বাংলাদেশের চট্টগ্রাম বিভাগের একটি জেলা এবং বাংলাদেশের বৃহত্তম জেলা

রাঙ্গামাটি জেলা বাংলাদেশের একটি জেলা যা চট্টগ্রাম বিভাগ এর অন্তর্গত। রাঙ্গামাটির উত্তরে ভারতের ত্রিপুরা, মিজোরাম, দক্ষিণে বান্দরবান, পূর্বে মিজোরাম ও পশ্চিমে চট্টগ্রাম ও খাগড়াছড়ি। এ জেলা আয়তনের দিক থেকে দেশের সর্ববৃহৎ জেলা। দেশের এক মাত্র রিক্সা বিহীন শহর, হ্রদ পরিবেষ্টিত পর্যটন শহর এলাকা। এ জেলায় চাকমা, মারমা, তঞ্চঙ্গ্যা, ত্রিপুরা, মুরং, বোম, খুমি, খেয়াং, চাক্, পাংখোয়া, লুসাই, সুজেসাওতাল, রাখাইন সর্বোপরি বাঙ্গালীসহ ১৪টি জনগোষ্ঠি বসবাস করে। রাঙ্গামাটি, খাগড়াছড়ি ও বান্দরবান- এই তিন পার্বত্য অঞ্চলকে নিয়ে পার্বত্য চট্টগ্রাম জেলা সৃষ্টির পূর্বের নাম ছিল কার্পাস মহল। পার্বত্য চট্টগ্রাম জেলা থেকে ১৯৮১ সালে বান্দরবান এবং ১৯৮৩ সালে খাগড়াছড়ি পৃথক জেলা সৃষ্টি করা হলে পার্বত্য চট্টগ্রাম জেলার মূল অংশ রাঙ্গামাটি পার্বত্য জেলা হিসাবে আত্মপ্রকাশ করে। প্রথাগত রাজস্ব আদায় ব্যবস্থায় রাঙ্গামাটি পার্বত্য জেলায় রয়েছে চাকমা সার্কেল চীফ। চাকমা রাজা হলেন নিয়মতান্ত্রিক চাকমা সার্কেল চীফ।

কীভাবে যাবেন? সম্পাদনা

স্থলপথে সম্পাদনা

চট্টগ্রাম থেকে রাঙ্গামাটিতে বাস যোগে আসা যায়। রাঙ্গামাটিতে যাওয়ার সরাসরি দুইটি বাস আছে। একটি হলো পাহাড়িকা যা চট্টগ্রাম থেকে সকাল ৮.০০টা থেকে রাত ৮.০০টা পর্যন্ত এবং রাঙ্গামাটি হতে সকাল ৮.০০টা থেকে রাত ৮.৩০মিনিট পর্যন্ত চলাচল করে। এই বাস সার্ভিসটি প্রতি ১ ঘণ্টা অন্তর অন্তর স্টেশন থেকে ছেড়ে যায় এবং গন্তব্যে পৌঁছাতে প্রায় ৩ ঘণ্টা সময় নেয়। পাহাড়িকা বাস সার্ভিসের টিকিটের মূল্য ১৫০ টাকা এবং টিকিট মুরাদপুর ও অক্সিজেন মোড় থেকে সংগ্রহ করা যায়। আরেকটি বাস সার্ভিস হচ্ছে বিআরটিসি বাস সার্ভিস, যা রাঙামাটির একমাত্র শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত বাস সার্ভিস। এই বাসের টিকিটের ভাড়া ১৫০ টাকা এবং টিকিট চট্টগ্রামস্থ বটতলী রেলওয়ে স্টেশনের বিআরটিসি কাউন্টার থেকে সংগ্রহ করা যাবে।এছাড়া অনেক ধরনের লোকাল বাস সার্ভিসের ব্যবস্থা রয়েছে, তবে সেসব বাস সার্ভিস রাস্তার যেকোন জায়গা থেকে যাত্রী উঠানামা করায়, ফলে বাসে সবসময় যাত্রীদের ভিড় লেগে থাকে এবং গন্তব্যে ৪-৫ ঘণ্টা সময় ব্যয় হয়। রাজধানী ঢাকা থেকেও রাঙ্গামাটি যাওয়ার কিছু বাস সার্ভিস রয়েছে। এই বাস সার্ভিসগুলো শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত নয়। এছাড়াও আশেপাশের জেলাগুলোতেও কিছু লোকাল বাস সার্ভিসের ব্যবস্থা রয়েছে রাঙ্গামাটিতে আসা যাওয়ার জন্য।

