরু হয় শিশুদের জন্য প্রাক-স্কুল শিক্ষা, সাধারণ শিক্ষা ও প্রশিক্ষণের জন্য প্রাথমিক, মাধ্যমিক এবং উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষা (জিইটি)। তৃতীয় স্তরে বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজের মাধ্যমে উচ্চ শিক্ষা চালু রয়েছে। প্রাক-স্কুল শিক্ষা সাধারণত ৫ বছর বা তার কম বয়সী শিশুদের জন্য হয়। এর পরে, একজন শিক্ষার্থী দেশের যে কোনো স্থানে প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ভর্তি হতে পারবে। ইসোয়াতিনিতে প্রারম্ভিক শৈশব যত্ন এবং শিক্ষা কেন্দ্রগুলি প্রিস্কুল বা পাড়ার যত্ন পয়েন্টে রূপ নেয়। দেশে ২১.৬% প্রি-স্কুল বয়সের শিশুদের প্রাথমিক শৈশব শিক্ষার সুযোগ রয়েছে।

ইসোয়াতিনিতে প্রাথমিক শিক্ষা শুরু হয় ছয় বছর বয়সে।এটি একটি সাত বছরের কর্মসূচী যা গ্রেড ৭-এ প্রাথমিক-বিদ্যালয় পরীক্ষার সমাপ্তি [এসপিসি] দিয়ে শেষ হয় যা একটি স্থানীয়ভাবে ভিত্তিক মূল্যায়ন যা স্কুলের মাধ্যমে পরীক্ষা পরিষদ দ্বারা পরিচালিত হয়। প্রাথমিক শিক্ষা গ্রেড ১ থেকে ৭ গ্রেড পর্যন্ত।

ইসোয়াতিনিতে মাধ্যমিক এবং উচ্চ বিদ্যালয় শিক্ষা ব্যবস্থা হল একটি পাঁচ বছরের প্রোগ্রাম যা তিন বছরের জুনিয়র সেকেন্ডারি এবং দুই বছরের সিনিয়র সেকেন্ডারিতে বিভক্ত। জুনিয়র সেকেন্ডারির শেষে একটি বাহ্যিক পাবলিক পরীক্ষা (জুনিয়র সার্টিফিকেট) আছে যা শিক্ষার্থীদের সিনিয়র সেকেন্ডারি লেভেলে অগ্রগতির জন্য পাস করতে হবে। সোয়াজিল্যান্ডের পরীক্ষা পরিষদ এই পরীক্ষা পরিচালনা করে। সিনিয়র সেকেন্ডারি লেভেলের শেষে, শিক্ষার্থীরা একটি পাবলিক পরীক্ষায় বসে, যেটি সোয়াজিল্যান্ড জেনারেল সার্টিফিকেট অফ সেকেন্ডারি এডুকেশন (এসজিসিএসই) এবং ইন্টারন্যাশনাল জেনারেল সার্টিফিকেট অফ সেকেন্ডারি এডুকেশন (আইজিসিএসই) যা কেমব্রিজ ইন্টারন্যাশনাল এক্সামিনেশন (সিআইই) দ্বারা স্বীকৃত। কয়েকটি স্কুল তাদের পাঠ্যক্রমে অ্যাডভান্সড স্টাডিজ (এএস) প্রোগ্রাম অফার করে।

ইসোয়াতিনিতে প্রাথমিক, মাধ্যমিক এবং উচ্চ বিদ্যালয় সহ ৮৩০টি পাবলিক স্কুল রয়েছে। এছাড়াও ৩৪টি স্বীকৃত প্রাইভেট স্কুল রয়েছে এবং অতিরিক্ত ১৪টি অস্বীকৃত স্কুল আছে। সবচেয়ে বেশি সংখ্যক স্কুল হল হোহো অঞ্চলে। ২০০৯ সালের হিসাবে ইসোয়াতিনিতে শিক্ষা প্রাথমিক স্তরে প্রধানত প্রথম-চতুর্থ শ্রেণী পর্যন্ত বিনামূল্যে শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালিত হয়। অনাথ শিশুদের জন্য শিক্ষা বিনামূল্যে পরিচালিত হয়, কিন্তু বাধ্যতামূলক নয়।

