আমার সোনার বাংলা: বাংলাদেশের জাতীয় সংগীত

আমার সোনার বাংলা হলো বাংলাদেশের জাতীয় সঙ্গীত। বঙ্গমাতা সম্পর্কে এই গানটি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর কর্তৃক ১৯০৫ সালে রচিত হয়। বাউল গায়ক গগন হরকরার গান আমি কোথায় পাব তারে থেকে এই গানের সুর ও সঙ্গীত উদ্ভূত।

আমার সোনার বাংলা
আমার সোনার বাংলা: ব্যুৎপত্তি, ইতিহাস, গানের কথা

আমার সোনার বাংলা: ব্যুৎপত্তি, ইতিহাস, গানের কথা বাংলাদেশ-এর জাতীয় সঙ্গীত
কথারবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, ১৯০৫
সুরগগন হরকরা, ১৮৮৯ (রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর কর্তৃক সুরারোপিত; ১৯০৫)
গ্রহণের তারিখ৩ মার্চ ১৯৭১
সঙ্গীতের নমুনা
noicon
আমার সোনার বাংলা
সঙ্গীতের নমুনা
noicon
বাংলাদেশ-এর সঙ্গীত
আমার সোনার বাংলা: ব্যুৎপত্তি, ইতিহাস, গানের কথা
বাউল, বাংলার আধ্যাত্মিক গান
ধরন
  • ধ্রুপদী
  • রক
  • হিপ হপ
নির্দিষ্ট ধরন
ধর্মীয় সঙ্গীত
জাতিগত সঙ্গীত
ঐতিহ্যবাহি সঙ্গীত
মিডিয়া এবং কর্মক্ষমতা
সঙ্গীত পুরস্কার
সঙ্গীত উৎসব
সঙ্গীত মিডিয়াবেতার

টেলিভিশন

ইন্টারনেট
জাতীয় এবং দেশাত্মবোধক গান
জাতীয় সঙ্গীতআমার সোনার বাংলা
অন্যান্যনতুনের গান (রণসঙ্গীত)
একুশের গান (ভাষা আন্দোলন গাথা)
আঞ্চলিক সঙ্গীত
সম্পর্কিত এলাকা
অন্যান্য এলাকা

১৯০৫ খ্রিষ্টাব্দে বঙ্গভঙ্গ আন্দোলনের পরিপ্রেক্ষিতে এই গানটি রচিত হয়েছিল। ১৩ জানুয়ারি, ১৯৭২ তারিখে মন্ত্রীসভার প্রথম বৈঠকে এ গানটির প্রথম দশ চরণ সদ্যগঠিত গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ রাষ্ট্রের জাতীয় সঙ্গীত হিসেবে নির্বাচিত হয়।

ব্যুৎপত্তি

সোনা শব্দটির অর্থ "স্বর্ণ", আর সোনার শব্দটির আক্ষরিক অর্থ "স্বর্ণের অন্তর্গত", বা "স্বর্ণ দিয়ে তৈরি" এবং "আর" দখল করে। এটি "প্রিয়" অর্থপ্রিয় পরিভাষা হিসাবে ব্যবহৃত, কিন্তু গানের মধ্যে সোনার বাংলা শব্দটি বাঙালির মূল্যবোধ প্রকাশ করতে পারে বা ফসল তোলার আগে ধানক্ষেতের রঙের তুলনা বোঝানো হয়েছে।

ইতিহাস

রচনা ও সুরারোপ

আমার সোনার বাংলা গানটি রচিত হয়েছিল ১৯০৫ সালের বঙ্গভঙ্গ আন্দোলনের পরিপ্রেক্ষিতে। গানটির পাণ্ডুলিপি পাওয়া যায়নি, তাই এর সঠিক রচনাকাল জানা যায় না। সত্যেন রায়ের রচনা থেকে জানা যায়, ১৯০৫ সালের ৭ আগস্ট কলকাতার টাউন হলে আয়োজিত একটি প্রতিবাদ সভায় এই গানটি প্রথম গীত হয়েছিল। এই বছরই ৭ সেপ্টেম্বর (১৩১২ বঙ্গাব্দের ২২ ভাদ্র) সঞ্জীবনী পত্রিকায় রবীন্দ্রনাথের স্বাক্ষরে  গানটি মুদ্রিত হয়। এই বছর বঙ্গদর্শন পত্রিকার আশ্বিন সংখ্যাতেও গানটি মুদ্রিত হয়েছিল। তবে ৭ আগস্ট উক্ত সভায় এই গানটি গীত হওয়ার কোনো প্রমাণ পাওয়া যায় না। বিশিষ্ট রবীন্দ্রজীবনীকার প্রশান্তকুমার পালের মতে, আমার সোনার বাংলা ১৯০৫ খ্রিষ্টাব্দের ২৫ আগস্ট কলকাতার টাউন হলে অবস্থা ও ব্যবস্থা প্রবন্ধ পাঠের আসরে প্রথম গীত হয়েছিল।