আকাশ পথে সম্পাদনা

জল পথে সম্পাদনা

দর্শনীয় স্থান সম্পাদনা

রাঙ্গামাটি জেলার মানচিত্র

  • কর্ণফুলী হ্রদ- কৃত্রিম এ হ্রদের আয়তন ২৯২ বর্গমাইল (বর্গ কিলোমিটারে পরিণত করতে হবে)। এ হ্রদের সাথে কর্ণফুলী, কাচালং আর মাইনী নদীর রয়েছে নিবিড় সংযোগ। কাচালং নদীর উজানে লংগদুর মাইনীমুখে এসে হ্রদের বিস্তার দেখে যুগপৎ বিষ্মিত হতে হয়। এখানে হ্রদের বিস্তীর্ণ জলরাশি নির্দ্বিধায় আকাশের সাথে মিশে গেছে। রাঙ্গামাটি শহরে এলেই চোখে পড়ে হ্রদ-পাহাড়ের অকৃত্রি সহাবস্থান যা দেশের আর কোথাও দেখা মেলেনা। এ হ্রদের স্বচ্ছ জলরাশি আর সবুজ পাহাড়ের অপরূপ সৌন্দর্য পর্যটকদের সহজেই কাছে টানে আর হ্রদে নৌ-ভ্রমণ যে কারো মন-প্রাণ জুড়িয়ে দেয় প্রকৃতির আপন মহিমায়। প্রকৃতি এখানে কতটা অকৃপন হাতে তার রূপ-সুধা ঢেলে দিয়েছে তা দূর থেকে কখনই অনুধাবন করা সম্ভব নয়।

যাতায়াত: নৌ-ভ্রমণের জন্য রিজার্ভ বাজার, তবলছড়ি ও পর্যটন ঘাটে ভাড়ায় স্পীড বোট ও নৌযান পাওয়া যায়। যার ভাড়ার পরিমাণ ঘণ্টা প্রতি স্পীড বোট ঘণ্টায় ১২০০-১৫০০/- এবং দেশীয় নৌযান ৫০০-৮০০/- টাকা।

  • পর্যটন মোটেল ও ঝুলন্ত সেতু- এখানে রয়েছে মনোরম ‘পর্যটন মোটেল’। উল্লেখ্য, পর্যটন মোটেল এলাকা ‘ডিয়ার পার্ক’ নামেই সমধিক পরিচিত। মোটেল এলাকা থেকে দৃশ্যমান হ্রদের বিস্তীর্ণ জলরাশি আর দূরের নীল উঁচু-নীচু পাহাড়ের সারি এখানে তৈরি করেছে এক নৈসর্গিক আবহ। এখানেই রয়েছে ৩৩৫ ফুট দীর্ঘ মনোহরা ঝুলন্ত সেতু - যা কমপ্লেক্সের গুরুত্ব ও আকর্ষণ বহুগুণ বাড়িয়ে দিয়েছে। এ সেতু ইতোমধ্যে ‘সিম্বল অব রাঙ্গামাটি’ হিসেবে পরিচিতি পেয়েছে। এছাড়া এখানে রয়েছে অডিটোরিয়াম, পার্ক, পিকনিক স্পট, স্পীড বোট ও দেশীয় নৌ-যান।

যাতায়াত: রাঙ্গামাটি শহরের তবলছড়ি হয়ে সড়ক পথে সরাসরি ‘পর্যটন কমপ্লেক্সে’ যাওয়া যায়। এখানে গাড়ি পার্কিং-য়ের সুব্যবস্থা রয়েছে। যারা ঢাকা বা চট্টগ্রাম থেকে সার্ভিস বাসে করে আসবেন তাদের তবলছড়িতে নেমে অটোরিক্সাযোগে রিজার্ভ করে (ভাড়ার পরিমাণ আনুমানিক ৮০-১০০/-) যেতে হবে। ফোন: ০৩৫১-৬২১২৬, ৬১০৪৬