১৯৯৬ সালে, প্রাথমিক স্তরে লিঙ্গ সমতা সহ মোট প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ভর্তির হার ছিল ৯০.৮%। ১৯৯৮ সালে, ৮০.৫% শিশু গ্রেড পাঁচে পৌঁছেছে। ইসোয়াতিনিতে একটি ইউনাইটেড ওয়ার্ল্ড কলেজ রয়েছে।

১৯৬৩ সালে, ওয়াটারফোর্ড স্কুল (পরবর্তীতে ওয়াটারফোর্ড কামলাবা ইউনাইটেড ওয়ার্ল্ড কলেজ অফ সাউদার্ন আফ্রিকা নাম ধারণ করে) দক্ষিণ আফ্রিকার প্রথম বহুজাতিক স্কুল হিসাবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। ১৯৮১ সালে, ওয়াটারফোর্ড কামলাবা আফ্রিকান মহাদেশের প্রথম ইউনাইটেড ওয়ার্ল্ড কলেজ হিসাবে ইউনাইটেড ওয়ার্ল্ড কলেজ আন্দোলনে যোগ দিয়েছিল এবং ২০১৯ সাল পর্যন্ত যখন ইউডব্লিউসি, পূর্ব আফ্রিকা প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল তখন পর্যন্ত একমাত্র আফ্রিকান ইউডব্লিউসি ছিল।

প্রাপ্তবয়স্ক এবং উপানুষ্ঠানিক শিক্ষা কেন্দ্রগুলি হল সেবন্তা ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট এবং এমলালাতিনি উন্নয়ন কেন্দ্র, যা স্কুলের শিশু এবং অল্প বয়স্কদের জন্য বিকল্প শিক্ষার সুযোগ প্রদান করে যারা তাদের স্কুলে পড়া শেষ করতে পারেনি।

উচ্চ শিক্ষা

ইউনিভার্সিটি অফ ইসোয়াতিনি, সাউদার্ন আফ্রিকান নাজারেন ইউনিভার্সিটি এবং সোয়াজিল্যান্ড ক্রিশ্চিয়ান ইউনিভার্সিটি (এসসিইউ) হল সেই প্রতিষ্ঠান যা দেশে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষা প্রদান করে।লিমকোকউইং ইউনিভার্সিটি অফ ক্রিয়েটিভ টেকনোলজির ক্যাম্পাস রয়েছে সিডওয়াশিনিতে , যা রাজধানী এমবাবেনের একটি শহরতলিতে অবস্থিত।এনওয়াগনে টিচার্স কলেজ এবং উইলিয়াম পিচার কলেজ হল দেশের শিক্ষাদানকারী কলেজ।সিতেকির গুড শেফার্ড হাসপাতাল নার্সিং সহকারীদের জন্য প্রতিষ্ঠিত কলেজ।

ইউনিভার্সিটি অফ ইসোয়াতিনি হল জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়, যা ১৯৮২ সালে পার্লামেন্টের আইন দ্বারা প্রতিষ্ঠিত। কোয়ালুসেনিতে এর প্রধান ক্যাম্পাস। এম্বাবেনে এবং লুয়েঙ্গো- তে অতিরিক্ত ক্যাম্পাস রয়েছে। সাউদার্ন আফ্রিকান নাজারেন ইউনিভার্সিটি (এসএএনইউ) ২০১০ সালে নাজারেন কলেজ অফ নার্সিং, কলেজ অফ থিওলজি এবং নাজারেন টিচার্স কলেজের একীভূতকরণ হিসাবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। এটি রাই ফিটকিন মেমোরিয়াল হাসপাতালের পাশে মানজিনিতে অবস্থিত। এটি এমন বিশ্ববিদ্যালয় যা দেশে সবচেয়ে বেশি নার্স তৈরি করে। একটি বিশ্ববিদ্যালয় হিসাবে, এটির তিনটি অনুষদ আছে , যার মধ্যে একটি সিতেকিতে রয়েছে (ধর্মতত্ত্ব অনুষদ) এবং অন্য দুটি মানজিনিতে রয়েছে (শিক্ষা অনুষদ এবং স্বাস্থ্য বিজ্ঞান অনুষদ)।

