অফসাইড হল ফুটবলের অন্যতম একটি আইন, যেটি খেলার আইনের ১১ নম্বরে বিধিবদ্ধ হয়েছে। আইনে বলা হয়েছে যে কোনও খেলোয়াড় অফসাইড অবস্থায় রয়েছে বলা হয়, যদি হাত ও বাহু বাদ দিয়ে, তার শরীরের কোনও অংশ, প্রতিপক্ষের অর্ধেক পিচের মধ্যে থাকে, এবং বল ও শেষ দুজন-প্রতিপক্ষ,- উভয়ের থেকেই সে প্রতিপক্ষের গোল লাইনের বেশি কাছাকাছি থাকে (শেষ প্রতিপক্ষ সাধারণত গোলরক্ষক হয়, তবে অপরিহার্যভাবে নয়)।
অফসাইড অবস্থানে থাকাটা বিশেষ ভাবে কোন অপরাধ নয়, কিন্তু সতীর্থের পায়ে যখন বল থাকে, তখন একজন খেলোয়াড়ের এমন অবস্থানে থাকা কে অফসাইড অপরাধ দিয়ে দোষী করা যেতে পারে, যদি সে "সক্রিয় খেলায় জড়িত" হয়ে যায়, "প্রতিপক্ষকে বাধাদান করে", বা ওই অবস্থানে থেকে "সুবিধা অর্জন করে"।
সাম্প্রতিকতম সতীর্থের বলটি সর্বশেষে স্পর্শ করার মুহুর্ত দিয়ে অফসাইড বিচার করা হয়। যে কোন সময় অফসাইড অবস্থানে থাকা অপরাধ নয়। যে মুহুর্তে কোনও সতীর্থ বলটি শেষ ছুঁয়েছে বা খেলেছে, সেই সময় একজন খেলোয়াড় যে অফসাইড অবস্থানে ছিল, তাকে এরপরে অবশ্যই রেফারির মতানুসারে সক্রিয় খেলায় জড়িত থাকতে হবে, অফসাইড অপরাধে অপরাধী হবার জন্য। যখন অফসাইড অপরাধ হয়, রেফারি খেলা বন্ধ করে, এবং অফসাইড খেলোয়াড়ের সক্রিয় খেলায় জড়িত হওয়ার জায়গা থেকে প্রতিপক্ষ দলকে একটি পরোক্ষ ফ্রি কিক প্রদান করে।
অফসাইড অপরাধ কোন অন্যায় আচরণ (ফাউল) বা অসদাচরণ নয় কারণ এটি আইন ১২র অন্তর্গত নয়। কিন্তু ফাউলের মতই, এই সময় ঘটা খেলার কোন ঘটনা (যেমন গোল করা), যেটি রেফারী খেলা থামাতে পারার আগেই ঘটে গেছে, তা বাতিল করে দেওয়া হয়। অফসাইড সম্পর্কিত কোনও অপরাধ কেবলমাত্র তখনই সতর্কযোগ্য, যদি কোনও খেলোয়াড়ের অফসাইড অবস্থান সম্পর্কে তাদের প্রতিপক্ষকে ধোঁকা দেওয়ার জন্য কোনও রক্ষণের খেলোয়াড় (ডিফেন্ডার) ইচ্ছাকৃতভাবে মাঠ ছাড়ে, বা যদি কোনও আক্রমণভাগের খেলোয়াড় (ফরোয়ার্ড), যে মাঠ থেকে বেরিয়ে গিয়েছিল, সে ফিরে আসে এবং কোন সুবিধা পেয়ে যায়। এই উভয় ক্ষেত্রেই খেলোয়াড়কে অফসাইড হওয়ার জন্য কোন শাস্তি দেওয়া হয় না; শুধু অখেলোয়াড়সুলভ আচরণের জন্য সতর্ক করা হয়।
একজন আক্রমণভাগের খেলোয়াড় যে বিরোধী রক্ষণের পেছনে থেকে বল পেয়ে যায়, সে প্রায়ই গোল করার মত ভাল অবস্থানে থাকে। অফসাইড নিয়মের মাধ্যমে আক্রমণের খেলোয়াড়ের এটি করার ক্ষমতা সীমাবদ্ধ করা হয়, অর্থাৎ বলটি এগিয়ে যাওয়ার সময় তাকে অনসাইডে থাকতে হবে। যথাসময়ে পাসের মাধ্যমে বল পেয়ে এবং দ্রুত দৌড়ে আক্রমণের খেলোয়াড় বল মারার পরে এমন অবস্থানে আসতে পারে, যেখানে এই অপরাধ হয়না। অফসাইড সম্পর্কিত রেফারীর সিদ্ধান্ত, যা প্রায়শই কেবলমাত্র কিছু সেন্টিমিটার বা ইঞ্চির দূরত্ব হতে পারে, সমালোচনার সম্মুখীন হতে পারে। যেহেতু সেগুলি নির্ধারণ করতে পারে কোনও প্রতিশ্রুতিসম্পন্ন আক্রমণ চালিয়ে যাওয়া যাবে কিনা, বা এমনকি কোন গোল বাতিল হবে কিনা।