আমার সোনার বাংলা গানটি রচিত হয়েছিল শিলাইদহের ডাকপিয়ন গগন হরকরা রচিত আমি কোথায় পাব তারে আমার মনের মানুষ যে রে গানটির সুরের অণুষঙ্গে। সরলা দেবী চৌধুরানী ইতিপূর্বে ১৩০৭ বঙ্গাব্দের বৈশাখ মাসে তার শতগান সংকলনে গগন হরকরা রচিত গানটির স্বরলিপি প্রকাশ করেছিলেন। উল্লেখ্য, রবীন্দ্রনাথের বঙ্গভঙ্গ-সমসাময়িক অনেক স্বদেশী গানের সুরই এই স্বরলিপি গ্রন্থ থেকে গৃহীত হয়েছিল। যদিও পূর্ববঙ্গের বাউলদের ভিডমিড ও ভাটিয়ালি সুরের সঙ্গে রবীন্দ্রনাথের পরিচিতি ইতঃপূর্বেই হয়েছিল বলে জানা যায়। ১৮৮৯-১৯০১ সময়কালে পূর্ববঙ্গের বিভিন্ন অঞ্চলে জমিদারির কাজে ভ্রমণ ও বসবাসের সময় বাংলার লোকজ সুরের সঙ্গে তার আত্মীয়তা ঘটে। তারই অভিপ্রকাশ রবীন্দ্রনাথের স্বদেশী আন্দোলনের সমসাময়িক গানগুলি, বিশেষত আমার সোনার বাংলা

যেভাবে বাংলাদেশের জাতীয় সঙ্গীত

১৯৭১ খ্রিষ্টাব্দের ১ মার্চ গঠিত হয় স্বাধীন বাংলার কেন্দ্রীয় সংগ্রাম পরিষদ। পরে ৩ মার্চ তারিখে ঢাকা শহরের কেন্দ্রস্থলে অবস্থিত পল্টন ময়দানে অনুষ্ঠিত জনসভা শেষে ঘোষিত স্বাধীনতার ইশতেহারে এই গানকে জাতীয় সঙ্গীত হিসাবে ঘোষণা করা হয়। ১৯৭১ সালের ১৭ এপ্রিল মুজিবনগরে স্বাধীন বাংলাদেশের সরকারের শপথ অনুষ্ঠানে এই গান প্রথম জাতীয় সঙ্গীত হিসাবে গাওয়া হয়।

গানের কথা

মূল কবিতা

রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের লেখা সম্পূর্ণ আমার সোনার বাংলা গানটি এখানে লিপিবদ্ধ করা হয়েছে। এই গানের প্রথম দশ চরণ বাংলাদেশের জাতীয় সঙ্গীত হিসেবে স্বীকৃত।

আমার সোনার বাংলা, আমি তোমায় ভালোবাসি।
চিরদিন তোমার আকাশ, তোমার বাতাস, আমার প্রাণে বাজায় বাঁশি॥
ও মা, ফাগুনে তোর আমের বনে ঘ্রাণে পাগল করে,
মরি হায়, হায় রে—
ও মা, অঘ্রানে তোর ভরা ক্ষেতে আমি কী দেখেছি মধুর হাসি॥

কী শোভা, কী ছায়া গো, কী স্নেহ, কী মায়া গো—
কী আঁচল বিছায়েছ বটের মূলে, নদীর কূলে কূলে।
মা, তোর মুখের বাণী আমার কানে লাগে সুধার মতো,
মরি হায়, হায় রে—
মা, তোর বদনখানি মলিন হলে, ও মা, আমি নয়নজলে ভাসি॥

তোমার এই খেলাঘরে শিশুকাল কাটিলে রে,
তোমারি ধুলামাটি অঙ্গে মাখি ধন্য জীবন মানি।
তুই দিন ফুরালে সন্ধ্যাকালে কী দীপ জ্বালিস ঘরে,
মরি হায়, হায় রে—
তখন খেলাধুলা সকল ফেলে, ও মা, তোমার কোলে ছুটে আসি॥

ধেনু-চরা তোমার মাঠে, পারে যাবার খেয়াঘাটে,
সারা দিন পাখি-ডাকা ছায়ায়-ঢাকা তোমার পল্লীবাটে,
তোমার ধানে-ভরা আঙিনাতে জীবনের দিন কাটে,
মরি হায়, হায় রে—
ও মা, আমার যে ভাই তারা সবাই, ও মা, তোমার রাখাল তোমার চাষি॥

ও মা, তোর চরণেতে দিলেম এই মাথা পেতে—
দে গো তোর পায়ের ধুলা, সে যে আমার মাথার মানিক হবে।
ও মা, গরিবের ধন যা আছে তাই দিব চরণতলে,
মরি হায়, হায় রে—
আমি পরের ঘরে কিনব না আর, মা, তোর ভূষণ ব'লে গলার ফাঁসি