এসসিইউ চিকিৎসা শিক্ষার উপর দৃষ্টি নিবদ্ধ করে। এটি ২০১২ সালে প্রতিষ্ঠিত হয় এবং এটি ইসোয়াতিনির নতুন বিশ্ববিদ্যালয়। এটি এম্বাবেনে প্রতিষ্ঠিত হয়। লিমককউইং ইউনিভার্সিটির ক্যাম্পাস ২০১২ সালে এমবাবেনের সিদ্ধবাশিনীতে খোলা হয়েছিল।

ইসোয়াতিনিতে কারিগরি প্রশিক্ষণের প্রধান কেন্দ্র হল সোয়াজিল্যান্ড কলেজ অফ টেকনোলজি (এসসিওটি) যা একটি পূর্ণ বিশ্ববিদ্যালয়ে পরিণত হতে চলেছে। এটি বাণিজ্যিক, শিল্প এবং পাবলিক সেক্টরের সাথে সহযোগিতায় প্রযুক্তি এবং ব্যবসায়িক অধ্যয়নে উচ্চ মানের প্রশিক্ষণ প্রদানের লক্ষ্য রাখে। অন্যান্য কারিগরি ও বৃত্তিমূলক প্রতিষ্ঠানের মধ্যে রয়েছে মাতসাফায় গোয়ামিল ভোকেশনাল অ্যান্ড কমার্শিয়াল ট্রেনিং ইনস্টিটিউট, মানজিনির মানজিনি ইন্ডাস্ট্রিয়াল অ্যান্ড ট্রেনিং সেন্টার (এমআইটিসি), হ্লাঙ্গানো কৃষি দক্ষতা প্রশিক্ষণ কেন্দ্র এবং সাইটকি শিল্প প্রশিক্ষণ কেন্দ্র।

এই প্রতিষ্ঠানগুলি ছাড়াও, রাজ্যে সোয়াজিল্যান্ড ইনস্টিটিউট অফ ম্যানেজমেন্ট অ্যান্ড পাবলিক অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (সিমপা) এবং ইনস্টিটিউট অফ ডেভেলপমেন্ট ম্যানেজমেন্ট (আইডিএম) রয়েছে।এসআইএমপিএ হল একটি সরকারী মালিকানাধীন ব্যবস্থাপনা ও উন্নয়ন প্রতিষ্ঠান এবং আইডিএম হল বতসোয়ানা, লেসোথো এবং ইসোয়াতিনির একটি আঞ্চলিক সংস্থা, যা ব্যবস্থাপনায় প্রশিক্ষণ, পরামর্শ এবং গবেষণা প্রদান করে। নর্থ ক্যারোলিনা স্টেট ইউনিভার্সিটির পুল কলেজ অফ ম্যানেজমেন্ট হল সিম্পার একটি সহযোগী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। মানাঙ্গা ম্যানেজমেন্ট সেন্টারটি ১৯৭২ সালে মানাঙ্গা এগ্রিকালচারাল ম্যানেজমেন্ট সেন্টার হিসাবে ইজুলউইনিতে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল একটি আন্তর্জাতিক ব্যবস্থাপনা উন্নয়ন কেন্দ্র হিসাবে যা মধ্যম ও সিনিয়র ম্যানেজারদের প্রশিক্ষণ প্রদান করে।