  • সুবলং ঝর্না- রাঙ্গামাটির সুবলং-এর পাহাড়ি ঝর্ণা ইতোমধ্যে পর্যটকদের কাছে ব্যাপক পরিচিতি লাভ করেছে। এসব ঝর্ণার নির্মল জলধারা পর্যটকদের হৃদয়ে এক ভিন্ন অনুভূতির কাঁপন তোলে। বরকল উপজেলায় ছোট-বড় ৮টি ঝর্ণা রয়েছে। বর্তমানে এ এলাকায় উপজেলা প্রশাসন কর্তৃক কিছু স্থাপনা নির্মাণ করা হয়েছে। রাঙ্গামাটি সদর হতে সুবলং এর দূরত্ব মাত্র ২৫ কিলোমিটার।

যাতায়াত: রাঙ্গামাটির রিজার্ভ বাজার, পর্যটন ঘাট ও রাঙ্গামাটি বিভিন্ন স্থান থেকে স্পীড বোট ও নৌ-যানে করে সহজেই সুবলং যাওয়া যায়। যার ভাড়ার পরিমাণ ঘণ্টা প্রতি স্পীড বোট ঘণ্টায় ১২০০-১৫০০/- এবং দেশীয় নৌযান ৫০০-৮০০/- টাকা।

  • কাপ্তাই জাতীয় উদ্যান - তের হাজার একর এলাকা নিয়ে কর্ণফুলী নদীর কোল ঘেঁষে কাপ্তাই উপজেলায় গড়ে উঠেছে ‘কাপ্তাই জাতীয় উদ্যান’। সারি সারি পাহাড় আর প্রকৃতির অপর্ব সমন্বয় ঘটেছে এখানে। এ বনভূমি বিচিত্র বন্যপ্রাণী ও পাখ-পাখালির অবাধ বিচরণ ক্ষেত্র। বর্ষাকালে মেঘ পাহাড়ের মিতালি আর শীতে কুয়াশার লুকেচুরি - প্রকৃতির এমন কারুকাজ বেশ রোমঞ্চকর বৈকি। বনের ভেতর সারি সারি সেগুন, জারুল, গামার আর কড়ই গাছের মাঝ বরাবর পায়ে হেটে চলা পর্যটকদের অফুরন্তু আনন্দের খোরাক। কাপ্তাই জাতীয় উদ্যানে রয়েছে বন বিভাগে দু’টি বিশ্রামাগার। বিশ্রামাগারের চারপাশে নদী, পাহাড় আর সবুজের সহাবস্থান অপূর্ব সৌন্দর্যের আবহ তৈরি করেছে। মূলত জীববৈচিত্র্য ও প্রাকৃতিক পরিবেশের সংরক্ষণ ও উন্নয়ন, শিক্ষা ও গবেষণার সুযোগ সম্প্রসারন এবং ইকো-ট্যুরিজমের জন্য সুযোগ-সুবিধা বৃদ্ধির লক্ষ্যে কাপ্তাই জাতীয় উদ্যান প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হয়েছে। রাঙ্গামাটি জেলা সদর হতে এর দূরত্ব আনুমানিক ৩৫ কিলোমিটার।

যাতায়াত: উদ্যানে যেতে হলে চট্টগ্রাম হতে সরাসরি কাপ্তাই যেতে হবে।

রাত্রিযাপন সম্পাদনা

রাঙামাটি শহরে বিভিন্ন মানের আবাসিক হোটেল রয়েছে। রাঙামাটি শহরের পুরাতন বাস স্ট্যন্ড ও রিজার্ভ বাজার এলাকায় লেকের কাছাকাছি হোটেলে উঠলে হোটেল থেকে কাপ্তাই লেকের পরিবেশ ও শান্ত বাতাস উপভোগ করা যাবে। এছাড়া কম খরচে থাকতে বোডিং এ থাকা যাবে। বোডিংগুলোতে খরচ কম হলেও এগুলোর পরিবেশ খুব একটা ভাল নয়। রাঙামাটি শহরের উল্লেখযোগ্য কয়েকটি হোটেল:

  • হোটেল গ্রিন ক্যাসেল (রিজার্ভ বাজারে অবস্থিত), ০১৭২৬-৫১১৫৩২ , ০১৮১৫-৪৫৯১৪৬ নন-এসি সিঙ্গেল বেড, ডাবল বেড ও ত্রিপল বেডের রুমের ভাড়া যথাক্রমে ৮০০, ১০০০ ও ১২০০ টাকা। এসি কাপল বেড রুম ভাড়া ১৬০০ টাকা ও এসি ট্রিপল বেড রুম ভাড়া ২০০০ টাকা।
  • পর্যটন মোটেল (রাঙ্গামাটি ঝুলন্ত ব্রিজের পাশে অবস্থিত), ০৩৫১-৬৩১২৬ নন-এসি ডাবল বেডের রুম ভাড়া ১০০০-১২০০ টাকা। আর এসি ডাবল বেড ভাড়া ১৫০০-১৮০০ টাকা।
  • রংধনু গেস্ট হাউজ, ০১৮১৬-৭১২৬২২ , ০১৭১২-৩৯২৪৩০ ফ্যামিলি বেড বা কাপল বেড ভাড়া নিতে খরচ পড়বে যথাক্রমে ৬৫০ ও ৫০০ টাকা।
  • হোটেল সুফিয়া, ফিসারী ঘাট, কাঁঠালতলী, ০১৫৫৩-৪০৯১৪৯
  • হোটেল আল-মোবা, নতুন বাস স্টেশন, রিজার্ভ বাজার, ০১৮১১-৯১১১৫৮

ভোজন সম্পাদনা

রাঙ্গামাটিতে বিভিন্ন মানের খাবার রেস্তোরাঁ রয়েছে। রেস্তোরাঁয় স্থানীয় ঐতিহ্যবাহী বাঙালী, পাহাড়ি সব খাবার পাওয়া যায়। ভিন্ন স্বাদের এইসব খাবারের স্বাদ নিতে পর্যটকগণ আগ্রহী থাকেন।

চিত্রশালা সম্পাদনা

🔥 Popular: তাজমহলপ্রধান পাতাসুন্দরবনফিলিস্তিনকিরগিজস্তানতাজিংডংরাশিয়াউজবেকিস্তানপাহাড়পুর বৌদ্ধবিহারব্যবহারকারী আলাপ:Sbb1413কাজাখস্তানবিশেষ:সংস্করণ/বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সাফারি পার্কদক্ষিণ কোরিয়াপানাম নগরবগুড়া জেলাপশ্চিমবঙ্গচাঁদসিলেট বিভাগরাজশাহী বিভাগসাজেক উপত্যকাকাতারইরাকতাইওয়াননীলগিরিইরানবাংলাদেশের দর্শনীয় স্থানসমূহজাপানসোনাদিয়া দ্বীপরাঙ্গামাটিইংল্যান্ডআসানসোলশিলিগুড়িচিচেন ইতজাচট্টগ্রামআফগানিস্তানবেঙ্গালুরুহযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরসেন্ট মার্টিন দ্বীপপ্রান্তিক হ্রদআফ্রিকাবিশেষ:অনুসন্ধাননুহাশ পল্লীযুক্তরাজ্যবিবিয়ানা গ্যাসক্ষেত্রবঙ্গমধ্যপ্রাচ্যইনানী সমুদ্র সৈকতশান্তিনিকেতনচন্দ্রনাথ পাহাড়নাফাখুম জলপ্রপাতইউরোপওমানআগরতলাহাকালুকি হাওরনীলাচলজাতিসংঘশালবন বৌদ্ধ বিহারলালবাগ কেল্লাহবিগঞ্জরাঢ়মেঘালয়করমজল পর্যটন কেন্দ্রচাঁদপুর জেলাশরীয়তপুর জেলাবাংলাদেশরাঙ্গুনিয়া উপজেলাকুষ্টিয়া জেলাসিরাজগঞ্জ জেলাউইকিভ্রমণ:সাহায্যঢাকাগোয়াকুতুবদিয়া বাতিঘরপূর্ব প্রদেশ (সৌদি আরব)দক্ষিণ এশিয়াতেলেঙ্গানারংপুর বিভাগকুড়িগ্রাম জেলাবিহার