জনপ্রিয়তা

শ্রোতাদের পছন্দানুসারে বিবিসি বাংলার তৈরি সেরা বিশটি বাংলা গানের তালিকায় এই গানটি প্রথম স্থান দখল করে।

বিশ্ব রেকর্ড

২০১৪ সালের ২৬ মার্চ, জাতীয় প্যারেড ময়দান, ঢাকা, বাংলাদেশে একসঙ্গে ২৫৪,৫৩৭ জন জাতীয় সঙ্গীত গাওয়ার মাধ্যমে গিনেস বিশ্ব রেকর্ড করে।

চলচ্চিত্রায়ন

আমার সোনার বাংলা: ব্যুৎপত্তি, ইতিহাস, গানের কথা  বাংলাদেশের জাতীয় প্রতীকসমূহ
পতাকা লাল-সবুজ
প্রতীক শাপলা
সঙ্গীত আমার সোনার বাংলা
পশু রয়েল বেঙ্গল টাইগার
পাখি দোয়েল
ফুল সাদা শাপলা
বৃক্ষ আমগাছ
ফল কাঁঠাল
খেলা কাবাডি
পঞ্জিকা বঙ্গাব্দ

চলচ্চিত্রকার শহীদ জহির রায়হান ১৯৭০ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত তার বিখ্যাত জীবন থেকে নেওয়া কাহিনীচিত্রে এই গানের চলচ্চিত্রায়ন করেন।

আরো দেখুন

পাদটীকা

বহিঃসংযোগ

Tags:

আমার সোনার বাংলা ব্যুৎপত্তিআমার সোনার বাংলা ইতিহাসআমার সোনার বাংলা গানের কথাআমার সোনার বাংলা জনপ্রিয়তাআমার সোনার বাংলা বিশ্ব রেকর্ডআমার সোনার বাংলা চলচ্চিত্রায়নআমার সোনার বাংলা আরো দেখুনআমার সোনার বাংলা পাদটীকাআমার সোনার বাংলা বহিঃসংযোগআমার সোনার বাংলাআমি কোথায় পাব তারেগগন হরকরাজাতীয় সঙ্গীতবঙ্গমাতাবাংলাদেশেররবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

🔥 Trending searches on Wiki বাংলা:

বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সইসরায়েল–হামাস যুদ্ধচাঁদপুর জেলাবাংলাদেশের অর্থমন্ত্রীইন্দোনেশিয়াওয়াহাবি আন্দোলনরাসায়নিক সূত্রহামাসযোনি পিচ্ছিলকারকফরাসি বিপ্লববঙ্গোপসাগরমঙ্গলকাব্যজালাল উদ্দিন মুহাম্মদ রুমিজীবনানন্দ দাশদৈনিক ইনকিলাবস্নাতক উপাধিরামমোহন রায়অগ্নিমিত্রা পালভিটামিনঅষ্টাঙ্গিক মার্গশ্রাদ্ধমোবাইল ফোনবাংলাদেশের জাতিগোষ্ঠীদৈনিক যুগান্তরওয়েবসাইটরামায়ণভাষা আন্দোলন দিবসবাংলাদেশের পোস্ট কোডের তালিকাজহির রায়হানএ. পি. জে. আবদুল কালামওয়ালটন গ্রুপঅনন্যা পাণ্ডেউসমানীয় সাম্রাজ্যের সুলতানদের তালিকাসিলেট বিভাগশাবনূরগোলাপনাটকজয়া আহসানআয়তন অনুযায়ী ভারতের রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলসমূহের তালিকাস্মার্ট বাংলাদেশএকতা এক্সপ্রেসবাংলাদেশের ইতিহাসসুন্নি ইসলামঢাকা বিভাগসলিমুল্লাহ খানসুন্দরবনবাংলাদেশ ছাত্রলীগরাজ্যসভাআলুগ্যাস ট্রান্সমিশন কোম্পানি লিমিটেডযৌন খেলনার‍‍্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নমুজিবনগর দিবসঅপু বিশ্বাসত্রিপুরাবাংলাদেশী জাতীয় পরিচয় পত্রজিয়াউর রহমানসাঁওতাল বিদ্রোহআলিইসরায়েলের ইতিহাসবাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম এক্সপ্লোরেশন এন্ড প্রোডাকশন কোম্পানী লিমিটেডশ্রীকৃষ্ণকীর্তনবাংলাদেশের মেডিকেল কলেজসমূহের তালিকাপারমাণবিক অস্ত্রমহাভারতের চরিত্র তালিকাকৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাফিলিস্তিনের জাতীয় পতাকাশেখ মুজিবুর রহমানকাশ্মীরবিরাট কোহলিবাংলাদেশ জাতীয় চিড়িয়াখানাউপন্যাসকুষাণ সাম্রাজ্যবাংলাদেশের ইউনিয়নহাতিশুঁড়ইন্সটাগ্রামঈদ মোবারকআবহাওয়াইসলামে বিবাহ🡆 More