সংস্কৃতি

ইসোয়াতিনি 
রিড নৃত্য উৎসবে রাজা মেসওয়াতি তৃতীয় যেখানে তিনি তার পরবর্তী স্ত্রী বেছে নেবেন

প্রধান সোয়াজি সামাজিক একক হল আবাসস্থল। এটি একটি ঐতিহ্যবাহী কুঁড়েঘর যা শুকনো ঘাস দিয়ে তৈরি। একটি বহুগামী বসতবাড়িতে, প্রতিটি স্ত্রীর নিজস্ব কুঁড়েঘর এবং উঠোন থাকে যা খাগড়ার বেড়া দিয়ে ঘেরা। প্রতিটি বাড়িতে ঘুমানোর, রান্না করার এবং স্টোরেজ (বিয়ার রাখার) জন্য তিনটি কাঠামো থাকে। বৃহত্তর বসতবাড়িতে অবিবাহিতদের কোয়ার্টার এবং অতিথিদের থাকার জায়গা হিসেবে ব্যবহারের জন্য ঘর রয়েছে।

ঐতিহ্যবাহী বসতবাড়ির কেন্দ্রস্থল হল ক্যাটেল বায়রে‌। এটি‌‌‍ একটি বৃত্তাকার এলাকা যা বড় বড় লগ দ্বারা ঘেরা, শাখা দ্বারা বিভক্ত। গবাদি পশুর আচারের পাশাপাশি সম্পদের ভাণ্ডার এবং প্রতিপত্তির প্রতীক হিসেবে এর ব্যবহারিক গুরুত্ব রয়েছে। এতে সিল করা শস্যের গর্ত থাকে। গবাদি পশুর দিকে মুখ করে বড় কুঁড়েঘর বানানো হয়, যা হেডম্যানের মায়ের দখলে থাকে।

হেডম্যান সমস্ত ঘরোয়া বিষয়ে কেন্দ্রীয় এবং তিনি প্রায়শঃই বহুবিবাহী হয়ে থাকেন। তিনি উদাহরণের মাধ্যমে নেতৃত্ব দেন এবং বাড়ির সমস্ত সামাজিক বিষয়ে তার স্ত্রীদের পরামর্শ দেন, পাশাপাশি পরিবারের মঙ্গল দেখেন। তিনি অল্পবয়সী ছেলেদের সাথে সামাজিকীকরণে সময় ব্যয় করেন, যারা প্রায়শই তার ছেলে বা নিকটাত্মীয় হয়। তিনি তাদের বেড়ে ওঠা এবং পুরুষত্বের প্রত্যাশা সম্পর্কে পরামর্শ দেন।

সাঙ্গোমা হল সেই বিশেষ পরিবারের পূর্বপুরুষদের দ্বারা নির্বাচিত একটি ঐতিহ্যবাহী ভবিষ্যদ্বাণী। সাঙ্গোমার প্রশিক্ষণকে "কুয়েটফওয়াসা" বলা হয়। প্রশিক্ষণ শেষে, একটি গ্র্যাজুয়েশন অনুষ্ঠান হয় যেখানে সমস্ত স্থানীয় সাঙ্গোমা ভোজন এবং নাচের জন্য একত্রিত হয়। ভবিষ্যদ্বাণীকারীর সাথে বিভিন্ন উদ্দেশ্যে পরামর্শ করা হয়, যেমন অসুস্থতা বা এমনকি মৃত্যুর কারণ নির্ধারণ করা। তার নির্ণয় "কুভুলা" এর উপর ভিত্তি করে পরিচালিত হয়। এটি যোগাযোগের একটি প্রক্রিয়া, যা ট্রান্সের মাধ্যমে প্রাকৃতিক পরাশক্তির সাথে যোগাযোগ হয়ে থাকে।

ইনয়াঙ্গা (পশ্চিমা ভাষায় একজন চিকিৎসা ও ফার্মাসিউটিক্যাল বিশেষজ্ঞ) অসুস্থতার কারণ নির্ণয় করতে ব্যবহৃত হাড় নিক্ষেপের দক্ষতা ("কুশায়া এমাতসাম্বো") এর অধিকারী।