সহকারী রেফারির অন্যতম প্রধান দায়িত্ব হল রেফারিকে অফসাইড বিচারের ক্ষেত্রে সহায়তা করা — মাঠের বাইরে তাদের অবস্থান সারা মাঠ জুড়ে আরও কার্যকরভাবে দেখতে সাহায্য করে। সহকারী রেফারি পতাকা উত্তোলনন করে অফসাইড অপরাধের সঙ্কেত দেয়। :১৯১অবশ্য, খেলার সমস্ত কার্যকরী সিদ্ধান্তের মতো অফসাইডকে বিচার করা শেষ পর্যন্ত রেফারির উপরেই নির্ভর করে, তারা যদি উপযুক্ত মনে করে তবে তাদের সহায়তাকারীর পরামর্শকে বাতিল করতে পারে।
বিংশ শতাব্দীর গোড়ার দিকে নটস কাউন্টি এই পদ্ধতির উদ্ভাবন করেছিল। পরে প্রভাবশালী আর্জেন্টিনীয় কোচ ওসভালদো জুবেলদিয়া এটি গ্রহণ করেছিলেন। অফসাইড ফাঁদ হল আক্রমণে থাকা দলকে অফসাইড অবস্থানে আসতে বাধ্য করার জন্য তৈরি করা একটি প্রতিরক্ষামূলক কৌশল। আক্রমণের খেলোয়াড় তার কাছে পাস করা বল খেলার ঠিক আগে, রক্ষণের শেষ খেলোয়াড় ওপরে উঠে যায়, ফলে আক্রমণের খেলোয়াড় অফসাইড অবস্থানে পড়ে যায়। এটি কার্যকর করার জন্য রক্ষণের সঠিক সময়নির্ধারণ প্রয়োজন, সতর্কতার সঙ্গে। এটিকে একটি ঝুঁকি হিসাবে বিবেচনা করা হয়, কারণ আক্রমণের দিকের বিরুদ্ধে গিয়ে ওপরে উঠে যাওয়া মানে গোলের মুখ উন্মুক্ত হয়ে যাওয়া। এখন "খেলায় হস্তক্ষেপ, প্রতিপক্ষের সাথে হস্তক্ষেপ করা এবং সুবিধা অর্জন" এই ব্যাখ্যাগুলিতে পরিবর্তন হয়েছে; অর্থাৎ কোনও খেলোয়াড় সরাসরি এবং স্পষ্টভাবে সক্রিয় খেলায় জড়িত না হলে অফসাইড অপরাধের জন্য দোষী নয়, সক্রিয় খেলায় জড়িত না থাকা খেলোয়াড়কে "অফসাইড" করা যায় না। তাই কৌশলটি বেশ ঝুঁকিপূর্ণ। আক্রমণের খেলোয়াড় যখন বুঝতে পারে যে সে একটি অফসাইড অবস্থানে চলে এসেছে, তখন বলটি অন্য কারও দ্বারা না খেলানো পর্যন্ত সে বল স্পর্শ না করে অফসাইড এড়াতে পারে।
ব্যবস্থাপক আরিগো সাচ্চি উচ্চ রক্ষণমূলক শ্রেণী ব্যবহার করার জন্য এবং অফসাইড – ফাঁদ ব্যবহারের জন্য পরিচিত ছিলেন। প্রতিরক্ষা এবং মধ্যমাঠের মধ্যে দূরত্ব কখনোই ২৫ থেকে ৩০ মিটারের বেশি হয় না। তিনি এসি মিলান দলে আরও আক্রমণাত্মক কৌশলগত দর্শনের পরিচয় দিয়েছিলেন, এবং সেটি অত্যন্ত সফল হয়েছিল, উদাহরণস্বরূপ - আক্রমণাত্মক উচ্চ -চাপ পদ্ধতি। এখানে ৪–৪–২ বিন্যাস ব্যবহার হয়েছিল, এটি একটি আকর্ষণীয়, দ্রুত, আক্রমণে যাওয়া দখল-ভিত্তিক খেলার শৈলী। এখানে কিছু উদ্ভাবনী শৈলী ব্যবহার হয়েছিল, যেমন অঞ্চল চিহ্নিতকরণ এবং উচ্চ রক্ষণভাগ দিয়ে অফসাইড ফাঁদ তৈরি। পূর্ববর্তী ইতালীয় ফুটবলের পদ্ধতি থেকে এটি অনেকটাই আলাদা ছিল, কিন্তু রক্ষণে দৃঢ়তা বজায় রাখা হত।
টেমপ্লেট:Association football laws
This article uses material from the Wikipedia বাংলা article অফসাইড (ফুটবল), which is released under the Creative Commons Attribution-ShareAlike 3.0 license ("CC BY-SA 3.0"); additional terms may apply (view authors). বিষয়বস্তু সিসি বাই-এসএ ৪.০-এর আওতায় প্রকাশিত যদি না অন্য কিছু নির্ধারিত থাকে। Images, videos and audio are available under their respective licenses.
®Wikipedia is a registered trademark of the Wiki Foundation, Inc. Wiki বাংলা (DUHOCTRUNGQUOC.VN) is an independent company and has no affiliation with Wiki Foundation.