ইসোয়াতিনির সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান হল ইনকওয়ালা অনুষ্ঠান। এটি দীর্ঘতম দিন ২১ ডিসেম্বরের কাছাকাছি পূর্ণিমার পরে চতুর্থ দিনে অনুষ্ঠিত হয়। ইনকায়ালাকে প্রায়শই ইংরেজিতে "প্রথম ফল অনুষ্ঠান" হিসাবে অনুবাদ করা হয়, তবে এই দীর্ঘ প্রতিযোগিতায় রাজার নতুন ফসলের স্বাদ নেওয়াটা অনেকের মধ্যে একটি মাত্র দিক বলে বিবেচিত হয়। ইনকওয়ালাকে "রাজত্ব অনুষ্ঠান" হিসাবে সর্বোত্তম অনুবাদ করা হয়। যখন কোন রাজা নেই, তখন ইনকওয়ালা অনুষ্ঠানও হয় না।অন্য কোনো ব্যক্তির পক্ষে ইনকওয়ালা অনুষ্ঠানে আয়োজন করা উচ্চ রাষ্ট্রদ্রোহিতা।

প্রতিটি সোয়াজি ইনকওয়ালার জনসাধারণের জন্য নির্ধারিত অংশে অংশ নিতে পারে। ইভেন্টের সমাপ্তি ঘটে বিগ ইনকওয়ালার চতুর্থ দিনে। ইনকওয়ালা অনুষ্ঠানে প্রধান ব্যক্তিত্বরা হলেন রাজা, রাণী মা, রাজকীয় স্ত্রী এবং সন্তান, রাজকীয় গভর্নর ( ইন্দুনাস ), প্রধান, রেজিমেন্ট এবং "বেমন্তী" বা "জলের মানুষ"।

ইসোয়াতিনির সবচেয়ে সুপরিচিত সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান হল বার্ষিক উমহলাঙ্গা রিড ড্যান্স। আট দিনের অনুষ্ঠানে মেয়েরা নল কেটে রাণী মায়ের সামনে উপস্থাপন করে এবং তারপর নাচ করে। এটি আগস্টের শেষের দিকে বা সেপ্টেম্বরের শুরুতে করা হয়। শুধুমাত্র নিঃসন্তান, অবিবাহিত মেয়েরা এ অনুষ্ঠানে অংশ নিতে পারে। অনুষ্ঠানের উদ্দেশ্য হল মেয়েদের সতীত্ব রক্ষা করা, রাণী মায়ের জন্য শ্রদ্ধা প্রদান করা এবং একসাথে কাজ করার মাধ্যমে সংহতিকে উৎসাহিত করা। রাজপরিবার একজন সাধারণ কুমারীকে মেয়েদের "ইন্দুনা" (অধিনায়ক) হিসাবে নিয়োগ করে এবং সে রেডিওতে বার্ষিক অনুষ্ঠানের তারিখ ঘোষণা করে। নির্বাচিত ইন্দুনা একজন বিশেষজ্ঞ নৃত্যশিল্পী এবং রাজকীয় প্রটোকল সম্পর্কে জ্ঞানী হবেন বলে আশা করা হয়। অনুষ্ঠানের সময় রাজার কন্যাদের একজন তার প্রতিপক্ষ হিসাবে কাজ করে।

রিড ড্যান্স কোনো প্রাচীন অনুষ্ঠান নয় বরং পুরনো " উমচওয়াশো " প্রথার বিকাশ। "উমচওয়াশো" তে, সমস্ত অল্প বয়স্ক মেয়েকে একটি মহিলা বয়স-রেজিমেন্টে রাখা হয়েছিল। বিয়ের বাইরে কোনো মেয়ে গর্ভবতী হলে তার পরিবার স্থানীয় প্রধানকে একটি গরুর জরিমানা দিতেন। বেশ কয়েক বছর পর, যখন মেয়েরা বিবাহযোগ্য বয়সে পৌঁছায়, তখন তারা রাণী মায়ের জন্য শ্রম সেবা করবে। অনুষ্ঠানটি নাচ এবং ভোজ দিয়ে শেষ হবে। ১৯ আগস্ট ২০০৫ পর্যন্ত দেশটিতে "উমচওয়াশো" পরিচালিত হতো।

ইসোয়াতিনি হস্তশিল্পের জন্যও পরিচিত। ইসোয়াতিনি আনুষ্ঠানিক হস্তশিল্প ব্যবসায় ২,৫০০ জনের বেশি লোক নিয়োগ করে, যাদের মধ্যে বেশিরভাগই মহিলা (টেকনোসার্ভ সোয়াজিল্যান্ড হ্যান্ডক্র্যাফ্ট ইমপ্যাক্ট স্টাডি অনুযায়ী, ফেব্রুয়ারি ২০১১)। পণ্যগুলি অনন্য এবং গৃহস্থালি, শৈল্পিক সজ্জা, জটিল কাঁচ, পাথর বা কাঠের শিল্পকর্ম থেকে শুরু করে ইসোয়াতিনি সংস্কৃতিকে প্রতিফলিত করে।

তথ্যসূত্র

Tags:

ইসোয়াতিনি ইতিহাসইসোয়াতিনি ভূগোলইসোয়াতিনি সরকার এবং রাজনীতিইসোয়াতিনি অর্থনীতিইসোয়াতিনি সমাজইসোয়াতিনি সংস্কৃতিইসোয়াতিনি তথ্যসূত্রইসোয়াতিনিআফ্রিকাদক্ষিণ আফ্রিকাদক্ষিণাঞ্চলীয় আফ্রিকামোজাম্বিকসাহায্য:আধ্বব/ইংরেজিস্থলবেষ্টিত রাষ্ট্র

🔥 Trending searches on Wiki বাংলা:

মহম্মদ আতাউল গণি ওসমানীফরাসি বিপ্লবহিন্দি ভাষাবীর্যঅস্ট্রেলিয়াতাজমহলতাশাহহুদঅণুবঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়এক্স এক্স এক্স এক্স (অ্যালবাম)এইচআইভিঅপু বিশ্বাসনারীভাইরাসযৌন প্রবেশক্রিয়ারাজশাহীছোলাবাংলা উইকিপিডিয়াবাংলাদেশ সরকারজাতীয় গণহত্যা স্মরণ দিবসবিজয় দিবস (বাংলাদেশ)জাতীয় সংসদচন্দ্রগ্রহণসন্ধিই-মেইলরেনেসাঁবেগম রোকেয়াঅমর্ত্য সেনইসলামে আদম২০২৩ ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগজিএসটি ভর্তি পরীক্ষাকৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাসলিমুল্লাহ খানশাহরুখ খানস্যামসাংঅগ্নিমিত্রা পালইসরায়েলপিঁয়াজগণতন্ত্ররশীদ খানস্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্ররক্তের গ্রুপসূরা ক্বদরসমাসতৃণমূল কংগ্রেসদ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধতরমুজতক্ষকদুবাইবাংলাদেশে পালিত দিবসসমূহময়মনসিংহবাংলাদেশের উপজেলাবসন্ত উৎসবতাকওয়ারাশিয়াআফ্রিকামক্কাসিলেট বিভাগবাংলাদেশ রেলওয়েসামন্ত লাল সেনকালীকানাডারামকৃষ্ণ পরমহংসমৌলিক পদার্থের তালিকাসরকারকান্তনগর মন্দিরকালো জাদু২৭ মার্চসোনাওয়ার্ল্ড ওয়াইড ওয়েবযোনিমহাস্থানগড়গরুদারুল উলুম দেওবন্দনামাজের সময়সমূহকুরআনের ইতিহাসরয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালোরআসমানী কিতাব🡆 More